জেমস লিও ফার্গুসন

বাংলাদেশী মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ এবং চা শিল্পপতি

জেমস লিও ফার্গুসন সাধারণত নানকা ডাকনামে পরিচিত একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ, চা শিল্পপতি এবং মুক্তিযোদ্ধা।[১] তিনি লোভাছড়া চা বাগানের মালিক।[২] ফার্গুসন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত ১৭ বছর ধরে তিনি সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার লক্ষ্মীপ্রাসাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন।[৩]

জেমস লিও ফার্গুসন
জন্ম
কানাইঘাট, সিলেট, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশী
ব্রিটিশ
অন্যান্য নামনানকা
মাতৃশিক্ষায়তনআর্মি বার্ন হল কলেজ
কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ
পেশা
কর্মজীবন১৯৭৬–বর্তমান
রাজনৈতিক দলবাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
লক্ষ্মীপ্রাসাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান
কাজের মেয়াদ
১৯৭৬ – ১৯৯৩
সামরিক পরিষেবা
আনুগত্য বাংলাদেশ
শাখামুক্তিবাহিনী
যুদ্ধবাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
ওয়েবসাইটlakshiprashadpurboup.sylhet.gov.bd

পটভূমি সম্পাদনা

ফার্গুসনের জন্ম সিলেটের কানাইঘাটে। তিনি একজন ইঙ্গ-ভারতীয়। তার পূর্বপুরুষরা স্কটল্যান্ডের বাসিন্দা। তার প্রপিতামহ ডোনাল্ড ফার্গুসন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে লড়েছিলেন। তার দাদা জেমস আর্থার ফার্গুসনও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর্থার ফার্গুসন সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন এবং ভারতের ইসাবেলা চা বাগানে চাকরি নেন। লিও ফার্গুসনের মা জুন ফার্গুসন লোভাছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক হন। তৎকালীন ভারতীয় উপমহাদেশে তিনিই প্রথম মহিলা চা বাগান ব্যবস্থাপক। পরে তারা চা বাগানটি কিনে নেয়।[৪]

শিক্ষা সম্পাদনা

ফার্গুসন কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজে অধ্যয়ন করেন এবং ১৯৭১ সালে স্নাতক হন। ওই বছরের এপ্রিলের শেষ দিকে কুমিল্লা থেকে পালিয়ে সিলেটে আসেন।

মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ সম্পাদনা

 
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর দেখানো মানচিত্র

লোভাছড়ায় ফিরে আসার পর ফার্গুসন তার মায়ের অনুমতি নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তিনি সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।[৪] হয়তো তার শিরায় শিরায় বয়ে চলা সৈনিকের রক্ত তাকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিতে উৎসাহিত করেছিল। তার মতে,

আমি এই দেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমি এই জমির জন্য লড়াই করেছি। আমার মা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন। আমি উপ-সেক্টর ৫ এর অধীনে আগস্ট থেকে লড়াই করেছি। আমি একজন স্কটসম্যান ছিলাম এবং আমার সঙ্গীরা আমাকে ভালবাসতেন। তারা আমার পূর্বপুরুষদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।[৪]

ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

লিও ১৯৮২ সালে কুইনলা নামে একজন খাসি মহিলাকে বিয়ে করেছিলেন। তাদের দুই পুত্র আছে। তার স্ত্রী ও পুত্ররা যুক্তরাজ্যের লন্ডনে থাকেন। জনপ্রতিনিধি হিসেবে তিনি কানাইঘাটে থাকেন। ফার্গুসন তার চা বাগানে নীরবে বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপন করেন।[৪]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. সুখী দেশের জন্য প্রাণপণ যুদ্ধ করতে হবেপ্রথম আলো। ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০২০ 
  2. ফাহমিদা, লুমা (২৪ নভেম্বর ২০১৮)। রূপকথার রাজ্যেপ্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০২০ 
  3. লিটন, দেবব্রত চৌধুরী (২২ এপ্রিল ২০১৬)। কানাইঘাটে চেয়ারম্যান প্রার্থী স্কটিশ বংশোদ্ভূত লিও ফারগুসন নানকাSylhetToday24। ১৬ অক্টোবর ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০২০ 
  4. মেহেদী, উজ্জ্বল (১১ ডিসেম্বর ২০১৬)। "'I fought for this land'" ['আমি এই জমিনের জন্য লড়েছি']। প্রথম আলো (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৮ মে ২০২০