ফরাশগঞ্জ
ফরাশগঞ্জ বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি এলাকা। "ফরাসি" ও "গঞ্জ" দুটি শব্দ থেকে ফরাশগঞ্জ নামের উৎপত্তি। এই এলাকার পূর্ব নাম ছিল "ফ্রেন্সগঞ্জ"।[১][২]
ইতিহাস
সম্পাদনাফরাশগঞ্জ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হলো ফরাসিদের গঞ্জ বা বাণিজ্যিক কেন্দ্র। আঠারো শতকে ঢাকার ফরাসি বণিকদের বাণিজ্যিক কেন্দ্র ছিল ফরাশগঞ্জ। ১৭৪০ সালে ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ঢাকায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে ও নওয়াজিশ মোহাম্মদ খানের অনুমতি নিয়ে আহসান মঞ্জিল প্রাসাদের নিকটে তাদের "কুঠি" স্থাপন করে। ১৭৫০ সালে ইংরেজ মালিকানাধীন একটি কারখানা দখল করে এ জায়গায় বসতি স্থাপন করে। এই সময় ফরাসিরা ব্রিটিশদের সাথে একটি কারখানা নিয়ে ছোটখাট দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু নায়েব নাজিম জসরত খানের মধ্যস্থতায় গোলমাল মিটিয়ে নেয়। ১৭৫৭ সালে বাংলায় ইংরেজ শাসন শুরু হওয়ার পূর্বেই এই কারখানার নাম ঢাকা কারখানা করা হয়। ১৭৮০ সালে এখানে ফরাসি বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়।[১] ফরাসিরা এখানে হলুদ, আদা, রসুন ও মরিচের পাইকারি বাজার প্রতিষ্ঠা করে। ফরাসিরা এখানে বসবাসের জন্য রূপলাল হাউজের মতো কিছু অসাধারণ স্থাপত্যশৈলীর দালানকোঠা নির্মাণ করে।[১]
ভৌগোলিক অবস্থান
সম্পাদনাফরাশগঞ্জ পুরান ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর উত্তরে অবস্থিত। এই এলাকায় যাতায়াতের প্রধান সড়ক হলো বি কে দাস রোড ও আহসানুল্লাহ রোড।
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনাফরাশগঞ্জে বেশকিছু ঐতিহাসিক অট্টালিকা রয়েছে, যার অধিকাংশই জরাজীর্ণ। এর মধ্যে বুড়িগঙ্গা নদী তীরের রূপলাল হাউজ অন্যতম। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ও অবৈধ দখলদারদের কারণে এই সুরম্য দ্বিতল বাড়িটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে।[৩] উনিশ শতকে নির্মিত অলঙ্কৃত বাঁকানো ঝুলবারান্দার বড়বাড়িটিও প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত।[৪][৫]
ফরাশগঞ্জে আরেকটি দর্শনীয় স্থান লোহারপুল। এটি তখনকার সময়ের অসাধারণ স্থাপত্যের নিদর্শন বহন করে। এছাড়া ১৮৩২ সালে ঢাকার কালেক্টর ওয়াল্টার ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ যাতায়াতের সুবিধার জন্য সূত্রাপুর খালের ওপর একটি ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ করেন।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ গ রহমান, এস এম মাহফুজুর (২০১২)। "ফরাশগঞ্জ"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (দ্বিতীয় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি।
- ↑ "Once a French business hub"। দ্য ডেইলি স্টার। ২৪ মার্চ ২০০৮। ২৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১৯।
- ↑ আহমেদ, নাজিমুদ্দিন (২০১২)। "রূপলাল হাউস"। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (দ্বিতীয় সংস্করণ)। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি।
- ↑ রহমান, মাহবুবুর; হক, ফেরদৌস আরা (২০০১)। "Multiple Courtyard Mansions of Dhaka: Form and Context" (পিডিএফ)। Traditional Dwellings and Settlements Review। ১২ (২): ৬৮।
- ↑ গিয়াস, দুরদানা (২৪ মার্চ ২০০৮)। "Magnificent Barabari also falls victim to mindless demolition"। দ্য ডেইলি স্টার। ২৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১৯।
- মজুমদার, আর সি (২০০৫) [১৯৭১ সালে প্রথম প্রকাশিত]। History of Ancient Bengal। কলকাতা: তুলসী প্রকাশনী। আইএসবিএন 81-89118-01-3।
- মামুন, মুনতাসীর (২০০৪) [১৯৯৩ সালে প্রথম প্রকাশিত]। ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী। ঢাকা: অনন্যা। আইএসবিএন 984-412-104-3।
আরও পড়ুন
সম্পাদনা- আলি, তওফিক (২৮ জানুয়ারি ২০০৯)। "93 heritage buildings, sites listed for preservation"। দ্য ডেইলি স্টার। ২৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১৯।
- রহমান, মাহবুবুর (৩ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)। "An Architect's Dhaka"। স্টার ক্যাম্পাস। দ্য ডেইলি স্টার। ২৫ জুলাই ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ মার্চ ২০১৯।
- হস্কিন্স, ট্যান্সি (১১ মার্চ ২০১৫)। "Old Dhaka in danger: young volunteers bid to save historic city from developers"। দ্য গার্ডিয়ান।
বাংলাদেশ বিষয়ক এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |