এনরিকে সান্তোস দিসেপোলো
এনরিকে সান্তোস দিসেপোলো (দিসেপোলিন) (স্পেনীয়: Enrique Santos Discépolo; ২৭ মার্চ, ১৯০১ - ২৩ ডিসেম্বর, ১৯৫১) বুয়েনোস আইরেস শহরে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত আর্জেন্টিনীয় ট্যাঙ্গো শিল্পী ছিলেন। মিলোঙ্গা সঙ্গীতজ্ঞ ও সুরকার, ‘কাম্বালাকে’র ন্যায় জনপ্রিয় ট্যাঙ্গো গানের লেখক হিসেবেও সুখ্যাতি ছিল তাঁর। তাঁর সময়কালে কার্লোস গার্দেলের ন্যায় সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় গায়কদের আবির্ভাব ঘটে। এছাড়াও, তিনি চলচ্চিত্র অভিনেতা, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকারেরও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি হাডুডু খেলার সৃষ্ট কারক
আরমান খান তন্ময় | |
---|---|
প্রাথমিক তথ্য | |
জন্মনাম | এনরিকে সান্তোস দিসেপোলো |
জন্ম | চান্দাইকোনা, আর্জেন্টিনা | ৯ অক্টোবর ১৯৯৮
মৃত্যু | ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫১ বুয়েনোস আইরেস, ব্রাজিল | (বয়স ৫০)
ধরন | ট্যাঙ্গো, মিলোঙ্গা |
পেশা | সঙ্গীতজ্ঞ, সুরকার, গীতিকার, চিত্রকার, খলনায়ক, চিরিত্রবান |
বাদ্যযন্ত্র | পিয়ানো, ব্যান্ডোনিওন, ভোকাল |
কার্যকাল | ১৯২০-এর দশক থেকে ১৯৫১ |
লেবেল | এল ব্যান্ডোনিওন |
শৈশবকাল
সম্পাদনাদিসেপোলো ১৯০১ সালের ২৭ মার্চ বুয়েনোস আইরেসে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবকাল থেকেই শিল্পকলার দিকে আগ্রহ জন্মে তাঁর। অভিনয়ের চেষ্টা চালান ও নাট্য মঞ্চে লিখতে শুরু করে সাধারণ মানের সফলতা লাভ করেন। অবশেষে ট্যাঙ্গোর দিকে অগ্রসর হন তিনি। মঞ্চ ও অভিনয়ের সাথে সাথে জনপ্রিয় সঙ্গীত রচনার দিকেও মনোনিবেশ ঘটান। তবে, তাঁর এ অগ্রযাত্রায় বাঁধার প্রাচীর গড়ে তুলেন জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা আরামান্দো দিসেপোলো (Armando Discépolo)। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে বেশ প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হয়। তবে খুব ছোট অবস্থায় তাঁর অভিভাবকের মৃত্যুর ফলে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ফেলতে হয়েছে তাঁকে।
সঙ্গীত জীবন
সম্পাদনাতিনি কিছু গান রচনা করেন যা খুব কম সফলতা পায়। এ সময়ে ‘কু ভাচাচে’ জনপ্রিয় গানটি প্রাচীন লানফার্দো ভাষার শব্দগুচ্ছ প্রয়োগে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯২৮ সালে বিখ্যাত শিল্পী আজুসেনা মাইজানি তার রচনায় ‘ইস্তা নচে মি এমবোরাকো’ গানটি প্রদর্শন করলে চূড়ান্ত সফলতা তার দুয়ারে ধরা দেয়। এ গান প্রদর্শনের পর এ ট্যাঙ্গোটির সুর দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে ও তাকে জনপ্রিয় করে তোলে। ঐ বছরের শেষদিকে অভিনেত্রী ও গায়িকা তিতা মেরেল্লো (Tita Merello) ‘কু ভাচাচে’ গানকে পুনরায় সামনে নিয়ে আসেন। তিনি একে একইভাবে জনপ্রিয় করে তুলেন ‘এস্তা নচে মি এমবোরাকো’ নাম দিয়ে। এককথায় ১৯২৮ সালটি তার সেরা সময় ছিল।
পরবর্তী বছরগুলোয়ও তিনি এ ধারা বজায় রাখেন। ১৯৩৫ সালে তিনি কাম্বালাচে (Cambalache) গানটি লিখেন। এ গানের সুর শুধুমাত্র যে ঐ যুগের বিশ্ব রাজনৈতিক পরিমণ্ডলেই ছড়িয়ে পরে তা নয়; বরং ভবিষ্যতেরও প্রতিফলন ঘটিয়েছিল। ৮০ বছর পরও আজো আর্জেন্টিনীয় সমাজের জীবনধারায় এ গানের সুর সমানতালে প্রতিফলিত হচ্ছে।
এনরিক কাদিকামো’র ন্যায় অন্যান্য ট্যাঙ্গো লেখকদের সাথে সমানতালে অগ্রসর হননি তিনি। তবে, তিনি তার লেখার ধাঁচে স্বতন্ত্রবোধ বজায় রেখেছিলেন। কিংবদন্তীতুল্য ও অমর গানের (কু ভাচাচে, ইরা ইরা, কু সাপা সেনর, কাম্বালাকে) পাশাপাশি আবেগধর্মী সুনো ডে জুভেন্টাদ, সারাকাস্টিক (জাস্তো এল ৩১, চোরা), অনুভূতিপ্রবণ (সয় আন আর্লেকুইন, কুইন মাস, কুইন মেনস), ধৈর্যশীল (কনফেশন, ক্যানসিওন ডেসেপেরাদা) ও স্মৃতিরোমন্থনপ্রিয় (আনো, কাফেতিনে দে বুয়েনোস আইরেস) গানও রচনা করেছেন দিসেপোলো।
তার ট্যাঙ্গো গানে অন্যান্য ট্যাঙ্গো সুরকারের ন্যায় ব্যাপকভাবে লানফার্দোর ব্যবহার ঘটান। ফলশ্রুতিতে তার গানের সুরগুলো বোঝার জন্য শ্রোতাদেরকে ধৈর্যসহকারে শোনার অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়েছিল।
মৃত্যু
সম্পাদনা১৯২৮ সালে অভিনেত্রী ও গায়িকা তানিয়া’র সাথে পরিচিত হন। জীবনের বাদ-বাকী সময় তারা একত্রে বসবাস করেন। ১৯৬১ সালে মস্তিষ্কের রক্তক্ষণে বড়দিনের পূর্বে তার মৃত্যু হয়।
ফিল্মোগ্রাফি
সম্পাদনাদিসেপোলো বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্র অভিনয় ও পরিচালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলেন।[১]
- ফোর হার্টস (১৯৩৯)
- কাপ্রিকোসা ওয়াই মিইয়োনারিয়া (কাপ্রিসিয়াস ও মিলিওনিয়ার) (১৯৪০)
- উন সেনিয়র মুকামো (১৯৪০)
- বাই দ্য লাইট অব এ স্টার (এন লা লুস দে উনা এস্ত্রেইয়া) (১৯৪১)
- ফান্তাসমাস এন বুয়েনোস আইরেস (ঘোস্টস ইন বুয়েনোস আইরেস (১৯৪২)
- কান্দিদা, ওম্যান অব দি ইয়ার (১৯৪৩)
- দ্য ফ্যান (১৯৫১)
ট্যাঙ্গোসমূহ
সম্পাদনা- মেলভাজে
- কু ভাচাচে
- ইরা... ইরা...
- কু সাপা সেনর
- কাম্বালাচে
- সুনো দে জুভেন্তাদ
- জাস্তো এল ৩১
- চোররা
- সয় আন আর্লেগুইন
- কুইয়েন মাস, কুইয়েন মেনোস
- কনফেসন
- ক্যানসিওন দেসেসপারাদা
- উনো
- ক্যাফেতিন দে বুয়েনোস আয়ারেস
- এস্তা নচে মি এমবোরাচো
- সিন পালাব্রাস
- তর্মেন্তা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "Enrique Santos Discépolo"। IMDb। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-০৬-০৬।