বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী জাতি
বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরীরা, আনুষ্ঠানিকভাবে বিষ্ণুপ্রিয়া [ক] নামে পরিচিত, হল ইন্দো-আর্য জনগোষ্ঠীর একটি দল যারা আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুর এবং উত্তর-পূর্ব বাংলাদেশে বাস করে। তারা বিষ্ণুপ্রিয়া ভাষায় কথা বলে, যা বাংলা ভাষা এবং মৈতৈ ভাষার একটি ক্রিওল (ক্রিওল হল এমন একটি ভাষা যা অন্য ভাষার একটি সরলীকৃত সংস্করণ অথবা দুই বা ততোধিক ভাষার মিশ্রণ থেকে আসে)। এই ভাষাই আনুষ্ঠানিকভাবে মণিপুরী ভাষা নামে পরিচিত, এবং এটি এখনও তার প্রাক-বাঙালি বৈশিষ্ট্য ধরে রেখেছে।[৪] [৫][৬]
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
১১৯,৬৪৬[১][২] | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
ভারত বাংলাদেশ | |
ভারত | ৭৯,৬৪৬ (২০১১)[১] |
বাংলাদেশ | ৪০,০০০ (2003)[২] |
ভাষা | |
বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী, বাংলা | |
ধর্ম | |
হিন্দুধর্ম (বৈষ্ণব ধর্ম) | |
সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠী | |
মৈতৈ জনগণ, বাঙালি জাতি এবং অসমীয়া জাতি |
বৈশিষ্ট
সম্পাদনাভাষার সবচেয়ে স্বাতন্ত্র্যসূচক বৈশিষ্ট্য হল এটি তিব্বতী-বর্মী বা মৈতৈই ভাষার উপাদানে পরিপূর্ণ।
জীবন ধারা
সম্পাদনাতাঁরা বেশিরভাগই কৃষক, যদিও তাঁদের তরুণ প্রজন্ম ক্রমশ শিক্ষিত হয়ে উঠছে এবং অন্যান্য সুযোগের সন্ধান করছে। তাঁরা নিজেদের সংস্কৃতি/ধর্ম নিয়ে খুব গর্বিত এবং নৃত্যে পারঙ্গমতার জন্য বাংলাদেশে সুপরিচিত। নিজেদের হিন্দু সংস্কৃতি/ধর্মের সাথে তাঁদের পরিচয় অনেকটাই আবদ্ধ। মূলত এই কারণে, বাংলাদেশে বিষ্ণুপ্রিয়াদের মধ্যে এখনও প্রায় সকলেই হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী এবং ভারতে কিছু খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী আছেন।[৭]
সংস্কৃতি
সম্পাদনাএই অঞ্চলের জনগণের সংস্কৃতি মৈতৈদের সংস্কৃতি দ্বারা ভীষণ ভাবে প্রভাবিত। এর মধ্যে সামান্য কিছু ব্যতিক্রম আছে, কিছু মানুষ মৈতৈদের মধ্যে আগেকার প্রচলিত সংস্কৃতিই পছন্দ করেন।
দাবী
সম্পাদনা২০২০-এর দশকে, বিষ্ণুপ্রিয়া লোকেরা দাবি করতে শুরু করেন যে আসামে বসবাসকারী তাঁদের জাতিসত্তার লোকদের আসামের "আদিবাসীদের" মর্যাদা দেওয়া উচিত এবং তাঁদের সঙ্গে রাজ্যের অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের মতো আচরণ করা উচিত।[৮]
বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থা
সম্পাদনাআসাম সরকার তাঁদের অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর (ওবিসি) বিভাগের অধীনে শ্রেণীবদ্ধ করেছে বটে কিন্তু মণিপুরে বিষ্ণুপ্রিয়াদের কোন আইনি স্বীকৃতি বা সরকারী মর্যাদা নেই। ত্রিপুরা সরকার তাঁদের ভাষাকে "স্টেট কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং" এর "ট্রাইবাল ল্যাঙ্গুয়েজ সেল" এর অধীনে শ্রেণীবদ্ধ করেছে। [৯]
উল্লেখযোগ্য মানুষ
সম্পাদনাগুরু বিপিন সিং ছিলেন একজন পরিচালক, নৃত্য পরিচালক এবং মণিপুরী নৃত্যের শিক্ষক। তাঁর বিখ্যাত ছাত্রীদের মধ্যে আছেন প্রীতি প্যাটেল[১০], শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায়[১১] প্রমুখ। বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা, যিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি, তিনিও এইখানকারই মানুষ।
তথ্যসূত্র এবং টীকা
সম্পাদনা- ↑ The official census data as well as the Ethnologue record the name as "Bishnupriya" and not "Bishnupriya Manipuri".[৩]
- ↑ ক খ "Abstract of Speakers' Strength of Languages and Mother Tongues - 2011" (পিডিএফ)। censusindia.gov.in। ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০২২।
- ↑ ক খ "Bishnupuriya"। Ethnologue (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০২২।
- ↑ "FAMILY-WISE GROUPING OF THE 122 SCHEDULED AND NON-SCHEDULED LANGUAGES – 2001"। censusindia.gov.in। ২৪ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ মে ২০২২।
- ↑ Frawley, William (২০০৩)। International Encyclopedia of Linguistics: 4-Volume Set (ইংরেজি ভাষায়)। Oxford University Press, USA। পৃষ্ঠা 481। আইএসবিএন 978-0-19-513977-8।
- ↑ Haokip, Pauthang (২০১১)। Socio-linguistic Situation in North-East India (ইংরেজি ভাষায়)। Concept Publishing Company। পৃষ্ঠা 8। আইএসবিএন 978-81-8069-760-9।
- ↑ Asher, R. E.; Moseley, Christopher (১৯ এপ্রিল ২০১৮)। Atlas of the World's Languages (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। পৃষ্ঠা 97। আইএসবিএন 978-1-317-85108-0।
- ↑ "Bishnupriya Manipuri in India"। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "Plea for indigenous status"। www.telegraphindia.com। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৩।
- ↑ "Bishnupriya Manipuris demand satellite autonomous council"। The Sentinel। ২৪ নভেম্বর ২০২০। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুলাই ২০২২।
The Tripura government has categorized and placed the Bishnupriya Manipuri language under the Tribal Language Cell of the State Council of Educational Research and Training, while in Assam they are considered among Other Backward Classes (OBC), whereas in Manipur from where these people originated remains status-less
- ↑ "Priti Patel"। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
- ↑ "National Award in Manipuri Dance: প্রথম বাঙালি হিসেবে মণিপুরী নৃত্যে জাতীয় পুরস্কার পেলেন ডঃ শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মধ্যে প্রথম মণিপুরী নৃত্যে ডি.লিট করেন শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এবার তাঁর ঝুলিতে এল প্রথম বাঙালি হিসেবে মণিপুরী নৃত্যে জাতীয় পুরস্কার (National Award in Manipuri Dance)৷ Read more at: https://www.etvbharat.com/bengali/west-bengal/state/kolkata/dr-shruti-banerjee-became-the-first-bengali-to-win-the-national-award-in-manipuri-dance/wb20221206200320334334872"। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।
|title=
এ বহিঃসংযোগ দেয়া (সাহায্য)