সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম একটি ঐতিহ্যবাহী সরকারি কলেজ। এটি চট্টগ্রাম শহরের কলেজ রোডে অবস্থিত এবং চট্টগ্রাম কলেজের বিপরীতে এটির অবস্থান। এই কলেজের পর্তুগীজ ভবন নগরীর অন্যতম প্রাচীন স্থাপনা। এই কলেজে উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। নয়নাভিরাম ও মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা এই কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত।[১]
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম | |
---|---|
![]() | |
অবস্থান | |
![]() | |
কলেজ রোড, চকবাজার , | |
স্থানাঙ্ক | ২২°২১′১১″ উত্তর ৯১°৫০′০৮″ পূর্ব / ২২.৩৫২৯৪৩° উত্তর ৯১.৮৩৫৫১৮° পূর্ব |
তথ্য | |
প্রাক্তন নাম |
|
ধরন | সরকারি |
নীতিবাক্য | জ্ঞানই আলো |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৭৪ |
প্রতিষ্ঠাতা | মীর আব্দুর রশীদ |
বিদ্যালয় জেলা | চট্টগ্রাম |
ইআইআইএন | ১০৪৫২৭ |
অধ্যক্ষ | প্রফেসর মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম[১] |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | ২০,০০০ |
ভাষা | বাংলা |
শিক্ষায়তন | ৩১ একর |
ক্যাম্পাসের ধরন | শহর |
ক্রীড়া | ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল |
অন্তর্ভুক্তি | জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় |
শিক্ষা বোর্ড | চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড |
যোগাযোগ নং | ০৩১-৬১৪৬৯০ |
ফ্যাক্স | ০৩১-৬২৫৪৮৫ |
ওয়েবসাইট | mohsincollege |
ইতিহাসসম্পাদনা
১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে দানবীর হাজী মুহাম্মদ মহসীন এর মহসিন ফান্ডের অর্থায়নে চট্টগ্রাম সরকারি মাদ্রাসা হিসেবে এই কলেজ প্রতিষ্ঠিত করা হয়। তখন থেকেই এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। ১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম মোহসিনীয়া মাদ্রাসাকে "চট্টগ্রাম ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ" নামকরণ করে এর কার্যক্রম উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত উন্নিত করা হয় এবং পরে ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে জুলাই চট্টগ্রাম ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ ও চট্টগ্রাম সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজকে একত্রিত করে "হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ" নামে নামকরণ করা হয়।[২]উক্ত সময়ে চট্টগ্রাম ইন্টারমিডিয়েট কলেজের স্কুল বিভাগটি অধ্যক্ষ দ্বারা আলাদা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম চালাতে থাকে। সর্বশেষ ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কলেজটি হতে সম্পূর্ণরূপে আলাদা হয়ে যায় এবং কলেজের উত্তর দিকে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৭৯-৮০ শিক্ষাবর্ষে ডিগ্রী (পাস) কোর্স, ৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) কোর্স, ৯৩-৯৪ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স প্রথম পর্ব, এবং ৯৬-৯৭ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স শেষ পর্ব প্রবর্তন করা হয়।
অনুষদ ও বিভাগসমূহসম্পাদনা
বর্তমানে এ কলেজে "উচ্চমাধ্যমিক", "স্নাতক (সম্মান)", "স্নাতক (পাস)", "মাস্টার্স প্রথম পর্ব" এবং "মাস্টার্স শেষ পর্ব" পর্যন্ত পাঠদান করা হয়ে থাকে। বিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা, কলা ও সামাজবিজ্ঞান অনুষদে প্রায় ১৫ টি বিষয় পড়ানো হয়।
কলা অনুষদসম্পাদনা
- বাংলা বিভাগ
- ইংরেজি বিভাগ
- ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ
- ইসলামি শিক্ষা বিভাগ
- দর্শন
সমাজ বিজ্ঞান অনুষদসম্পাদনা
- অর্থনীতি বিভাগ
- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ
বিজ্ঞান অনুষদসম্পাদনা
- গণিত বিভাগ
- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ
- রসায়ন বিভাগ
- উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগ
- প্রাণিবিদ্যা বিভাগ
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদসম্পাদনা
- হিসাববিজ্ঞান বিভাগ
- ব্যবস্থাপনা বিভাগ
কলেজ ভবনসম্পাদনা
- কলা ভবন
- বিজ্ঞান ভবন ১
- বিজ্ঞান ভবন ২
- নতুন একাডেমিক ভবন ১
- নতুন একাডেমিক ভবন ২
- ছাত্রী মিলনায়তন
- হোষ্টেল
- নতুন হোষ্টেল
- প্রশাসনিক ভবন
- ব্যবসায় শিক্ষা ভবন
- মসজিদ
- প্রাচীন পর্তুগিজ ভবন
কলেজ ক্যাম্পাসসম্পাদনা
কলেজ ক্যাম্পাসটির আকার প্রায় ৩০ একর (১,৩০,০০০ বর্গমিটার)। ক্যাম্পাস জুড়ে আটটি ভবন রয়েছে। কলেজের ফটকের দক্ষিণে একটি খেলার মাঠ আছে।
কলেজ ক্যাম্পাসে পর্তুগিজদের দ্বারা নির্মিত একটি প্রাচীন ভবন রয়েছে। এই ভবনটি প্রায় এক শতাব্দী পুরানো। একে দারুল আদালত বলা হয়। ব্রিটিশ ঐপনিবেশিক শাসনামলে এটি চট্টগ্রামের প্রথম আদালত ছিল। স্থানীয়রা একে পর্তুগিজ ভবন বলে ডাকে। কেউ কেউ বলেন যে ভবনটি ১৬শ শতাব্দীতে পর্তুগিজ জলদস্যুরা দুর্গ হিসাবে ব্যবহার করত। মহসীন কলেজ (তৎকালীন মাদ্রাসা) ১৮৭৯ সালে ৩০,০০০ টাকায় ভবনসহ পাহাড়টি কিনেছিল।
কলেজের প্রশাসনিক ভবনের পশ্চিমে দুটি ছাত্রাবাস আছে। বাণিজ্য বিভাগের ভবনের দক্ষিণে আরও একটি ছাত্রাবাস আছে। বাণিজ্য ভবনের দক্ষিণে অধ্যক্ষের বাড়ি এবং পাহাড়ের শীর্ষে একটি মসজিদ আছে।
ছাত্র ছাত্রীদের আবাসনসম্পাদনা
কলেজে 'হাজী মুহাম্মদ মহসীন মুসলিম ছাত্রাবাস' ও 'নতুন হোস্টেল' নামে দুইটি ছাত্রাবাস আছে। আবাসন ও ছাত্রাবাস কমিটির তত্ত্বাবধানে ছাত্রাবাসগুলো পরিচালিত হয়। এছাড়াও ছাত্রদের জন্য ২০ শয্যা বিশিষ্ট ডরমেটরী রয়েছে। এছাড়াও কলেজে ছাত্রীদের জন্য ছাত্রীনিবাস নির্মাণাধীন।
মাঠসম্পাদনা
কলেজের অভ্যন্তরেই বিশাল আকৃতির ঐতিহাসিক মহসীন কলেজ এর মাঠ অবস্থিত।
পাঠাগারসম্পাদনা
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজের গ্রন্থাগার বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন গ্রন্থাগারের একটি। এই গ্রন্থাগারে বিশ হাজারেরও বেশি বই আছে।[২]
অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসমূহসম্পাদনা
- কলেজে পর্তুগিজ ভবন সংলগ্ন হিলটপে সুরম্য মসজিদ রয়েছে।
- ছাত্র ও ছাত্রীদের পৃথক মিলনায়তন রয়েছে।
- কলেজে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের (বিএনসিসি) সেনা ও নৌ শাখায় যোগদান ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
- রোভার স্কাউট ও যুব রেড ক্রিসেন্টের কার্যক্রম চালু আছে। আগ্রহী ছাত্র-ছাত্রীরা এতে অংশগ্রহণ করতে পারে।
সংগঠনসম্পাদনা
রাজনৈতিকসম্পাদনা
- ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ
- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা
- বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির
- বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ
- বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবির