ববি অ্যাবল

ইংরেজ ক্রিকেটার

রবার্ট অ্যাবল (ইংরেজি: Bobby Abel; জন্ম: ৩০ নভেম্বর, ১৮৫৭ - মৃত্যু: ১০ ডিসেম্বর, ১৯৩৬) সারের রদাহাইথ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৮৮১ থেকে ১৯০৪ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন।

ববি অ্যাবল
আনুমানিক ১৯০০ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ববি অ্যাবল
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামরবার্ট অ্যাবল
জন্ম(১৮৫৭-১১-৩০)৩০ নভেম্বর ১৮৫৭
রদাহাইথ, সারে, ইংল্যান্ড
মৃত্যু১০ ডিসেম্বর ১৯৩৬(1936-12-10) (বয়স ৭৯)
স্টকওয়েল, লন্ডন, ইংল্যান্ড
ডাকনামদ্য গাভনর
উচ্চতা৫ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৬৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি অফ ব্রেক
ভূমিকাব্যাটসম্যান
সম্পর্কবব উইলকিনসন (ভাইপো-পুত্র), টম অ্যাবল, উইলিয়াম অ্যাবল, জর্জ অ্যাবল, রবার্ট অ্যাবল (পুত্র)
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৫৭)
১৬ জুলাই ১৮৮৮ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট২৪ জুলাই ১৯০২ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৮৮১-১৯০৪সারে
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ১৩ ৬২৭
রানের সংখ্যা ৭৪৪ ৩৩১২৮
ব্যাটিং গড় ৩৭.২০ ৩৫.৪৬
১০০/৫০ ২/২ ৭৪/১৪৫
সর্বোচ্চ রান ১৩২* ৩৫৭*
বল করেছে ১৪৪০৮
উইকেট ২৬৩
বোলিং গড় ২৪.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৬/১৫
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৩/০ ৫৮৭/০
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৮৮১ থেকে ১৯০৪ সময়কালে সারের প্রতিনিধিত্ব করেন।[১] ‘গাভনর’ ডাকনামে পরিচিত ছিলেন ববি অ্যাবল। মূলতঃ উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঠে নামতেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে অফ-ব্রেক বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন তিনি।

খেলোয়াড়ী জীবন সম্পাদনা

১৮৮১ সালে সারে দলের সদস্যরূপে প্রথম খেলতে নামেন। কিন্তু ১৯৮৩ সালের পূর্ব-পর্যন্ত সফলতা পাননি। ১৮৮৬ সালে প্রথমবারের মতো ১০০০ রান তুলেন।[২] ১৮৮৮ সালে ১৩২৩ রান তুলেন। তন্মধ্যে নয়বার পঞ্চাশোর্ধ্ব রান সংগ্রহ করেছিলেন।[২] ঐ বছরেই প্রথম টেস্ট খেলায় অংশ নেন। ওভালে চার্লস টার্নারের ন্যায় বোলারদের মোকাবেলা করে ইংল্যান্ডের টেস্ট জয়ে তিনি ৭০ রান তুলেন। কেপটাউনে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অ্যাবল ১২০ রান করেন। এর বিপরীতে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৭ ও ৪৩ রানে অল-আউট হয়েছিল। ফলে প্রতিপক্ষের উভয় ইনিংসে সংগৃহীত মোট রানের চেয়েও তার রান সংখ্যা অধিক ছিল।

পরবর্তী চৌদ্দ বছর ইংল্যান্ডের অন্যতম সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। কেবলমাত্র ১৮৯৩ সালে আঘাতের কারণে তেমন খেলতে পারেননি। ১৮৯০ সালে টেস্ট দলে তাকে নেয়া হয়নি। তবে, ১৮৯১ সালে নিজের স্বাভাবিক ক্রীড়াশৈলীতে ফিরে আসেন ও পরের শীতে অস্ট্রেলিয়া সফরে ভালো করেন।

১৮৯৫ সালে অসাধারণ ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। মাত্র চারজন খেলোয়াড়ের একজনরূপে ২০০০ রান তুলেন। তন্মধ্যে ওভালে এসেক্সের বিপক্ষে তিনি তার প্রথম দ্বি-শতক করেন। তবে, ১৮৯৬ সালের পর সমস্যাসঙ্কুল চোখের সমস্যায় ভুগলে অনিচ্ছাস্বত্ত্বেও তাকে টেস্ট দলের বাইরে রাখতে হয়। ১৮৯৭ ও ১৮৯৮ সালেও ২০০০ রান তুলেছিলেন। ১৮৯৯ সালে ২৬৮৫, ১৯০০ সালে ২৫৯২ ও ১৯০১ সালে ৩৩০৯ রান তোলার পর পুনরায় ১৯০২ সালে ২০০০ রান তুলেন।[২]

 
১৯০১ সালের সংগৃহীত স্থিরচিত্রে ববি অ্যাবল

অর্জনসমূহ সম্পাদনা

কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শুরুর দিককার বছরগুলোয় সর্বাধিক প্রভাববিস্তারকারী ব্যাটসম্যানদের একজন ছিলেন। প্রথম ইংরেজ খেলোয়াড় হিসেবে ব্যাটিং উদ্বোধনে নেমে টেস্ট ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলে অপরাজিত থাকেন। এছাড়াও প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ধারাবাহিকভাবে কয়েক মৌসুম ২০০০ রান তুলেন যা ১৮৯৫ থেকে ১৯০২ সাল পর্যন্ত করেছিলেন। ১৮৯৯ সালে ওভালে সমারসেটের বিপক্ষে সারে দলের সদস্যরূপে ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করে অপরাজিত থাকেন। সর্বাধিক দলীয় ইনিংস ৮১১ রানের মধ্যে তিনি করেছিলেন অপরাজিত ৩৫৭* রান। এটি অদ্যাবধি সারে দলের রেকর্ডরূপে চিহ্নিত হয়ে আছে। পরবর্তীতে ১৯৩৮ সালে ওভালে লেন হাটন ৩৬৪ রান করেছিলেন। এছাড়াও, ১৯০২ সালে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় রেকর্ডসংখ্যক সর্বাধিক ৪২ খেলায় অংশ নেন।

১৮৯০ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা পুরস্কার পান।[৩] ঐ পুরস্কারের উপ-শিরোনাম দেয়া হয় বর্ষসেরা নয় ব্যাটসম্যান

অবসর সম্পাদনা

১৯০২ সালে ব্যাটিং অনুপযোগী উইকেটে টিকে থাকার কারণে জাতীয় দল নির্বাচকমণ্ডলী শেফিল্ড ও ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে তাকে মনোনীত করেন। কিন্তু তিনি কেবলমাত্র চারবার সাধারণমানের রান তুলেন। ১৯০৩ সালে আঘাতের ফলে সারে দল নির্বাচকমণ্ডলী জুলাইয়ের শুরুতে তাকে বাদ দেয়। তাস্বত্ত্বেও ১৯০৪ সালে পুনরায় সুস্থ হলে ২০ খেলার মধ্যে তিনি মাত্র ছয়বার পঞ্চাশের কোটা অতিক্রম করতে সক্ষম হন। ফলশ্রুতিতে তিনি অবসর নিতে বাধ্য হন ও জ্যাক হবস তার স্থলাভিষিক্ত হন।

অবসর গ্রহণের পর অ্যাবল পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান। ১০ ডিসেম্বর, ১৯৩৬ তারিখে ৭৯ বছর বয়সে লন্ডনের স্টকওয়েলে তার দেহাবসান ঘটে। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ডব্লিউজে অ্যাবল ও টিই অ্যাবল তার সন্তান ছিলেন।

খেলার ধরন সম্পাদনা

শারীরিকভাবে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি (১.৬৩ মিটার) উচ্চতার অধিকারী অ্যাবল পাতলা গড়নের ছিলেন। খেলোয়াড়ী জীবনের শেষদিকে মারাত্মকভাবে দৃষ্টিশক্তির অভাব বোধ করেন। এরফলে ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ বেগ পেতে হতো। তবে, লেগের দিকের বলগুলোকে পুল মেরে তা পুশিয়ে নিতেন। এছাড়াও একাগ্রতা ও মনোবল বজায় রেখে অনুপযোগী পিচেও সফলতা পেয়েছেন যা দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হন।

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা