জামিয়া ইসলামিয়া হামিউস-সুন্নাহ
আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মেখল সংক্ষেপে মেখল মাদরাসা চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার মেখলে অবস্থিত একটি কওমি মাদ্রাসা বা বেসরকারি ইসলামী বিদ্যাপীঠ। বাংলাদেশের রক্ষণশীল কওমি মাদ্রাসা হিসেবে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পরিচিতি পেয়েছে যা, মাদ্রাসা সুফফা ও দারুল উলূম দেওবন্দের মূলনীতিকে ভিত্তি করে পরিচালিত হয়। ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে (৯১ বছর পূর্বে) মুফতী ফয়জুল্লাহ কর্তৃক এই প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷[১][২]
الجامعة الإسلامية حامي السنة ميخل | |
প্রাক্তন নাম | হুজুরের বাড়ী মাদ্রাসা |
---|---|
নীতিবাক্য | اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ পড় তোমার প্রভুর নামে |
ধরন | কওমি মাদ্রাসা ইসলামী বিদ্যালয় |
স্থাপিত | ১৯৩১ ইং ১৩৫০ হিজরি |
বাজেট | ১,০০,০০,০০০ (১৯-২০) |
আচার্য | মাওলানা ওসমান ফয়েজী |
উপাচার্য | মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজী |
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ | ২৫+ (২০২০) |
শিক্ষার্থী | ৩৫০০+ (২০২০) |
অবস্থান | |
শিক্ষাঙ্গন | পল্লী অঞ্চল |
অবস্থান
সম্পাদনাবাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে ২৩ কি.মি. উত্তরে এবং হাটহাজারী সদর থেকে ৪ কি.মি. পূর্বে মেখল ইউনিয়নের পূর্ব মেখল গ্রামে হুজুরের বাড়ী সংলগ্ন জায়গায় এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অবস্থিত। ১৯৩১ হতে ১৯৭৮ পর্যন্ত হুজুরের বাড়ীর মসজিদ ও তার সংলগ্ন পুকুর পাড়ে এ শিক্ষা কার্যক্রম চললেও পরবর্তীতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় ১৯৭৮ সালে বর্তমান অবস্থানে প্রতিষ্ঠানটি স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।[৩]
অবকাঠামো ও শিক্ষা
সম্পাদনা- নুরানী বিভাগ: প্লে-৩য় শ্রেণী
- ক্বেরাত বিভাগ
- হস্তলিপি বিভাগ
- কিতাব বিভাগ:
- প্রাথমিক
- মাধ্যমিক
- উচ্চ মাধ্যমিক (জামাতে হেদায়া আওয়ালাইন পর্যন্ত)[৩]
ইতিহাস
সম্পাদনাতৎকালীন সময়ে মুফতী আজম ফয়জুল্লাহ হাটহাজারী মাদ্রাসায় অধ্যাপনায় নিযুক্ত ছিলেন। সমাজ সংস্কারে তিনি দিন কাটতেন। এক সময় তিনি হাটহাজারী মাদরাসায় অধ্যাপনা ছেড়ে নিজ বাড়ি মেখল চলে এলেন ও সেখানে পড়াতে শুরু করুন। শিক্ষার্থী বেড়ে যাওয়ায় কারণে মুফতী আজম মুরুব্বিদের সাথে পরামর্শ করে ১৯৩১ সালে গাছ তলায় আনুষ্ঠানিকভাবে মাদরাসার ভিত্তিস্থাপন করেন। নাম দেন “হামিউস সুন্নাহ মাদরাসা” (সুন্নাতের জীবনদাতা)।
শুরুর দিকেমুফতী আজম একাই শিক্ষকতা করতেন। পরবর্তী মাদরাসা সুফফার ইতিহাসকে সামনে রেখে একদল ত্যাগী ও উদ্যামী উলামায়ে কেরাম নিজে উদ্যোগী হয়ে বিনা বেতনে পড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন। মুফতী আজম তাদের অনুমতি প্রদান করেন। যাদের মধ্যে মাওলানা আজিজুল্লাহ সাহেব (প্রকাশ বড় হুজুর), খতিবে আজম সিদ্দীক আহমদ সাহেব, মাওলানা কাসেম ফয়জী সাহেব, মাওলানা মুজাফফর রহ. সহ অনেকেই। এরপর ছাত্রসংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বর্তমান জায়গায় স্থানান্তরিত হয়। [৪]
বৈশিষ্ট্য
সম্পাদনামাদরাসাটি বর্তমানে নতুন নতুন ভবনে পরিচালিত হয়। মাদ্রাসা সুফফা ও দারুল উলুম দেওবন্দের উসুলে হাশতেগানা পালিত হয় পরিপূর্ণভাবে। এখানে শিক্ষকগণের নির্দিষ্ট কোন বেতন নেই। শিক্ষক -ছাত্রদের জন্য কোন বোর্ডিং এর ব্যবস্থা নেই। সবাই নিজ খরচে রান্না অথবা জায়গির থেকে পড়ে। জুব্বা ও পাগড়ী পড়া বাধ্যতামূলক। বিদআত ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে এবং ছাত্রদের আমল ও ইলমের লাইনে সাপ্তাহিক, মাসিক ও বাৎসরিক বয়ান এবং প্রতি সোমবারে সুন্নাত-বিদআতসহ যাবতীয় কুসংস্কার ও ছাত্রদের ইলমী-আমলী যোগ্যতা বৃদ্ধির লক্ষে বিশেষ বয়ানের ব্যবস্থা আছে। প্রত্যেক মাসে ২৪ ঘণ্টা দাওয়াতে তাবলীগের জন্য বের হওয়া ও মাদরাসায় ৫ কাজের সাথে জোড়ে থাকতে হয়। প্রচলিত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। [৪][৫]
আচার্যবৃন্দ
সম্পাদনাক্রম | আচার্য | সময়কাল |
---|---|---|
১ | মুফতী আজম মুহাম্মদ ফয়জুল্লাহ( জন্ম : ১৮৯০ সন - ইন্তেকাল: ১৯৭৬ সন ) | ১৯৩১-১৯৭৬ |
২ | শাহ মোজাফফর আহমদ
( ইন্তেকাল : ২০০৫ সন ) |
১৯৭৬-২০০৫ |
৩ | আল্লামা নোমান ফয়জী
( জন্ম : ১৯৫৩ সন - ইন্তেকাল : ২০২১ সন ) |
২০০৫-২০২১ |
আরও দেখুন
সম্পাদনা- দারুল উলুম দেওবন্দ, ভারত।
- দারুল উলূম করাচী,পাকিস্তান।
- দারুল উলুম হাটহাজারী, বাংলাদেশ।
- আল জামিয়া আল ইসলামিয়া পাটিয়া।
- দারুল উলুম নাদওয়াতুল উলামা, ভারত।
- আল জামিয়াতুল আরবিয়াতুল ইসলামিয়া জিরি।
- জামেয়া দারুল মা’আরিফ আল ইসলামিয়া।
- জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া, ঢাকা।
- জামিয়া মাদানিয়া আঙ্গুরা মুহাম্মদপুর।
- জামেয়া তাওয়াক্কুলিয়া রেঙ্গা মাদ্রাসা, সিলেট।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ "সরকারী পরিসংখ্যান"। সরকারি ওয়েবসাইট। ২৩ জুলাই ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "মুফতি ফয়জুল্লাহ"। বাংলাপিডিয়া। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জুন ২০২০।
- ↑ ক খ "এক নজরে মেখল হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মাদ্রাসা"। একুশে জার্নাল। ২০১৯-০৯-১৯। সংগ্রহের তারিখ ২০২০-০৭-০৫।
- ↑ ক খ "মেখল মাদরাসাঃ সুন্নাহ যেখানে পুনরুজ্জীবিত"। একুশে জার্নাল।
- ↑ "আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া হামিয়ুচ্ছুন্নাহ মেখল হাটহাজারী, চট্টগ্রাম"। কওমি পিডিয়া। ৭ অক্টোবর ২০১৯।