মজেস কস্তা, সিএসসি (১৭ নভেম্বর ১৯৫০ – ১৩ জুলাই ২০২০) ছিলেন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু। তিনি চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশের প্রথম আর্চবিশপ ছিলেন।[৩]

সর্বাধিক সম্মানিত
মজেস এম কস্তা
সিএসসি[১]
চট্টগ্রামের আর্চবিশপ
প্রধান ধর্মযাজকচট্টগ্রাম
দেখুনচট্টগ্রাম
নিযুক্ত২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
স্থাপিত২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭
মেয়াদ শেষ১৩ জুলাই ২০২০
অন্যান্য পদমহাসচিব, বাংলাদেশ ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্স
আদেশ
বিন্যাস৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১
পবিত্রকরণ৬ সেপ্টেম্বর ১৯৯৬
অ্যাড্রিয়ানো বার্নারদিনি দ্বারা
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্ম(১৯৫০-১১-১৭)১৭ নভেম্বর ১৯৫০
সাধু যোহনের গির্জা,[২] তুমুলিয়া, কালীগঞ্জ, গাজীপুর
মৃত্যু১৩ জুলাই ২০২০(2020-07-13) (বয়স ৬৯)
স্কয়ার হাসপাতাল, ঢাকা
জাতীয়তাবাংলাদেশি
পূর্ববর্তী পদচট্টগ্রামের বিশপ
মজেস এম কস্তা, সি.এস.সি.
এর রীতি
উদ্ধৃতিকরণের রীতিসর্বাধিক সম্মানিত
কথ্যরীতিমহামান্য
ধর্মীয় রীতিমনসিনর

জন্ম ও শিক্ষা সম্পাদনা

মজেস কস্তা ১৯৫০ সালের ১৭ নভেম্বর গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় তুমুলিয়া গ্রামে সাধু যোহনের গির্জায় জন্মগ্রহণ করেন।[২] তিনি বাবা-মার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। ১৯৬৩ সালে বান্দুরা লিটল ফ্লাওয়ার মাইনর সেমিনারিতে ভর্তি হন।[১] ১৯৬৯ সালে বান্দুরা হলিক্রশ হাইস্কুল থেকে মানবিক শাখায় প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকার নটর ডেম কলেজ থেকে ১৯৭১ সালে প্রথম বিভাগে আইএ ও ১৯৭৩ সালে বিএ পাস করেন।[২] নটর ডেম কলেজে পড়ার সময় ১৯৭১ সালে পবিত্র ক্রুশ সন্ন্যাস সংঘে যোগ দেন।[১] ১৯৮৬ সালে সেন্ট টমাস অ্যাকুইনাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধ্যাত্মিকতা ও যাজকীয় ধর্মতত্ত্বের ওপর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৯ সালে রোমের পনটিফিসিয়াল গ্রেগরিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞান ও কাউন্সেলিং-এর ওপর ডিগ্রি অর্জন করেন।[১]

কর্মজীবন সম্পাদনা

মজেস কস্তা ১৯৭১ সালে পবিত্র ক্রুশ সন্ন্যাস সংঘে যোগ দেন এবং ১৯৮১ সালের ২০ জানুয়ারি চূড়ান্ত সন্ন্যাসব্রত গ্রহণ করে ডিকন পদে অভিষিক্ত হন। ৫ ফেব্রুয়ারি আর্চবিশপ মাইকেল রোজারিও তাকে গ্রামের বাড়ি তুমুলিয়ায় যাজক হিসেবে অভিষিক্ত করেন।[২] ১৯৮১ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল ধর্মপল্লীর সহকারী পাল-পুরোহিত হিসেবে কাজ করেন। তিনি ১৯৯২ সাল থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত ঢাকার বনানী উচ্চ সেমিনারিতে মনোবিজ্ঞান ও যাজকীয় ধর্মতত্ত্বে অধ্যাপনা করেন।[২] ১৯৯৫ সালে রামপুরার হলিক্রস স্কলাস্টিকেটের পরিচালক হিসেবে নিয়োজিত হন। এছাড়া সন্ন্যাস সংঘের সাধারণ পরিষদ সদস্যও নির্বাচিত হন।[১] ১৯৯৬ সালে পোপ দ্বিতীয় জন পল তাকে দিনাজপুর ধর্মপ্রদেশের ষষ্ঠ বিশপ হিসেবে নিযুক্ত করেন।[১][২] ২০১১ সালের ২৭ মে চট্টগ্রামের পঞ্চম বিশপ নিযুক্ত হন।[১] ২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশ প্রতিষ্ঠা করে মজেস কস্তাকে এর প্রথম আর্চবিশপ মনোনীত করেন।[৩] মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্সের মহাসচিব ও এর স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিশনের সভাপতি ছিলেন।[১]

মৃত্যু সম্পাদনা

২০২০ সালের ১৩ জুলাই মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[৪] এর আগে ১৩ জুন শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানা যায়।[১] ২২ জুন তিনি করোনাভাইরাস মুক্ত হন এবং ৭ জুলাই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু আবার আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে ৯ জুলাই তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মস্তিষ্কে দুইবার রক্তক্ষরণ হলে ১৩ জুলাই তিনি মারা যান।[৪] ১৪ জুলাই চট্টগ্রামের পাথরঘাটা ক্যাথেড্রাল গির্জার পাশের কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।[২]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Bangladesh Archbishop passes away after recovering from Covid-19" [কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হওয়ার পর বাংলাদেশি আর্চবিশপের মৃত্যু] (ইংরেজি ভাষায়)। ভাটিকান নিউজ। ১৩ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২০ 
  2. "করোনা উপসর্গে মারা গেলেন আর্চবিশপ মজেস কস্তা"। জাগোনিউজ২৪। ১৩ জুলাই ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২০ 
  3. "চট্টগ্রাম এখন মেট্রোপলিটন ডায়োসিস, আর্চবিশপ মজেস কস্তা"। বাংলানিউজ২৪। ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। ১৮ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২০ 
  4. "আর্চবিশপ মজেস কস্তার মৃত্যু"। বাংলা ট্রিবিউন। ১৪ জুলাই ২০২০। ১৪ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০২০ 

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা