মীর কাশেম খান
ওস্তাদ মীর কাশেম খান (১ জুলাই ১৯২৮ - ১৯৮৪) ছিলেন একজন বাঙালি সেতারবাদক, সুরকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। তিনি ঢাকার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান জাগো আর্ট সেন্টারের সঙ্গীত প্রশিক্ষক ছিলেন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকে ভূষিত করে।
ওস্তাদ মীর কাশেম খান | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্ম | ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান বাংলাদেশ) | ১ জুলাই ১৯২৮
মৃত্যু | ১৯৮৪ ঢাকা, বাংলাদেশ |
ধরন | ধ্রুপদী সঙ্গীত |
পেশা | সেতারবাদক, সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক |
বাদ্যযন্ত্র | সেতার |
কার্যকাল | ১৯৪৬-১৯৮৪ |
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনামীর কাশেম ১৯২৮ সালের ১ জুলাই তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান (বাংলাদেশ) ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের এক সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা নায়েব আলী খাঁ ছিলেন একজন সঙ্গীতজ্ঞ। শৈশব থেকেই পারিবারিক সঙ্গীতধারার প্রতি তার অনুরাগ ছিল। সাত বছর বয়সে কাশেম তার পিতার কাছে কণ্ঠসঙ্গীত ও তালযন্ত্রে তালিম নেন এবং পরে সেতারের তালিম নেওয়া শুরু করেন। পিতার কাছে দীর্ঘদিন সঙ্গীতের তালিম নেওয়ার পর তিনি মাইহারে চাচা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর কাছে চার বছর সঙ্গীতের তালিম নেন।[১]
কর্মজীবন
সম্পাদনাআলাউদ্দিন খাঁর নিকট সঙ্গীতশিক্ষা শেষ করে তিনি কিছুদিন কলকাতার এক ব্যালে সঙ্গীতদলে কর্মরত ছিলেন। ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি দেশের বিভিন্ন সঙ্গীত জলসায় ও সম্মেলনে সেতার বাজিয়ে প্রশংসা অর্জন করেন। ১৯৪৯ সালে কাশেম নিজস্ব শিল্পী হিসেবে ঢাকা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন। ১৯৫৬ সালে প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী বুলবুল চৌধুরীর নৃত্যদলের সদস্য হিসেবে তিনি সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, ইরাক, ইতালি, পশ্চিম জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও মিশর সফরে যান। তিনি ১৯৬৭ সালে চীন, ১৯৬৮ সালে ইরান ও আফগানিস্তান, ১৯৭২ সালে ভারত, ১৯৭৭ সালে যুক্তরাজ্য, নরওয়ে, সুইডেন ও ডেনমার্ক এবং ১৯৭৮ সালে হংকং ও থাইল্যান্ড সফর করেন এবং সেতার বাজিয়ে খ্যাতি অর্জন করেন।[১]
সেতারবাদনের পাশাপাশি মীর কাশেম সঙ্গীতে সুরারোপ এবং সঙ্গীত পরিচালনা করেন। তিনি ১৯৪৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকার বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পূর্ববাংলার প্রথম নৃত্যনাট্য মঞ্চস্থ হয়। ইন্দ্রের সভা নামক সেই নৃত্যনাট্যের সঙ্গীত পরিচালনা করেন মীর কাশেম।[২] এছাড়া তিনি সামান্য ক্ষতি, আনারকলি, বিচার, কাঞ্চনমালা নৃত্যনাট্যে সঙ্গীত পরিচালনা করেন। তার সুরারোপিত অনেক গান বেতার ও টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছে।[১]
সম্মাননা
সম্পাদনা- ১৯৭৬ - শ্রেষ্ঠ সেতারশিল্পীর জন্য জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার
- ১৯৭৮ - বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে স্বর্ণপদক
- ১৯৮৪ - সঙ্গীতে অবদানের জন্য একুশে পদক
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ খান, মোবারক হোসেন। "খান, ওস্তাদ মীর কাশেম"। বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৭।
- ↑ "বাংলাদেশে রবীন্দ্র নৃত্যনাট্য মঞ্চায়ন"। দৈনিক জনকণ্ঠ। ৩১ জুলাই ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১০ আগস্ট ২০১৭।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]