সিতারা বেগম

বীর প্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মুক্তিযোদ্ধা
(সেতারা বেগম থেকে পুনর্নির্দেশিত)

ডা. ক্যাপ্টেন সিতারা রহমান একজন নারী মুক্তিযোদ্ধা। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত হন।[১]

ডা. ক্যাপ্টেন সিতারা রহমান
জন্ম (1946-09-05) ৫ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ (বয়স ৭৭)
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সালের পূর্বে)
পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
বাংলাদেশ (১৯৭১ সালের পর)
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক
আত্মীয়আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দার (ভাই)

জন্ম ও শিক্ষাজীবন সম্পাদনা

সিতারা রহমান ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জে জন্ম সিতারা বেগমের। বাবা মোহাম্মদ ইসরাইল এবং মা হাকিমুন নেসা। তবে বৈবাহিক সূত্রে তিনি সিতারা রহমান নামে পরিচিত। এসময় তার বড় ভাই এটিএম হায়দারও সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। স্বাধিকার আন্দোলনের উত্তাল দিনগুলোতে কুমিল্লা সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন সিতারা।। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের ভেতর তিনি ছিলেন তৃতীয় ।তার বাবা মোঃ ইসরাইল মিয়া পেশায় ছিলেন আইনজীবী। তার সাথে কিশোরগঞ্জে সিতারা বেগম শৈশব কাটান। সেখান থেকে মেট্রিক পাশ করার পর হলিক্রস কলেজে থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন। ঢাকা মেডিকেল থেকে পাশ করার পর তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সেনা মেডিকেলে (আর্মি মেডিকেল) লেফটেন্যান্ট হিসাবে যোগ দেন। ১৯৭০ সালের উত্তাল দিনগুলোতে সিতারা বেগম কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টে নিয়োজিত ছিলেন। সেই সময় তার বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা মেজর এ.টি. এম.হায়দার পাকিস্তান থেকে কুমিল্লায় বদলি হয়ে আসেন। তিনি কুমিল্লার ৩য় কমান্ডো ব্যাটেলিয়নে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সিতারা ও তার ভাই হায়দার ঈদের ছুটি পালন করার জন্য তাদের কিশোরগঞ্জের বাড়িতে যান।কিন্তু সেই সময়ে দেশ জুড়ে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে।হায়দার তার বোনকে ক্যান্টনমেন্টে আর ফিরে না যাবার জন্য বলেন।পরবর্তিতে তিনি তার বোন সিতারা, বাবা-মা ও কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে পার্শবর্তী দেশ ভারতে পাঠান। কিশোরগঞ্জ থেকে মেঘালয়ে পৌছাতে প্রায় দুই সপ্তাহ সময় লেগে যায়।

কর্মজীবন ও মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা সম্পাদনা

যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য মেলাঘরে বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল নামে ৪৮০ শয্যার একটি হাসপাতাল ছিলো।[২] ঢাকা মেডিকেলের শেষ বর্ষের অনেক ছাত্র সেখানে ছিলো। ক্যাপ্টেন ডা. সিতারা সেক্টর-২ এর অধীনে সেখানের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন। তাকে নিয়মিত আগরতলা থেকে ঔষধ আনার কাজ করতে হতো। হাসপাতালে একটি অপারেশন থিয়েটার ছিলো। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা, বাঙালি ছাড়াও সেখানে ভারতীয় সেনাবাহিনীর লোকজন চিকিৎসাসেবা নিত। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ডঃ সিতারা রেডিওতে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার সংবাদ শুনে ঢাকা চলে আসেন। পরবর্তীতে ১৯৭৫ সালে তার ভাই মেজর হায়দার নিহত হলে ডা. সিতারা ও তার পরিবার বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে থাকা শুরু করেন।

পুরস্কার ও সম্মননা সম্পাদনা

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ক্যাপ্টেন ডা: সিতারা বেগমের অবদানের জন্য তৎকালীন সরকার তাকে ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করে।

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"দৈনিক প্রথম আলো। ১৩ জুন ২০১১। ২০১৭-০৪-০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ অক্টোবর ২০১৭ 
  2. "আমি শেখ হাসিনারও শুভানুধ্যায়ী : জাফরুল্লাহ চৌধুরী"দৈনিক প্রথম আলো। ১৭ এপ্রিল ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২৩ অক্টোবর ২০১৭ 

পাদটীকা সম্পাদনা