নির্মলা দেশপাণ্ডে
নির্মলা দেশপাণ্ডে (১৯শে অক্টোবর ১৯২৯ - ১লা মে ২০০৮) একজন প্রখ্যাত ভারতীয় সামাজকর্মী ছিলেন যিনি গান্ধীজীর দর্শনকে গ্রহণ করেছিলেন। তিনি তাঁর জীবন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উন্নয়নে এবং ভারতে নারী, উপজাতির লোকদের এবং সমাজচ্যুতদের সেবাতে উৎসর্গ করেছিলেন। [১][২]
নির্মলা দেশপাণ্ডে | |
---|---|
জন্ম | |
মৃত্যু | ১ মে ২০০৮ | (বয়স ৭৮)
পরিচিতির কারণ | সামাজিক সক্রিয়তা |
২০০৬ সালে তিনি ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার পদ্মবিভূষণ পেয়েছিলেন।[৩] ২০১০ সালে পাকিস্তান তাঁকে মরণোত্তরে সিতারা-ই-ইমতিয়াজ উপাধিতে ভূষিত করেছিল। [৪]
প্রথম জীবন এবং পরিবার
সম্পাদনাদেশপাণ্ডে ১৯২৯ সালের ১৯শে অক্টোবর নাগপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর মাতা ও পিতার নাম যথাক্রমে বিমলা এবং পুরুষোত্তম যশবন্ত দেশপাণ্ডে। তাঁর বাবা ১৯৬২ সালে মারাঠি ভাষায় লেখা অনামিকাচি চিন্তনিকা র জন্য সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার লাভ করেছিলেন।
তিনি ভারতের নাগপুর থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমএ করেছিলেন, তিনি পুনের ফার্গুসন কলেজ থেকেও পড়াশোনা করেছিলেন। এরপরে তিনি নাগপুরের মরিস কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।[৫]
কৃতিত্ব
সম্পাদনাদেশপাণ্ডে হিন্দিতে বেশ কয়েকটি উপন্যাস রচনা করেছিলেন, "সীমান্ত", মহিলা মুক্তির মূল প্রতিপাদ্যে এবং "চিমলিগ", চীনা সাংস্কৃতিক নীতি ভিত্তিক (যার মধ্যে একটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিল), কিছু নাটক, এবং ভ্রমণকাহিনী। তিনি ঈশা উপনিষদ -এর ওপর একটি ভাষ্য এবং বিনোবা ভাবের জীবনী লিখেছিলেন।
তিনি নিত্যনূতন নামে একটি পত্রিকাও প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং ১৯৮৫ সাল থেকে এর প্রকাশনা শুরু করেছিলেন। এই ম্যাগাজিনটি বিশ্ব শান্তি ও অহিংসতার জন্য নিবেদিত ছিল এবং অহিংসা ও শান্তির চিন্তাভাবনা বহন করার অন্যতম কার্যকর পত্রিকা ছিল। তাঁর মৃত্যুর পরে, তাঁর নিকটতম সহযোগী রাম মোহন রাই, যিনি পানিপথের (হরিয়ানা) একজন সামাজকর্মী, তিনি চাঁদা তুলে প্রতিমাসে পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। [৬]
সম্মাননা
সম্পাদনাদেশপাণ্ডে ১৯৯৭ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দু'বার ভারতীয় রাজ্যসভায় মনোনীত সদস্য হয়েছিলেন।[৭] ২০০৭ সালে তাঁর নাম ভারতের রাষ্ট্রপতি পদের জন্য বিবেচনা করা হয়েছিল।
দেশপাণ্ডে রাজীব গান্ধী জাতীয় সদ্ভাবনা পুরস্কার (২০০৫) এবং ২০০৬ সালে পদ্মবিভূষণ খেতাব পেয়েছিলেন।[৮] তিনি ২০০৫ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছিলেন।
নির্মলা দেশপাণ্ডে প্রথম বনারসী দাশ গুপ্ত রাষ্ট্র গৌরব পুরস্কার পেয়েছিলেন। ২০০৭ সালের ৫ই নভেম্বর, নতুন দিল্লির ভারতীয় সংসদ ভবনের বালযোগী কক্ষে, ভারতের উপরাষ্ট্রপতি মহম্মদ হামিদ আনসারি একটি অনুষ্ঠানে তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছিলেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সোনিয়া গান্ধী (ইউপিএ সভাপতি), পবন বনশল (পরিষদীয় মন্ত্রী), শ্রীপ্রকাশ জয়সওয়াল (প্রতিমন্ত্রী), ভূপিন্দর সিং হুদা (হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী), সন্তোষ বাগরোদিয়া (প্রতিমন্ত্রী), দীনপীর সিং হুদা (সংসদ সদস্য), নবীন জিন্দাল (সংসদ সদস্য), অজয় গুপ্ত এবং আরও অনেক অতিবিশিষ্ট ব্যক্তিরা।২০০৯ সালের ১৩ই আগস্ট, পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে, তাঁকে পাকিস্তানের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মানিত সিতারা-ই-ইমতিয়াজ উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছিল।[৯]
তাঁর নামে, রামমোহন রাইয়ের প্রচেষ্টায় পানিপথে (হরিয়ানা) একটি ছোট জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।[৬][১০] এই যাদুঘরটি সম্মান ও শ্রদ্ধার মতো এবং এখানে তাঁর ব্যবহৃত জিনিসপত্র অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Veteran Gandhian Nirmala Deshpande is no more"। Indian Express। ১ মে ২০০৮। ১১ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০।
- ↑ "Nirmala Deshpande - a gutsy Gandhian"। DNA। ১ মে ২০০৮।
- ↑ "Padma Awards"। Ministry of Communications and Information Technology।
- ↑ "Next Nirmala Deshpande award ceremony to be held in Pakistan - Times of India"।
- ↑ "Veteran Gandhian Nirmala Deshpande dead"। CNN-IBN। ১ মে ২০০৮। ১৮ অক্টোবর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০।
- ↑ ক খ "In memory of Nirmala Deshpande - Daily Times"। ৬ মে ২০১৪।
- ↑ "Rajya Sabha members"। Rajya Sabha secretariat, New delhi। ২০১৯-০২-১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১২-৩০।
- ↑ "A votary of peace and harmony"। The Hindu। ২ মে ২০০৮। ৫ মে ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩১ মার্চ ২০২০।
- ↑ "- News - Samay Live"। www.samaylive.com।
- ↑ "Muniratnam dedicates his Padma to RASS workers"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- শ্রীমতি নন্দিনী সাতপাথি মেমোরিয়াল ট্রান্ট
- বেনারসি দাশ গুপ্ত ফাউন্ডেশন ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২০ ডিসেম্বর ২০১০ তারিখে
- "নির্মলা দেশপাণ্ডের ছাই সিন্ধুতে নিমজ্জনের জন্য করাচিতে পৌঁছেছে"। দ্যচিয়ার্স.অর্গ। ২০০৮-০৫-০৭। ২০১১-০৭-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।