সাবাহ
সাবাহ হল মালয়েশিয়ার একটি রাজ্য, যা বোর্নিওর উত্তর অংশে পূর্ব মালয়েশিয়া অঞ্চলে অবস্থিত। সাবাহের দক্ষিণ-পশ্চিমে মালয়েশিয়ার সারাওয়াক রাজ্য এবং দক্ষিণে ইন্দোনেশিয়ার উত্তর কালিমান্তান প্রদেশের স্থল সীমান্ত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় অঞ্চল লাবুয়ান হল সাবাহ উপকূলের একটি দ্বীপ। সাবাহ পশ্চিমে ভিয়েতনামের সঙ্গে এবং উত্তর ও পূর্বে ফিলিপাইনের সঙ্গে সামুদ্রিক সীমানা ভাগাভাগি করে। কোটা কিনাবালু হল রাজ্যের রাজধানী শহর, রাজ্যের অর্থনৈতিক কেন্দ্র ও সাবাহ রাজ্য সরকারের আসন। সাবাহার অন্যান্য প্রধান শহরগুলির মধ্যে রয়েছে সান্দাকান ও তাওয়াউ। ২০১৫ সালের আদমশুমারি রাজ্যে জনসংখ্যা ৩৫,৪৩,৫০০ জন নথিভুক্ত করেছে,[২০] এবং এটি ২০১৯ সালে ৩৯ লাখের মিলিয়নের বেশি হয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছিল। সাবাহে নিরক্ষীয় জলবায়ু রয়েছে, যেখানে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় বৃষ্টি অরণ্য এবং প্রচুর প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রজাতি রয়েছে। রাজ্যের পশ্চিম দিকে দীর্ঘ পর্বতশ্রেণী রয়েছে, যা ক্রোকার রেঞ্জ জাতীয় উদ্যানের অংশ। মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় দীর্ঘতম কিনাবাটাঙ্গান নদী সাবাহের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং কিনাবালু পর্বত হল সাবাহ তথা মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ বিন্দু।
সাবাহ | |
---|---|
রাজ্য | |
ডাকনাম: নেগেরি দি বাওয়াহ বেউ (বাংলা:বাতাসের নিচে ভূমি)[১] Land Below the Wind[২] | |
নীতিবাক্য: Sabah Maju Jaya[৩] Let Sabah Prosper[৩] | |
সঙ্গীত: Sabah Tanah Airku[৪] Sabah, My Homeland | |
স্থানাঙ্ক: ৫°১৫′ উত্তর ১১৭°০′ পূর্ব / ৫.২৫০° উত্তর ১১৭.০০০° পূর্ব | |
ব্রুনীয় সাম্রাজ্যের অধীনে প্রতিষ্ঠিত | ১৫তম শতাব্দী |
ব্রিটিশ উত্তর বোর্নিও | ১৮৮২ |
জাপানি দখলদারিত্ব | ১৯৪২ |
ব্রিটিশ ক্রাউন কলোনি | ১৫ জুলাই ১৯৪৬ |
স্ব-শাসন লাভ | ৩১ আগস্ট ১৯৬৩[৫][৬][৭][৮] |
মালয়েশিয়ায় ফেডারেশন করা হয়[৯] | ১৬ই সেপ্টেম্বর ১৯৬৩[১০] |
রাজধানী (ও বৃহত্তম শহর) | কোটা কিনাবালু |
বিভাগ | |
সরকার | |
• শাসক | সাবাহ রাজ্য বিধানসভা |
• ইয়াং দি-পারতুয়া নেগেরি | জুহর মহিরউদ্দিন |
• মুখ্যমন্ত্রী | হাজিজি নূর (জিআরএস–পিএন–বিইআরএসএটিইউ) |
আয়তন[১১] | |
• মোট | ৭৩,৯০৪ বর্গকিমি (২৮,৫৩৪ বর্গমাইল) |
সর্বোচ্চ উচ্চতা (কিনাবালু পর্বত) | ৪,০৯৫ মিটার (১৩,৪৩৫ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১৮)[১১] | |
• মোট | ৩৯,০০,০০০ (২nd) |
• জনঘনত্ব | ৫২/বর্গকিমি (১৩০/বর্গমাইল) |
বিশেষণ | সাবাহান |
জনসংখ্যা-বিষয়ক (২০১০)[১২] | |
• জাতিগত গঠন | |
• উপভাষা | বর্ধমান • সাবাহ মালয় • কাদাজান-দুসুন • হাক্কা অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু ভাষা |
রাজ্য সূচক | |
• এইচডিআই (২০১৯) | ০.৭১০ (উচ্চ) (১৫তম)[১৩] |
• টিএফআর (২০১৯) | ১.৪[১১] |
• জিডিপি (২০১৯) | আরএম৮৫,৬৪৭ মিলিয়ন[১১] |
সময় অঞ্চল | এমএসটি[১৪] (ইউটিসি+৮) |
পোস্টাল কোড | ৮৮xxx[১৫] থেকে ৯১xxx[১৬] |
কলিং কোড | ০৮৭ (অভ্যন্তরীণ জেলা) ০৮৮ (কোটা কিনাবালু ও কুদাত) ০৮৯ (লাহাদ দাতু, সান্দাকান ও তাওয়াউ)[১৭] |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | এইচ (এমওয়াই-১২, ৪৭–৪৯)[১৮] |
যানবাহন নিবন্ধন | এসএ, এসএএ,এসএবি, এসএসি, এসওয়াই(পশ্চিম উপকূল) এসবি (বিউফোর্ট) এসডি (লাহাদ দাতু) এসকে (কুদত) এসএস, এসএসএ, এসএম (সান্দাকান) এসটি, এসটিএ, এসডব্লিউ (তাওয়াউ) এসইউ (কেনিংগাউ)[১৯] |
সাবেক নাম | নর্থ বোর্নিও |
দাপ্তরিক ভাষা(সমূহ) | |
ড্রাইভিং সাইড | বাম |
বিদ্যুতের ভোল্টেজ | ২৩০ ভোল্ট, ৫০ হার্জ |
মুদ্রা | মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (আরএম/এমওয়াইআর) |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
মাদাই-বাতুরং গুহায় ডারভেল উপসাগরের ধারে ২০,০০০-৩০,০০০ বছর আগে সাবাহে প্রাচীনতম মানব বসতি খুঁজে পাওয়া যায়। খ্রিস্টীয় ১৪তম শতক থেকে চীনের সাথে রাজ্যটির বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে। ১৪তম ও ১৫তম শতকে সাবাহ ব্রুনীয় সাম্রাজ্যের প্রভাবে আসে। পরবর্তীকালে এই রাজ্যটি ১৯তম শতকে ব্রিটিশ ভিত্তিক নর্থ বোর্নিও চার্টার্ড কোম্পানি অধিগ্রহণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সাবাহ তিন বছর ধরে জাপানিদের দখলে ছিল। এটি ১৯৪৬ সালে একটি ব্রিটিশ ক্রাউন কলোনীতে পরিণত হয়। সাবাহকে ১৯৬৩ সালের ৩১শে আগস্ট ব্রিটিশরা স্ব-শাসন প্রদান করে। এর পরে, সারাওয়াক, সিঙ্গাপুর (১৯৬৫ সালে বহিষ্কৃত) ও মালয় ফেডারেশনের (উপদ্বীপীয় মালয়েশিয়া বা পশ্চিম মালয়েশিয়া) পাশাপাশি সাবাহ ফেডারেশন অব মালয়েশিয়ার (১৯৬৩ সালে ১৬ই সেপ্টেম্বর প্রতিষ্ঠিত) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হয়ে ওঠে। প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়া দ্বারা ফেডারেশনের বিরোধিতা করা হয়েছিল, যার ফলে তিন বছর ধরে ইন্দোনেশিয়া–মালয়েশিয়া সংঘর্ষের পাশাপাশি ফিলিপাইন কর্তৃক সুলু সালতানাতের অধিভুক্তির হুমকি পরিলক্ষিত হয়েছিল, হুমকি আজও অব্যাহত রয়েছে।[২১]
সাবাহ জাতিগত, সংস্কৃতি ও ভাষায় উল্লেখযোগ্য বৈচিত্র্য প্রদর্শন করে। রাজ্যের প্রধান হলেন গভর্নর, যা ইয়াং দি-পার্টুয়া নেগেরি নামেও পরিচিত, যখন সরকার প্রধান হলেন মুখ্যমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভা। সরকার ব্যবস্থাটি ওয়েস্টমিনিস্টার সংসদীয় ব্যবস্থার উপর ঘনিষ্ঠভাবে অনুকরণ করা হয়েছে এবং এটি মালয়েশিয়ার প্রাচীনতম রাজ্য আইনসভা ব্যবস্থাগুলির মধ্যে একটি। সাবাহ পাঁচটি প্রশাসনিক বিভাগ ও ২৭ টি জেলায় বিভক্ত। মালয় ভাষা হল রাজ্যের সরকারি ভাষা;[২২][২৩] এবং ইসলাম হল রাজ্যধর্ম, তবে অন্যান্য ধর্ম রাজ্যের যেকোনো অংশে শান্তি ও সম্প্রীতির সাথে পালন করার অনুমতি রয়েছে।[২৪] সাবাহ তার ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র, সোমপোটনের জন্য পরিচিত। সাবাহে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে এবং রাজ্যের অর্থনীতি দৃঢ়ভাবে রপ্তানিমুখী। রাজ্যটির প্রাথমিক রপ্তানি দ্রব্যের মধ্যে খনিজ তেল, গ্যাস, কাঠ ও পাম তেল রয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য প্রধান শিল্প হল কৃষি ও ইকোট্যুরিজম।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Mengenai Sabah" [About Sabah] (মালয় ভাষায়)। Sabah State Government। ১৯ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১৬।
- ↑ "About Sabah"। Sabah State Government। ২০ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১৬।
- ↑ ক খ "The Meaning of the Sabah State Crest"। Sabah State Government। ১০ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৪।
- ↑ "Lagu-Lagu Patriotik" [Patriotic Songs] (মালয় ভাষায়)। Sabah State Government। ২০ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ মে ২০১৬।
- ↑ The Report: Sabah 2011। Oxford Business Group। ২০১১। পৃষ্ঠা 10–143। আইএসবিএন 978-1-907065-36-1।
- ↑ "The National Archives DO 169/254 (Constitutional issues in respect of North Borneo and Sarawak on joining the federation)"। The National Archives। ১৯৬১–১৯৬৩। সংগ্রহের তারিখ ২৩ এপ্রিল ২০১৫।
- ↑ Philip Mathews (২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৪)। Chronicle of Malaysia: Fifty Years of Headline News, 1963–2013। Editions Didier Millet। পৃষ্ঠা 15–। আইএসবিএন 978-967-10617-4-9।
- ↑ Frans Welman (৯ মার্চ ২০১৭)। Borneo Trilogy Volume 1: Sabah। Booksmango। পৃষ্ঠা 159–। আইএসবিএন 978-616-245-078-5। সংগ্রহের তারিখ ২৮ মে ২০১৩।
- ↑ "Malaysia Act 1963 (Chapter 35)" (পিডিএফ)। The National Archives। United Kingdom legislation। ১৪ নভেম্বর ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ আগস্ট ২০১১।
- ↑ the Governments of the United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland, Federation of Malaya, North Borneo, Sarawak and Singapore (১৯৬৩)। Agreement relating to Malaysia between United Kingdom of Great Britain and Northern Ireland, Federation of Malaya, North Borneo, Sarawak and Singapore। পৃষ্ঠা 1 – উইকিসংকলন-এর মাধ্যমে।
- ↑ ক খ গ ঘ "Sabah @ a Glance"। Department of Statistics, Malaysia। সংগ্রহের তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০১৭।
- ↑ "Total population by ethnic group, administrative district and state, Malaysia" (পিডিএফ)। Department of Statistics, Malaysia। ২০১০। ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬।
- ↑ "Subnational Human Development Index (2.1) [Sabah – Malaysia]"। Global Data Lab of Institute for Management Research, Radboud University। সংগ্রহের তারিখ ১২ নভেম্বর ২০১৮।
- ↑ Helmer Aslaksen (২৮ জুন ২০১২)। "Time Zones in Malaysia"। Department of Mathematics, Faculty of Science, National University of Singapore। ২১ মে ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ মে ২০১৬।
- ↑ "Postal codes in Sabah"। cybo.com। ১৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "Postal codes in Semporna"। cybo.com। ১৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "Area codes in Sabah"। cybo.com। ১৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "State Code"। Malaysian National Registration Department। ১৯ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মে ২০১৭।
- ↑ Teh Wei Soon (২৩ মার্চ ২০১৫)। "Some Little Known Facts On Malaysian Vehicle Registration Plates"। Malaysian Digest। Archived from the original on ৮ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুলাই ২০১৬।
- ↑ "Population by States and Ethnic Group"। Department of Information, Ministry of Communications and Multimedia, Malaysia। ২০১৫। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২২।
- ↑ • "Filipino Students Protest in Manila Over Sabah Issue"। The Morning Journal। ২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৬৮। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২২।
• Hans H. Indorf (১৯৮৪)। Impediments to Regionalism in Southeast Asia: Bilateral Constraints Among ASEAN Member States। Institute of Southeast Asian Studies। পৃষ্ঠা 25–। আইএসবিএন 978-9971-902-81-0।
• Acram Latiph (১৩ মার্চ ২০১৩)। "Sabah – the question that won't go away"। New Mandala। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২২। - ↑ "BM is Sabah's official language – Keruak"। The Borneo Post। ২২ নভেম্বর ২০১৫। ২৫ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২২।
- ↑ "National Language (Application) Enactment 1973" (পিডিএফ)। Sabah State Government (State Attorney-General's Chambers)। ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭৩। ২৫ জুন ২০১৬ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২২।
- ↑ "Constitution of the State of Sabah"। Sabah State Government (State Attorney-General's Chambers)। ১৫ জুন ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০২২।