চাপড়ামারি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য
চাপড়ামারি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জলপাইগুড়ি জেলায় অবস্থিত একটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য। ১৯৭৬ সালে এটি অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।[১] এটি গোরুমারা জাতীয় উদ্যানের পাশে অবস্থিত।[২] এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশের চালসা এবং লাটাগুড়ি থেকে ৩০ কিমি দূরে অবস্থিত। এবং এই অভয়ারণ্যের মোট আয়তন ৯৬০ হেক্টর।[৩] মূর্তি ও জলঢাকা নদীতে পাওয়া চাপড়া মাছের নাম থেকে এসেছে চাপড়ামারি নাম। যদিও বর্তমানে এই মাছ অবলুপ্ত।
চাপড়ামারি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য | |
---|---|
অবস্থান | জলপাইগুড়ি জেলা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
নিকটবর্তী শহর | মালবাজার, ময়নাগুড়ি, জলপাইগুড়ি |
স্থানাঙ্ক | ২৬°৫২′২৯″ উত্তর ৮৮°৫১′১৮″ পূর্ব / ২৬.৮৭৪৬৪২৪° উত্তর ৮৮.৮৫৫১০১৯° পূর্ব |
স্থাপিত | ১৯৯৮ |
কর্তৃপক্ষ | ভারত সরকার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার |
জীববৈচিত্র্য
সম্পাদনাএখানে এশীয় হাতি, বন্য বরাহ, সম্বর হরিণ, চিতাবাঘ ও বাংলা বাঘ দেখা যায়।[১]
রেলে হাতিদের সমস্যা
সম্পাদনাএই অভয়ারণ্যের উপর দিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার-শামুকতলা রোড লাইন গেছে, যা শিলিগুড়ি, মালবাজার ও আলিপুরদুয়ারকে যুক্ত রাখে। একাধিক দুর্ঘটনায় হাতিদের মৃত্যু হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি ২০০২-এ শিলিগুড়ি–আলিপুরদুয়ার ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস ট্রেন এক মহিলা হাতিকে মেরে দিয়েছিল ও দুটি দাঁতাল হাতিকে আহত করেছিল।[৪] ২০১০ সালে বিন্নাগুড়ির কাছে এক মালবাহী ট্রেন দ্বারা সাত হাতির মৃত্যুর ফলে ভারতীয় রেল ট্রেনদের জন্য ৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা (২৫ মাইল প্রতি ঘণ্টা) গতিবেগ বরাদ্দ করেছিল।[৩]
২০১৩ ট্রেন দুর্ঘটনা
সম্পাদনা১৩ নভেম্বর ২০১৩-এ প্রায় ১৭:৪০-এ আসামগামী উদয়পুর সিটি–কামাখ্যা কবিগুরু এক্সপ্রেস (১৯৭০৯) প্রায় ৮০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা (৫০ মাইল প্রতি ঘণ্টা) বেগে জলঢাকা নদীর সেতুর কাছে এসেছিল এবং ৪০–৫০ জন ভারতীয় হাতির এক পালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়েছিল। এর ফলে পাঁচজন বয়স্ক হাতি ও দুজন হাতিশিশুর মৃত্যু হয়েছিল এবং অন্যান্য দশজন হাতি আহত হয়েছিল।[৫][৬][৭] বেঁচে যাওয়া হাতি প্রথমে পালিয়েছিল কিন্তু পরে ঐ দুর্ঘটনাস্থলে ফিরে এসেছিল এবং সেখানে ততক্ষণ ছিল যতক্ষণ না আধিকারিকদের দ্বারা তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।[৭]
এই দুর্ঘটনাকে সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক বলে অভিহিত করা হয়েছে।[৮][৯] আধিকারিকগণ এর কারণের জন্য তদন্ত শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন।[১০] সংঘর্ষের সময় সময় ট্রেনের গতিবেগ বরাদ্দ গতিবেগের চেয়ে দ্বিগুণ ছিল এবং এটি দুর্ঘটনার অন্যতম সম্ভাব্য অবদান।[১০][১১][১২] তৎকালীন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছিলেন যে দুর্ঘটনাটি চিহ্নিত হাতিদের করিডোরের বাইরে ঘটেছে এবং বন্যপ্রাণীর সুরক্ষার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের, রেল আধিকারিকদের নয়।[১৩]
গ্যালারি
সম্পাদনা-
চাপড়ামারি গেস্ট হাউজ
-
চাপড়ামারি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের ভিতর দিয়ে যাওয়া এক রাস্তা
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ কল্যাণ চক্রবর্তী, বিশ্বজিত রায়চৌধুরী, ভারতের বন ও বন্যপ্রাণীী, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ, ফেব্রুয়ারি, ১৯৯১, কলকাতা, পৃষ্ঠা-১৩৪।
- ↑ "Tourism"। Jalpaiguri Municipality। ২০১২-১১-১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-২০।
- ↑ ক খ সেনগুপ্ত, সোমেন (২০১২-১১-১১)। "Call of the Wild" (পিডিএফ)। The Statesman। পৃষ্ঠা 5। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-২০।
- ↑ "Elephant hit by train dies"। The Times of India। ২০০২-০২-১২। ২০১৩-০৯-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-২০।
- ↑ Sarkar, Debasis (১৩ নভেম্বর ২০১৩)। "'Railways Killer track' again kills 7 elephants in West Bengal"। The Economic Times। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ "19709/Jaipur-Kamakhya Kavi Guru Express"। India Rail Info। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ ক খ Banerjee, Manik (১৪ নভেম্বর ২০১৩)। "India Train Crash Kills 7 Elephants"। Huffington Post। Associated Press। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ Withnall, Adam (১৪ নভেম্বর ২০১৩)। "Speeding train kills at least seven elephants and injures 10 others in India"। The Independent। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ Banerjee, Manik (১৪ নভেম্বর ২০১৩)। "Train Mows Down, Kills 7 Elephants in East India"। ABC News। Associated Press। সংগ্রহের তারিখ ১৪ নভেম্বর ২০১৩।
- ↑ ক খ "6 elephants killed by train in India's West Bengal state"। United Press International। ২০১৩-১১-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-১৫।
- ↑ "Overspeeding trains ran over elephants: Bengal minister"। Press Trust of India। First Post। ২০১৩-১১-১৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-১৫।
- ↑ Ghosh, Shubham (২০১৩-১১-১৪)। "Train rams into elephant herd in North Bengal, 7 jumbos killed"। One India। ২০১৩-১২-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-১৫।
- ↑ Dinda, Archisman (২০১৩-১১-১৪)। "Blame game over elephant death in West Bengal"। Gulf News। Al Nisr Publishing। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-১১-১৫।