ব্যারি জার্মান
ব্যারিংটন নোয়েল জার্মান, ওএএম (ইংরেজি: Barry Jarman; জন্ম: ১৭ ফেব্রুয়ারি, ১৯৩৬ - মৃত্যু: ১৭ জুলাই, ২০২০) দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার হাইন্ডমার্শ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। এছাড়াও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করেছেন ব্যারি জার্মান। অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৯ সময়কালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণসহ অধিনায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | ব্যারিংটন নোয়েল জার্মান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | হাইন্ডমার্শ, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া | ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৬|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৭ জুলাই ২০২০ অ্যাডিলেড, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, অস্ট্রেলিয়া | (বয়স ৮৪)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উচ্চতা | ৫ ফুট ৮.৫ ইঞ্চি (১.৭৪ মিটার) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | উইকেট-রক্ষক, রেফারি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২১৫) | ১৯ ডিসেম্বর ১৯৫৯ বনাম ভারত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৪ জানুয়ারি ১৯৬৯ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৫৫–১৯৬৯ | দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৭ এপ্রিল ২০১৬ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটে সাউথ অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ উইকেট-রক্ষক হিসেবে অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি ডানহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শিতা দেখিয়েছেন তিনি।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনা১৪ বছর বয়সে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার ঘরোয়া ক্রিকেটে উইকেট-রক্ষক হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। তিন বছর পর সাউথ অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ফুটবল লীগের জুনিয়রদের প্রতিযোগিতায় ওয়েস্ট টরেন্স ফুটবল ক্লাবে খেলেন। পায়ে চির ধরায় জার্মানের ফুটবল জীবনের সমাপ্তি ঘটে। ক্রিকেটে মনোনিবেশকালে আম্পায়ারিংয়ের দিকেও ঝুঁকে পড়েন তিনি।[১] ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৫৫ তারিখে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সদস্যরূপে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। অ্যাডিলেড ওভালে নিউ সাউথ ওয়েলসের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তিনি ১৪ ও ৯ এবং তিনটি ক্যাচ নিয়েছিলেন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
সম্পাদনা১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে দুইজন উইকেট-রক্ষকের একজনরূপে মনোনীত হন। কিন্তু, অস্ট্রেলিয়ার তৎকালীন প্রথম পছন্দনীয় উইকেট-রক্ষক ওয়ালি গ্রাউটের কারণে প্রথম একাদশে অন্তর্ভূক্তিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি ঘটে তার।[২] ডিসেম্বর, ১৯৫৯ সালে গ্রাউটের আঘাতপ্রাপ্তির ফলে গ্রীন পার্ক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টেস্টে ভারতের বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়। কিন্তু ঐ টেস্টে ব্যাটহাতে তিনি মাত্র ১ ও ০ করেন এবং দুইটি ক্যাচ নেন। ওয়ালি গ্রাউট সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরে আসলে তাকে পুনরায় সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়। এমনকি ১৯৬১ সালে ইংল্যান্ড সফরেও তিনি কোন টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। গ্রাউটের ভাঙ্গা চোয়ালের কারণে জার্মানের টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন ঘটে। ব্রিসবেনে অনুষ্ঠিত ১৯৬২-৬৩ মৌসুমের অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৬৪ সালে ভারত সফরে মুম্বইয়ের ব্রাবোর্ন স্টেডিয়ামে জার্মান তার নিজস্ব সর্বোচ্চ ৭৮ রান তোলেন। ১৯৬৬ সালে গ্রাউট অবসর নিলে তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রথম পছন্দের উইকেট-রক্ষকে পরিণত হন। এরফলে ভারত, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত সিরিজগুলোয় অংশ নেন। ১৯৬৮ সালের ইংল্যান্ড সফরে দলের সহঃ অধিনায়ক মনোনীত হন তিনি। নিয়মিত অধিনায়ক বিল লরি আঙ্গুলে আঘাত পেলে হেডিংলি টেস্টে দলের অধিনায়কত্ব করেন। খেলায় কেবলমাত্র ড্র হলেই চলে এ অবস্থায় অস্ট্রেলিয়া শুধুই পরাজয় এড়াতে লড়াই করে।[৩] খেলাটি ড্রয়ে পরিণত হলেও দলের রক্ষণাত্মক ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের জন্য জার্মান ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে তিনি উনিশ টেস্টে অংশ নিয়ে ১৪.৮১ গড়ে ৪০০ রান সংগ্রহ করেন। এছাড়াও ৫ ক্যাচ ও চার স্ট্যাম্পিং করেন তিনি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ২২.৭৩ গড়ে ৫৬১৫ রানের পাশাপাশি ১৯১ খেলায় ৪৩১ ক্যাচ ও ১২৯ স্ট্যাম্পিং করেন। তার উইকেট-রক্ষণের রেকর্ডটি তৎকালীন সময়ে অস্ট্রেলিয়ার গ্রাউট ও বার্ট ওল্ডফিল্ডের পরই অবস্থান করে।
অবসর
সম্পাদনা১৯৬৮-৬৯ মৌসুমে সফরকারী ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ শেষে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন তিনি। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর নেয়ার পর ঘোড়দৌড়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন ও ক্রিকেট প্রশাসনে সম্পৃক্ত হন। ১৯৯৫ সালে প্রথমবারের মতো আইসিসি ম্যাচ রেফারিদের একজন হন। ২০০১ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন। এ সময়ে তিনি ৫৩টি খেলা পরিচালনা করেছিলেন।
খেলোয়াড়ী জীবন শেষে তিনি স্বীকার করেন যে, তার স্ট্যাম্পিংয়ের সিদ্ধান্তের ফলেই হানিফ মোহাম্মদ উপর্যুপরি টেস্ট সেঞ্চুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন।
১৯৯৭ সালে ক্রিকেট খেলোয়াড়, কোচ ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট রেফারি এবং দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় ঘোড়দৌড়ের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার কারণে তাকে অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া পদকে ভূষিত করা হয়। ১৭ জুলাই, ২০২০ তারিখে ৮৪ বছর বয়সে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড এলাকায় ব্যারি জার্মানের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ The Advertiser, "Footballer Hurt", 21 September 1953. p. 10
- ↑ Grout W, p. 36
- ↑ Wisden 1969, p. 308.
গ্রন্থপঞ্জি
সম্পাদনা- Grout, Wally; talking to Frank O'Callaghan (১৯৬৫)। My Country's Keeper। London: Pelham Books। ওসিএলসি 30277987।
- Wilson, A. (2002) "The Once Only's", The Yorker, Journal of the Melbourne Cricket Club Library, No. 35, Summer 2002-03, Melbourne Cricket Club, Melbourne.
আরও দেখুন
সম্পাদনাবহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে ব্যারি জার্মান (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে ব্যারি জার্মান (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)
- হাউস্ট্যাটে ব্যারি জার্মান (ইংরেজি)
পূর্বসূরী বিল লরি |
অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক ১৯৬৮ |
উত্তরসূরী বিল লরি |