জিওফ গ্রিফিন
জিওফ্রে মার্টন জিওফ গ্রিফিন (ইংরেজি: Geoff Griffin; জন্ম: ১২ জুন, ১৯৩৯ - মৃত্যু: ১৬ নভেম্বর, ২০০৬) নাটাল প্রদেশের গ্রেটাউনে জন্মগ্রহণকারী দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার ছিলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের পক্ষে ১৯৬০ সালে দুই টেস্টে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জিওফ্রে মার্টন গ্রিফিন | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | গ্রেটাউন, নাটাল প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ইউনিয়ন | ১২ জুন ১৯৩৯|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৬ নভেম্বর ২০০৬ ডারবান, কোয়াজুলু-নাটাল, দক্ষিণ আফ্রিকা | (বয়স ৬৭)|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি ফাস্ট | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২০০) | ৯ জুন ১৯৬০ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৩ জুন ১৯৬০ বনাম ইংল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৭ |
লর্ডসে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম ও অদ্যাবধি একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে টেস্টে হ্যাট্রিক করার গৌরবগাঁথা রচনা করেছেন। এছাড়াও একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে লর্ডসে এ কৃতিত্ব অর্জন করেছেন জিওফ গ্রিফিন। তবে ঐ টেস্টেই থ্রোয়িংয়ের মাধ্যমে নো-বল করার জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন। এছাড়াও পরবর্তীতে প্রদর্শনীমূলক খেলায়ও এর পুণরাবৃত্তি ঘটান। ফলশ্রুতিতে আর কখনো টেস্ট ক্রিকেটে অংশ নেননি তিনি।
প্রারম্ভিক জীবন
সম্পাদনানাটাল প্রদেশের গ্রেটাউনে জন্মগ্রহণ করেন গ্রিফিন। ডারবান হাইস্কুলে অধ্যয়ন করেন তিনি। দীর্ঘদেহী গ্রিফিন অনেক ধরনের খেলাধুলোয় পটু ছিলেন। রোডেশিয়ার পক্ষে হকি ও নাটালের পক্ষে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পক্ষে রাগবি ক্রীড়ায় অংশ নেন। এছাড়াও উচ্চলম্ফন, দীর্ঘলম্ফ, ত্রি-লম্ফন ও পোল ভল্ট ক্রীড়ায় নাটাল চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। শৈশবকালে দূর্ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে ডানহাতের শক্তিমত্তা নষ্ট হয়ে যায় তার।
১৯৫৭-৫৮ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকান ঘরোয়া ক্রিকেটে নাটালের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ফাস্ট বোলার হিসেবে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৫৯-৬০ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাদেশিক খেলাগুলোয় কোন নো-বল করেননি। তাস্বত্ত্বেও ১২.২৩ বোলিং গড় নিয়ে ৩৫ উইকেট দখল করেন। ফলশ্রুতিতে ২০ বছর বয়সে ১৯৬০ সালে ইংল্যান্ড সফরে যাবার জন্য মনোনীত হন।
খেলোয়াড়ী জীবন
সম্পাদনামে, ১৯৬০ সালে লর্ডসে এমসিসি’র বিপক্ষে আটবার নো-বল করেন। সফরকারী দলের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে থ্রোয়িংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হন। কাউন্টি দলগুলোর বিপক্ষে খেলার সময়ে বেশ কয়েকজন আম্পায়ারের কাছ থেকে তাকে নো-বল শুনতে হয়েছিল।
২৫ জুন শুরু হওয়া ৫ টেস্ট নিয়ে গড়া সিরিজের ২য় টেস্টে ওভারের শেষ বলে এম. জে. কে. স্মিথকে ৯৯ রানে জন ওয়েটের হাতে কট দিতে বাধ্য করান। এরপরের ওভারের প্রথম বলে পিটার ওয়াকার ও ফ্রেড ট্রুম্যান বোল্ড হলে হ্যাট্রিক সম্পন্ন করেন।[১] ফলশ্রুতিতে ইংল্যান্ড ৩৬২/৮ করে দ্রুত ইনিংস ডিক্লেয়ার দেয়। লর্ডসের ঐ খেলায় ইংল্যান্ড দ্রুততার সাথে দক্ষিণ আফ্রিকাকে দুইবার অল-আউট করে এবং ইনিংস ও ৭৩ রানের বিরাট ব্যবধানে জয়লাভ করে। ২৭ জুন সোমবার চতুর্থ দিন মধ্যাহ্নবিরতির অল্পক্ষণ পরই ব্রায়ান স্ট্যাদামের ৬/৬২ ও ৫/৩৪ বোলিং পরিসংখ্যানে এ সাফল্য পায়। রাণীর সম্মানার্থে চাবিরতিতে বাকী সময়টুকু সম্পন্ন করার জন্য ২০-ওভারের একটি প্রদর্শনী খেলার আয়োজন করা হয়। এতে গ্রিফিন পুনরায় থ্রোয়িংয়ের দায়ে অভিযুক্ত হন ও নো-বলের শিকার হন। ফলশ্রুতিতে ওভার সম্পন্নের জন্য তাকে আন্ডারআর্ম বোলিং করতে হয়েছিল। ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান তাকে সহায়তার লক্ষ্যে ড্রেসিং রুমে আসলে গ্রিফিন ঘটনার সার-সংক্ষেপ বর্ণনা করেন ও এমসিসি সভাপতি গাবি অ্যালেনের আদেশক্রমে আম্পায়ারদ্বয় এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
হ্যাট্রিক লাভের পর গ্রিফিন পুণঃপুণঃ থ্রোয়িং করলে আম্পায়ার তাকে বল করতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এরফলে টেস্টে তিনি আর কখনও বোলিং করেননি গ্রিফিন।[২] জিওফ গ্রিফিন হ্যাট্রিক করলেও পুরো টেস্ট জীবনে মাত্র আট উইকেট লাভ করেছিলেন।[৩]
অবসর
সম্পাদনাতিনি রোডেশিয়ার পক্ষে খেলেন। কিন্তু দুই বছরের মধ্যেই ২৩ বছর বয়সে তার খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে। সলিসবারিতে কারি কাপের খেলায় নর্থ ইস্টার্ন ট্রান্সভালের বিপক্ষে তার বিরুদ্ধে নো-বলের অভিযোগ উত্থাপিত হলে তিনি খেলার জগৎকে চিরতরে বিদায় জানান।
অবসর নেয়ার পর ক্লাব ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ক্রিকেট কোচের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। পরবর্তীতে ডারবানের সাউথ আফ্রিকান ব্রিউয়েরিজে হোটেল ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও আর্গিল ও কঙ্গেলা হোটেলে ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে দুইবার পাণিগ্রহণ করেন। ডারবানের হৃদযন্ত্রক্রীয়ায় আক্রান্ত হলে জিওফ গ্রিফিনের দেহাবসান ঘটে।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "South Africa tour of England, 1960 – 2nd Test"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ Williamson, Martin (১১ আগস্ট ২০১২)। "No-balled out of the game"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৪ জানুয়ারি ২০১৩।
- ↑ "Record / Test matches / Bowling record / Hat-tricks"। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ৩ জানুয়ারি ২০১২।
আরও দেখুন
সম্পাদনাআরও পড়ুন
সম্পাদনা- Obituary[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ], The Daily Telegraph, 23 November 2006
- Obituary আর্কাইভইজে আর্কাইভকৃত ২২ জুন ২০১১ তারিখে, The Times, 24 November 2006
- A tour too far, Martin Williamson, Cricinfo, 3 September 2004
বহিঃসংযোগ
সম্পাদনা- ইএসপিএনক্রিকইনফোতে জিওফ গ্রিফিন (ইংরেজি)
- ক্রিকেটআর্কাইভে জিওফ গ্রিফিন (সদস্যতা প্রয়োজনীয়) (ইংরেজি)