রাধাবল্লভী পুরিকা অর্থাৎ পুরি বিশেষ একটি আধুনিক নোনতা খাদ্য বিশেষ। প্রাচীন গ্রন্থে এর উল্লেখ না থাকলেও আধুনিক কালে বাঙালি হিন্দু জনসমাজে সমাদৃত।

রাধাবল্লভী
প্রকারনোনতা জাতীয় খাদ্য
উৎপত্তিস্থলঅবিভক্ত বাংলার পূর্ববঙ্গে বাঙালি হিন্দু অঞ্চলে
অঞ্চল বা রাজ্যবাংলা
পরিবেশনঘরের তাপমাত্রা
প্রধান উপকরণময়দা, বিরি পিঠি, ডাল বাটা, ঘি

নামকরণ সম্পাদনা

এই খাদ্যটির কথা কোন প্রাচীন গ্রন্থ বা শাস্ত্রে উল্লেখ না পাওয়া গেলেও দ্রব্যগুণে এর সংস্কৃত নাম দেওয়া হয়েছে বেষ্টনিকা। রাধাবল্লভী শব্দটি দেশি শব্দ। তবে নামকরণ করা হয়েছে রাধিকা বা শ্রীরাধার রাধা এবং কৃষ্ণের অপর নাম বল্লভ থেকে।

  1. কোনো কোনো গবেষকের মতে, খড়দহের শ্যামসুন্দরের জন্য চৈতন্য মহাপ্রভু স্বয়ং রাধাবল্লভী উদ্ভাবন করেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরেক নাম ‘রাধাবল্লভ’। সেই সূত্রে মহাপ্রভুই এই খাবারের নাম রাখেন ‘রাধাবল্লভী’।
  1. এমন মতও রয়েছে, শোভাবাজার রাজবাড়ির গৃহদেবতা রাধাবল্লভ-কে প্রতিদিন ভোগ হিসেবে দেওয়া হত এই পদটি। তা থেকেই এর নাম হয় ‘রাধাবল্লভী’।
  1. আবার অনেকে বলেন, মুর্শিদাবাদের কান্দী গ্রামে জমিদারবাড়ির কুলদেবতা রাধাবল্লভকে এই ভোগ দেওয়া হত, তা থেকেই ‘রাধাবল্লভী’ নামটি চালু হয়।
  1. কলকাতার জিতেন্দ্রনাথ মোদক বৃন্দাবন থেকে এই পদটির রান্না শিখে আসেন এবং কলকাতায় চালু করেন। তিনি ছিলেন পুঁটিরামের আত্মীয়। তা থেকেই ‘পুঁটিরাম’ দোকানের রাধাবল্লভী বিখ্যাত হয়ে যায়।[১]

প্রস্তুতি সম্পাদনা

ডালপুরির মতনই তবে এটি আকারে খানিকটা বড়। পুর হিসাবে বিরির পিঠি, লঙ্কা ইত্যাদির ব্যবহার করা হয়। মাসকলাই এর বাটা ময়দার সাথে মিশিয়ে এই ভোজ্যটি তৈরি করা হয়। দেখতে অনেকটা রুটিকা বা রুটির মতো হলেও একে ঘিয়ে ভেজে নেওয়া হয়।

প্রসিদ্ধ প্রস্তুতকারক সম্পাদনা

সবচেয়ে বিখ্যাত কলকাতার ‘পুঁটিরাম’-এর রাধাবল্লভী। পশ্চিমবঙ্গের হুগলীর শ্রীরামপুরের মহেশ দত্তের দোকানের রাধাবল্লভীর বিশেষ সমাদর আছে।[২]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "জিভে জল আনা রাধাবল্লভীতে রাধার ভূমিকা কী!" 
  2. রায়, প্রণব (১৯৮৭)। বাংলার খাবার। কলকাতা: সাহিত্যলোক। 

বহি:সংযোগ সম্পাদনা

[১] হ্যাংলা হেঁসেল