মোহাম্মদ আলী বগুড়া

পাকিস্তানী কূটনীতিক

সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বগুড়া (১৯০৯ - ১৯৬৩) একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ। তাঁর পুরো নাম "সৈয়দ মোহাম্মদ আলী চৌধুরী" হলেও "মোহাম্মদ আলী বগুড়া" নামেই তিনি সুপরিচিত। তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৫ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

মোহাম্মদ আলী বগুড়া
পাকিস্তানের ৩য় প্রধানমন্ত্রী
কাজের মেয়াদ
১৭ এপ্রিল, ১৯৫৩ – ১২ আগস্ট, ১৯৫৫
সার্বভৌম শাসকদ্বিতীয় এলিজাবেথ
গভর্নর জেনারেলমালিক গোলাম মুহাম্মদ
পূর্বসূরীখাজা নাজিমুদ্দিন
উত্তরসূরীচৌধুরী মুহম্মদ আলী
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯০৯-১০-১৯)১৯ অক্টোবর ১৯০৯
বগুড়া, ব্রিটিশ রাজ (বর্তমান বাংলাদেশ)
মৃত্যু২৩ জানুয়ারি ১৯৬৩(1963-01-23) (বয়স ৫৩)
ঢাকা, পাকিস্তান (বর্তমান ঢাকা, বাংলাদেশ)
রাজনৈতিক দলমুসলিম লীগ
দাম্পত্য সঙ্গীহামিদা মোহাম্মদ আলী
আলিয়া বেগম
পিতাআলতাফ আলী চৌধুরী
আত্মীয়স্বজনসৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী (দাদা)
সৈয়দ হাসান আলী চৌধুরী (চাচা)
সৈয়দা আশিকা চৌধুরানী (চাচাতো বোন)
প্রাক্তন শিক্ষার্থীকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
ধর্মইসলাম

সৈয়দ মোহাম্মদ আলীর জন্মস্থান বগুড়া। তার পরিবার বাংলার ধনবাড়ির নবাব পরিবারের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেন এবং লেখাপড়া শেষ করে রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৩৭ তে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি খাজা নাজিমুদ্দিন-এর মন্ত্রী সভায় স্বাস্থ্য মন্ত্রী ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে

সম্পাদনা

১৯৫৩ সালে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী হবার ঠিক আগে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ক্ষমতা গ্রহণের পর পাকিস্তানের সেনাবাহিনী প্রধান কে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ জানিয়ে আলোড়ন তৈরি করেন। প্রধানমন্ত্রী হবার পর তিনি সংবিধান প্রণয়ন কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং ছয় মাসের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন সংক্রান্ত একটি সূত্র আইনসভায় পেশ করেন।[] তার এই সুত্রটি পাকিস্তানের ইতিহাসে "বগুড়া ফর্মুলা" নামে পরিচিত। অক্টোবার ৭, ১৯৫৩ সালে টি আইনসভায় পেশ করা হয়। তের দিন ধরে উপর আলোচনা চলে। নভেম্বার ১৪ , ১৯৫৩ সালে সংবিধানের খসড়া তৈরির ব্যাপারে একটি কমিটি গঠিত হয়। খসড়া চূড়ান্ত করার পূর্বেই গুলাম মুহাম্মদ আইনসভা ভেঙ্গে দেন। যদিও এসময় মোহাম্মদ আলি বগুড়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নতুন আরেকটি মন্ত্রিসভা নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যান। ১৯৫৪ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি আবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। তার এই নতুন সরকার নতুন নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দেয়। ভগ্নস্বাস্থ্যের কারণে ১৯৫৫ সালের আগস্ট মাসে গোলাম মোহাম্মদ পদত্যাগ করেন। সৈয়দ ইস্কান্দার মীর্জা নতুন গভর্নর জেনারেল হন। পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালের আগস্ট ৮ তারিখে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা সৈয়দ মোহাম্মদ আলি বগুড়াকে পদত্যাগে বাধ্য করেন।

 
মোহাম্মদ আলী বগুড়া এর বাসভবন

১৯৬২ সালে তিনি আবার পররাষ্ট্র মন্ত্রী হন। ১৯৬৩ সালে সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বগুড়া মৃত্যুবরণ করেন। তাকে বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান) এর বগুড়া জেলায় কবর দেওয়া হয়।

সাফল্য

সম্পাদনা

সৈয়দ মোহাম্মদ আলী বগুড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাশ্মীর ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি নেহরুকে কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে দুই দেশের বৈরী সম্পর্ক দূরীকরণের আহ্বান জানান।

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা