জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া

ঢাকা জেলার একটি কওমি মাদ্রাসা

জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া ঢাকার মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়ায় অবস্থিত একটি কওমি মাদ্রাসা। ১৯৬০ সালে দারুল উলুম দেওবন্দের মূলনীতির আলোকে এই মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন মোহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জীর ছাত্র আব্দুর রউফ। ২০২১ সালে মাদ্রাসার ছাত্রসংখ্যা ৭৫০ এবং শিক্ষক ৩৬ জন। ২০২১ সালের ২০–২১ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসাটির ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রাক্তন ছাত্র পুনর্মিলনী ও দস্তারবন্দি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া
লালমাটিয়া মাদ্রাসা
প্রাতিষ্ঠানিক লোগো
আরবি: الجا معة الا سلا مىة لالمتىا
ধরনকওমি মাদ্রাসা
স্থাপিত১৯৬০ ইং
প্রতিষ্ঠাতাআব্দুর রউফ
মূল প্রতিষ্ঠান
দারুল উলুম দেওবন্দ
অধিভুক্তিবেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ
ধর্মীয় অধিভুক্তি
ইসলাম
পরিচালকফারুক আহমদ
সহকারী পরিচালকমাসরুরুল হক
শায়খুল হাদিসদেলোয়ার হোসাইন
প্রধান মুফতিমুফতি নুরুল আমীন
শিক্ষা পরিচালকশরিফুল ইসলাম সুহাইল
পরিচালকফারুক আহমদ
শিক্ষায়তনিক ব্যক্তিবর্গ
৩৬ (২০২১)
শিক্ষার্থী৭৫০ (২০২১)
অবস্থান
৬/২৬, ব্লক-এফ, লালমাটিয়া, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

ইতিহাস সম্পাদনা

বিবির মসজিদ সম্পাদনা

মুঘল আমলে ১৬৬৫ সালে লালমাটিয়ায় এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন তৎকালীন বাংলার সুবেদার শায়েস্তা খাঁ। মসজিদের পাশে দারা বিবি নামে কথিত এক শাহজাদী বা বেগমের অদৃশ্য এক সমাধি থাকার কারণেই মসজিদটির নাম বিবির মসজিদ নামে প্রসিদ্ধ। পুকুর ও ঈদগাহ চত্বর মিলিয়ে মসজিদের আশেপাশে ৩ একর জায়গা রয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ ও নির্মাণশৈলীর জন্য মসজিদটি আকর্ষণীয়। চুন–সুরকি দ্বারা নির্মিত মসজিদটির সরু ইটের দেয়ালগুলোর উপরের অংশ পাঁচ হাত পুরু। মসজিদে ২৭ বর্গফুট প্রকোষ্ঠের ওপর অষ্টকোণ চৌকির ভিত্তির ওপর একটি বৃহদাকার গম্বুজাকৃতির ছাদ স্থাপিত হয়েছে। ছাদের চারপাশে রয়েছে ছয়টি মিনার এবং পার্সিয়ান ক্যালিগ্রাফি সজ্জিত মেহরাব। তবে তার কিছু কিছু এখন ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে মূল প্রাচীন স্থাপনাটিকে ঠিক রেখে মসজিদের সংস্কার, পরিবর্ধন ও আধুনিকায়ন করা হয়েছে।[১]

মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা সম্পাদনা

ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠা হলে লালমাটিয়া জনশূন্য হয়ে মসজিদটি বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরে লালমাটিয়ায় আবার মানুষের আবাস গড়ে উঠলে মুসলিমরা মসজিদটিকে নামাজ পড়ার উপযোগী করে তোলার উদ্যোগ নেয়। মোহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জীর ছাত্র আব্দুর রউফ এই জঙ্গলাকীর্ণ মসজিদটি পরিষ্কার করে ব্যবহারের উপযুক্ত করেন। তিনি ১৯৬০ সালে মসজিদকে কেন্দ্র করে মক্তব-হিফজ বিভাগ চালুর মাধ্যমে একটি মাদ্রাসা গড়ে তোলেন, যা বর্তমানে জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া নামে পরিচিত। ২০০০ সালে এখানে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) চালু করা হয়। ২০১৫ সালে চালু হয় ফিকহ বা উচ্চতর ইসলামি আইন গবেষণা বিভাগ। মাদ্রাসায় নিয়মতান্ত্রিক পাঠদানের পাশাপাশি মসজিদেও সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রচারের জন্য সাপ্তাহিক তাফসির, দৈনিক কুরআন শিক্ষার আসর সহ নানা আয়োজন করা হয়।[২][১]

দস্তারবন্দী সম্মেলন সম্পাদনা

২০২১ সালের ২০–২১ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসাটির ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রাক্তন ছাত্র পুনর্মিলনী ও দস্তারবন্দি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে আবুল কাসেম নোমানী, জুনায়েদ বাবুনগরী, আব্দুল হালিম বুখারী, নূর হুসাইন কাসেমী প্রমুখ আলেম অংশগ্রহণ করেন।[৩]

আরও দেখুন সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. হুসাইন, বেলায়েত (২০ মে ২০২১)। "জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়া ও ঐতিহাসিক বিবি মসজিদ"কালের কণ্ঠ 
  2. জাবেদ হোসাইন, মাওলানা (২০১৭)। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উলামা-মাশায়েখ জীবন ও কর্ম (২ সংস্করণ)। বাংলাবাজার, ঢাকা: আনোয়ার লাইব্রেরী। পৃষ্ঠা ৩৫১–৩৫৪। আইএসবিএন 9789849103530 
  3. "বাংলাদেশ সফরে আসছেন দেওবন্দের প্রিন্সিপাল"যুগান্তর। ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯।