ভিকার উন নিসা নূন
ভিকার-উন-নিসা, লেডি নুন (পূর্ব নাম- ভিক্টোরিয়া, ১৯২০- ২০০০) পাকিস্তানের সপ্তম প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নুনের স্ত্রী। পেশাগত দিক দিয়ে ভিকার-উন-নিসা একজন সমাজকর্মী ছিলেন। জন্মগত দিক দিয়ে তিনি ছিলেন অস্ট্রিয়ান। তিনি ১৯২০ সালের জুলাই মাসে জন্ম গ্রহণ করেন এবং তার নাম রাখা হয়েছিলো ভিক্টোরিয়া। তিনি ১৯৪৫ সালে ফিরোজ খান নুনকে বিয়ে করেন।[১] তিনি পাকিস্তান আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[২]
ভিকার উন নিসা নূন | |
---|---|
পাকিস্তানের ফার্স্ট লেডি | |
কাজের মেয়াদ ১৬ ডিসেম্বর ১৯৫৭ – ৭ অক্টোবর ১৯৫৮ | |
পূর্বসূরী | রা'না লিয়াকত আলি খান |
উত্তরসূরী | নুসরাত ভুট্টো |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯২০ অস্ট্রিয়া |
মৃত্যু | ১৬ জানুয়ারী ২০০০ ইসলামাবাদ, পাকিস্তান |
জাতীয়তা | অস্ট্রিয়া পাকিস্তানি |
দাম্পত্য সঙ্গী | ফিরোজ খান নুন |
পাকিস্তান আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ততা
সম্পাদনাবিয়ের পরে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং ভিক্টোরিয়া নাম পরিবর্তন করে ভিকার- উন- নিসা রাখেন। ফিরোজ খান নুন ইন্ডিয়ান ভাইসরয় এর মন্ত্রিপরিষদ থেকে যে বছর পদত্যাগ করে ঐ বছর তারা দিল্লী ত্যাগ করেন এবং লাহোর চলে আসেন।[২] লেডি নুন পাকিস্তানের রাজনীতিতে সরাসরি আবির্ভূত হন এবং তিনি স্থানীয় রাজনীতিতেও যুক্ত হন। তিনি পাঞ্জাব প্রোভিন্সিয়াল সাবকমিটির সদস্য হন এবং মুসলিম লিগের জন্য জনসমাবেশ ও মিছিলও আয়োজন করেন। পাঞ্জাবে সিভিল ডিসঅবিডেন্স আন্দোলনের সময় লেডি নুন তিনবার গ্রেফতার হয়েও ব্রিটিশ সমর্থিত খিজরের মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সংগঠনে সাহায্য করেন।[২]
সমাজ সেবামূলক কাজ
সম্পাদনা১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের স্বাধীনতার পরে এবং সীমান্ত দিয়ে অনেক জনগণ স্থানান্তর হওয়ার ফলে তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য উন্নয়নমূলক কাজে নিজেকে যুক্ত করেন। তিনি বিভিন্ন উদ্বাস্তু ক্যাম্প এবং কমিটির জন্য সহযোগিতা করেন।[২] তিনি রেড ক্রসের সাথে জড়িত ছিলেন এবং স্থানীয় সমাজ উন্নয়নে নিজেকে যুক্ত করেন। তিনি পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে ভিকার উন নিসা কলেজ ফর উইম্যান নামে একটি কলেজ স্থাপনে সাহায্য করেন।[২] তিনি ভিকারুন্নিসা নুন স্কুল নামে মেয়েদের জন্য ঢাকায় একটি স্কুল স্থাপনেও সাহায্য করেন, যেটি বর্তমানে মেয়েদের জন্য একটি বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
পরবর্তী জীবন
সম্পাদনাতার স্বামী স্যার ফিরোজ পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হন এবং পরবর্তীতে ১৯৫৭ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হোন। তার স্বামীর মৃত্যুর পরেও তিনি তার সমাজ সেবামূলক কাজ চালিয়ে যান। তিনি ঐ সময়কার অন্যান্য বিখ্যাত নারীদের সাথে তার এই উন্নয়নমূলক কাজ করেন। তাদের মধ্যে রয়েছে প্রয়াত বেগম মাহমুদা সালিম খান, ডঃ আতিয়া ইনায়েতউল্লাহ এবং বেগম জরি সারফরাজ। তিনি ফ্যামিলি প্ল্যানিং অ্যাসোসিয়েশন অফ পাকিস্তান, পাকিস্তান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, দ্য ন্যাশনাল ক্র্যাফটস কাউন্সিল অফ পাকিস্তান সহ আরো অন্যান্য সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য ছিলেন।[৩] জেনারেল জিয়া উল হকের শাসন কালে তিনি অল্প সময়ের জন্য পাকিস্তান সরকারের পর্যটন ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ফেডারেল মন্ত্রী ছিলেন। তার পরবর্তী জীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি তার আল- ফিরোজ নামক একটি কুটিরে কাটান যেটি পাকিস্তানের আবোতাবাদের কাছে অবস্থিত। সেখানে তিনি অঙ্কন ও লেখার জন্য সৃষ্টিশীল নীরবতার সন্ধান পেতেন।
দীর্ঘ অসুস্থতার পরে লেডি নুন ২০০০ সালের ১৬-ই জানুয়ারি ইসলামাবাদে মারা যান।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Larry Collins and Dominique Lapierre, Freedom at Midnight, 1975.
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "Begum Viqar-un-Nisa [1920-2000]"। Enterprise Team। সংগ্রহের তারিখ ১০ সেপ্টেম্বর ২০১১।
- ↑ Obituary notice in "The News" daily, Friday, 21 January 2000, Islamabad/Rawalpindi ed