বব বিমন
রবার্ট বব বিমন (ইংরেজি: Bob Beamon; জন্ম: ২৯ আগস্ট, ১৯৪৬) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ট্র্যাক এন্ড ফিল্ড অ্যাথলেট। ১৯৬৮ সালে মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে লং জাম্প বা দীর্ঘ লম্ফে বিশ্বরেকর্ড করে স্মরণীয় হয়ে আছেন। এ রেকর্ডটি দীর্ঘ ২২ বছর ৩১৬ দিন অক্ষুণ্ন ছিল যা পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে মাইক পাওয়েল ভেঙ্গে ফেলেন। এটি দ্বিতীয় দীর্ঘতম রেকর্ড ছিল। তার পূর্বে জেসি ওয়েন্স রেকর্ডটি ১৯৩৫ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ২৫ বছর নিজের দখলে রেখেছিলেন।
১৯৯২ সালে বব বিমন | ||||||||||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জাতীয়তা | মার্কিন | |||||||||||||||||||
জন্ম | সাউথ জ্যামাইকা, কুইন্স, নিউইয়র্ক | ২৯ আগস্ট ১৯৪৬|||||||||||||||||||
ক্রীড়া | ||||||||||||||||||||
ক্রীড়া | ট্র্যাক এন্ড ফিল্ড | |||||||||||||||||||
বিভাগ | দীর্ঘ লাফ | |||||||||||||||||||
কলেজ দল | ইউটেপ মাইনার্স | |||||||||||||||||||
প্রশিক্ষক | রাল্ফ বোস্টন | |||||||||||||||||||
পদকের তথ্য
| ||||||||||||||||||||
৬ আগস্ট, ২০১২ তারিখে হালনাগাদকৃত |
প্রারম্ভিক জীবনসম্পাদনা
নিউইয়র্কের কুইন্সের সাউথ জ্যামাইকায় বব বিমন জন্মগ্রহণ করেছিলেন। দিদির সাহচর্য্যে তিনি শৈশবকাল অতিক্রমণ করেন। দিদি বলেছিলেন যে, যখন বিমনের বয়স ছিল মাত্র ৮ মাস, তখন তার মা ২৫ বছর বয়সে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি দেখতে পান যে বাবা তার মাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করছেন। বাবা তাকে দিদির কাছে পাঠিয়ে দেন যদি তার মা তাকে বাড়ীতে ফেরত আনেন তাহলে বিমনকে হত্যা করারও হুমকি দেন।
জ্যামাইকা হাই স্কুলে অধ্যয়নকালীন তিনি ল্যারি এলিস নামীয় একজন জনপ্রিয় ট্র্যাক কোচের সুদৃষ্টিতে পড়েন। পরবর্তীতে বিমন অল-আমেরিকান ট্র্যাক এন্ড ফিল্ড দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে পড়েছিলেন। ১৯৬৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লং জাম্পের শীর্ষ তালিকায় ২য় স্থানে ছিলেন এবং ট্র্যাক এন্ড ফিল্ড বিষয়ে বৃত্তি নিয়ে এল প্যাসোয় অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এট এল প্যাসোতে অধ্যয়ন করেন।[১]
বর্ণবৈষম্য নীতিতে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ব্রাইঘাম ইয়াং ইউনিভার্সিটির বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতা করতে অস্বীকার করায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে বহিস্কার করেন। এরফলে তিনি কোচের সংষ্পর্শবিহীন অবস্থায় থাকেন। পরবর্তীতে রাল্ফ বোস্টন নামীয় একজন অলিম্পিয়ান অনানুষ্ঠানিকভাবে তার কোচের দায়িত্ব পালন করেন।[২]
১৯৬৮ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক্সসম্পাদনা
মেক্সিকো সিটিতে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে বব বিমন শীর্ষস্থানীয় প্রতিযোগী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। ঐ বছর তিনি ২৩টি মিটের ২২টিতেই জয়লাভ করেছিলেন। তন্মধ্যে খেলোয়াড়ী জীবনের সেরা ৮.৩৩ মিটার (২৭ ফুট ৪ ইঞ্চি) এবং বিশ্বের সেরা ৮.৩৯ মিটারও (২৭ ফুট সাড়ে ছয় ইঞ্চি) ছিল। কিন্তু বাতাসের সহযোগিতা নিয়ে বিশ্ব রেকর্ডটি সৃষ্টি হয়েছে এ অজুহাতে তা রেকর্ড বইয়ে স্থান পায়নি। অলিম্পিকের চূড়ান্ত প্রতিযোগিতায় তার অংশগ্রহণের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ ছিল। কেননা, যোগ্যতা নির্ধারণী পর্বে তিনি প্রথম দু'টি চেষ্টায় নিয়ম লঙ্ঘন করেছিলেন। একটিমাত্র সুযোগ বাকী থাকা অবস্থায় সঠিকভাবে লাফ দিয়ে চূড়ান্ত-পর্বে উত্তীর্ণ হন। সেখানে তিনি পূর্বেকার দুই স্বর্ণপদক জয়ী আমেরিকার রাল্ফ বোস্টন (১৯৬০) এবং গ্রেট ব্রিটেনের লিন ডেভিস (১৯৬৪) ও দু'বারের ব্রোঞ্জপদক জয়ী সোভিয়েত ইউনিয়নের ইগর তে-ওভানেসিয়ানের মুখোমুখি হন।[৩]
১৮ অক্টোবর, ১৯৬৮ সালে অনুষ্ঠিত লং জাম্পের প্রথম চেষ্টাতেই ৮.৯০ মিটার (২৯ ফুট আড়াই ইঞ্চি) দূরত্ব অতিক্রমণ করে বিশ্বরেকর্ড সৃষ্টি করেন যা পূর্বেকার বিশ্বরেকর্ডের চেয়ে ৫৫ সে.মি (পৌনে বাইশ ইঞ্চি) বেশি ছিল। ঘোষক যখন এ দূরত্বের কথা অপ্রচলিত মেট্রিক পদ্ধতিতে ঘোষণা করেন, তখনও বিমন আত্মস্থ করতে পারেননি যে তিনি কি ধরনের র্কীতি গড়েছেন।[৪]
অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ের পর তিনি কখনো ৮.২২ মিটারের (২৬ ফুট পৌনে বার ইঞ্চি) বেশি লাফ দিতে সক্ষম হননি।
পরবর্তী জীবনসম্পাদনা
মেক্সিকো সিটি অলিম্পিকের স্বল্প সময় পরেই বব বিমন ফিনিক্স সান্স বাস্কেটবল দলের সাথে সম্পৃক্ত হন।[৫] ১৯৭২ সালে এদেলফি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।[৬] বর্তমানে তিনি শিকাগো স্ট্যাট ইউনিভার্সিটিতে সহযোগী অ্যাথলেটিক পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। এছাড়াও তিনি ইলিনয়িস রাজ্যের শিকাগোতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
সম্মাননাসম্পাদনা
বিমন ন্যাশনাল ট্র্যাক এন্ড ফিল্ড হল অফ ফেমে স্থান পেয়েছেন। পাশাপাশি ১৯৮৩ সালে ইউনাইটেড স্ট্যাটস অলিম্পিক হল অফ ফেম প্রবর্তনের পর তিনি ঐ বছরেরই পদবীধারীদের একজন ছিলেন।[৬]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Williams, Lena. "TRACK AND FIELD; Soothing an Old Ache", The New York Times, January 1, 2000. Accessed November 7, 2007.
- ↑ Bob Beamon Biography ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩ মার্চ ২০১৬ তারিখে at thehistorymakers.com
- ↑ Rob Bagchi (নভেম্বর ২৩, ২০১১)। "50 stunning Olympic moments No2: Bob Beamon's great leap forward"। The Guardian।
- ↑ "CCTV International"। Cctv.com। ২০০৮-১০-১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-২৯।
- ↑ Draft Oddities ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১ জুলাই ২০১০ তারিখে, nba.com
- ↑ ক খ "The HistoryMakers"। The HistoryMakers। ২০১৬-০৩-০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-২৯।
আরও পড়ুনসম্পাদনা
- Beamon, Bob, and Milana Walter Beamon. (1999). The Man Who Could Fly: The Bob Beamon Story. Columbus, MS: Genesis Press. আইএসবিএন ১-৮৮৫৪৭৮-৮৯-৫.
- Schaap, Dick. (1976). The Perfect Jump. New York, NY: New American Library.
বহিঃসংযোগসম্পাদনা
রেকর্ড | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী রাল্ফ বোস্টন ইগর তার-ওভানেজিয়ান |
লং জাম্পে পুরুষদের বিশ্বরেকর্ড ১৮ অক্টোবর, ১৯৬৮ - ৩০ আগস্ট, ১৯৯১ |
উত্তরসূরী মাইক পাওয়েল |
পুরস্কার | ||
পূর্বসূরী জিম রায়ান |
বর্ষসেরা ট্র্যাক এন্ড ফিল্ড অ্যাথলেট ১৯৬৮ |
উত্তরসূরী বিল টুমে |
স্বীকৃতি | ||
পূর্বসূরী ইগর তার-ওভানেজিয়ান |
লং জাম্পে বর্ষসেরা মানব 1968 |
উত্তরসূরী ইগর তার-ওভানেজিয়ান ওয়াদেমার স্টেপিয়ান |