উত্তর কালিমান্তান

ইন্দোনেশিয়ার একটি প্রদেশ

উত্তর কালিমান্তান (ইন্দোনেশীয়: কালিমান্তান উতরা) হল ইন্দোনেশিয়ার একটি প্রদেশ। এটি বোর্নিও দ্বীপের ইন্দোনেশীয় অংশের কালিমান্তানের উত্তরতম প্রান্তে অবস্থিত। উত্তর কালিমান্তানের উত্তর এবং পশ্চিম সীমান্তে যথাক্রমে আছে মালয়েশিয়ার রাজ্য সাবা এবং সারাওয়াক, এবং দক্ষিণে আছে ইন্দোনেশীয় প্রদেশ পূর্ব কালিমান্তান। এই প্রদেশের রাজধানী হল তানজুং সেলোর এবং তারাকান এখানকার বৃহত্তম শহর ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র।

উত্তর কালিমান্তান
কালিমান্তান উতরা
প্রদেশ
উপরের বাম দিক থেকে, ঘড়ির কাঁটার দিকে : ইসলামিক সেন্টার তারাকান, জুওয়াতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, তারাকান, বুলুঙ্গান রিজেন্সিতে উত্তর কালিমান্তানের ঐতিহ্যবাহী পাংগাং বাড়ি , তেলাগা সিলাবা - উত্তর হুলু সানগাই রিজেন্সির পারজুয়াঙ্গান স্মৃতিস্তম্ভ, ইদামান জলপ্রপাত, ট্রান্স-কালিমান্তান টোলরোড মহাসড়ক এবং নুনুকানে দূতাবাস কেন্দ্র।
উত্তর কালিমান্তানের পতাকা
পতাকা
উত্তর কালিমান্তানের প্রতীক
প্রতীক
নীতিবাক্য: বেনুয়ান্তা
ইন্দোনেশিয়ায় উত্তর কালিমান্তান
ইন্দোনেশিয়ায় উত্তর কালিমান্তান
স্থানাঙ্ক: ৩°০০′ উত্তর ১১৬°২০′ পূর্ব / ৩.০০০° উত্তর ১১৬.৩৩৩° পূর্ব / 3.000; 116.333
দেশ ইন্দোনেশিয়া
গঠিত১৭ই নভেম্বর ২০১২[১]
রাজধানীতানজং সেলোর
২°৫০′৪৫″ উত্তর ১১৭°২২′০০″ পূর্ব / ২.৮৪৫৮৩° উত্তর ১১৭.৩৬৬৬৭° পূর্ব / 2.84583; 117.36667
বৃহত্তম শহরতারাকান
৩°১৯′৩০″ উত্তর ১১৭°৩৪′৪০″ পূর্ব / ৩.৩২৫০০° উত্তর ১১৭.৫৭৭৭৮° পূর্ব / 3.32500; 117.57778
সরকার
 • গভর্নরইরিয়ান্তো ল্যাম্ব্রি
 • উপ-গভর্নরউদিন হিয়াংগিও
আয়তন
 • মোট৭২,২৭৫.১২ বর্গকিমি (২৭,৯০৫.৫৮ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা (২০১৯)[২]
 • মোট৬,৯৫,৫৬২
 • জনঘনত্ব৯.৬/বর্গকিমি (২৫/বর্গমাইল)
জনসংখ্যার উপাত্ত
 • জাতিগত গোষ্ঠীবাজাউ
বানজারী
বুগিনি
বুলুঙ্গান
দায়াক
কেনিয়া
লুন বাওয়াঙ্গ
লুন্দায়ে
মুরুত
তৌসুগ
তিদাঙ্গ
 • ভাষাসমূহইন্দোনেশীয় (সরকারি)
দায়াক, তিদাঙ্গ (আঞ্চলিক)
সময় অঞ্চলডব্লিউআইটিএ (ইউটিসি+৮)
যানবাহন নিবন্ধনকেইউ
এইচডিআইবৃদ্ধি ০.৭০৫ (উচ্চ)
এইচডিআই ক্রম১৫ (২০১৮)
ওয়েবসাইটwww.kaltaraprov.go.id

উত্তর কালিমান্তান ৭২,২৭৫.১২ বর্গ কিমি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। এটি চারটি রাজপ্রতিনিধি এবং একটি শহর নিয়ে গঠিত। ইন্দোনেশিয়া পরিসংখ্যান অনুমান করেছে, ২০১৯ সালের মাঝামাঝি এই প্রদেশের জনসংখ্যা হবে ৬,৯৫,৫৬২। জনসংখ্যার বিচারে এটি ইন্দোনেশিয়ার সর্বনিম্ন জনবহুল প্রদেশ।[৩] ২০১২ সালের ২৫শে অক্টোবর গঠিত হয়ে এটি ইন্দোনেশিয়ার সর্বকনিষ্ঠ প্রদেশ। এই অঞ্চলে উন্নয়নের বৈষম্য এবং মালয়েশিয়ার প্রভাব হ্রাস করার জন্য উত্তর কালিমান্তানকে পূর্ব কালিমান্তান প্রদেশ থেকে পৃথক করা হয়েছিল।[৪][৫]

ইতিহাস সম্পাদনা

 
তারাকান শহর ডাচ ইস্ট ইন্ডিজ যুগে, ছবিটি ১৮৭৩ সালে তোলা।
 
তারাকান স্মৃতিস্তম্ভ।

উত্তর কালিমান্তান হিন্দুদের কুটাই রাজ্যের অঞ্চল ছিল। পরে ব্রুনাই এবং কুটাই যখন বোর্নিওর উপরে আধিপত্যের জন্য লড়াই চালাচ্ছিল সেই সময়ে এটি ইসলামী আক্রমণের প্রভাবে পরাধীন হয়ে পড়ে। অঞ্চলটি ব্রুনাইয়ের হাতে পড়ে এবং সুলু সুলতানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পরে, অঞ্চলটি আনুষ্ঠানিকভাবে সুলু নিয়ন্ত্রণে আসে। পশ্চিমী দেশগুলি যখন এই এলাকায় উপস্থিত হয়েছিল, ওলন্দাজরা স্থানীয়দের পরাস্ত করেছিল এবং স্পেনীয়রা উত্তরে সুলু রাজধানী আক্রমণ করেছিল। এরপরে ইন্দোনেশিয়া স্বাধীন হওয়ার আগে পর্যন্ত এই অঞ্চলটি ওলন্দাজদের দখলে ছিল।

পরিবহন সম্পাদনা

 
ট্রান্স - কালিমান্তান টোলরোড মহাসড়ক, ২০১০ সালে জোকো উইদোদো দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

এপোনিমাস দ্বীপে অবস্থিত তারাকান বিমানবন্দর বা জুওয়াতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এই প্রদেশে যাত্রী বহন করে। পাশাপাশি তওয়াউ থেকে মালয়েশিয়ায় পরিষেবা সহ একটি আন্তর্জাতিক জাহাজ বন্দর এখানে পরিষেবা প্রদান করে। এই প্রদেশে আসার জন্য কোন আন্তর্জাতিক অঞ্চল পার হতে হয়না। প্রদেশের মূল ভূখণ্ডে প্রবেশের জন্য তারাকান থেকে জাহাজে করে বা দক্ষিণ দিক থেকে রাস্তা দিয়ে আসা যায়। এই প্রদেশের রাস্তাগুলির বিস্তৃত অংশ কাঁচা এবং খানাখন্দ যুক্ত। [৬]

বিমানবন্দর অঞ্চল এবং রানওয়েটি টিএনআই-এইউ (ইন্দোনেশিয়ান বিমান বাহিনী)র এ বিভাগের বিমান ঘাঁটি সুহারনোকো হরবানি বিমানবাহিনী ঘাঁটির সাথে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দরটির নামকরণ করা হয়েছে ইন্দোনেশিয়ার প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী) সুহারনোকো হরবানির নামে, যিনি পূর্বে বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাও ছিলেন। ২০০৬ সালে গঠিত, এই বিমানঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্য ছিল দেশের প্রতিরক্ষায় কি ক্ষমতা আছে তা উপলব্ধি করা এবং ইন্দোনেশিয়াকে হুমকির সম্মুখীন করবে এমন সম্ভাবনার সাথে লড়ার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া। এছাড়াও এর কাজ ছিল মাকাসসারের বিমানবাহিনীর অপারেশনস কমান্ড ২ এর দায়িত্ব নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করা। এই বিমান ঘাঁটি গঠনের আগে, বালিকপাপান বিমানবাহিনী ঘাঁটির অধীনে ইন্দোনেশিয়ান বিমান বাহিনীর একটি ঘাঁটি ছিল। কিন্তু আম্বালাট অঞ্চলে মালয়েশিয়ার সাথে উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে, বিমান বাহিনীর নেতৃত্ব একটি নতুন বিমান ঘাঁটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সামরিক এবং নাগরিক উড়ান উভয়ের জন্য বিমান ঘাঁটিটি ব্যবহারের ফলে, বিমান-অবতরণক্ষেত্রটিও উভয়েই ব্যবহার করে। জুলাই ২০১৪ সালে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ মিলিটারি বিমানক্ষেত্রটিতে ১৮৩ মিটার ট্যাক্সিওয়ে তৈরির সূচনা করে যেখানে ৪টি সুখোই এবং ২টি হারকিউলিস একসাথে ধরে যায়। প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।[৭]

কালিমান্তান টোলরোড (ট্রান্স কালিমান্তান) তৈরির কাজ ২০১৯ সালের প্রথম দিকে সমাপ্ত হয়েছিল। এটির উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদো। এই যাত্রাপথটি পশ্চিম কালিমান্তানের পন্টিয়ানাকের সাথে উত্তর কালিমান্তানের রাজধানী শহর তানজং সেলোর কে সংযুক্ত করেছে।[৮][৯]

প্রশাসনিক বিভাগ সম্পাদনা

উত্তর কালিমান্তানে চারটি রাজপ্রতিনিধি (কাবুপাতেন) এবং একটি শহর (কোটা) আছে:

নাম অঞ্চল (কিমি) জনসংখ্যা
২০১০-এর আদমশুমারি[১০]
জনসংখ্যা
২০১৫ এর আদমশুমারি[১১]
জনসংখ্যা
২০১৯ এর অনুমান
রাজধানী এইচডিআই[১২]
২০১৮ এর অনুমান
তারাকান শহর ২৫০.৮০ ১,৯৩,৩৭০ ২,৩৪,৮৬৭ ২,৫৪,২৬২ তারাকান শহর ০.৭৫৬ (উচ্চ)
বুলুঙ্গান রিজেন্সি ১৩,১৮১.৯২ ১,১২,৬৬৩ ১,২৯,০৭৯ ১,৩৩,১৬৬ তানজং সেলোর ০.৭১২ (উচ্চ)
ম্যালিনাউ রিজেন্সি ৩৯,৭৬৬.৩২ ৬২,৫৮০ ৭৭,১৭৮ ৮৪,৬০৯ ম্যালিনাউ ০.৭১৭ (উচ্চ)
নুনুকান রিজেন্সি ১৪,২৪৭.৫০ ১,৪০,৮৪১ ১,৭৬,৯১৮ ১,৯৬,৯১৮ নুনুকান ০.৬৫৬ (মধ্যম)
তানা তিদাঙ্গ রিজেন্সি ৪,৮২৮.৫৮ ১৫,২০২ ২১,৫৯৭ ২৬,৬০৭ তিদাঙ্গ পেল ০.৬৭০ (মধ্যম)
মোট ৭২,২৭৫.১২ ৫,২৪,৬৫৬ ৬,৩৯,৬৩৯ ৬,৯৫,৫৬২ তারাকান ০.৭০৫ (উচ্চ)

জনসংখ্যার উপাত্ত সম্পাদনা

জাতিতত্ত্ব সম্পাদনা

উত্তর কালিমান্তানের জাতিতত্ত্ব প্রধানত দায়াক এবং জাভানী নিয়ে গঠিত। এছাড়াও তিদাঙ্গ, বুলুঙ্গান, সুলুক, বানজারী, মুরুত, লুন বাওয়াঙ্গ / লুন দাইহে এবং অন্যান্য প্রজাতির উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা রয়েছে।

ধর্ম সম্পাদনা

উত্তর কালিমান্তানে ধর্ম (২০১৫ শুমারি)
ধর্ম শতাংশ
ইসলাম
  
৫৯.৫৪%
প্রোটেসট্যানট
  
৩১.৩৮%
রোমান ক্যাথলিক
  
৭.৬০%
বৌদ্ধ
  
১.২৬%
জিজ্ঞাসা করা হয়নি
  
০.১৫%
হিন্দু
  
০.০৬%
জানায়নি
  
০.০০৭%
অন্য
  
০.০০২%
কনফুসীয়
  
০.০০১%

আরো দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৯ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২০ 
  2. Badan Pusat Statistik, Jakarta, 2019.
  3. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২৮ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২০ 
  4. https://kaltara.antaranews.com/berita/447842/kalimantan-utara-menggeliat
  5. reduction
  6. http://www.geocurrents.info/geopolitics/border-disputes/north-kalimantan-indonesias-newest-province-and-southeast-asian-geopolitical-tensions
  7. Fransina (১১ অক্টোবর ২০১৪)। "Bangun Taxiway 183 Meter dari Apron Lanud Tarakan" 
  8. https://katadata.co.id/foto/2019/12/19/foto-menyusuri-trans-kalimantan-jokowi-tinjau-program-padat-karya
  9. https://www.thejakartapost.com/news/2019/02/03/borneo-road-railway-projects-worlds-scariest-environmental-threat.html
  10. Biro Pusat Statistik, Jakarta, 2011.
  11. Badan Pusat Statistik, Jakarta, 2018.
  12. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৬ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জানুয়ারি ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা