সাহেলানথ্রোপাস চাদেনসিস

সাহেল্যানথ্রোপাস চাদেন্সিস (ইংরেজি Sahelanthropus tchadensis) হচ্ছে একটি বিলুপ্ত হোমিনিনে প্রজাতি এবং খুব সম্ভবত এই প্রজাতি অরোরিনে পুর্বপুরুষ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] এই প্রজাতির যে ফসিল পাওয়া গিয়েছে তা থেকে অনুমান করা হয় এটি ৬০-৭০ লক্ষ বছর পূর্বে মায়োসিন যুগে বিচরণ করত। অনুমান করা হয়, এরা সে সময়ে বিচরণ করত; যখন শিম্পাঞ্জি-মানবের একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন হবার প্রক্রিয়া চলছিল। এই প্রজাতির মাথার যে খুলি পাওয়া গিয়েছে; তার নাম রাখা হয়েছে টুমাই। অর্থাৎ জীবনের আশা।

Sahelanthropus tchadensis
"Toumaï"
সময়গত পরিসীমা: মায়োসিন যুগের শেষদিকে
Toumaï এর খুলি
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ: প্রাণী জগৎ
পর্ব: কর্ডাটা
শ্রেণী: স্তন্যপায়ী
বর্গ: Primates
পরিবার: Hominidae
উপপরিবার: Homininae
গোত্র: Hominini
উপগোত্র: Hominina
গণ: Sahelanthropus
Brunet et al., 2002[১]
প্রজাতি: S. tchadensis
দ্বিপদী নাম
Sahelanthropus tchadensis
Brunet et al., 2002

জীবাশ্ম সম্পাদনা

-১ —
-০.৯ —
-০.৮ —
-০.৭ —
-০.৬ —
-০.৫ —
-০.৪ —
-০.৩ —
-০.২ —
-০.১ —
০ —
অক্ষের স্কেল: কোটি বছর 
বামপ্রান্তে কমলা রঙে জানা তুষার যুগ চিহ্নিত।
আরও দেখুন: মানব সময়রেখাপ্রকৃতি সময়রেখা

টুমাই (মধ্য আফ্রিকার শাদ প্রজাতন্ত্রের ডাজা ভাষা হতে উদ্ভূত; যার অর্থ জীবনের আশা) নামক শাদের সাহেল এলাকার মানবের যে মাথার খুলি বিশিষ্ট ফসিল পাওয়া গিয়েছে, তার আকার খুবই ছোট। পাওয়া গিয়েছে চোয়ালের ৫টা টুকরো এবং দাতেঁর কিছু অংশ, যা একই সাথে আদিম এবং আধুনিক মানুষের সাথে সাদৃশ্যপুর্ণ। এর মাথার খুলির আকার ৩২০ সিসি থেকে ৩৮০ সিসি পর্যন্ত হত, আর মানুষের মাথার খুলির আকার প্রায় ১৩৫০ সিসি হয়ে থাকে। টুমাইয়ের মাথার খুলির যে আকার, তা বর্তমান সময়ের শিম্পাঞ্জির আকারের সাথে মিলে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

এর লম্বাটে মাথা, খুব প্রকট ভুরুর হাড়, ঢালু মুখমণ্ডল, দাঁতের যে বৈশিষ্ট্য দেখা গিয়েছে; তা হোমো স্যাপিয়েন্স থেকে ভিন্ন। এর খুলি থেকে বুঝা যায়, মুখমন্ডল চ্যাপ্টা, প্রাক মানবদের ন্যায় মহাবিবর (ফরম্যান ম্যাগনাম) এবং ভুরুর হাড় বেশ দৃঢ়। এই ফসিলের খুলি ব্যতীত আর কোনো হাড় পাওয়া যায় নি।[২]

সাহেল্যানথ্রোপাস চাদেন্সিস হয়তো দুইপায়ে হাটত।[৩] যেহেতু খুলি ব্যতীত আর কোনো হাড় পাওয়া যায় নি, তাই এটা সম্পুর্ণভাবে নিশ্চিত নয়। এটা সুনিশ্চিত নয় সাহেল্যানথ্রোপাস দ্বিপদী ছিল কিনা। খুলির তলার ভিতের মাঝামাঝি মহাবিবরের অবস্থান মানুষ ব্যতীত অন্য যে কোনো প্রাইমেটের চেয়ে ওদের অনেক সামনের দিকে ছিল, একারণে অনুমান করা হয়, এরা হয়তো দুপায়ে হাটঁত।[২] কিছু জীবাশ্মবিদ এই অনুমানকে খারিজ করে দিয়েছেন, তাদের মতে ফসিলের যে বিষয়গুলো দেখা গিয়েছে; যেমন তাদের মুখমণ্ডলের কাঠামো বা তাদের দন্তবিন্যাস তা থেকে এটা কখনো বলা যায় না, তারা দ্বিপদী ছিল;[৪] বরং তারা মিয়োসিন যুগের অন্যান্য গরিলার মতই ছিল।[২] একইভাবে সাম্প্রতিক সময়ের প্রাপ্ত তথ্যমতে, খুলির খুব কাছ থেকে প্রাপ্ত হাড়; যা হোমিনিডের ফিমার হতে পারে, তা থেকেও প্রশ্ন উঠেছে আদৌ কী শাদের সাহেল এলাকার মানুষ দুইপায়ে হাটতে পারত কিনা।[৫]

টুমাইয়ের ফিমার নিয়ে বিতর্ক সম্পাদনা

ফসিল আবিষ্কারের ১৫ বছর পরে পুয়েটারস বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ত্বের অধ্যক্ষ রবার্তো ম্যাকচিয়ারেলি [৬] - সন্দেহ করেন, এই ফসিল আবিষ্কারক মাইকেল ব্রুনেট হয়তো খুলির কাছে পাওয়া ফিমার সংক্রান্ত এই তথ্য ইচ্ছাকরেই গোপন করেছেন।[৭] ফলে টুমাইয়ের দুইপায়ে হাটা নিয়ে একটা সন্দেহ তৈরী হয়েছে।[৮] · [৯] · [১০] · [১১] · [১২].

আবিষ্কার সম্পাদনা

শাদ প্রজাতন্ত্রের ডিজুরাব মরুভুমিতে এই জীবাশ্ম আবিষ্কৃত হয়। এর নের্তৃত্বে ছিলেন মাইকেল বার্নেট; ছিলেন আরো কয়েকজন প্রত্নতত্ত্ববিদ।[১৩][১৪] ২০০১ এর জুলাই থেকে ২০০২ এর মার্চের মধ্যে সাহেল্যানথ্রোপাস এর জীবাশ্মের উপাদান গুলো সংগৃহীত হয়। এই উপাদান গুলো মুলত ৩ টা সাইটেই পাওয়া গিয়েছে, যথাঃ

  1. টিম ২৪৭,
  2. টিএম ২৬৬ নামক সাইটেই জীবাশ্মের বেশিরভাগ উপাদান (মাথার খুলি এবং ফিমার) পাওয়া যায় এবং
  3. টিম ২৯২।

এই আবিষ্কারের পর দাবী করা হয় শিম্পাঞ্জী ও মানুষের বিচ্ছিন্নতার পর S. tchadensis মানুষের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাচীন প্রাক মানব (পুর্বপুরুষ)।[১৫]

জীবাশ্ম সম্পর্কিত তথ্য সম্পাদনা

প্রাপ্তিকাল প্রাপ্তিস্থান গবেষকদলের প্রধান জীবাশ্মের বয়স
২০০১ টরস মানালা, সাইট ২৬৬ চাদ মাইকেল ব্রুনেট, এলাইন বিয়াইভিলান ৭০ থেকে ৬০ লক্ষ বছর পূর্বে

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Usually, all authors of a taxon description are cited. In this case they are so many however that for layout reasons the list is abbreviated. The full citation is:
    Brunet, Guy, Pilbeam, Mackaye, Likius, Ahounta, Beauvilain, Blondel, Bocherens, Boisserie, De Bonis, Coppens, Dejax, Denys, Duringer, Eisenmann, Fanone, Fronty, Geraads, Lehmann, Lihoreau, Louchart, Mahamat, Merceron, Mouchelin, Otero, Pelaez Campomanes, Ponce de León, Rage, Sapanet, Schuster, Sudre, Tassy, Valentin, Vignaud, Viriot, Zazzo, & Zollikofer, 2002.
  2. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; klages নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  3. Staff (আগস্ট ১৪, ২০১৬)। "What Does It Mean To Be Human? - Walking Upright"Smithsonian Institution। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৪, ২০১৬ 
  4. Wolpoff, Milford H.; Senut, Brigitte; Pickford, Martin; Hawks, John (২০০২)। "Palaeoanthropology (communication arising): Sahelanthropus or 'Sahelpithecus'?"Nature419: 581–582। ডিওআই:10.1038/419581aপিএমআইডি 12374970 
  5. John D. Hawks (2009). "Sahelanthropus: The femur of Toumaï?" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখে
  6. Roberto Macchiarelli Professor Roberto Macchiarelli
  7. Beauvilain A. et Watté J.-P., 2009. « Was Toumaï (Sahelanthropus tchadensis) buried ? »
  8. Callaway E. Controversial femur could belong to ancient human relative. Few scientists have had access to a thigh bone kept in a French collection for over a decade. Nature, 22 janvier 2018.
  9. Beauvilain A. Chronicle of Toumaï’s femur rediscovery ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে
  10. Constans N. The history of Toumai's thighbone. ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ জুলাই ২০১৮ তারিখে
  11. Constans N. The troubled history of Toumai's thighbone ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে Le Monde, 29 janvier 2018
  12. Hartenberger J.L.Toumaï Aïe Aïe Aïe: sad story of an unworthy femur
  13. Beauvilain, Alain (৫ অক্টোবর ২০০৬)। "Toumaï : "Histoire des Sciences et Histoire d'Hommes""Tchad Actuel (ফরাসি ভাষায়)। ৮ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ মে ২০১৮ 
  14. Chad, cradle of humanity. Toumaï, the Human Adventure
  15. Michel Brunet, Alain Beauvilain, Yves Coppens, Émile Heintz, Aladji H. E. Moutaye et David Pilbeam (1995) – The first australopithecine 2,500 kilometres west of the Rift Valley (Chad) ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩০ জুলাই ২০১৮ তারিখে, Nature, 378, pp. 273–275.

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা