শ্রীশ্রী মাধব থান আসাম-এর একটি ধর্মস্থান। এটি নগাওঁ জেলা-এর কামপুর শহর থেকে প্রায় ১২ কি.মি. দক্ষিণে মাধবপারা পাহাড়ের কাছে লাংপি (কার্বি), চীনা বা বরাপানী নদীর পারে অবস্থিত। কিংবদন্তিমতে এই স্থানে শ্রীকৃষ্ণ (মাধব) এবং অর্জুনে এবার জিরণি নিয়েছিল।[১] এই থান প্রকৃততে চারিটি থানের কেন্দ্র - মাধব থান, বিষ্ণু থান, গণেশ থান এবং শিব থান। কামপুর-বৈঠালাংছ' সংযোগী গড়কাপ্তানী পথের মাধ্যমে থান পর্যন্ত যাতায়াতর সুবিধা আছে।

শ্রীশ্রী মাধব থান
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
জেলানগাঁও জেলা
অবস্থান
অবস্থানকামপুর
দেশভারত

ইতিহাস সম্পাদনা

ইতিহাস অনুসারে মহাভারতত উল্লেখায় কুরুক্ষেত্র যুদ্ধ-এর পর পঞ্চ-পাণ্ডবে অশ্বমেধ যজ্ঞ করে নিজেদের ক্ষমতা প্রতিপন্ন করতে যজ্ঞের ঘোড়া ছেড়েছিলেন। সেই যজ্ঞের ঘোড়া এসে প্রমীলা রাজ্যে প্রবেশ করায়, প্রমীলা রাজ্যের রানী প্রমীলা ঘোড়া আবদ্ধ করেছিলেন। ফলে অর্জুন ঘোড়া ছেড়ে দিতে বলায় রানী প্রমীলা অরাজি হন। এবং কোনোভাবেই ঘোড়া আনতে না পেরে অর্জুন তাঁর সখা মাধবে(কৃষ্ণ)র পরামর্শমত মাধব নিজে এসে প্রমীলা রাজ্যের পূর্ব প্রান্তে থাকা বরপানী নদীর পারের পাহাড়ে বসে দুয়ারে যুদ্ধের মীমাংসা করে দিয়ে, প্রমীলা-অর্জুনের মিলন ঘটিয়ে যুদ্ধের ঘোড়া উন্মুক্ত করেছিলেন। মাধব এসে যে স্থানে বিশ্রাম নিয়ে প্রমীলা-অর্জুনের বিবাদের মীমাংসা করে দুজনের মিলন ঘটিয়েছিলেন সেই স্থান পরবর্তীকালে মাধব থান এবং পাহাড়টি মাধব পাহাড় হয় বলে জনশ্রুতি আছে। অন্য এক কিংবদন্তি মতে, সত্যযুগে অগস্ত্য মুনি দক্ষিণাপথে এবং সমসাময়িক “বিদেঘ্ মাধব” পূর্ব দিকে হিন্দুধর্ম প্রচার করেছিলেন। বিদেঘ্ মাধব এসে পূর্বদেশের চীন বা বরপানী নদীর পারে যে পাহাড়ে আশ্রম করে আর্য্যধর্ম প্রসারে মনোনিবেশ করেছিলেন সেই স্থানই পরে মাধব পারা নামে পরিচিত হয়।[২]

বর্তমানের লংকা অঞ্চলটিকে ডিমাছা কাছাড়িরা “ডেমব্রা” বা “ডেমেরা” বলে। এই ডেমেরা অঞ্চলে রাজত্ব করা “বরাহু বিষ্ণু”র সেবক মহামানিক্য বা মহামানিফা রাজা উত্তর-পূর্ব ভারত-এর সংযোগী “ব্যাপক অসমীয়া ভাষা”য় বাল্মিকীর সংস্কৃতরামায়ণ”টি মাধব কন্দলীর দ্বারা অনুবাদ করিয়েছিলেন। এই মাধব পাহাড়ের নিম্নে আশ্রম করে তিনি রামায়ণের অনুবাদ করেছিলেন বলেও জনশ্রুতি আছে।[৩]

পাদটীকা সম্পাদনা

  1. সুবোধ চন্দ্র মজুমদার সম্পাদিত “কাশীদাশী মহাভারত”য়ে প্রমীলা রাজ্যের উল্লেখ আছে (পৃঃ ৯৮১)। এই প্রমীলা রাজ্যই বর্তমানের মাধবপারার সমীপবর্তী “প্রমীলা” অঞ্চল বলে কিংবদন্তি আছে। ভগবান মাধব (শ্রীকৃষ্ণ) এবং অর্জুনের বিশ্রাম নেওয়া স্থানই পরবর্তীকালে মাধব (শ্রীকৃষ্ণ) থান গড়ে উঠেছিল বলে জনশ্রুতি আছে।
  2. শ্রী শ্রী মাধব থানের ইতিবৃত্তর থেকে সংগ্রহিত
  3. শ্রী খগের্শ্বর বরা সম্পাদিত 'প্রমীলা' আলোচনীত

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা

সাথে দেখুন সম্পাদনা