পাবনা জিলা স্কুল

পাবনা জেলার একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
(পাবনা জেলা স্কুল থেকে পুনর্নির্দেশিত)

পাবনা জিলা স্কুল পাবনা জেলার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ এবং বাংলাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও স্বনামধন্য বিদ্যালয়। এখানে তৃতীয় শ্রেণি হতে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাদান কার্যক্রম চলমান। এই বিদ্যালয়ে দুইটি শিফট রয়েছে যথা প্রভাতী শিফট ও দিবা শিফট। প্রভাতি শিফট সকাল ৭টা ১৫ মিনিট থেকে ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এবং দিবা শিফট দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট থেকে ৪টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। প্রভাতী শাখা ক ও খ সেকশনে বিভক্ত। দিবা শাখা গ ও ঘ সেকশনে বিভক্ত ।

পাবনা জিলা স্কুল,পাবনা
অবস্থান
মানচিত্র
আব্দুল হামিদ রোড, গোপালপুর, পাবনা

তথ্য
ধরনসরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়
নীতিবাক্যশিক্ষার জন্য এসো, সেবার জন্য বেরিয়ে যাও।
প্রতিষ্ঠাকাল১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দ
বিদ্যালয় জেলাপাবনা
ইআইআইএন১২৫৫৬৪ উইকিউপাত্তে এটি সম্পাদনা করুন
প্রধান শিক্ষকতুষার কুমার দাশ (ভারপ্রাপ্ত)
শিক্ষকমণ্ডলী১ জন প্রধান শিক্ষক, ২ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক, ৫০ জন সহকারী শিক্ষক
শ্রেণি৩য় শ্রেণি - ১০ম শ্রেণি
শিক্ষার্থী সংখ্যা২,০০০+
ভাষাবাংলা
শিক্ষায়তন২.৯৫ একর
ডাকনামPZS/পাজিস্কু
ওয়েবসাইটhttps://www.pzs.edu.bd

এটি শুধুমাত্র ছাত্রদের(বয়েজ) স্কুল হলেও এখানে শিক্ষক ও শিক্ষিকা উভয়ই পাঠদান করেন। এই বিদ্যালয়ে একজন প্রধান শিক্ষক এবং প্রভাতী শিফট ও দিবা শিফটের জন্য পৃথক সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং সর্বমোট ৫০ জন সহকারী শিক্ষক রয়েছেন। পাবনা জিলা স্কুলে বিশালাকার একটি খেলার মাঠ এবং পাঠদানের জন্য তিনটি ভবন রয়েছে। এগুলো হলো প্রশাসনিক ভবন('U' আকৃতির), একাডেমিক ভবন ও বিজ্ঞান ভবন। বিদ্যালয়ের প্রবেশপথেই চোখে পড়বে প্রধান ফটকের দুপাশে বাংলাদেশপাবনা জেলার মানচিত্র খচিত টাইলস ম্যুরাল এবং ফটকের ভেতরে জাতীয় পতাকাবাহী দণ্ডস্তম্ব ও এটির চারপাশের বৃত্তাকার ফুলের বাগান। এছাড়া বিদ্যালয়ে রয়েছে মওলানা কছিম উদ্দিন আহমেদ ছাত্রাবাস ও পাবনা জিলা স্কুল জামে মসজিদ। বিদ্যালয়ে তিনটি কম্পিউটার ল্যাব ছাড়াও দুইটি স্থায়ী মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম, চারটি পৃথক সমৃদ্ধ ল্যাব রয়েছে যেগুলো পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং কৃষিশিক্ষার বিষয়ের জন্য। বিদ্যালয়ে রয়েছে একটি সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার এবং ডা. ফজলে রাব্বি বিজ্ঞান ক্লাব(এফ.আর.এস.সি), এফআরএসসি ম্যাথম্যাটিকস কমিউনিটি, ডিবেট ক্লাব, স্কাউট টিমে'র মতো জ্ঞানচর্চার ও সেবামূলক সংগঠন। আরো রয়েছে একটি শহিদ মিনার, দুইটি সাইকেল স্ট্যান্ড ও একটি অভিভাবক বিশ্রামগার। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এই বিদ্যালয়ে আধুনিকায়ন হয়েছে। সকল শ্রেণীকক্ষ এবং বারান্দা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় এসেছে। বিদ্যালয়ের মাঠে একটি শারীরিক শিক্ষা মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে উঁচু উঁচু দেয়াল তৈরি করা হয়েছে এবং সেগুলোতে বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ, উপদেশ মূলক বাণী এবং গ্রাফিটি শোভা পাচ্ছে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের প্রাচীরে সুন্দর ল্যাম্প পোস্ট লাগানো হয়েছে। বিদ্যালয়ের সার্বক্ষণিক পরিচ্ছন্নতা রাখা হয়।

অবস্থান

সম্পাদনা

পাবনা জিলা স্কুল রাজশাহী বিভাগের পাবনা জেলার পাবনা সদর উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে গোপালপুর মৌজার আব্দুল হামিদ রোডে অবস্থিত।[]

ইতিহাস

সম্পাদনা

পাবনা জিলা স্কুল একশ সত্তর বছরেরও বেশি প্রাচীন বিদ্যাপীঠ। অতীতের নানা ইতিকথা, গৌরব আর ঐতিহ্যের ধারক এ প্রতিষ্ঠানটি আজও অম্লান।

১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দের পাবনা জিলা স্কুল যে জমির উপর দাঁড়িয়ে আছে তার নাম-ঠিকানা এখন প্রায় অজানা বিষয়। ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে প্রস্তুতকৃত ডি.এস. রেকর্ডে পাবনা জিলা স্কুলের যে বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে তা হলো: গোপালপুর মৌজায় ৩১৪ নম্বর খতিয়ানের ১৬ নম্বর দাগে জমির পরিমাণ ১.৬২ একর এবং ৪৩৯ নম্বর খতিয়ানের ৩১৭ নম্বর দাগে জমির পরিমাণ ১.২৩৭৫ একর। মালিকানায় ভারত সম্রাট; পক্ষে এডুকেশন ডিপার্টমেন্ট। প্রথম দাগে পাবনা জিলা স্কুলের দালান ৪টি, দ্বিতীয় দাগে পাবনা জিলা স্কুলের দালান ৭টি। ইন্দারা একটি ও একটি বোর্ডিং এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, পার্শ্বডাঙ্গার জমিদারেরা এই বোর্ডিং(ছাত্রাবাস) ভবনটি নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। আশির দশকে প্রকাশিত আর.এস. জরিপে পাবনা জিলা স্কুলের জমি ৬ নম্বর খতিয়ানে উল্লেখ করা হয়েছে। মালিকানা বাংলাদেশ সরকার, পক্ষে শিক্ষা বিভাগ। দাগ নম্বর ৮৯৫। জমির পরিমাণ ২.৯৫ একর। দেড়শ বছরেরও বেশি সময় অতিক্রম করে আসা পাবনা জিলা স্কুলের অতীত সম্পর্কে উক্ত তথ্য নিতান্তই অপ্রতুল।

নুরুল ইসলাম খানের সম্পাদনায় ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়েছিল বাংলাদেশ জেলা গেজেটিয়ার পাবনা। যেটি ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত গেজেটিয়ারের বাংলা অনুবাদ। জিলা স্কুল সম্পর্কে উক্ত গেজেটিয়ারের বিবরণ হল - পাবনা জিলা স্কুল জেলার অন্যতম মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এটি সরকারি বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টি কবে স্থাপিত হয়েছিল তা সঠিকভাবে জানা যায় না। তবে দলিল দৃষ্টে মনে হয় যে, বিদ্যালয়টি প্রথমে স্বর্গীয় বাবু দিগম্বর সাহা কর্তৃক এ্যাংলো ভার্নাকুলার মূল হিসেবে ১৮৩৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে স্থাপিত হয়। প্রথমে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয় শহরের পূর্ব প্রান্তে রামনপুর মৌজায়। পরে আব্দুল হামিদ রোডের মনোরম পরিবেশে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরিত হয়।

১৮৪৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিদ্যালয়টিতে সরকারি সাহায্যের পরিমাণ ছিল সামান্য। হুগলী জেলার বাবু রামচন্দ্র নন্দী নামে একজন প্রবীণ এ জ্ঞানী ব্যক্তি সে সময় এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তাঁর মাসিক বেতন ছিল ৫০ টাকা।

৮ শ্রাবণ ১২৩৩ বঙ্গাব্দে প্রকাশিত পাবনার উকিল শ্রী রাধারমণ সাহা রচিত 'পাবনা জেলার ইতিহাস' গ্রন্থের চতুর্থ ঘরে ৯৪-৯৫ পৃষ্ঠায় পাবনা জেলা স্কুল সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে : পাবনার খ্যাতনামা নাগরিক দিগম্বর সাহার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে বর্তমান পাবনা জিলা স্কুলে পরিণত হইয়াছে। গর্ভনমেন্ট স্কলার ব্যতীত পাবনা জিলা স্কুল ও সিরাজগঞ্জ বিএল স্কুল হইতে কৃতিত্বের সহিত উত্তীর্ণ দুইজন গরীব ছাত্রকে মাসিক আট টাকা হিসাবে স্বর্গীয় বনমালী রায় স্টেট হইতে বৃত্তিদানের ব্যবস্থা ছিল। পাবনা জিলা স্কুলের ছাত্র সংখ্যা ১৯২০-২১ খ্রিস্টাব্দে ৩৫৫ জন, ১৯২১-২২ খ্রিস্টাব্দে ৩৯৭ জন। উক্ত গ্রন্থের ৯৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে ১৮৭০-৭১ খ্রিস্টাব্দে জিলা স্কুলের ছাত্র সংখ্যা ছিল ১৬৭ জন।

১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত এল.এস.এস. ও ম্যালি রচিত বেঙ্গল ডিস্ট্রিক্ট গেজেটিয়ার পাবনা এর ১০৮-১০৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে পাবনায় স্থাপিত ইলিয়ট-বনমালী টেকনিক্যাল স্কুলের বি ক্লাসে পাবনা জিলা স্কুলের ছাত্রদের ব্যবহারিক নির্দেশনা হাতে কলমে শেখানো হত। সরকার থেকে মাথাপিছু সর্বনিম্ন দুই টাকা থেকে সত্তর টাকা পর্যন্ত মঞ্জুরি দেওয়া হতো। ১৯২১ সালে বি ক্লাসে ২০ জন হিন্দু ও ৬ জন মুসলিম ছাত্র ব্যবহারিক শিক্ষা গ্রহণ করে।

এ গ্রন্থের ১১১ পৃষ্ঠায় সরকারি স্কুল হিসেবে ইংরেজির মাধ্যমে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্যে ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে জিলা স্কুল প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

১৮৪৪ সালে পাবনায় এস.ডি.ও. ছিলেন মি.এ. এবার ক্রমবি আই.সি.এস। তারপর এস.ডি.ও. হয়ে আসেন মি. এফ. এল. বিউফোর্ট। তারা দু'জনেই ছিলেন শিক্ষানুরাগী। বিদ্যালয় পরিচালনায় প্রশংসনীয় কর্মে বাবু দিগম্বর সাহাকে তারা সাহায্য ও সহযোগিতা প্রদান করে বিদ্যালয়টির অগ্রযাত্রায় ভূমিকা পালন করে গেছেন। বিদ্যালয়টি পরিচালনার উদ্দেশ্যে কোনো নিয়মিত কমিটি গঠন করা না হলেও এর পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতেন প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারী বাবু দিগম্বর সাহা এবং তাকে সাহায্য করতেন বাবু রাধাগোবিন্দ সাহা। পরে তাঁতিবন্দের জমিদার বিদ্যালয়ের উপদেষ্টা কমিটির সঙ্গে নিজেকে জড়িত করেন। ১৮৫০ সালের কাছাকাছি সময়ে বিদ্যালয়টি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে উন্নীত হয়। তখন এটা কাউন্সিল এডুকেশনের নিয়ন্ত্রণ এবং তত্ত্বাবধানে আসে। জনশিক্ষা স্থানীয় কমিটি সচিবের মাধ্যমে কাউন্সিল অব এডুকেশনের কাজ চালাত।

১৮৫৩ সালের ১ নভেম্বর বিদ্যালয়টিকে সরকারিকরণ করা হয় (কাউন্সিল অব এডুকেশনের পত্র নং ১৭৩১ তারিখ ০৫-১০-১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দ)। সিনিয়র স্কলার বাবু গৌর নারায়ণকে ১৫০ টাকা মাসিক বেতনে প্রধান শিক্ষকের পদে নিয়োগ করা হয়। বেসরকারি বিদ্যালয়টির সমুদয় ফান্ডের অর্থ (২৬১৭ টাকা ৩ আনা ৬ পয়সা) সরকারি বিদ্যালয়ে স্থানান্তরিত করা হয়। ফোর্ড উইলিয়ামের কাউন্সিল অব এডুকেশনের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার অধীনে আসার পর এর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয় জনশিক্ষা পরিচালনা স্থায়ী কমিটির উপর। ১৮৫৩ সালে বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনার সঙ্গে নিম্নলিখিত ব্যক্তিবর্গকে সংযুক্ত করা হয়।

১. রাজশাহী বিভাগের কমিশনার, ২. জাজ, রাজশাহী, ৩. মি. ডব্লিউ জে. এলিস, সার্জন, পাবনা, ৪. সদর আমিন, পাবনা, ৫. বাবু শ্যামচন্দ্র সরকার, ডেপুটি কালেক্টর, ৬. মি.এফ.এল বিউফোর্ট, কভেনেন্টেড কালেক্টর এবং জয়েন্ট ম্যাজিস্ট্রেট (সেক্রেটারী) এর পরে স্থানীয় জনশিক্ষক কমিটি পরিবর্তন করে বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেয়া হয় 'ম্যানেজিং কমিটি অব গভর্নমেন্ট হাই স্কুল' নামে ব্যবস্থাপনা কমিটির উপর। সদস্যপদ পদাধিকারের ভিত্তিতে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বিদ্যালয় পরিদর্শক এবং প্রধান শিক্ষকের মধ্যে সীমিত ছিল। ১৯০৯ সালে ডি.পি.আই বাংলার নির্দেশে শিক্ষকমগুলির স্বার্থ রক্ষার্থে তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করেন। ১৮ জুলাই বিদ্যালয়ের হেড পণ্ডিত তারিণীকান্ত বিদ্যানিধি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য হন।

প্রতিবছর বিদ্যালয়টিতে তৃতীয় শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি করা হয়। প্রায় ৬০০০ এর বেশি আগ্রহী শিক্ষার্থীর মধ্যে থেকে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত মাত্র ২৪০ জন ছাত্রকে ভর্তি করা হয়। পূর্বে প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্র ভর্তি ও আনুষঙ্গিক ভর্তি প্রক্রিয়াতে কিছু সময় লাগলেও বর্তমানে অনলাইন আবেদনের পদ্ধতি ব্যবহার করায় ভর্তি প্রক্রিয়া আগের থেকে অনেক দ্রুত এবং সহজতর হয়েছে।

একাডেমিক কার্যক্রম

সম্পাদনা

পাবনা জিলা স্কুলে বর্তমানে ব্যবহারযোগ্য পাকা ভবনের সংখ্যা ছয়টি। বিদ্যালয়টি ১৯৯১ সাল থেকে ডবল শিফটে বিভক্ত। উভয় শিফট মিলে ছাত্রসংখ্যা দু'সহস্রাধিক। প্রভাতি শিফটল ক্লাস সকাল ৭টা ১৫ মিনিট থেকে ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত এবং দিবা শিফটে ক্লাস দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট থেকে ৪টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত। উভয় শিফটেই তৃতীয় ঘন্টা পর ২০ মিনিটের টিফিন বিরতি দেওয়া হয় যেখানে পাবনা শহরের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলো টিফিন সরবরাহ করে থাকে।

প্রতি শিফটে ২৫ জন করে সর্বমোট ৫০ জন সহকারী শিক্ষক পাঠদানে নিয়োজিত ও দুইজন সহকারী প্রধান শিক্ষক ও একজন প্রধান শিক্ষকের পাঠদান ও স্কুল পরিচালনা এবং অফিস কর্মকর্তা-সহকারী, চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, লাইব্রেরিয়ান, প্রহরী, পরিষ্কারকর্মীসহ সকলের সার্বিক প্রচেষ্টায় স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এছাড়াও স্কুল কেবিনেট নির্বাচনে ছাত্রদের ভোটে বিজয়ী প্রতিনিধি ছাত্ররা স্কুলের নানা বিষয়ক মানোন্নয়নে কাজ করে।

লাইব্রেরিতে বিভিন্ন বিষয়ের পুস্তকসংখ্যা পাঁচ সহস্রাধিক। দুটি কম্পিউটার ল্যাব, দুটি মাল্টিমিডিয়া স্থায়ী ক্লাস রুম, তিনটি বিজ্ঞানাগারসহ প্রতিটি ক্লাসরুমে প্রজেক্টর নিয়ে ক্লাস করার জন্য উপযুক্ত বৈদ্যুতিক সংযোগের ব্যাবস্থা আছে।

সরকারি প্রজ্ঞাপন মোতাবেক অত্র বিদ্যালয়ে ৩য় শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ছাত্র ভর্তি করা হয়। নিজস্ব সিলেবাসে পাঠদান, ছাত্রদের ক্লাস ডাইরি লিখন, যোগ্যতাভিত্তিক মূল্যায়ন, সন্যাসিক, নির্বাচনী ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়।

অত্র বিদ্যালয় মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সরকারি ও ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র। কিন্তু বিদ্যালয়ের অবকাঠামো সুযোগ সুবিধা অন্যান্য জিলা স্কুলের চেয়ে দুর্বল। প্রয়োজন আধুনিক একাডেমিক ভবন এবং বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সভা ও সহ শিক্ষাক্রমিক কার্যাবলি পরিচালনার জন্য সুদৃশ্য মিলনায়তন।

অত্র জিলা স্কুল যেমন পাবনা জেলার সবচেয়ে পুরনো স্কুল, তেমনি ঐতিহ্যবাহী। প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্ররা শতভাগ সাফল্য অর্জন করে আসছে এবং শিক্ষাবোর্ডের মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।

সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম

সম্পাদনা
  • ডাঃ ফজলে রাব্বী বিজ্ঞান ক্লাব, পাবনা জিলা স্কুল(এফআরএসসি)

নামকরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই স্কুলেরই কৃতি শিক্ষার্থী শহিদ ডা. ফজলে রাব্বীর নামানুসারে একটি বিজ্ঞান ক্লাব রয়েছে । ২০১৯ সালের ২৮ মার্চ প্রতিষ্ঠিত ডা. ফজলে রাব্বী বিজ্ঞান ক্লাব, পাবনা জিলা স্কুলে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান চর্চায় উদ্ভুদ্ধ করছে । তারা উৎসাহী ‍শিক্ষার্থীদের নিয়ে অসাধারণ সব কোর্স সেমিনারের মাধ্যমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে।

  • এফআরএসসি ম্যাথম্যাটিকস কমিউনিটি, পাবনা জিলা স্কুল

ডা. ফজলে রাব্বী বিজ্ঞান ক্লাবের নামে গণিত বিষয়ক জ্ঞানচর্চার জন্য ১ অক্টোবর ২০২০ সালে যাত্রা শুরু হয় এফআরএসসি ম্যাথম্যাটিকস কমিউনিটি, পাবনা জিলা স্কুলে'র। এই ক্লাবের মূল লক্ষ্য গণিতচর্চায় শিক্ষার্থীদের সমৃদ্ধ করে তোলা এবং গণিতে তাদের প্রভিতার বিকাশ ও প্রকাশ এবং গণিত অলিম্পিয়াড সম্পর্কিত নানা তথ্য সরবরাহ ও প্রশিক্ষণ। এই ক্লাবের নীতিবাক্য 'Dream is High'। ওয়েবসাইট: sites.google.com/view/frscmc

দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাসিক ম্যগাজিন কিশোর আলো কেন্দ্রিক বই ক্লাব রয়েছে এই স্কুলে । ২০১৮ সালের ০৫ মার্চ প্রতিষ্ঠিত পাবনা জেলা স্কুল কিশোর আলো বুক ক্লাব প্রতি মাসের নির্ধারিত সময়ে বই নিয়ে আড্ডা দেয়, গান গায়, আবৃত্তি করে, অভিনয় করে, কুইজ প্রতিযোগিতা করে । সেই সাথে পুরস্কার তো থাকেই।

এছাড়া ডিবেট ক্লাব,স্কাউট টিমের মতো রয়েছে সেবামূলক ও জ্ঞানচর্চার সংগঠন।

স্কুল পোশাক

সম্পাদনা
  • সাদা শার্ট
  • খাকি প্যান্ট
  • সাদা মোজা ও সাদা জুতা
  • প্রভাতি শিফটের লাল সোল্ডার ও দিবা শিফটের নীল সোল্ডার
  • শার্টের পকেটে নির্ধারিত মনোগ্রাম
  • শীতকালে নেভি-ব্লু সোয়েটার ('V'গলা)

উল্লেখযোগ্য প্রাক্তন শিক্ষার্থী

সম্পাদনা

১৭০ বছরেরও অধিক সময়ের সুদীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আজ দুই শিফটের পাবনা জিলা স্কুল দুই সহস্রাধিক শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনের মিলন মেলা। জন্মলগ্ন থেকে পাবনা জিলা স্কুল দেশ ও জাতিকে উপহার দিয়েছে অগণিত ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, বি.সি.এস. কর্মকর্তা, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, আইনবিদ, মন্ত্রী, জাতীয় সংসদ সদস্য ও সমাজকর্মী। যাঁরা দেশে-বিদেশে স্বমহিমায় উজ্জ্বল ও ভাস্বর। স্মরণীয় ও বরণীয় এ কৃতি সন্তানেরাই পাবনা জিলা স্কুলের গৌরব। বিদ্যালয়ের কৃতীছাত্র যারা পরবর্তীতে তাঁদের মেধার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন তাঁদের মধ্যে যাঁদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করা যায় তাঁরা হলেন:


প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ

চিত্রশালা

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. "স্কুলের ইতিহাস"। পাবনা জিলা স্কুল কর্তৃপক্ষ। ৩ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ অক্টোবর ২০১৫ 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা