দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ
দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ (বা বাঙলা দেশ, দেশের পূর্ববানান অনুসারে) ছিল ১ আগস্ট ১৯৭১ সালের রবিবার ২.৩০ এবং ৮.০০ অপরাহ্নে নিউ ইয়র্ক সিটির ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনে প্রায় ৪০,০০০ দর্শকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত, সাবেক বিটল্স সঙ্গীতদলের লিড গিটারবাদক জর্জ হ্যারিসন এবং ভারতীয় সেতারবাদক রবিশঙ্কর কর্তৃক সংগঠিত দুটি বেনিফিট কনসার্ট। এই প্রদর্শনী পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমানে বাংলাদেশ) শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক সচেতনতা এবং তহবিল ত্রাণ প্রচেষ্টা বাড়াতে, মূলত বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ-সম্পর্কিত বাংলাদেশের নৃশংসতার ফলে সাহায্যের উদ্দেশ্যে আয়োজন করা হয়েছিলো। এই কনসার্টের একটি শ্রেষ্ঠ বিক্রিত লাইভ অ্যালবাম, একটি বক্স-থ্রি রেকর্ড সেট এবং অ্যাপল ফিল্মসের কনসার্টের তথ্যচিত্র নিয়ে ১৯৭২ সালের বসন্তে চলচ্চিত্রাকারে প্রকাশ করা হয়।
দ্য কনসার্ট ফর বাংলাদেশ/The Concert For Bangladesh | |
---|---|
ধরন | রক |
তারিখসমূহ | আগস্ট ১, ১৯৭১ |
অবস্থান (সমূহ) | ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেন, নিউ ইয়র্ক সিটি |
কার্যকাল | ১৯৭১ |
প্রতিষ্ঠাতা | |
ওয়েবসাইট | |
theconcertforbangladesh |
এই অনুষ্ঠানে বিশ্ববিখ্যাত সঙ্গীতশিল্পীদের এক বিশাল দল অংশ নিয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে বব ডিলান, এরিক ক্ল্যাপটন, জর্জ হ্যারিসন, বিলি প্রিস্টন, লিয়ন রাসেল, ব্যাড ফিঙ্গার এবং রিঙ্গো রকস্টার ছিলেন উল্লেখযোগ্য।
এই অনুষ্ঠানের গানের একটি সংকলন কিছুদিন পরেই ১৯৭১ সালে বের হয় এবং ১৯৭২ সালে এই অনুষ্ঠানের চলচ্চিত্রও বের হয়। গত ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে উক্ত চলচ্চিত্রটিকে একটি তথ্যচিত্রসহ নতুনভাবে ডিভিডি আকারে তৈরি করা হয়।
কনসার্ট ও অন্যান্য অনুষঙ্গ হতে প্রাপ্ত অর্থ সাহায্যের পরিমাণ ছিলো প্রায় ২,৪৩,৪১৮.৫১ মার্কিন ডলার, যা ইউনিসেফের মাধ্যমে শরণার্থীদের সাহায্যার্থে ব্যয়ীত হয় [১]।
পটভূমি
সম্পাদনাবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত নির্বিচার গণহত্যার ফলে প্রায় এক কোটি শরণার্থী পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নেয়। এই বিপুল সংখক শরণার্থীদের ভরণপোষণ করতে গিয়ে ত্রাণসামগ্রীর অভাব দেখা দেয়। এছাড়াও ১৯৭০-এর ভোলা ঘূর্ণিঝড় তথা ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অধিকাংশ বাঙালিই ছিল অসহায়।
I was in a very sad mood, having read all this news, and I said, "George, this is the situation, I know it doesn't concern you, I know you can't possibly identify." But while I talked to George he was very deeply moved ... and he said, "Yes, I think I'll be able to do something."[২]
– রবি শংকর, ১৯৭১
এইসব সমস্যা নিয়েই পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত বাঙালি সেতারবাদক পণ্ডিত রবিশঙ্কর তার বন্ধু জর্জ হ্যারিসনের সাথে আলাপ করেন। এরই ভিত্তিতে রবিশঙ্কর, হ্যারিসনকে আমেরিকাতে একটি দাতব্য সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজনের কথা বলেন। হ্যারিসন প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন এবং তার দলের সদস্য বন্ধুদের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানান। পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিলো।
জর্জ হ্যারিসন সর্বপ্রথমে তার প্রাক্তন দল দ্য বিটল্সের সদস্যদের যোগ দিতে বলেন। পল ম্যাকার্টনি সরাসরি অস্বীকৃতি জানান, কারণ তখন মূলত দলের সাথে তার কোনো সম্পর্ক ছিলো না। জন লেনন অনুষ্ঠানে আসতে রাজি ছিলেন, কিন্তু তিনি সেসময় আদালতে তার সন্তানের ব্যপারে তার স্ত্রী ইয়োকো ওনোর সাথে আইনি লড়াই চালাচ্ছিলেন বলে শেষ পর্যন্ত আসতে পারেননি। আর মিক জ্যাগার তখন ছিলেন দক্ষিণ ফ্রান্সে। ভিসা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে তার পক্ষেও আসা সম্ভব হযনি[৩]। শেষ পর্যন্ত বিটলসের একমাত্র রিঙ্গো স্টার তাদের সাথে যোগ দিতে সক্ষম হন। সাথে আরো যোগ দেন বব ডিলান, এরিক ক্ল্যাপটন, বিলি প্রিস্টন, হ্যারিসনের নতুন দল ব্যাড ফিঙ্গারের যন্ত্রীদল ও আরো অনেকে।
কনসার্টের কর্মসূচি
সম্পাদনাসেতারবাদক রবিশঙ্কর ও বিখ্যাত সরোদবাদক ওস্তাদ আলি আকবর খান যন্ত্রসঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু করেন। তাদের সাথে তবলায় ছিলেন ওস্তাদ আল্লা রাখা খান। তারা বাংলা ধুন নামে একটি ধুন পরিবেশন করেন।
বিটল্স ভেঙে যাওয়ার পর এই অনুষ্ঠানই ছিলো হ্যারিসনের সরাসরি অংশগ্রহণ করা প্রথম অনুষ্ঠান। এরিক ক্ল্যাপটনও এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে প্রায় পাচ মাস পর কোনো সরাসরি অনুষ্ঠানে গান গাইলেন এবং বব ডিলানও ১৯৬৯ সালের পর প্রথমবারের মতো শ্রোতা দর্শকদের সামনে এলেন।
তারা অপরাহ্ণ ও বিকালের দুটি অনুষ্ঠানেই ভিন্নক্রমে একই গানগুলি পরিবেশন করেন।
পরিবেশিত গানসমূহ
সম্পাদনা- Wah-Wah
- Something
- That's The Way God Planned It
- It Don't Come Easy
- Beware Of Darkness
- While My Guitar Gently Weeps
- Jumpin' Jack Flash
- Youngblood
- Here Comes The Sun
- A Hard Rain's A-Gonna Fall
- Blowin' In The Wind
- It Takes A Lot To Laugh, It Takes a Train to Cry
- Just Like A Woman
- My Sweet Lord
- Bangla Desh
এছাড়াও অপরাহ্নের অনুষ্ঠানে এগুলো ছাড়া পরিবেশিত আরো তিনটি গানঃ-
- Awaiting On You All
- Love Minus Zero/No Limit
- Hear Me Lord
এবং সান্ধ্য অনুষ্ঠানে পরিবেশিত অতিরিক্ত একটি গানঃ-
- Mr. Tambourine Man
অংশগ্রহণকারী
সম্পাদনা- রবিশঙ্কর = সেতার এবং আলি আকবর খান = সরোদ
- নেপথ্যে, আল্লা রাখা খান = তবলা, কমলা চক্রবর্তী = তানপুরা
- জর্জ হ্যারিসন = কন্ঠ, গীটার
- রিঙ্গো স্টার = কন্ঠ, ড্রামস, তাম্বুরা
- লিওন রাসেল = কন্ঠ, পিয়ানো, বেস গীটার
- বিলি প্রিস্টন = কন্ঠ, অর্গান
- এরিক ক্ল্যাপটন = লীড গীটার
- বব ডিলান = কন্ঠ, গীটার, হারমোনিকা
- ক্লস ভোরম্যান = বেস গীটার
- জিম কেল্টনার = ড্রামস
- ব্যাড ফিঙ্গার = রিদম গীটারস, নেপথ্য কন্ঠ
- পিটি হাম, টম ইভান্স, জোয়ি মোলান্ড এবং মাইক গিবসন
- জেসি এড ডেভিস = লীড গীটার
- ডন প্রিস্টন = লীড গীটার, কন্ঠ
- কার্ল র্যডলি = বেস গীটার
- দ্য হলিউড হর্নস্ = জিম হর্ন, এলান বিউটলার, চাক ফিন্ডলে, জ্যাকি কেলসো, লু ম্যাকক্রেরি, ওলি মিচেল,
- নেপথ্য কন্ঠ = ডন নিক্স, জো গ্রীন, জেনী গ্রীন, মার্লিন গ্রীন, ডলরেস হল, ক্লডিয়া লিনিয়ার।
চলচ্চিত্র
সম্পাদনাঅপরাহ্ন ও সান্ধ্য- উভয় অনুষ্ঠানকেই সচল চিত্ররূপে ধারণ এবং গানগুলো এ্যালবাম তৈরির উদ্দেশ্যে রেকর্ড করা হয়। অনুষ্ঠানের চিত্র এবং জর্জ হ্যারিসনের বাছাই অনুযায়ী অনুষ্ঠানে গাওয়া গানগুলো নিয়ে ১৯৭২ সালে চলচ্চিত্রটি প্রকাশ পায়।
চলচ্চিত্রটি শুরু হয় রবি শঙ্কর ও হ্যারিসন কর্তৃক কনসার্টের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রদানের সংবাদ সম্মেলনের দৃশ্য দেখানোর মধ্য দিয়ে। হ্যারিসনকে এক সংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন,"পৃথিবীতে এত এত সমস্যা থাকতে আপনি কেন এব্যপারে (বাংলাদেশের শরণার্থিদের সহায়তা) কিছু করার জন্য আগ্রহী হলেন?" জবাবে হ্যারিসন বলেন,"কারণ আমার এক বন্ধু এব্যপারে আমার সহায়তা চেয়েছেন।"
তার পরের দৃশ্যে WABC-TV এর সাংবাদিক জেরাল্ড রিভেরা কর্তৃক নেয়া ম্যাডিসন স্কোয়ারের বাইরে অনুষ্ঠানের টিকেটের জন্য অপেক্ষমাণ ভক্ত-দর্শকদের সাক্ষাৎকার দেখানো হয়।
অনুষ্ঠানের দৃশ্য শুরু হয় রবি শঙ্কর ও আলি আকবর খানের যন্ত্রসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে। শঙ্কর এবং খান ৯০ সেকেন্ডের একটি নাতিদীর্ঘ প্রস্তুতিমূলক সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে তাদের পরিবেশনা শুরু করেন। এরপর তারা ১৭ মিনিটের একটি রাগ সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
এরপর গানের বিরতিতে মঞ্চের পেছনে অবস্থনরত হ্যারিসন ও অন্যান্য অংশগ্রণকারীদের মঞ্চে ওঠার দৃশ্য দেখানো হয়। হ্যারিসন মঞ্চে উঠে তার জনপ্রিয় অ্যালবাম "All Things Must Pass" থেকে গান পরিবেশন করেন।
এরপর তিনি তার বন্ধু ও যন্ত্রীদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে কিছুক্ষণের জন্য মঞ্চ হতে নেমে যান। তার বন্ধু ও যন্ত্রীদের মধ্যে ড্রামসে ছিলেন রিঙ্গো স্টার এবং জিম কেল্টনার। পিয়ানোতে লিয়ন রাসেল, অর্গানে বিলি প্রিস্টন, লিড গীটারে এরিক ক্ল্যাপটন ও জেস এড ডেভিস, রীদম গীটারে ব্যাড ফিঙ্গার দলের চারজন, হর্নে ক্যালিফোর্নিয়ার জিম হর্নের নেতৃত্বে সাতজন। এছাড়া তাম্বুরাতে ছিলেন আরো কয়েকজন।
এরপর একে একে বিলি প্রিস্টন, রিঙ্গোস্টার, লিয়ন রাসেল ও বব ডিলান গান করেন। সবশেষে জর্জ হ্যারিসনের "বাংলা দেশ" গানটির পরিবেশনা দেখানোর মধ্যদিয়ে চলচ্চিত্রটি শেষ হয়।
অ্যালবাম প্রকাশ
সম্পাদনাজর্জ হ্যারিসন ও ফিল স্পেক্টরের প্রযোজনায়, এবং গ্যারি কেলগ্রেনের রেকর্ডে তিনটি গ্রামোফোন রেকর্ডের একটি বক্স সেটের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের গানগুলোর একটি সংকলন বের করা হয়েছিলো। এটি ছিলো বব ডিলানের প্রথম সরাসরি গানের প্রকাশনা।
যখন এ্যাপল রেকর্ড কর্তৃক গ্রামোফোন রেকর্ড প্রকাশিত হয়, একই সময়ে কলাম্বিয়া মিউজিককে ক্যাসেট ও টেপ বিতরনের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। অ্যালবামটি খন পুনরায় ১৯৯২ সালে সিডিতে প্রকাশ পায় তখন কলাম্বিয়া তাদের ক্যাসেট সংস্করণ পুনরায় প্রকাশ করে।
২০০১ খ্রিষ্টাব্দে দুই সিডির একটি সেট হিসাবে অ্যালবামটি পুনঃপ্রকাশ করা হয়, হ্যারিসন তার মৃত্যুর পূ্র্বে অ্যালবামটির বিস্ত্রৃত ও শৌখিন সংস্করণ বের করার কাজ করছিলেন। এই বিশেষ সংস্করণটি ২০০৫ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত দুই ডিস্কের ডিভিডির তথ্যচিত্রের সাথে প্রকাশিত হয়।
২০০৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত তথ্যচিত্র
সম্পাদনা২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে কনসার্ট ফর বাংলাদেশ এর একটি দুই ডিস্কের ডিভিডির বিশেষ সংকলন ছাড়া হয়। যার প্রথম ডিস্কে ছিলো কনসার্টের চলচ্চিত্রটি এবং দ্বিতীয় ডিস্কে ছিলো ২০০৫ সালে ধারণকৃত একটি তথ্যচিত্র, "The Concert For Bangladesh Revisited With George Harrison and Friends"।
এই তথ্যচিত্রের জন্য কনসার্টে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়, যাঁদের মধ্যে ছিলেন- রবি শংকর, এরিক ক্ল্যাপটন, রিঙ্গো স্টার, বিলি প্রিস্টন, জিম কেল্টনার, জিম হর্ন, লিয়ন রাসেল এবং ক্লস ভোরম্যান যাঁরা তাদের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেন। জর্জ হ্যারিসন শুধুমাত্র কনসার্টটি আয়োজনের নেপথ্যের কথা বলেন। অন্যান্য সাক্ষাৎকারগুলো ছিলো রোলিং স্টোনের প্রতিষ্ঠাতা জেন ওয়েনার, লাইভ এইডের সংগঠক বব গেল্ডফ এবং এ্যাপল কর্পোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তা নেইল এসপিনালের, যারা এই অনুষ্ঠানের ঐতিহাসিক গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন।
তথ্যচিত্রটিতে দেখানো হয়েছে হ্যারিসন কীভাবে স্বল্প সময়ের মধ্যে ফোন কলের মাধ্যমে তার সব বন্ধুদের অনুষ্ঠানে আসার জন্য রাজি করিয়েছেন। ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেন ১ আগস্টের জন্য আগে থেকেই বন্দোবস্ত করা হয়। কারণ আর-সব দিনের জন্য এটি আগে থেকেই সংরক্ষিত ছিলো।
চলচ্চিত্রটি তৈরির নেপথ্যের ঘটনা, গানের সংকলনের প্রকাশনা এবং অনুষ্ঠানের স্থিরচিত্র- এসব বিষয়ও তথ্যচিত্রটিতে তুলে ধরা হয়েছে। সাথে সাথে স্থিরচিত্রগ্রাহক ব্যারি ফিন্সটেইন কর্তৃক কনসার্টের সময় বব ডিলানের "Bob Dylan's Greatest Hits Vol II" অ্যালবামের জন্য তোলা প্রচুর স্থিরচিত্রও এই তথ্যচিত্রে উন্মুক্ত করা হয়।
প্রাপ্ত অর্থ ও তহবিল
সম্পাদনাকনসার্ট হতে প্রায় ২৪৩,৪১৮.৫০ ইউএস ডলার সংগৃহীত হয় যার পুরোটাই ইউনিসেফের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের জন্য দিয়ে দেয়া হয়। সিডি ও ডিভিডি হতে প্রাপ্ত অর্থও ইউনিসেফের ফান্ডে জমা করা হয়।
তবে এ্যালবামের চড়া দাম নিয়ে এবং অ্যালবাম হতে প্রাপ্ত অর্থ বাংলাদেশের শরণার্থী তহবিলে জমা দেয়ার ক্ষেত্রে গড়িমসি নিয়ে অনেক অভিযোগ ছিলো। অ্যাপল কর্পোরেশনের একজন নির্বাহী কর্মকর্তা এ্যালেন ক্লেইন জোর দিয়ে বলেন যে, তার কোম্পানী বিজ্ঞাপন, উৎপাদন ও বিপণন খরচবাদে অ্যালবাম বা চলচ্চিত্র হতে কোনো অতিরিক্ত লভ্যাংশ নেয়নি। তবুও ১৯৭২ সালে নিউইয়র্ক ম্যগাজিন প্রতিবেদন প্রকাশ করে যে, কিছু কিছু ঘটনার যথাযথ ব্যখ্যা প্রদান করা হয়নি। ক্লেইন এটি অস্বীকার করেন এবং আদালতের মাধ্যমে ম্যগাজিন হতে ১৫০ মিলিয়ন ইউএস ডলার ক্ষতিপুরণ দাবি করেন[৪]।
"লস এঞ্জেলস টাইমস" ম্যগাজিনে ২ জুন, ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ অনুযায়ী, ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের ত্রাণকার্যের জন্য প্রায় ১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (কনসার্ট ও অন্যান্য অনুষঙ্গ হতে প্রাপ্ত) প্রদান করা হয়। তবুও, কনসার্ট আয়োজকরা কর-মুক্তির জন্য আবেদন না করার কারণে তহবিলের টাকাগুলো প্রায় ১১ বছর আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংস্থার(Internal Revenue Service) একাউন্টে আটকে ছিলো[৫]।
১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে জন লেননের (উনি কনসার্টে উপস্থিত ছিলেন না) এক সাক্ষাৎকারে মত প্রকাশ করেন যে, লভ্যাংশ "সবসময়ই চুরি যায়" এবং বাংলাদেশের জন্য কনসার্ট হতে সংগৃহীত অর্থগুলো কোথায় গিয়েছিলো এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "আমি এসম্পর্কে বলতে পারবো না, কারণ এটা এখনো একটি সমস্যা। তুমি এ সম্পর্কে মা (ইয়োকো ওনো)-এর সথে কথা বলো, কারণ, আমি নই বরং সে-ই এর ভেতরের সব খবর জানে। কিন্তু এটা পুরোটাই চৌর্যবৃত্তি।"[৬]
টীকা
সম্পাদনাউদ্ধৃতি
সম্পাদনা- ↑ Concert for Bangladesh Revisited with George Harrison and Friends (Interviews) । Apple Corps। ২০০৫। অজানা প্যারামিটার
|director=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার|publisherid=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য); অজানা প্যারামিটার|titleyear=
উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য) - ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Schaffner p 146
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ George Harrison (২০০২)। I Me Mine। Chronicle Books। আইএসবিএন 081-183-793-9।
- ↑ "Sweet sounds" ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ নভেম্বর ২০১১ তারিখে, Time, April 17, 1972 (retrieved on December 12, 2006).
- ↑ Johnston, David. "Bangladesh: The Benefit That Almost Wasn't." Los Angeles Times, June 2, 1985, p. R3
- ↑ 1980 Playboy Interview With John Lennon And Yoko Ono (retrieved from John-Lennon.com on December 12, 2006)
উৎস
সম্পাদনানিচের সকল বই ইংরেজি ভাষায় লেখা
- Keith Badman, The Beatles Diary Volume 2: After the Break-Up 1970–2001, Omnibus Press (London, 2001; আইএসবিএন ০-৭১১৯-৮৩০৭-০).
- Roy Carr & Tony Tyler, The Beatles: An Illustrated Record, Trewin Copplestone Publishing (London, 1978; আইএসবিএন ০-৪৫০-০৪১৭০-০).
- Harry Castleman & Walter J. Podrazik, All Together Now: The First Complete Beatles Discography 1961–1975, Ballantine Books (New York, NY, 1976; আইএসবিএন ০-৩৪৫-২৫৬৮০-৮).
- Alan Clayson, George Harrison, Sanctuary (London, 2003; আইএসবিএন ১-৮৬০৭৪-৪৮৯-৩).
- The Concert for Bangladesh Revisited with George Harrison and Friends DVD, Apple Corps, 2005 (directed by Claire Ferguson; produced by Olivia Harrison, Jonathan Clyde & Jo Human).
- Peter Doggett, You Never Give Me Your Money: The Beatles After the Breakup, It Books (New York, NY, 2011; আইএসবিএন ৯৭৮-০-০৬-১৭৭৪১৮-৮).
- The Editors of Rolling Stone, Harrison, Rolling Stone Press/Simon & Schuster (New York, NY, 2002; আইএসবিএন ০-৭৪৩২-৩৫৮১-৯).
- Joshua M. Greene, Here Comes the Sun: The Spiritual and Musical Journey of George Harrison, John Wiley & Sons (Hoboken, NJ, 2006; আইএসবিএন ৯৭৮-০-৪৭০-১২৭৮০-৩).
- George Harrison, I Me Mine, Chronicle Books (San Francisco, CA, 2002; আইএসবিএন ০-৮১১৮-৩৭৯৩-৯).
- Olivia Harrison, George Harrison: Living in the Material World, Abrams (New York, NY, 2011; আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪১৯৭-০২২০-৪).
- Clinton Heylin, Bob Dylan: Behind the Shades (20th Anniversary Edition), Faber and Faber (London, 2011; আইএসবিএন ৯৭৮-০-৫৭১-২৭২৪০-২).
- Elliot J. Huntley, Mystical One: George Harrison – After the Break-up of the Beatles, Guernica Editions (Toronto, ON, 2006; আইএসবিএন ১-৫৫০৭১-১৯৭-০).
- Chris Ingham, The Rough Guide to the Beatles, Rough Guides/Penguin (London, 2006; 2nd edn; আইএসবিএন ৯৭৮-১-৮৪৮৩৬-৫২৫-৪).
- Peter Lavezzoli, The Dawn of Indian Music in the West, Continuum (New York, NY, 2006; আইএসবিএন ০-৮২৬৪-২৮১৯-৩).
- Simon Leng, While My Guitar Gently Weeps: The Music of George Harrison, Hal Leonard (Milwaukee, WI, 2006; আইএসবিএন ১-৪২৩৪-০৬০৯-৫).
- Chip Madinger & Mark Easter, Eight Arms to Hold You: The Solo Beatles Compendium, 44.1 Productions (Chesterfield, MO, 2000; আইএসবিএন ০-৬১৫-১১৭২৪-৪).
- Dan Matovina, Without You: The Tragic Story of Badfinger, Frances Glover Books (2000; আইএসবিএন ০-৯৬৫৭১২২-২-২).
- Chris O'Dell with Katherine Ketcham, Miss O'Dell: My Hard Days and Long Nights with The Beatles, The Stones, Bob Dylan, Eric Clapton, and the Women They Loved, Touchstone (New York, NY, 2009; আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪১৬৫-৯০৯৩-৪).
- Ray Richmond & Antonia Coffman (eds), The Simpsons: A Complete Guide to Our Favorite Family [created by Matt Groening], HarperPerennial (New York, 1997; আইএসবিএন ৯৭৮-০-০০-৬৩৮৮৯৮-২).
- Robert Rodriguez, Fab Four FAQ 2.0: The Beatles' Solo Years, 1970–1980, Backbeat Books (Milwaukee, WI, 2010; আইএসবিএন ৯৭৮-১-৪১৬৫-৯০৯৩-৪).
- Nicholas Schaffner, The Beatles Forever, McGraw-Hill (New York, NY, 1978; আইএসবিএন ০-০৭-০৫৫০৮৭-৫).
- Howard Sounes, Down the Highway: The Life of Bob Dylan, Doubleday (London, 2001; আইএসবিএন ০-৩৮৫-৬০১২৫-৫).
- Bruce Spizer, The Beatles Solo on Apple Records, 498 Productions (New Orleans, LA, 2005; আইএসবিএন ০-৯৬৬২৬৪৯-৫-৯).
- Gary Tillery, Working Class Mystic: A Spiritual Biography of George Harrison, Quest Books (Wheaton, IL, 2011; আইএসবিএন ৯৭৮-০-৮৩৫৬-০৯০০-৫).
- Bob Woffinden, The Beatles Apart, Proteus (London, 1981; আইএসবিএন ০-৯০৬০৭১-৮৯-৫).
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- দাপ্তরিক ওয়েবসাইট
- Review at Gadfly Online
- "The Event Wound Up as a Love Feast", concert review in The Village Voice, 5 August 1971
- Performance of "Bangla Desh"