শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র
শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র বাংলাদেশের ভোলা জেলায় অবস্থিত একটি গ্যাসক্ষেত্র। গ্যাসক্ষেত্রটি বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এই গ্যাসক্ষেত্রটি থেকে ভোলায় আবাসিক ব্যবহারের জন্যও গ্যাস সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।[১]
শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র | |
---|---|
দেশ | বাংলাদেশ |
অঞ্চল | ভোলা জেলা |
সমুদ্রতীরাতিক্রান্ত/ডাঙাবর্তী | ডাঙাবর্তী |
পরিচালক | বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড |
অংশীদার | গাজপ্রম |
ক্ষেত্রের ইতিহাস | |
আবিষ্কার | ১৯৯৪ |
উৎপাদন সূচনা | ১৯৯৫ |
সর্বোচ্চ উৎপাদন | ১ টিসিএফ |
উৎপাদন | |
বর্তমান গ্যাস উৎপাদন | ৪০ নিযুত cubic feet per day (১.১ নিযুত cubic metres per day) |
ভূতত্ত্ব
সম্পাদনাশাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রটি বোরহানউদ্দিন উপজেলার বোরহানগঞ্জের দক্ষিণে ৪ ং কাচিয়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের শাহবাজপুর এলাকায় অবস্থিত। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি বাপেক্স ১৯৯৫ সালে এটি আবিষ্কার করে।[১] ভোলা উত্তর-১ গ্যাসক্ষেত্র থেকে এটি প্রায় ৩২ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।[২][৩]
শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রটি বঙ্গীয় অববাহিকায় অবস্থিত। এই ভূ-কাঠামোটির ভূতাত্ত্বিক নাম হল 'ভূস্তরীয় কাঠামো'।[৪] দেশের অন্যান্য গ্যাস ক্ষেত্র সুরমা অববাহিকায় আবিষ্কৃত হয়েছে, যার ভূতাত্ত্বিক নাম হল 'ঊর্ধ্ব ভঙ্গ কাঠামো'।[৫]
আবিষ্কার
সম্পাদনাজিওলজি অ্যান্ড জিওপিজিক্স লিমিটেডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভোলায় গ্যাসের প্রাপ্যতা প্রথম জানা যায় ১৯৫২ সালে।[৬] পরবর্তীতে পাকিস্তান শেল অয়েল কোম্পানি একটি দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপ পরিচালনা করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, ১৯৭৪-৭৫ সালের মধ্যে ২য় ধাপে একটি ভূকম্পন জরিপ পরিচালিত হয়। বাপেক্স সূত্রমতে, ১৯৮৬ সালে ভোলায় একটি দ্বিমাত্রিক ভূকম্পন জরিপের মাধ্যমে শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের সন্ধান পাওয়া যায়।[৩] পেট্রোবাংলা ১৯৮৭ সালে ৩য় ধাপে আরেকটি ভূকম্পন জরিপ পরিচালনা করে।[৬] জরিপটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯৯৪ সালে শাহবাজপুর-১ গ্যাসক্ষেত্রে খনন কার্যক্রম শুরু হয়।[৪]
বর্তমান অবস্থা
সম্পাদনাশাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্রের আওতায় বর্তমানে ৬ টি কূপ রয়েছে। এর মধ্যে কাচিয়া ১ নং গ্যাসক্ষেত্র এবং কাচিয়া ২ নং গ্যাসক্ষেত্রে মোট ৪ টি। ভোলা ভেদুরিয়ায় আছে একটি এবং টগবীর মুন্সিরহাট বাজার সংলগ্ন এলাকায় রয়েছে ১ টি। বর্তমানে ৪ টি কূপ চলমান রয়েছে।
গ্যাসক্ষেত্র থেকে প্রাপ্ত গ্যাসের উপর ভিত্তি করে, ভোলার বোরহানউদ্দিনে একটি ৩৫.৫ মেগাওয়াট রেন্টাল পাওয়ার প্ল্যান্ট ও ২২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।[৭] এছাড়া এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে ভোলার আবাসিক লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়।[৮] যেটি পরিচালনা করে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি।
গ্যাসক্ষেত্র বাজার
সম্পাদনাএই গ্যাসক্ষেত্রকে কেন্দ্র করে এই এলাকায় গড়ে উঠেছে দোকানপাট এবং বাজার। গ্যাসক্ষেত্রটির শুরু লগ্নে এখানে মাত্র এক দুইটি দোকান ছিলো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এখানে বাড়তে থাকে দোকানপাট।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ প্রতিবেদক, নিজস্ব। "৪ নম্বর কূপে গ্যাস উত্তোলন শুরু"। প্রথম আলো।
- ↑ "New Bhola Gas Field: Bapex starts production on trial basis"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। জানুয়ারি ২৮, ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ ক খ "ভোলার গ্যাসক্ষেত্র থেকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু"। প্রথম আলো। ২৭ জানু ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ ক খ "Gas Extraction Begins From The New Field Of Bhola"। এনার্জি বাংলা (ইংরেজি ভাষায়)। নভেম্বর ১, ২০১৭। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "ভোলার ভেদুরিয়ায় দেশের ২৭তম গ্যাসক্ষেত্র"। দৈনিক সমকাল। ২৭ জানু ২০১৮। ১১ এপ্রিল ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ ক খ "ভোলায় আরও গ্যাস ক্ষেত্র পাওয়ার সম্ভাবনা"। দৈনিক যুগান্তর। ২ ফেব্রু ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "'New gas field' found in Bhola"। দ্য ডেইলি স্টার (ইংরেজি ভাষায়)। জানুয়ারি ১৬, ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০।
- ↑ "সম্বাবনার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র"। বাংলাদেশের খবর। ১৬ অক্টো ২০১৮। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০২০।