গুরু বিপিন সিং (২৩ আগস্ট ১৯১৮ - ৯ জানুয়ারী ২০০০) ছিলেন মণিপুরী নৃত্যের পরিচালক, কোরিওগ্রাফার এবং শিক্ষক। তিনি মণিপুরী গীত-নৃত্যের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করে গেছেন। পাশাপাশি তিনি বৈষ্ণব পদাবলীরো চর্চা করে গেছেন। তিনি বহু প্রচলিত এবং বিখ্যাত গীত-নৃত্যের সংগ্রহ করে এগুলোকে বিশুদ্ধ করে ব্যবহার করেছিলেন। গুরু বিপিন সিংহ ধ্রুপদী ভারতীয় গীত-নৃত্যের সাথে জড়িত বিভিন্ন লিরিক তার কলকাতা এবং মণিপুরের ঘরে ব্যক্তিগত ভাবে সংগ্রহ করে রেখেছেন।

গুরু বিপিন সিংহ
জন্ম২৩ আগস্ট, ১৯১৮ ইং
সিঙ্গারী গ্রাম, শিলচর, আসাম, ভারত
মৃত্যু৯ জানুয়ারী, ২০০০ ইং
কলকাতা শহরে
জাতীয়তাভারতীয়
পরিচিতির কারণনৃত্য

জন্ম সম্পাদনা

গত শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে অর্থাৎ ১৯১৮ সালের ২৩ শে আগস্ট, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন সিলেটে এসে প্রথমবারের মতো মণিপুরী নৃত্য দেখে যান তার ঠিক পনেরো মাস পর গুরু বিপিন সিংহ জন্মগ্রহণ করেন, পুণ্য মাতৃভূমি সিঙ্গারী গ্রামে,পুণ্য লেইখমসেনা সিংহ ও পুণ্যবতী গর্ভধারিনী মাতা ইন্দুবালা দেবীর কোলে।

কর্মজীবন সম্পাদনা

ঐতিহ্যবাহী ডাক্তার এবং একজন গায়কের পুত্র, সিং শৈশবকাল থেকেই প্রশিক্ষণ লাভ করা শুরু করেন, মণিপুরী নৃত্যের দিকে মনোনিবেশ করার আগে, তিনি বিশেষত গুরু আমুদন শর্মার অধীনে মণিপুরের রাজার সহায়তায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। যদিও তিনি চলচ্চিত্রের কোরিওগ্রাফার হিসাবে উপার্জন করতেন, তা সত্ত্বেও তিনি ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের ধরন সম্পর্কে জ্ঞান বাড়াতে মনোনিবেশ করেন। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে, তিনি ইম্ফলে মহিলাদের জন্য গোবিন্দজী নরতনালয় নৃত্য বিদ্যালয় এবং ১৯৭২ সালে কলকাতার মণিপুরী নরতনালয় নৃত্য বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।

তিনি বহু নৃত্য-নাটক এবং একক নৃত্যের কোরিওগ্রাফ করেছিলেন এবং ঝাভারি বোনদ্ব্য (দর্শনা ঝভেরি), কালাবতী দেবী, বিনোদিনী দেবী, গুণেশ্বরী দেবী, প্রীতি প্যাটেল, শ্রুতি বন্দ্যোপাধ্যায়, লতাসানা দেবী, লাইলি বসু, ইন্দ্রানী দেবী, মনোরমা দেবী, পৌষালি চ্যাটার্জী, সোহিনী রায়, বিম্বাবতী দেবী, রঞ্জিনী বসুর মত অনেক বিখ্যাত ব্যক্তি তার কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করেন।

সম্মান এবং পুরস্কার সম্পাদনা

তিনি জীবনে বহু সম্মান এবং পুরস্কার অর্জন করেছেন। এর ভিতরে উল্লেখযোগ্য কিছু–

  • নর্তনাচার্জ (১৯৫৯)
  • হাঞ্জাবা (১৯৬১)
  • জাতীয় সঙ্গীত নাটক একাডেমি (১৯৬৫ ইং)[১],
  • শ্রীহট্ট সম্মেলন পুরস্কার (১৯৮১)
  • বিশ্ব উন্নয়ন সংসদ পুরস্কার (১৯৮২)
  • কলাভারতী (১৯৮৩)
  • প্রতিশ্রুতি পরিষদ পুরস্কার (১৯৮৪)
  • সারংগদেব ফেলোশিপ (১৯৮৪)
  • উদয় শংকর পুরস্কার (১৯৮৬)
  • ওজা রত্ন (১৯৮৮)
  • সংগীত শ্যামলা পুরস্কার (১৯৮৮)
  • এমিরাটস ফেলোশিপ (১৯৮৯)
  • কালিদাস সম্মান (১৯৯০)
  • বহুলকা পুরঙ্কার (১৯৯১)
  • অনামিকা কলা সঙ্গম -পুরস্কার (১৯৯২)
  • পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য একাডেমি পুরস্কার (১৯৯২)

সম্মান জানানো সংস্হা এবং সাল যথাক্রমে -

  • রূপকার ডান্স একাডেমি (১৯৯৪)
  • নূপূর ডান্স একাডেমি (১৯৯৫)
  • সুরনন্দন ভারতী (১৯৯৫)
  • শিরোমণি পুরস্কার (১৯৯৬)
  • নিখিল বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী পুরস্কার (১৯৯৭)
  • অঙ্গাহার ডান্স একাডেমী (১৯৯৮)

ইত্যাদি।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "SNA: Awardeeslist::"। ২৭ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ নভেম্বর ২০১৬