বজ্রযান
বজ্রযান (সংস্কৃত: वज्रयान), মন্ত্রযান, তন্ত্রযান, তান্ত্রিক বৌদ্ধধর্ম ও গুহ্য বৌদ্ধধর্ম শব্দগুলির দ্বারা তন্ত্র ও "গোপন মন্ত্র" অনুশীলনকারী বিভিন্ন বৌদ্ধ মতবাদকে বোঝানো হয়। মধ্যযুগীয় ভারতে উদ্ভূত এই মতবাদগুলি পরবর্তীকালে তিব্বত, ভুটান ও পূর্ব এশিয়ায় প্রসারিত হয়। তিব্বতে বৌদ্ধ তন্ত্রকে বজ্রযান নামে অভিহিত করা হয়। অন্যদিনে চীনে এটি তাংমি হানমি (漢密) বা "চীনা গুহ্যবাদ" (唐密) বা মিজোং (密宗 বা "গুহ্যবাদী সম্প্রদায়"), পালি ভাষায় "প্যিৎসযান" (ပစ္စယာန) এবং জাপানে মিককিও (密教, "গোপন শিক্ষা") নামে পরিচিত।
"বজ্রযান" শব্দটিকে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদের সময় সাধারণত ডায়মন্ড ভেহিকল (ইংরেজি: Diamond Vehicle; আক্ষরিক অর্থ: হীরক বাহন) বা থান্ডারবোল্ট ভেহিকল (ইংরেজি: Thunderbolt Vehicle; আক্ষরিক অর্থ: বজ্র বাহন) শব্দ দু-টি ব্যবহার করা হয়। হিরে অন্যান্য রত্নের তুলনায় কঠিনতর। তাই অবিনশ্বরতার রূপক হিসাবে এখানে "হীরক" শব্দের অবতারণা করা হয়েছে। অন্যদিকে বজ্র একটি পৌরাণিক অস্ত্র। বজ্রযান আচার-অনুষ্ঠানে প্রথাগতভাবে এটির ব্যবহার প্রচলিত।
মধ্যযুগীয় ভারতের মহাসিদ্ধদের দ্বারা উদ্ভাবিত বজ্রযান মতবাদটি বৌদ্ধ তন্ত্র নামে পরিচিত সাহিত্যের অঙ্গীভূত হয়।[১] এই মতবাদ অনুশীলনের ক্ষেত্রে মন্ত্র, ধারণী, মুদ্রা ও মণ্ডলের ব্যবহার এবং দেবদেবী ও বুদ্ধগণকে প্রত্যক্ষবৎ স্মরণ করার রীতি বিদ্যমান। বজ্রযান শাস্ত্রে এই শব্দটিকে তিনটি "যান" অর্থাৎ বোধিলাভের তিনটি পথের অন্যতম হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে (এই ক্ষেত্রে অপর দু-টি যান হল শ্রাবকযান বা হীনযান ও মহাযান)।
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ Macmillan Publishing 2004, পৃ. 875-876।