বাকমি ( জাভানীয়: ꦧꦏ꧀ꦩꦶ ) বা বামি ( থাই: บะหมี่, উচ্চারিত [bā.mìː] ) হল গমের আটা থেকে প্রস্তুত এক ধরনের নুডলস, যা ঐতিহ্যশালী চীনা রান্না থেকে উদ্ভুত। ফুজিয়ান এবং দক্ষিণ চীনের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা চীনা অভিবাসীদের হাত ধরে ইন্দোনেশিয়ায় এই বিশেষ নুডলসের প্রচলন ও প্রসার হয়েছিল।[১] এটি সাধারণত সয়া সস সহযোগে প্রস্তুত করা হয় এবং উপাদান হিসাবে এতে শুয়োরের মাংস ব্যবহার করা হয়। অধুনা চীনা-শৈলীর গমের নুডলস সবচেয়ে জনপ্রিয় নুডল হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে যেখানে চীনা জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্য সেখানে এই গমের নুডলস বেশ জনপ্রিয়।

নেদারল্যান্ডে বামি গোরেং (ভাজা বাকমি )

চীনা-শৈলীর গমের নুডলস ইন্দোনেশিয়ায় বাকমি নামে পরিচিত। চীন শৈলীতে প্রস্তুত গমের নুডলস বাকমি এবং জাপানি উডন এই দুইয়ের মিশ্রণে একটি জনপ্রিয় আঞ্চলিক খাবার প্রস্তুত হয়। ইন্দোনেশিয়ায় বাকমির বিভিন্ন প্রকরণ রয়েছে। বাকমি নামটির আক্ষরিক অর্থ মাংস দিয়ে বানানো নুডলস। মাংসের মধ্যে মুরগি এবং গরুর মাংস সহযোগে এই নুডলস তৈরি হয়।

ইন্দোনেশিয়ার খাবারে চীনা প্রভাব স্পষ্টভাবে পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন আঞ্চলিক খাবার যেমন বাকমি, মি আইয়াম, পাংসিট, মি গোরেং এবং কুয়েতিয়াউ গোরেং ইত্যাদি বেশিরভাগ খাবারই চীনা রন্ধনপ্রনালীর ফসল।[২] ডাচ ভাষায় ব্যবহৃত অনেক শব্দ যেমন মি এবং বামি এই শব্দগুলি ইন্দোনেশিয় শব্দ বাকমি থেকে এসেছে। ইন্দোনেশিয়ায় ডাচ ঔপনিবেশিক আমলে সেই দেশে ডাচ ভাষার প্রবর্তন হয়েছিল। ইন্দোনেশিয়ান খাবার নেদারল্যান্ডসে খুবই জনপ্রিয় এবং বামি গোরেং (ভাজা বাকমি) সেই দেশের একটি জনপ্রিয় খাবার।

বাকমি খাবারটি সাধারণত সিদ্ধ নুডলস হিসাবে পরিবেশন করা হয়। যখন বাকমি নুডল স্যুপে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় তখন নুডলকে প্রথমে আলাদাভাবে সিদ্ধ করা হয় এবং তারপর ঝোলে যোগ করা হয়। নুডলসে স্বাদ আনতে সাধারণত পশুর চর্বি মেশানো হয় হয়। শুকরের মাংস, মুরগি বা গরুর মাংস এতে ব্যবহার হয়। এরপর নুডুলসগুলিকে বিভিন্ন টপিং (খাবার পরিবেশনের সম্য বিভিন্ন শাক-সব্জী বা সস দিয়ে খাবারকে সাজানো হয়। সেই শাক-সব্জী ও ব্যবহৃত বিভিন্ন খাদ্য উপাদানকে বলা হয় টপিং) দিয়ে পরিবেশন করা হয়। টপিং হিসেবে চার সিউ (叉燒) বা বারবিকিউ করা শুয়োরের মাংসের ব্যবহার হয়। এছাড়াও চাইনিজ সবুজ শাকসবজি এবং এক বাটি ঝোল বাকমির সাথে আনুসঙ্গিক পদ হিসাবে পরিবেশিত হয়।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. (Indonesian)
  2. Heinz Von Holzen (২০১৪)। A New Approach to Indonesian Cooking। Marshall Cavendish International Asia Pte Ltd। পৃষ্ঠা 15। আইএসবিএন 9789814634953। সংগ্রহের তারিখ ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬