ত্রিদেশীয় সীমানা

ত্রিদেশীয় সীমানা (স্পেনীয়: La Triple Frontera; পর্তুগিজ: Tríplice Fronteira) প্যারাগুয়ে, আর্জেন্টিনাব্রাজিলের ত্রিমূখী সীমানা রেখা দিয়ে চিহ্নিত এলাকা, যাতে ঐ তিনটি দেশ একত্রিত হয়েছে। এখানে ইগুয়াসুপারানা নদীর মোহনা মিলিত হয়েছে। এর কাছেই প্যারাগুয়ের সিয়াদাদ দেল এস্তে, আর্জেন্টিনার পুয়ের্তো ইগুয়াজু এবং ব্রাজিলের ফোজ দো ইগুয়াসু - এ তিনটি শহর গড়ে উঠেছে। এ এলাকার কাছেই ইগুয়াসু জলপ্রপাতইতাইপু জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হয়েছে।

ত্রিদেশীয় সীমানা
দক্ষিণ আমেরিকায় ত্রিদেশীয় সীমানার অবস্থান চিত্র
দেশপ্যারাগুয়ে, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল
শহরসিয়াদাদ দেল এস্তে, পুয়ের্তো ইগুয়াজু, ফোজ দো ইগুয়াসু
Hydrology
নদীইগুয়াসু ও পারানা
হ্রদগুয়ারানি আকুইফের

জনসংখ্যা সম্পাদনা

ত্রিদেশীয় সীমানা এলাকার জনসংখ্যা সীমান্তবর্তী তিনটি শহরকে ঘিরে নির্ধারণ করা হয়েছে। তন্মধ্যে, সর্ববৃহৎ শহর হচ্ছে প্যারাগুয়ের সিয়াদাদ দেল এস্তে। ২০১০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী এখানে ৩৯০০০০ লোক বসবাস করেন। ৮২০০০ লোক নিয়ে সর্বনিম্ন অবস্থানে রয়েছে আর্জেন্টিনার পুয়ের্তো ইগুয়াজু। পর্যটনভিত্তিক ব্রাজিলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসু’র জনসংখ্যা ৩০০০০০। ত্রিমুখী সীমান্তবর্তী এলাকার শহরগুলোয় আরবএশীয় অভিবাসনকারীদের সমারোহ রয়েছে ও তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাদের সম্মিলিত জনসংখ্যা প্রায় ৫০০০০।[১]

পর্যটন সম্পাদনা

রিজিয়ন দে লাস আগুয়াস গ্রান্দেস পর্যটন উপ-এলাকার অভ্যন্তরে অবস্থিত ত্রিদেশীয় সীমানাটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও পর্যটনভিত্তিক এলাকা। আর্জেন্টিনীয় শহর পুয়ের্তো ইগুয়াজুর সাথে সংযোগ স্থাপনকারী তানক্রেদো নেভেস সেঁতু রয়েছে ও ব্রাজিলীয় ফোজ দো ইগুয়াসু দেখা যায়। তিনটি সীমান্তবর্তী দেশের বড় একটি খুঁটিতে জাতীয় পতাকার রঙে স্ব-স্ব দেশের অবস্থান নির্দেশ করা হয়েছে। এ খুঁটি থেকে প্রত্যেক দেশকে দেখা যায়।

গুয়ারানি আকুইফেরকে নিঃসন্দেহে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ স্বাদুপানি সংরক্ষিত ও বহনযোগ্য জলাধাররূপে গণ্য করা হয়ে থাকে। তন্মধ্যে, ১.২ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার এলাকা বা ৭১% ব্রাজিলের অংশ রয়েছে।

বিতর্ক সম্পাদনা

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, ত্রিমুখী অঞ্চলটিতে স্পষ্টতঃই ইসলামী উগ্রপন্থী দলগুলো সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমে অর্থ যোগান দিচ্ছে। মিশরভিত্তিক আল-গামা আল-ইসলামিয়া, ইসলামিক জিহাদ, হিজবুল্লাহআল কায়েদাকে ত্রিদেশীয় সীমানা এলাকা থেকে অর্থ যোগানের মাধ্যমে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে বলে বিশ্বাস করা হয়।[২][৩]

তবে, সীমান্তবর্তী অঞ্চলের বিশেষ ভৌগোলিক এলাকা, রাজনৈতিক দূর্নীতি ও দূর্বল বিচারব্যবস্থার ফলে পরিকল্পিত অপরাধ ও অবৈধ কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা বেশ দূরূহ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।[৪] সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন না থাকা স্বত্ত্বেও প্যারাগুয়ের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদ নির্মুলে অভিযান চালনা করা হয়েছে। মার্কিন কর্মকর্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বরাত দিয়ে জানা যায়, ইরানভিত্তিক হিজবুল্লাহ গেরিলারা ইসলামপন্থীদের কাছ থেকে বেশ ভালো অর্থ পাচ্ছে।[৫]

২০০৫ সালে তিন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে যৌথভাবে গোয়েন্দা সংস্থা গঠনে একমত হয়। ফোজ দো ইগুয়াসুয় এর সদর দফতর নির্মাণ করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে।[৬] ফোজ দো ইগুয়াজুর পর্যটক দলগুলো এ অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের প্রতিবেদনের বিষয়ে বিরোধিতা করে।[৭]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

আরও দেখুন সম্পাদনা

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা