চতুর্থ মুহাম্মদ
চতুর্থ মুহাম্মদ (উসমানীয় তুর্কি: محمد رابع মেহমেদ-ই-রাবি; Modern Turkish: IV. Mehmet; যিনি পরিচিত Avcı Mehmet বা শিকারী মুহাম্মদ নামে; ২ জানুয়ারি ১৬৪২ - ৬ জানুয়ারি ১৬৯৩) ছিলেন উসমানীয় সাম্রাজ্য সুলতান। একটি অভ্যুত্থানে তাঁর পিতাকে সিংহাসনচ্যুত করার পর মাত্র ৬ বছর বয়সে তাঁকে সিংহাসনে বসানো হয়। চতুর্থ মুহাম্মদ ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শাসনকালকারী উসমানীয় সুলতান (৩৯-৪০ বছর)। উল্লেখ্য যে, সর্বোচ্চ শাসনকালকারী উসমানীয় সুলতান হলেন প্রথম সুলাইমান (৪৬ বছর)। অল্পবয়স থেকেই শিকারে তাঁর অসীম আগ্রহ গড়ে উঠে এবং এই কারণে তাঁকে avcı (শিকারী) নামে অবিহিত করা হয়। [১] যেখামে চতুর্থ মুহাম্মদের শাসনামলের প্রথম ও শেষ বছর উসমানীয় সাম্রাজ্যের সামরিক পরাজয় ও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য কুখ্যাত, মধ্যবর্তী সময়ে বিখ্যাত কোপরুলু উজিরদের হাত ধরে উসমানীয়রা হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করেছিল। ইতিহাসে এই সময়টা কোপরুলু যুগ নামে পরিচিত। মুহাম্মদ খুব ধার্মিক শাসক ছিলেন এবং একইসাথে দীর্ঘ শাসনামলে অনেকগুলো সামরিক বিজয়ের কারণে তাঁকে গাজী বলা হয়ে থাকে। [২]
চতুর্থ মুহাম্মদ محمد رابع | |||||
---|---|---|---|---|---|
উসমানীয় সাম্রাজ্যের সুলতান কাইসার ই রুম খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন উসমানীয় খলিফা | |||||
![]() চতুর্থ মুহাম্মদের তৈলচিত্র (১৬৮২ সালে অঙ্কিত) | |||||
১৯ তম উসমানীয় সুলতান (বাদশাহ) | |||||
রাজত্ব | ৮ আগস্ট ১৬৪৮ – ৮ নভেম্বর ১৬৮৭ | ||||
পূর্বসূরি | ইব্রাহিম | ||||
উত্তরসূরি | দ্বিতীয় সুলাইমান | ||||
নায়েব-ই-সালতানাত (রাজপ্রতিভূ) বা Regent | See list
| ||||
জন্ম | তোপকাপি প্রাসাদ, ইস্তাম্বুল, উসমানীয় সাম্রাজ্য (বর্তমানে তুরস্ক) | ২ জানুয়ারি ১৬৪২||||
মৃত্যু | ৬ জানুয়ারি ১৬৯৩ এদির্ন, উসমানীয় সাম্রাজ্য (বর্তমানে তুরস্ক) | (বয়স ৫১)||||
সমাধি | তুরহান সুলতানের সমাধি, নতুন মসজিদ (ইস্তাম্বুল) | ||||
স্ত্রী/উপপত্নী | গুলনুস সুলতান আফিফে কাদিন | ||||
বংশধর | see below | ||||
| |||||
রাজবংশ | উসমানীয় রাজবংশ | ||||
পিতা | ইব্রাহিম | ||||
মাতা | তুরহান সুলতান | ||||
ধর্ম | সুন্নী ইসলাম | ||||
তুগরা | ![]() |
রাজত্বকালের উল্লেখযোগ্য ঘটনাপ্রবাহসম্পাদনা
চতুর্থ মুহাম্মদের শাসনের প্রথম পর্যায় কুখ্যাত নারীদের সালতানাত এর সমাপ্তি ও মহান কোপরুলু যুগ এর সূচনা প্রত্যক্ষ করে। কোপরুলু পরিবারের ধারাবাহিক উজিরে আজমরা কার্যকরভাবে সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখেন। কোপরুলু উজিরদের সময় সাম্রাজ্য নতুন সামরিক সাফল্য প্রত্যক্ষ করে। এসময় ট্রান্সিলভানিয়ায় কর্তৃত্ব পুনপ্রতিষ্ঠা করা হয়, ১৬৬৯ সালে ক্রিট জয় সম্পন্ন হয় এবং দক্ষিণ ইউক্রেনে সীমানা বিস্তার করা হয়।
উজিরে আজম কারা মোস্তফা পাশা ১৬৮৩ সালে দ্বিতীয়বার ভিয়েনা অবরোধ করতে গেলে এই যুগের সাফল্য বাধাপ্রাপ্ত হয়। তাদের মিত্র হাবসবার্গ, জার্মান ও পোলিশরা উসমানীয়দের হটিয়ে দেয়। হলি লীগের মৈত্রী ভিয়েনার পরাজয়ের সুবিধা আদায় করে নেয় এবং কার্লোউইতজের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। উসমানীয়রা বেশ কিছু এলাকার নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর করে।
তাঁর অধীনেই উসমানীয় সাম্রাজ্য ইউরোপে ভৌগোলিক বিস্তৃতির শীর্ষে পৌঁছায়। ১৬৮৩ সালে ভারনার যুদ্ধের পর ইউরোপে উসমানীয় সম্প্রসারণ সমাপ্ত হয়।[১]
ক্ষমতাচ্যুতি ও মৃত্যুসম্পাদনা
ইতিহাসে Great Turkish War বা War of the Holy League নামে পরিচিত ইউরোপে খ্রিস্টান সম্মিলিত বাহিনীর সাথে উসমানীয়দের চলমান যুদ্ধে ক্রমাগত ব্যর্থতার জন্য ১৬৮৭ সালে সৈন্যদের বিদ্রোহে (মূলত জেনিসারি বাহিনী দ্বারা সংঘটিত) তিনি ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর তিনি এদির্নে অবসর জীবনযাপনের জন্য চলে যান এবং ১৬৯৩ সালে সেখানেই স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। [১]
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ ক খ গ Börekçi, Günhan (২০০৯)। "Mehmed IV"। Ágoston, Gábor; Bruce Masters। Encyclopedia of the Ottoman Empire। পৃষ্ঠা 370-1।
- ↑ Baer, Marc David (২০০৮)। Honored by the Glory of Islam: Conversion and Conquest in Ottoman Europe। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 165। আইএসবিএন 978-0-19-979783-7।