হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় চট্টগ্রামে অবস্থিত একটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি ১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে চট্টগ্রাম মাদ্রাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[১] এটি চট্টগ্রামের কলেজ রোডে অবস্থিত।
হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় | |
---|---|
![]() | |
অবস্থান | |
![]() | |
, বাংলাদেশ | |
স্থানাঙ্ক | ২২°২১′০১″ উত্তর ৯১°৫০′০৫″ পূর্ব / ২২.৩৫০৩৭২৮° উত্তর ৯১.৮৩৪৭৪৯৯° পূর্ব |
তথ্য | |
প্রাক্তন নাম | চট্টগ্রাম মাদ্রাসা (১৮৭৪– ১৯২৭) ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (১৯২৭– ১৯৭৯) হাজী মুহাম্মদ মহসিন হাই স্কুল (১৯৭৯– ১৯৯৬) |
ধরন | সরকারি, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ডাবলশিফট বিদ্যালয় |
নীতিবাক্য | প্রভু আমাকে জ্ঞান দান কর |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৮৭৪ |
প্রতিষ্ঠাতা | মহসিন ফান্ড |
ইআইআইএন | ১০৪৪৮৮ |
প্রধান শিক্ষক | আজিজুল হক নিজামী |
শিক্ষকমণ্ডলী | ২৬ |
কর্মচারী | ৬ |
শ্রেণি | ৫ম- ১০ম |
লিঙ্গ | বালক |
শিক্ষার্থী সংখ্যা | আনু. ৯৮০ (২০২৩) |
শিক্ষা ব্যবস্থা | জাতীয় শিক্ষাক্রম |
শিক্ষায়তন | ০.৮৯ একর |
ক্যাম্পাসের ধরন | পাহাড়ি, শহুরে |
রং | আকাশী নীল, সাদা, সমুদ্র নীল |
ক্রীড়া | ফুটবল, ক্রিকেট |
প্রকাশনা | উজ্জীবন |
অন্তর্ভুক্তি | চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড |
ওয়েবসাইট | hmmghs |

বিদ্যালয়টিতে দ্বৈত শাখায় পঞ্চম থেকে দশম শ্রেণীতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়টি চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে নবম স্থান লাভ করে।[২][৩] ২০২৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায়ও বিদ্যালয়টি চট্টগ্রামের সেরা বিদ্যালয়ের তালিকায় ছিল।[৪]
ইতিহাস
সম্পাদনা১৮৭৪ খ্রিষ্টাব্দে ২০ জুলাই মহসিন ফান্ডের অর্থ থেকে চট্টগ্রাম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়।১৮৬৯ সালে ত্রিশ হাজার টাকার বিনিময়ে ইংরেজদের নিকট থেকে মহসিন৷ স্কুল ও কলেজের পাহাড়টি ক্রয় করদ হয়। ১৯২৭ সালে এর নাম হয় ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে কলেজটির বিলুপ্তি ঘটিয়ে হাজী মুহাম্মদ মহসিন হাই স্কুল এবং হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ স্থাপন করা হয়। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়টি কলেজ ক্যাম্পাস হতে আলাদা হয়ে যায় এবং নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠাকালীন পর্তুগিজ ভবনে কার্যক্রম শুরু করে।[৫] ২০০৭ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়টিতে শুধু মুসলিম শিক্ষার্থীদের ভর্তির প্রচলন ছিল।[৬] ২০০৮ সালে বিদ্যালয়টি ডাবলশিফটে উন্নিত হয়।[৭]
শিক্ষাঙ্গন
সম্পাদনাবিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসটি চকবাজার এলাকায় কলেজ রোডে গণি বেকারী মোড়ে অবস্থিত। জায়গাটিকে জামালখান এলাকার প্রান্তিক অংশ বিবেচনা করা হয়। বিদ্যালয়টি চকবাজার থানার অন্তর্গত এবং সিটি কর্পোরেশনের চকবাজার ওয়ার্ডের অন্তর্গত। বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসটি কলেজ রোডের পাশে কিছু একর পাহাড়ী জায়গা জুড়ে অবস্থিত। বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে দুইটি একাডেমিক ভবন রয়েছে। ভবন দুটি পাহাড়ের উপর একই উচ্চতায় অবস্থিত। প্রবেশদ্বার থেকে মূল ভবন পর্যন্ত সিঁড়িপথ রয়েছে।
বিদ্যালয়টির কোনো খেলার মাঠ নেই। মূল ভবনের সামনের উঠানে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করে। বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতার আয়োজন সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের মাঠে অয়োজন করা হয়। জায়গা সল্পতা বিদ্যালয়টির জন্য একটি বড় সমস্যা। ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে মহসিন কলেজের ক্যাম্পাস হতে স্থানান্তরের সময় বিদ্যালয়ের প্রাপ্য ৭ একর জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। যা বর্তমানে পার্শ্ববর্তী মহসিন কলেজের দখলে রয়েছে। বর্তমানে, বিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে আছে ০.৮৯ একর জমি।[৮]
শিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাবিদ্যালয়টিতে শুধুমাত্র ছাত্রদের ৫ম থেকে ১০ম অধ্যায়নের সুযোগ থাকে। বিদ্যালয়টিতে ২০১২ সালে দুইটি শিফ্টে ১,১০০ শিক্ষার্থীর জন্য কেবল ৯ জন শিক্ষক ছিলেন। ২০১৩ সালে শিক্ষক পদ ১৮ এ উত্তীন্ন করা হয়। যদিও অধকাংশ সরকারি হাই স্কুল এ শিক্ষক পদ সংখ্যা ৫২। ডাবলশিফ্ট বিদ্যালয়ে উন্নিত হওয়ার পর শিক্ষকদের পদসংখ্যা বৃদ্ধি না করার ফলে এটি ঘটেছিল।[৯]
ব্যবস্থাপনা
সম্পাদনাবিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্মকর্তা হলেন প্রধান শিক্ষক, যিনি একজন নন-ক্যাডার কর্মকর্তা। প্রাতঃ ও দিবা শাখার জন্য দুই জন সহকারী প্রধান শিক্ষক থাকেন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ দিবা ও প্রাতঃ শাখায় বিভক্ত থাকেন এবং বিষয়শিক্ষক ও শ্রেণীশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। বিদ্যালয়ে একজন অফিস সহকারী ও পাঁচজন কর্মচারী নিযুক্ত থাকেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক নিয়োগকৃত শিক্ষকের পদসংখ্যা ২১টি। তাছাড়া কয়েকজন খন্ডকালীন শিক্ষক ও কর্মচারী বেসরকারি অর্থায়নে নিয়োগ পান।
সন | পরীক্ষার্থী | জিপিএ৫ | পাশের হার |
---|---|---|---|
২০২৪ | ১৫৩ | ৮৬ | ৯৯.৩৪% |
২০২৩ | ১৬৩ | ৮৮ | ১০০% |
২০২২ | ১১৭ | ৮৬ | ৯৯.১৪% |
২০২১ | ১৩৩ | ৬৩ | ১০০% |
২০২০ | ১৩৭ | ৪৪ | ৯৯.২৭% |
২০১৯ | ১৪৩ | ৫২ | ৯৯.৩০% |
২০১৮ | ১৪৭ | ৪৭ | ৯৭.৯৬% |
২০১৭ | ১১৩ | ২৭ | ১০০% |
২০১১ | ১৮৮ | ১৯ | ৯২.৫৫% |
২০০৪ | ৫ |
শিক্ষার্থী ভর্তি পদ্ধতি
সম্পাদনা২০২০ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে শূন্য আসনে শিক্ষার্থী ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতো। বিদ্যালয়টি 'খ' ক্লাস্টারভুক্ত ছিল। ৫ম শ্রেণীতে ১৬০ জন, প্রয়োজ্য শ্রেণীসমূহে ও ৯ম শ্রেণীতে বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো।[১০] উক্ত বিদ্যালয় সহ চট্টগ্রামের আরও ৮টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। ভর্তি পরীক্ষায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের তথ্য দুটি মেধাতালিকায় এবং অপেক্ষমাণ তালিকায় প্রকাশ করা হতো। তালিকায় বিজোড় ক্রমিক ও জোড় ক্রমিক স্থান অধিকারীরা যথাক্রমে প্রাতঃ ও দিবা শাখায় ভর্তির সুযোগ পেতো।
২০২১ শিক্ষাবর্ষ হতে মাউশি লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করছে। এছাড়া, মিচ্যুয়াল ট্রান্সফারের শিক্ষার্থী ভর্তি হতে পারে।
সহশিক্ষা কার্যক্রম
সম্পাদনাসংগঠন
সম্পাদনা- বাংলাদেশ স্কাউটস
- রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি
- বিজ্ঞান ক্লাব
- দাবা ক্লাব
ক্রীড়া দল
সম্পাদনা- ফুটবল দল
- ক্রিকেট দল
চিত্রমালা
সম্পাদনা-
২০২১-এ একাডেমিক ভবন-০১
-
২০২২-এ প্রধান ফটক
-
২০২১-এ প্রধান ফটক
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়"। hmmghs.edu.bd।
- ↑ "কলেজিয়েট-খাস্তগীরকে পেছনে ফেলে সেরাদের শীর্ষে মুসলিম হাই"। cvoice24.com।
- ↑ "পাসের দিক দিয়ে সবার সেরা মুসলিম হাইস্কুল"। dailypurbodesh.com।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "চট্টগ্রামে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত সেরা ৩৫ স্কুল, সবার উপরে কলেজিয়েট"। dainikazadi.net।
- ↑ "সুড়ঙ্গপথে লুটের মালামাল এনে রাখতো পর্তুগিজ জলদস্যুরা"। banglanews24.com।
- ↑ "2 govt high schools in Ctg run sans minority students for a century, Correction"। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম (ইংরেজি ভাষায়)। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০০৬। ১৮ আগস্ট ২০২৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "New shifts in five govt schools soon - The Daily Star"। thedailystar.net। ২০০৮।
- ↑ "দৈনিক আজাদী,২৯ই জুন ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দ"। www.edainikazadi.net। Archived from the original on ২০২১-১১-২৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-৩০।
- ↑ "Teachers' Shortage at Mohsin School.Future of students uncertain"। www.thedailystar.net (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২১-১১-২৫।
- ↑ "ভর্তি ও ফলাফল তথ্য"। ৯ মার্চ ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৭ এপ্রিল ২০১২।