নদীর নাম মধুমতী
নদীর নাম মধুমতী ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। ছবিটির রচনা ও পরিচালনা করেছেন তানভীর মোকাম্মেল।[১] নূর আলী নিবেদিত চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা ও পরিবেশনা করেছে কিনো-আই ফিল্মস। এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তৌকীর আহমেদ, আলী যাকের, রাইসুল ইসলাম আসাদ, সারা জাকের, আফসানা মিমি প্রমুখ।[২][৩]
নদীর নাম মধুমতী | |
---|---|
পরিচালক | তানভীর মোকাম্মেল |
রচয়িতা | তানভীর মোকাম্মেল |
শ্রেষ্ঠাংশে | |
সুরকার | সৈয়দ শাবাব আলী আরজু |
চিত্রগ্রাহক | আনোয়ার হোসেন |
সম্পাদক | মহাদেব শী |
প্রযোজনা কোম্পানি | কিনো-আই ফিল্মস |
পরিবেশক | কিনো-আই ফিল্মস |
মুক্তি | ২০ ডিসেম্বর ১৯৯৫ |
স্থিতিকাল | ১৩০ মিনিট |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
চলচ্চিত্রটি কাহিনি ও সংলাপ রচনার জন্য তানভীর মোকাম্মেল শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার ও শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা বিভাগে এবং সাইদুর রহমান বয়াতি শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
কাহিনি সংক্ষেপ
সম্পাদনামধুমতী নদীর পাড়ের এক গ্রামে মোতালেব মোল্লা নামের এক জমিদার ও স্থানীয় মুসলিম নেতা। মোতালেব তার বড় ভাইয়ের মৃত্যুর পর তার ভাইয়ের স্ত্রীকে বিয়ে করে। সেই স্ত্রীর এক সন্তান ছিল, নাম বাচ্চু। গ্রামের শিক্ষক অমূল্য চক্রবর্তীর প্রভাব তার মধ্যে ছিল। সে গ্রামে স্কুল স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করে। তার কাজে সহয়তা করত তার থেকে বয়সে বড় কিন্তু বন্ধুভাবাপন্ন আখতার। তার দুজন মিলে অমূল্যের বাড়িতে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করত। অমূল্য চক্রবর্তীর মেয়ে শান্তি বিধবা হওয়ার পর বাবার বাড়িতেই থাকে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন মোতালেব পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে যোগ দেয়। অন্যদিকে বাচ্চু বেতারে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ শুনে গেরিলা বাহিনীতে যোগ দেয়। বাচ্চু সেখানে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অত্যাচারের ভয়াবহতা দেখে কুণ্ঠিত হয়। পাশাপাশি তার বাবা শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান বলে তাকে কোন গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয় না। ইতিমধ্যে মোতালেব মোল্লার সাগরেদরা মিলে অমূল্য চক্রবর্তীকে হত্যা করে এবং তার মেয়ে শান্তিকে মোতালেবকে বিয়ে করতে বাধ্য করে।
গেরিলাদের রায়ে রাজাকারদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া বিধান করা হয়। কিন্তু মোতালেব বাচ্চুর বাবা হওয়ায় কমান্ডার কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছিল না। একদিন বাচ্চু নিজে সিদ্ধান্ত নেয় এবং তার মিশন সম্পন্ন করার জন্য ডিঙ্গি ও রাইফেল নিয়ে মধুমতী নদী পাড় হয়ে আসেন।
কুশীলব
সম্পাদনা- তৌকীর আহমেদ - বাচ্চু
- আলী যাকের - মোতালেব মোল্লা
- রাইসুল ইসলাম আসাদ - আখতার
- সারা জাকের - শান্তি
- আফসানা মিমি - রাহেলা
- আয়েশা আখতার - বাচ্চুর মা
- আবুল খায়ের - মোতালেবের চাচা
- মমতাজউদ্দীন আহমেদ - অমূল্য চক্রবর্তী
- রামেন্দু মজুমদার - কাশেম
- আমিরুল হক চৌধুরী - মোহাম্মদ আব্দুল খালেক
- কেরামত মওলা - ফজলু
- কে এস ফিরোজ - পাকিস্তানি মিলিটারি ক্যাপ্টেন
- জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় - মজনু
- ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়
- খায়রুল আলম সবুজ - কমান্ডার
- ঝুনা চৌধুরী
- গাজী রাকায়েত
- সমু চৌধুরী
- সাইদুর রহমান বয়াতি - বাউল, বিশেষ উপস্থিতি
সঙ্গীত
সম্পাদনানদীর নাম মধুমতী চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সৈয়দ শাবাব আলী আরজু। গীত রচনা করেছেন আবু জাফর শামসুদ্দীন। গানে কণ্ঠ দিয়েছেন ফরিদা পারভিন ও সাইদুর রহমান বয়াতি[৪]।
পুরস্কার ও সম্মাননা
সম্পাদনা- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার - তানভীর মোকাম্মেল
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা - তানভীর মোকাম্মেল
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী - সাইদুর রহমান বয়াতি
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ নূর, নাইস (১৬ ডিসেম্বর ২০১৫)। "সাক্ষাৎকার : আমার কাজ হচ্ছে সত্যকে তুলে ধরা : তানভীর মোকাম্মেল"। এনটিভি অনলাইন। ৫ আগস্ট ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নদীর নাম মধুমতি"। সাতদিন। ১৭ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "নদীর নাম মধুমতি"। দৈনিক ইত্তেফাক। ১৫ আগস্ট ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।
- ↑ "Bauls living on selling name of Lalon: Saidur Rahman Boyati"। রাইজিংবিডি। ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭।