মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান

মো. মুহিবুর রহমান (১৯৩২-২০০২): তিনি একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে কনভেনশন মুসলিম লীগ থেকে সিলেট-৬ আসনে সদস্য (এম.এন.এ.) নির্বাচিত হন। [১] [২] [৩]

মোহাম্মদ মুহিবুর রহমান
পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ সদস্য (এম এন এ)
কাজের মেয়াদ
১৯৬২ – ১৯৬৫
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম১৯৩২
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা , ব্রিটিশ ভারত
(বর্তমান কমলগঞ্জ উপজেলা , বাংলাদেশ)
মৃত্যু২০০২
কেরামতনগর, কমলগঞ্জ উপজেলা,সিলেট, বাংলাদেশ
সমাধিস্থলকেরামতনগর,কমলগঞ্জ উপজেলা সিলেট
নাগরিকত্বব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
পাকিস্তান (১৯৭১ সাল পর্যন্ত)
বাংলাদেশ(২০০২ সাল পর্যন্ত)
রাজনৈতিক দলকনভেনশন মুসলিম লীগ
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
দাম্পত্য সঙ্গীনুর-ই বেগম
সন্তান৩জন
ধর্মইসলাম

শৈশব ও পড়ালেখা

সম্পাদনা

মো. মুহিবুর রহমান মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার বাদে সোনাপুর অঞ্চলে ১৯৩২ সালে মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আলহাজ্ব মো. কেরামত আলী এবং মাতা মোছাঃ জুলেখা বেগম। সাত ভাই-বোনদের মধ্যে তিনি বড়। তাঁর ডাকনাম চেরাগ আলী।

মো. মুহিবুর রহমান বাল্যকালে গ্রামের পাঠশালা বিদ্যালয় থেকে শিক্ষাজীবন শুরু করেন, অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাথমিক পর্যায় শেষ করে মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখা করে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবনের ইতি টানেন। এছাড়াও তিনি স্থানীয় মক্তবে আরবী, ফারসী ও উর্দু শিক্ষাগ্রহণ করেন। []

ব্যবসা

সম্পাদনা

তিনি আলহাজ্ব মো. কেরামত আলীর বড় ছেলে হওয়ার সুবাদে তাদের বিশাল সম্পত্তি দেখাশুনা করতেন। তিনি কেরামতনগর ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন (কে.আই.সি.) নামক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সফলভাবে পরিচালনা করতেন। আর ঐ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে পাট, চা, ইট, বাঁশ,গাছ, টিনের সামগ্রী,প্লাস্টিকের সামগ্রীসহ অনেক ব্যবসা সামগ্রী দেশ-বিদেশে সরবরাহ করা হতো। তিনি ব্যবসাক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করার মাধ্যমে অল্প বয়সে একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে আত্নপ্রকাশ করেন। [] []

রাজনৈতিক জীবন

সম্পাদনা

ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান ক্ষমতা দখলের পর পঞ্চায়েত পদ্ধতি বাতিল করে 'মৌলিক গণতন্ত্র নীতি'র মাধ্যমে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ গঠন করেন এবং ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটে জাতীয় পর্যায়ে প্রতিনিধি নির্বাচনের পদ্ধতি চালু করেন। মোঃ মুহিবুর রহমান প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান গঠিত কনভেনশন মুসলিমলীগ এর সমর্থন নিয়ে ১৯৬০ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ (এমএনএ) নির্বাচনে সিলেট ৬ আসনে উক্ত দল থেকে মনোনয়ন নিয়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করে এমএনএ নির্বাচিত হন। [৪] [৫] [৬] তখন তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন প্রাক্তন মূখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন এর জামাতা ব্যারিস্টার আহমেদুর রহমান। ১৯৭০ সালে অনুষ্ঠিত এমপিএ নির্বাচনে পুনরায় মুসলিমলীগের মনোনয়ন নিয়ে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল এ প্রার্থী হন। উক্ত নির্বাচনে পরাজিত হন। দেশ স্বাধীনের পর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কর্তৃক গঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল থেকে একাধিকবার মনোনয়ন নিয়ে মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হন। কিন্তু চা শ্রমিক ও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এ আসনে পরাজিত হন। ১৯৯৯ সালে কমলগঞ্জ পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর পৌরসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। উল্লেখ্য যে, তিনি কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মোট ৩০ বছর পর্যায়ক্রমে চেয়ারম্যান [৭] এবং কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান [৮] ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ মার্চ ২০২০ তারিখে হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। [] []

উল্লেখযোগ্য কর্মকাণ্ড

সম্পাদনা

এছাড়াও মো. মুহিবুর রহমান বহু স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব, মসজিদ, মন্দির ইত্যাদির পাশাপাশি গরীব-দুঃখী মেহনতি মানুষের নীরবে দান করেন।

[] []

পারিবারিক জীবন

সম্পাদনা

নুর-ই বেগমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁদের ২ ছেলে ও ১মেয়ে।

মৃত্যু

সম্পাদনা

২০০২ সালের ২৮ ডিসেম্বর মৃত্যু বরণ করলে সফাত আলী মাদ্রাসার ভিতর অবস্থিত হিফজখানার পাশে সমাহিত করা হয়।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. কমলগঞ্জ উপজেলা পরিচিতি। কমলগঞ্জ: কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ,। ২০১৫। পৃষ্ঠা ২০৪,২২৬–২২৭। আইএসবিএন 9789849133513 
  2. ইতিহাসের পাতা থেকে দানবীর মৌলভী মকবুল আলী। পাপড়ী প্রকাশনী,। ২০১৯। পৃষ্ঠা ৪৫–৪৭। আইএসবিএন 9789849374718 
  3. দানবীর আলহাজ্ব কেরামত আলী ও মোঃ মুহিবুর রহমান জীবন। নাজমুর রহমান শাহীন। ২০১৫। পৃষ্ঠা ৮৩–৯৫।