দেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস
দেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস (মার্চ ১৯২০-১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০) ছিলেন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ। তিনি তৎকালীন ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।[১][২]
দেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস | |
---|---|
ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য | |
কাজের মেয়াদ ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ – ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮২ | |
পূর্বসূরী | তাজউদ্দীন আহমদ |
উত্তরসূরী | সামসুদ্দোহা খান মজলিশ |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | মার্চ ১৯২০ ঢাকা জেলা |
মৃত্যু | ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ জিরাবো, সাভার, ঢাকা |
রাজনৈতিক দল | বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল |
দাম্পত্য সঙ্গী | সালেহা খাতুন (বি. ১৯৫৭) |
সন্তান | দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু সহ ৬ |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | জগন্নাথ কলেজ |
প্রাথমিক জীবন
সম্পাদনাদেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার জিরাবো গ্রামে ১৯২০ সালের মার্চ মাসে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা নজর আলী দেওয়ান এবং মাতা জয়গুন্নেছার ৭ সন্তানের মধ্যে প্রথম সন্তান দেওয়ান মো: ইদ্রিস। তার পিতামহের নাম মাধু দেওয়ান এবং প্রপিতামহ ছিলেন বাবর আলী দেওয়ান। বাবর আলী দেওয়ানের বাবার নাম ছিলো তালেবর আলী দেওয়ান। তালেবর আলী দেওয়ানের বাবার নাম একাব্বর আলী দেওয়ান।[২]
শিক্ষা জীবন
সম্পাদনাদেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস আশুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষাজীবন শুরু করে পঞ্চম শ্রেণি ভর্তি হন জিরাবো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ১৯১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ ভর্তি হন ষষ্ঠ শ্রেণিতে। পরবর্তীকালে সাভারের অধরচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। তিনি ঢাকার জগন্নাথ কলেজে পড়াশোনা করেন।[২]
কর্মজীবন
সম্পাদনা১৯৫৫ সালে টেকনাফে আনসার অ্যাডজুট্যান্ট হিসেবে যোগদান করে ১৯৬০ সালে সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৬১ সালে জিরাবো উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭২ সালে নিজ জমিতে জিরাবো গ্রামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।[২]
রাজনৈতিক জীবন
সম্পাদনাদেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস ১৯৪৩ সালে প্রথম ইউনিয়ন পরিষদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ১৯৪৩ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত ৪৫ বছর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[২]
১৯৬৫ সালে তিনি প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে সাভার-ধামরাই আসন থেকে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৬৯ সালে কৃষকবিরোধী সূর্যাস্ত আইন (নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাজনা না দিলে জমির মালিকানা সরকার গ্রহণ করবে) বাতিলের জন্য সাবেক মন্ত্রী ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিমের সঙ্গে নেতৃত্ব দেন। তিনি ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন ন্যাপ মোজাফ্ফরের প্রার্থী হিসেবে সাভার আসন থেকে কুঁড়েঘর প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।[২]
১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি সাভার আসনে বাংলাদেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনে ন্যাপ মোজাফ্ফরের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।[২]
১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনয়নে তৎকালীন ঢাকা-২০ আসন থেকে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি।[১]
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
সম্পাদনাদেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস ১৯৭১ সালে জিরাবো ও আশুলিয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ক্যাম্প পরিচালনা ও প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।[২]
পারিবারিক জীবন
সম্পাদনাদেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস ১৯৫৭ সালে সালেহা খাতুনকে বিয়ে করেন তিনি (সালেহা খাতুন) ২২ মে ২০১৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এই দম্পতীর ৬ সন্তানের মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য ডা. দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, দেওয়ান মো: মঈনউদ্দিন বিপ্লব, দেওয়ান মো: মহিউদ্দিন বিকাশ এবং তিন মেয়ে- শামীমা ইয়াসমিন মিনি (মৃত্যু-২০ অক্টোবর ২০১১), শামীমা পারভীন খুকু, শামীমা নাজনীন নাজু।[২]
মৃত্যু
সম্পাদনাদেওয়ান মোহাম্মদ ইদ্রিস ১০ ফেব্রুয়ারি ১৯৯০ সালে সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানার জিরাবো গ্রামে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুবরণ করেন।[২]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ "২য় জাতীয় সংসদে নির্বাচিত মাননীয় সংসদ-সদস্যদের নামের তালিকা" (পিডিএফ)। জাতীয় সংসদ। বাংলাদেশ সরকার। ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল (পিডিএফ) থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবু (২০২১)। বাবার ছায়ায় বেড়ে ওঠা। বাংলাদেশ: প্রকৃতি। পৃষ্ঠা ২৬৪। আইএসবিএন 9789844440401।