দ্বিজ

হিন্দু দার্শনিক ধারণা

দ্বিজ (সংস্কৃত: द्विज) অর্থ "দুই জন্ম"- প্রথম জন্ম শারীরিক, অন্য জন্ম আধ্যাত্মিক।[১][২][৩] উত্তরণের আচারের মাধ্যমে মানুষ আধ্যাত্মিকভাবে জন্মগ্রহণ করে।[৪][৫] হিন্দু সমাজ ব্যবস্থায় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়বৈশ্য এই তিন বর্ণের সদস্যদের উপনয়ন দীক্ষার সংস্করকে দ্বিতীয় বা আধ্যাত্মিক জন্ম বলে।।[৪][৫]

দ্বিজ হিসেবে দীক্ষা উপলক্ষে উপনয়ন অনুষ্ঠান।

দ্বিজ শব্দটি বেদ, উপনিষদ এবং শ্রৌতসূত্র বা গৃহ্যসূত্রের মতো বেদাঙ্গ সাহিত্যে পাওয়া যায় না।[৬] ধর্মসূত্র সাহিত্যে এই শব্দটি খুব কমই দেখা যায়।[৬] এর ক্রমবর্ধমান উল্লেখ ধর্মশাস্ত্র পাঠ্যের মধ্য থেকে শেষের প্রথম সহস্রাব্দ খৃষ্টাব্দের পাঠ্যগুলিতে রয়েছে। দ্বিজ শব্দের উপস্থিতি চিহ্নিতকারী পাঠ্যটি সম্ভবত মধ্যযুগের ভারতীয় পাঠ্য।।[৬]

ইতিহাস

সম্পাদনা

দ্বিজ এর সমতুল্য যেমন দ্বিজাতি, বেদ, উপনিষদ বা বেদাঙ্গ সাহিত্যে যেমন ব্যাকারণশিক্ষানিরুক্ত, ছন্দ, শ্রৌত-সূত্র বা গৃহ্য-সূত্রে পাওয়া যায় না।[৭] ঋগ্বেদের ১.৬০-এ দ্বিজন্মন্ (द्विजन्मन्)-এর মতো শব্দের উপস্থিত হয়েছে, কিন্তু প্রসঙ্গটি মানুষের নয়।[৭]

শব্দটি খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীর পূর্ববর্তী সমস্ত ধর্মতাত্ত্বিক ও আচার-সংক্রান্ত গ্রন্থে, এবং প্রাচীনতম ধর্মসূত্র গ্রন্থে অনুপস্থিত। এটি গৌতম ধর্মসূত্রে প্রথম আবির্ভাব ঘটায় কিন্তু প্রসঙ্গে পরে বোঝা যায় না।[৬]

দ্বিজ শব্দের প্রথম উল্লেখ মনুস্মৃতিতে ১৬৬ বার। যাজ্ঞবল্ক্য স্মৃতি শব্দটি ৪০ বার উল্লেখ করে। হিন্দু মহাকাব্য, রামায়ণমহাভারত যথাক্রমে দ্বিজ শব্দটি ২১৪ ও ১৫৩৫ বার উল্লেখ করেছে।[৭][টীকা ১] প্যাট্রিক অলিভেল বলেন, দ্বিজ হিন্দুধর্মের বৈদিক বা প্রাচীন ঐতিহ্য নয়, বরং এক নতুনত্ব যা খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দে আবির্ভূত হয়েছিল।[৭] এই শব্দটি মধ্যযুগীয় ভারত থেকে সম্ভাব্য পাঠ্য চিহ্নিত করার জন্য উল্লেখযোগ্য পণ্ডিত চিহ্নিতকারী।[৬]

আরও দেখুন

সম্পাদনা
  1. The Mahabharata has about 1.8 million words. The word Dvija appears at an average frequency of once every 1170 words.

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Julia Leslie (২০০৩)। Authority and Meaning in Indian Religions: Hinduism and the Case of Vālmīki । Ashgate Publishing, Ltd.। পৃষ্ঠা 189আইএসবিএন 978-0-7546-3431-7। সংগ্রহের তারিখ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ 
  2. Radha Kumud Mookerji (১৯৮৯)। Ancient Indian Education। Motilal Banarsidass। পৃষ্ঠা 67–68, 133। আইএসবিএন 978-81-208-0423-4 
  3. Joel Mlecko (1982), The Guru in Hindu Tradition, Numen, Volume 29, Fasc. 1, pages 33-61
  4. Dvija, Encyclopedia Britannica (2014)
  5. Manilal Bose (১৯৯৮)। Social and Cultural History of Ancient India। Concept। পৃষ্ঠা 55–56। আইএসবিএন 978-81-7022-598-0 
  6. Patric Olivelle (২০১২)। Silvia D'Intino, Caterina Guenzi, সম্পাদক। Aux abords de la clairière: études indiennes et comparées en l'honneur de Charles Malamoud। Volume 7 of Bibliothèque de l'École des Hautes Études, Sciences Religieuses: Série Histoire et prosopographie। Brepols, Belgium। পৃষ্ঠা 117–132। আইএসবিএন 978-2-503-54472-4 
  7. Patric Olivelle (২০১২)। Silvia D'Intino, Caterina Guenzi, সম্পাদক। Aux abords de la clairière: études indiennes et comparées en l'honneur de Charles Malamoud। Volume 7 of Bibliothèque de l'École des Hautes Études, Sciences Religieuses: Série Histoire et prosopographie। Brepols, Belgium। পৃষ্ঠা 124–126। আইএসবিএন 978-2-503-54472-4 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা
  •   উইকিমিডিয়া কমন্সে দ্বিজ সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।