তিরুবিরুত্তম ( তামিল: திருவிருத்தம், অনুবাদ 'বিশুদ্ধ শ্লোক' ) তামিল হিন্দু সাহিত্যের একটি রচনা যা শ্রী বৈষ্ণব ঐতিহ্যের একজন কবি-সন্ত নম্মালবর দ্বারা রচিত। একশত শ্লোক সমন্বিত এই সংকলটি নালায়ীরা দিব্য প্রবন্ধম নামে বিখ্যাত স্তোত্রের সংকলনের অন্তর্ভুক্ত। []

তিরুবিরুত্তম
কাব্যের রচয়িতা নম্মালবরের ক্ষুদ্র প্রস্তরমূর্তি
তথ্য
ধর্মহিন্দুধর্ম
রচয়িতানম্মালবর
ভাষাতামিল
যুগখ্রিস্টাব্দ ৯ম-১০ম শতাব্দী
শ্লোক১০০

লোকবিশ্বাস অনুসারে, এতে ঋগ্বেদের সারাংশ রয়েছে। []

গঠনপ্রণালী

সম্পাদনা

তিরুবিরুত্তম একটি প্রেমের গল্পচ্ছলে তৈরি করা হয়েছে যা একজন অজ্ঞাত নায়িকা ( তালাইভি ) এবং তার প্রিয় নায়কের ( তালাইভান ) মাধ্যমে শুরু হয়। এখানে বন্ধু, জ্যোতিষী, মৌমাছি, পাখি এবং কবির নিজের হৃদয় গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক ভূমিকা পালন করে তথা বার্তাবাহক, বিলাপকারী হিসাবে কাজ করে। [] কিছু ব্যাখ্যা অনুসারে, এই কবিতাটির ধারা কোনও ক্ষেত্রে নাটকীয়রূপে বিবেচিত হয়, যেখানে কয়েকটি চরিত্র ঈশ্বরের প্রেম সম্পর্কে আলোচনা করে। একজন পুরুষ ও একজন নারীর পার্থিব প্রেম এখানে চিত্রিত হয়। এই প্রসঙ্গে ঈশ্বরের প্রতি কবি নম্মালবরের আকুল আকাঙ্ক্ষা তার সর্বশক্তিমান প্রেমিকের প্রতি একজন নারীর প্রেম-ভালোবাসা হৃদয়ের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করে। [] একজন নারী দ্বারা একজন পুরুষের জাগতিক প্রেমকে এই রচনায় স্বয়ং ঈশ্বরের প্রতি ঐশ্বরিক প্রেম রূপে উপস্থাপন করা হয়েছে। []

ভারততত্ত্ববিদ ডেভিড শুলম্যান বলেছেন তিরুবিরুত্তমের স্তোত্রগুলি, "শাস্ত্রীয় ব্যাকরণ পূর্ণ একটি কাব্যিক বা নান্দনিক পৃথক জগৎ তৈরি করেছে"। []

তিরুবিরুত্তমের স্তোত্রগুলির সংলাপ কবিতার নায়িকা ও তার সখীদের মধ্যে আদান-প্রদানের ক্রমরূপে গঠিত হয়েছে। এই কবিতার প্রথম কয়েকটি স্তোত্র এই ক্রমবিন্যাসের উদাহরণরূপে কাজ করে নিম্নরূপভাবে: []

হে স্বর্গিকগণের দেব! সম্পূর্ণ জীবাত্মার রক্ষার জন্য আপনি কতিপয় গর্ভে অবতার গ্রহণ করেছেন। আমি আবার অনর্গল জ্ঞানের নিম্ন স্থিতি, দুষ্টতাপূর্ণ কার্য, এবং নোংরায় পূর্ণ এই শরীরকে প্রাপ্ত না হই এই কৃপা করে স্বীকৃতি দান করুন। আমাদের এই বিনম্র সমর্পণ, কৃপা করে নিবেদন শুনুন।

— নম্মালবর, তিরুবিরুত্তম, স্তোত্রগীত ১

নায়িকার সখীগণের প্রতিক্রিয়া নম্মালবরের নিম্নোক্ত লেখায় ফুটে উঠেছে:[]

হে সাগর বেষ্টিত ধরণী পরিমাপকারী প্রভুর বৈকুন্ঠের মতো কুশল কিশোরী! তোমার প্রেমিকের ফিরে আসার প্রত্যাশায় কোনরাই বৃক্ষের ফুলের কলি ফোটে নি। কিন্তু এখনও লতাগুলো এবং পত্রগুলোর ছত্রে পূর্ণ পুষ্প পল্লবিত হয় নি।

— নম্মালবর, তিরুবিরুত্তম, স্তোস্ত্রগীত ৬৮

আরও দেখুন

সম্পাদনা

তথ্যসূত্র

সম্পাদনা
  1. Sundararajan, K. R.; Mukerji, Bithika (২০০৩)। Hindu Spirituality: Postclassical and Modern (ইংরেজি ভাষায়)। Motilal Banarsidass Publ.। পৃষ্ঠা 98। আইএসবিএন 978-81-208-1937-5 
  2. Hooper, John Stirling Morley (১৯২৯)। Hymns of the Āl̤vars (ইংরেজি ভাষায়)। Association Press। পৃষ্ঠা 59। 
  3. Nammalwar (২০১৪-০৫-১৫)। A Hundred Measures of Time: Tiruviruttam (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin UK। আইএসবিএন 978-93-5118-714-1 
  4. "Nammalvar's Works: Tiruviruttam"ramanuja.org। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-০৮-১৪ 
  5. Das, Sisir Kumar (২০০৫)। A History of Indian Literature, 500-1399: From Courtly to the Popular (ইংরেজি ভাষায়)। Sahitya Akademi। পৃষ্ঠা 43। আইএসবিএন 978-81-260-2171-0 
  6. Shulman, David (২০১৬-০৯-২৬)। Tamil: A Biography (ইংরেজি ভাষায়)। Harvard University Press। পৃষ্ঠা 108। আইএসবিএন 978-0-674-97465-4 
  7. Nammalvar (২০২০-০২-১৭)। Endless Song (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin Random House India Private Limited। পৃষ্ঠা 282। আইএসবিএন 978-93-5305-779-4 
  8. Nammāḻvār (২০০৫)। Hymns for the Drowning (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 66। আইএসবিএন 978-0-14-400010-4 

বহিঃসংযোগ

সম্পাদনা

Tiruviruttam of Nammalvar