সাতক্ষীরা

বাংলাদেশের একটি শহর

সাতক্ষীরা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে অবস্থিত সাতক্ষীরা দেশের প্রধান শহর ও বাণিজ্য কেন্দ্র। এটি প্রশাসনিকভাবে খুলনা বিভাগের অন্তর্গত। সাতক্ষীরা জেলার সবচেয়ে জনবহুল স্থান ও জেলা ও সদর উপজেলার প্রশাসনিক সদরদপ্তর। এর মোট আয়তন ৩২.৩৯ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ছিল ১১৩,৩২২ জন, যা একে বাংলাদেশের ৩৯তম বৃহৎ শহরে পরিণত করেছিল।[] সাতক্ষীরা সুন্দরবন ও সীমান্ত নিকটবর্তী হওয়ায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রধানত সড়ক ও নদী পথে দেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরের সঙ্গে যুক্ত। আঞ্চলিক মহাসড়ক আর৭৮০ দিয়ে যশোর এবং আর৭৬০ দিয়ে সরাসরি খূলনার সঙ্গে যোগাযোগ আছে। বিভাগীয় শহর খুলনার সঙ্গে সাতক্ষীরাত দূরত্ব ৫৯.৩ কিলোমিটার।

সাতক্ষীরা
শহর
দেশ বাংলাদেশ
বিভাগখুলনা বিভাগ
জেলাসাতক্ষীরা জেলা
সরকার
 • ধরনপৌরসভা
 • শাসকসাতক্ষীরা পৌরসভা
আয়তন
 • মোট৩২.৩৯ বর্গকিমি (১২.৫১ বর্গমাইল)
জনসংখ্যা
 • মোট১৩,৩২২
 • জনঘনত্ব৪১০/বর্গকিমি (১,১০০/বর্গমাইল)
সময় অঞ্চলবাংলাদেশ সময় (ইউটিসি+৬)

ইতিহাস

সম্পাদনা

প্রাচীনকালে সাতক্ষীরা বাগড়ী, ব্যাঘ্রতট, সমতট, যশোর, চূড়ন প্রভৃতি নামে অভিহিত করা হতো। অবশ্য এ নামকরণের পেছনে অনেক মত প্রচলিত আছে। প্রথম ও প্রধান মতটি হলো চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের এক কর্মচারী বিষুরাম চক্রবর্তী নিলামে চূড়ন পরগনা ক্রয় করে তার অর্ন্তগত সাতঘরিয়া নামক গ্রামে বাড়ি তৈরী করেন। তার পূত্র প্রাণনাথ সাতঘরিয়া অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন করেন। ১৮৬১ সালে মহকুমা স্থাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার পর ইংরেজ শাসকরা তাদের পরিচিত সাতঘরিয়াতেই প্রধান কার্যালয় স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। ইতোমধ্যেই সাতঘরিয়া ইংরেজ রাজকর্মচারীদের মুখে সাতক্ষীরা হয়ে যায়। দ্বিতীয় মতটি হলো একদা সাত মনীষী সাগর ভ্রমণে এসে একান্ত শখের বসে (মতানৈক্যে রান্নার উপকরণাদি না পেয়ে) ক্ষীর রান্না করে খেয়েছিলেন। পরবর্তীতে ক্ষীর এর সাথে আ প্রত্যেয় যুক্ত হয়ে ক্ষীরা হয় এবং লোকমুখে প্রচলিত হয়ে যায় সাতক্ষীরা।

বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিমে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ বনভূমি সুন্দরবন। বঙ্গোপসাগরের উপকূল এবং ভারতীয় সীমান্তে অবস্থিত সাতক্ষীরা নামক অঞ্চলটি মানব বসতি গড়ে ওঠার আগে ছিল একটি বিস্তীর্ণ জলাভূমি। পরবর্তীতে মানব বসতি গড়ে ওঠে। ১৮৬১ সালে যশোর জেলার অধীনে ৭টি থানা নিয়ে সাতক্ষীরা মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হয়। পরে ১৮৬৩ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার অধীনে এই মহকুমার কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে ১৮৮২ সালে খুলনা জেলা প্রতিষ্ঠিত হলে সাতক্ষীরা খুলনা জেলার অর্ন্তভূক্ত একটি মহকুমা হিসাবে স্থান লাভ করে। প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে ১৯৮৪ সালে সাতক্ষীরা মহকুমা জেলায় উন্নীত হয় এবং সাতক্ষীরা জেলা শহরের মর্যাদা পায়।

সাতক্ষীরা খুলনা শহর থেকে পশ্চিমে এবং যশোর থেকে দক্ষিণে, ২২º৩৭΄ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২২º৫০΄ উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত এবং ৮৮º৫৫΄ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৯º১০΄ দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এর মোট আয়তন ৩২.৩৯ বর্গকিলোমিটার।

জনসংখ্যা

সম্পাদনা

২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী সাতক্ষীরা শহরের মোট জনসংখ্যা ১১৩,৩২২ জন।[] যার মধ্যে ৫৭৬১৬ জন পুরুষ এবং ৫৫৭০৬ জন নারী। এ শহরের জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ৩৪৯৯ জন মানুষ বসবাস করে। নারী পুরুষের লিঙ্গ অনুপাত ১০০ঃ১০৩ এবং শিক্ষার হার ৬৯.৩%(৭ বছরের উর্দ্ধে)। শহরের মোট খানা রয়েছে ২৬৮৯৬টি।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "23: Area, Household, Population and Literacy Rate of the Cities, 2011"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। ঢাকা: বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা XI। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ 
  2. "4.1.30 Satkhira"। Population & Housing Census-2011 [আদমশুমারি ও গৃহগণনা-২০১১] (পিডিএফ) (প্রতিবেদন)। জাতীয় প্রতিবেদন (ইংরেজি ভাষায়)। ভলিউম ৩: Urban Area Rport, 2011। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। মার্চ ২০১৪। পৃষ্ঠা ৭৪। ১১ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭