পত্নীতলা উপজেলা
পত্নীতলা উপজেলা বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা।
পত্নীতলা | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে পত্নীতলা উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৫°২′৫১″ উত্তর ৮৮°৪৪′১৩″ পূর্ব / ২৫.০৪৭৫০° উত্তর ৮৮.৭৩৬৯৪° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | রাজশাহী বিভাগ |
জেলা | নওগাঁ জেলা |
আয়তন | |
• মোট | ৩৮২.৩৯ বর্গকিমি (১৪৭.৬৪ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১)[১] | |
• মোট | ২,২৯,৮৮০ |
• জনঘনত্ব | ৬০০/বর্গকিমি (১,৬০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৬৭% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৬৫৪০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ৫০ ৬৪ ৭৫ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
ইতিহাস
সম্পাদনা১৭৯৩ সালে পত্নীতলা অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার থানা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।[২]
পত্নীতলা থানা ইতিপূর্বে পশ্চিম দিনাজপুর জেলার অন্তর্গত ছিল। ১৯১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ৭৩৬ জে নং সরকারী প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পত্নীতলা থানার উত্তর পূর্বাঞ্চল নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ধামইরহাট থানা গঠিত হয়। একই বছর অর্থাৎ ১৯১৯ সালের ২৫ নভেম্বর, ৮৮২৫ এল,এ ডিক্লারেশন মাধ্যমে ভুমি অধিগ্রহণ করে থানা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। ১৯৪৭ এর র্যাডক্লিফ রোয়েদাদ অনুযায়ী দেশ বিভাগের পর পত্নীতলা থানা বগুড়া জেলার অন্তর্গত হয়। ১৯৪৯ সালে পত্নীতলা থানা রাজশাহী জেলার নওগাঁ মহকুমার সাথে যুক্ত হয়। অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারত বর্ষে ওয়ারেন হেস্টিংস এর সময় কালে থানার নাম করন প্রবর্তন হয়। সে সময় পুলিশ স্টেশন কেবল মাত্র অপরাধ দমন কার্যক্রম চালাতো। পরবর্তীতে এর কলেবর বৃদ্ধি করে থানার উন্নয়নমুখী কার্যক্রমের জন্য থানা উন্নয়ন সার্কেল হিসেবে পৃথক ভাবে অফিস স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু হয়। থানা উন্নয়ন সার্কেল পরবর্তীতে মানউন্নীত থানা হিসাবে রূপান্তরিত হয় এবং সর্বশেষ ১৯৮৩ সালে উপজেলা প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে উপজেলা হিসাবে পরিগণিত হয়।[৩] মুক্তিযুদ্ধে পত্নীতলা উপজেলার রয়েছে সমৃদ্ধ ইতিহাস। ১৯৭১ সালের ৩০ নভেম্বর উপজেলার নিরমইল ইউনিয়নের হালিমনগর বা হালিমডাঙ্গা নামক স্থানে পাক হানাদার বাহিনী এবং স্থানীয় দোসররা মিলে প্রায় ৫০ জন আদিবাসী এবং স্থানীয় কৃষককে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। সেদিনের সেই ভয়াবহ স্মৃতি ধারণ করে এখনো বেঁচে রয়েছেন গুলু মুরমু। আলিম নগর বধ্যভূমি সংরক্ষণ কিংবা শহীদদের রাষ্ট্রীয়ভাবে এখন পর্যন্ত স্বীকৃতি প্রদান করা হয় নাই। এছাড়াও উপজেলার মল্লিকপুর এবং ডাসনগরেও বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া যায়।
নামকরণ
সম্পাদনাপত্তনীতোলা, পাঠানতোলা কিংবা পাটনীতোলা ক্রমশ রূপান্তরিত হয়ে বর্তমানে পত্নীতলা নামটি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নাম করনের পিছনে অনেক জনশ্রুতি রয়েছে। কথিত আছে পাঠান রাজত্বকালে বরেন্দ্র এলাকার অনেক পরগণা পাঠান জামিদারদের অধীন ছিল। পাঠান নৃপত্তি বা রাজ কর্মচারীগণ বর্তমান পত্নীতলা বাজারে অবস্থান করে জমি পত্তন দেওয়ার কাজ সমাধা করতেন। পত্তন শব্দ থেকে পত্তনী এবং ক্রমে পত্তনীতোলা বা পাঠানতোলা নামে এতদঞ্চলে অভিহিত হতে থাকে। তাছাড়া কথিত আছে যে,তাহির রাজবংশে জনৈক পূর্ব পুরুষ শ্যযুক্ত কংশ নারায়ন তাহিরপুরের এক মুসলমান জমিদারের নিকট থেকে পরগনা কেড়ে নিয়ে একটি কালি মন্দির পত্তন করে। অপরাপর হিন্দু জমিদার ও এ মন্দিরের নামে জমি পত্তন দিতেন ক্রমে জায়গাটি পত্তনীতোলা নামে পরিচিত হয়। এছাড়া জনশ্রুতি রয়েছে যে, পাঠান শাসন আমলে আত্রাই নদীতে খেয়া পারাপারের জন্য সুদুর বিহারের দার ভাংগা থেকে কিছু সংখ্যাক পাটনী সম্প্রদায়ের লোক এসে বসবাসের জন্য একটি টোল বা মহল্লা স্থাপন করে এবং এলাকার নাম পাটনীটোলা বলে অভিহিত হয়। উলেখ্য যে, পাটনী সম্প্রদায়ের কিছু লোক এখনও আত্রাই নদীতে খেয়া পারাপারের কাজে নিয়োজিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করছে। মোট কথা পত্নীতলা উপজেলার নামের মধ্যেই প্রকৃত ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে।[৪]
অবস্থান ও আয়তন
সম্পাদনাপত্নীতলা উপজেলার এ উপজেলার উত্তরে ধামইরহাট উপজেলা ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, দক্ষিণে মহাদেবপুর উপজেলা, পূর্বে বদলগাছী উপজেলা, পশ্চিমে সাপাহার উপজেলা ও পোরশা উপজেলা।
প্রশাসনিক এলাকা
সম্পাদনাইউনিয়ন সমূহ[৫]
- পত্নীতলা ইউনিয়ন
- নিরমইল ইউনিয়ন
- দিবর ইউনিয়ন
- আকবরপুর ইউনিয়ন
- মাটিন্দর ইউনিয়ন
- কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন, পত্নীতলা
- পাটিচরা ইউনিয়ন
- নজিপুর ইউনিয়ন
- ঘোষনগর ইউনিয়ন
- আমাইড় ইউনিয়ন
- শিহাড়া ইউনিয়ন
পৌরসভা
সম্পাদনা১। নজিপুর পৌরসভা (২০১৪)
জনসংখ্যা
সম্পাদনাজনসংখ্যা ২,২৯,৮৮০ জন, পুরুষ ১,১৫,৭৬০ জন, মহিলা ১,১৪,১২০ জন, লোক সংখ্যার ঘনত্ব ৬০৭ (প্রতি বর্গ কিলোমিটার)। মোট ভোটার সংখ্যা : ১,৫১,১১৪ জন, পুরুষ ভোটার সংখ্যা : ৭৪,৮৬০ জন, মহিলা ভোটার সংখ্যা, ৭৬,২৫৪ জন, বাৎসরিক জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার, ০১%[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
দর্শনীয় স্থান
সম্পাদনা- কাঞ্চন মাজার শরীফ
- কাঁটাবাড়ী মাজার শরীফ
শিক্ষা
সম্পাদনা- সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৮২টি
- বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় : ৪১ টি
- কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় : ০৬টি
- জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় : ৬ টি
- উচ্চ বিদ্যালয় (সহ শিক্ষা) : ৩৩টি
- উচ্চ বিদ্যালয় (বালিকা) : ৩টি
- দাখিল মাদ্রাসা : ২৮টি
- আলিম মাদ্রাসা : ২টি
- ফাজিল মাদ্রাসা : ৭টি
- কামিল মাদ্রাসা : --
- কলেজ (সহ পাঠ) : ৩টি
- কলেজ (বালিকা) : ১টি
- ব্যবস্য়ায় ব্যবস্থাপনা (বিএম) কলেজ : ৫টি
- শিক্ষার হার : ৬৭%
- কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টারঃ ২০টি
ব্যবসা ও বাণিজ্য
সম্পাদনাএ এলাকাটি বরেন্দ্রভূমির অন্তর্গত কৃষিনিভর এলাকা। কৃষি ব্যবসাই এখানের প্রধান ব্যবসা।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি
সম্পাদনা- শহীদুজ্জামান সরকার - বর্তমান সংসদ সদস্য, নওগাঁ-২ ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ।
- শামসুজ্জোহা খান - সাবেক সংসদ সদস্য, ধামইরহাট ও পত্নীতলা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন (জুন ২০১৪)। "এক নজরে পত্নীতলা"। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। সংগ্রহের তারিখ ৯ জুলাই ২০১৪।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ ধনঞ্জয় রায়, দিনাজপুর জেলার ইতিহাস, কে পি বাগচী অ্যান্ড কোম্পানি কলকাতা, প্রথম প্রকাশ ২০০৬, পৃষ্ঠা ২১১
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১ নভেম্বর ২০১৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৪ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৯ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।
- ↑ "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।