মুযাফফর গাজী

মালিকুল মুজাফফর শিহাবুদ্দিন গাজী ইবনে আদিল আবু বকর ইবনে নাজমুদ্দিন আইয়ুব ছিলেন মায়াফারিকিন (১২২০-১২৪৭) এর আয়ুবী শাসক। মুজাফফর গাজী ছিলেন সুলতান আল-আদিলের অন্যতম পুত্র, যিনি মধ্যপ্রাচ্যের ছোট আইয়ুবিদ রাজ্য শাসন করেছিলেন যখন তাদের পিতা মিশরে রাজত্ব করেছিলেন।

প্রারম্ভিক বছর

1211 (608) সালে তার পিতা তাকে এডেসা এবং সরুজ দেন এবং পরবর্তী বছরগুলিতে তিনি এডেসার জন্য একটি দুর্দান্ত নতুন গেট তৈরি করেন। 1220-21 (617) সালে তিনি তার ভাই আল-আশরাফের সাথে এই শহরগুলি বিনিময় করেন, পরিবর্তে মাইয়াফারিকিন এবং আখলাত গ্রহণ করেন। ভাইয়েরা এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিলেন যে আল আশরাফ, যার কোন সন্তান ছিল না, তিনিও আল মুজাফফর গাজীকে তার নিজের ডোমেনে তার ভাইসরিজেন্ট এবং উত্তরাধিকারী বানিয়েছিলেন।

এই ব্যবস্থার পরের বছর, তাদের পিতা আল আদিল মিশরে ক্রুসেডার আক্রমণের মাঝখানে মারা যান এবং তার জ্যেষ্ঠ পুত্র আল-কামিল তার স্থলাভিষিক্ত হন। আল আশরাফ ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে অভিযানে তার ভাইকে সমর্থন করার জন্য দক্ষিণে গিয়েছিলেন এবং তার অনুপস্থিতিতে আল মুজাফফর গাজী তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহে উঠেছিলেন। শাস্তিতে তিনি আল আশরাফের ডোমেনের উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হন এবং তার নিজের মাইয়াফারিকিনে নামিয়ে দেওয়া হয়। তবে দেখা যাচ্ছে যে এই ঘটনা ছাড়াও ভাইরা অন্যথায় ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল।

আনাতোলীয় অভিযান

এর পর আল মুজাফ্ফর গাজী অন্যান্য স্থানীয় শাসকদের বিরুদ্ধে তার আত্মীয়দের সাথে বেশ কয়েকটি অভিযানে অনুগতভাবে অংশ নিয়েছিলেন, আইয়ুবিদের ডোমেইনগুলি দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ার পার্বত্য অঞ্চলে আরও বিস্তৃত করেছিলেন। এর মধ্যে একটি, 1230 সালে, জালাল আদ-দিন মিংবার্নুর বিরুদ্ধে, শেষ খওয়ারেজমশাহ, যার সেনাবাহিনী আখলাতের আইয়ুবিদ শহর দখল করেছিল। আল মুজাফ্ফর গাজী আইয়ুবিদ সৈন্যদের একটি সম্মিলিত সেনাবাহিনী এবং সেলজুক শাসক আলা আদ-দিন কায়কুবাদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য বাহিনী নিয়ে আসেন যারা খওয়ারেজমিয়ান হুমকির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। 9 আগস্ট 1230 (25 রমজান 627) ইয়াসি-চিমেনের যুদ্ধে খওয়ারেজমিয়ান বাহিনী পরাজিত হয় এবং আইয়ুবিদরা আখলাত পুনরুদ্ধার করে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ আইয়ুবিদের প্রচারণা ছিল আমির মাসউদের বিরুদ্ধে, যিনি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ দুটি শহর আমিদা এবং হাসানকেফ দখল করেছিলেন। সমস্ত আইয়ুবিদ আমিরাতের বাহিনী নিয়ে একটি বৃহৎ সম্মিলিত সেনাবাহিনীকে একত্রিত করার পরোয়ানা দেওয়ার জন্য এগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মাইয়াফারিকিন থেকে আল মুজাফফরের বাহিনী আল-কামিলের মিশরীয় সেনাবাহিনী এবং আল-আশরাফের সিরিয়ান সেনাবাহিনীর সাথে যোগ দেয় যখন তারা উত্তরে দিয়ারবাকিরের দিকে অগ্রসর হয়। তারা 5 অক্টোবর 1232 (20 জুল হিজ্জা 629) আমিদার সামনে আঁকতে থাকে এবং মাত্র তেরো দিন পর আল-মাসুদ শহরটি আত্মসমর্পণ করে। আল কামিল আল মুজাফ্ফর গাজীকে আল আশরাফের সাথে আল-মাসুদের অন্য দখলে থাকা হাসানকিফ শহরে যেতে এবং মাসুদকে তাদের সাথে কঠোর প্রহরায় নিয়ে আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাসানকিফের গ্যারিসন 1232 সালের নভেম্বর পর্যন্ত (সাফার 630) শহর রক্ষা অব্যাহত রাখে। আল মুজাফ্ফর গাজী এই অভিযান থেকে লাভবান হননি কারণ দুটি বিজিত শহর সুলতানের পুত্র আস-সালিহ আইয়ুবকে দেওয়া হয়েছিল।

মঙ্গোল হুমকি

আল-মুজাফ্ফর গাজী মায়্যাফারিকীনের উপর দীর্ঘ ও শান্তিপূর্ণ রাজত্ব উপভোগ করেছিলেন এবং তিনি একটি মাদ্রাসা নির্মাণ করেছিলেন, মসজিদকে প্রসারিত করেছিলেন এবং দুর্গের উন্নতি করেছিলেন। মাইয়াফারিকিন আইয়ুবিদের ডোমেনের বাইরের প্রান্তে ছিল এবং আল মুজাফ্ফর গাজী এবং তার পুত্র আল-কামিল মুহাম্মদের রাজত্বকালে, যিনি 1247 (645) সালে তাঁর উত্তরাধিকারী হন, শহরটি সেলজুক এবং মঙ্গোলদের কাছ থেকে ক্রমাগত হুমকির মধ্যে ছিল। সবচেয়ে গুরুতর হুমকির মধ্যে একটি 1240-41 (638) এ আসে যখন একটি মঙ্গোল দূতাবাস এসে শহরের আত্মসমর্পণের দাবি জানায়। কোনোভাবে আল-মুজাফ্ফর গাজী ঘুষ দিতে বা তাদের চলে যেতে রাজি করাতে সক্ষম হন। তিনি 1247 সালে মারা যান এবং তার পুত্র আল-কামিল মুহাম্মদ তার স্থলাভিষিক্ত হন।