ইস্তাম্বুল
ইস্তাম্বুল (তুর্কি: İstanbul, ইস্তাম্বুল্, শুনুন (সাহায্য·তথ্য)) তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমভাগে অবস্থিত দেশটির বৃহত্তম নগরী ও প্রধান সমুদ্রবন্দর। এটি প্রাচীনকালে বাইজেন্টিয়াম ও কোনস্তান্তিনোপল নামে পরিচিত ছিল। নগরীটি কৃষ্ণ সাগরের প্রবেশপথে একটি উপদ্বীপের উপরে একটি কৌশলগত অবস্থানে অবস্থিত। নগরীটি ইউরোপ ও এশিয়া মহাদেশকে পৃথককারী এবং কৃষ্ণ সাগর ও মারমারা সাগরকে সংযুক্তকারী সরু বসফরাস প্রণালীটির পূর্ব ও পশ্চিম অংশ জুড়ে দাঁড়িয়ে আছে। ফলে ইস্তাম্বুলের পশ্চিম পার্শ্ব ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব ভাগে এবং পূর্ব পার্শ্ব এশিয়া মহাদেশের পশ্চিমভাগে পড়েছে। এটি বিশ্বের একমাত্র নগরী যেটি একই সাথে দুইটি মহাদেশের উপরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রশাসনিকভাবে ইস্তাম্বুল তুরস্কের ইস্তাম্বুল প্রদেশের রাজধানী। প্রদেশটির উত্তরে কৃষ্ণ সাগর, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে মার্মারা সাগর, পূর্বে কোচেলি প্রদেশ ও পশ্চিমে তেকরিদা প্রদেশ। ইস্তাম্বুল প্রায় ১৬ শতক ধরে ধারাবাহিকভাবে অনেকগুলি শক্তিধর সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল: রোমান/বাইজেন্টীয় সাম্রাজ্য (৩৩০-১২০৪ খ্রিস্টাব্দ), লাতিন সাম্রাজ্য (১২০৪-১২৬১), পালাইলোগোস বাইজেন্টীয় সাম্রাজ্য (১২৬১-১৪৫৩) এবং সবশেষ উসমানীয় সাম্রাজ্য (১৪৫২-১৯২২)।[৩] বর্তমানে আঙ্কারা শহরটি তুরস্কের প্রশাসনিক রাজধানী হলেও ইস্তাম্বুল আজও দেশটির ইতিহাস, অর্থনীতি ও সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু।
ইস্তাম্বুল İstanbul | |
---|---|
অতিমহানগরী | |
ঘড়ির কাঁটার দিকে, শীর্ষ থেকে: সোনালি শৃঙ্গের মধ্যে করাক্য এবং সারায়বার্নু মধ্যে ঐতিহাসিক অঞ্চল; মাইদান বুরূজ; ইস্তাম্বুলের অতীতের স্মৃতিবিজড়িত ট্রাম,, ইস্তিকলাল অ্যাভিনিউতে; লেভেন্ট ব্যবসায়িক জেলা; গালাতা বুরূজ; ওরতাকয় মসজিদ বসফরাস সেতুর সামনে; এবং হাগিয়া সোফিয়া | |
Location of Istanbul on the Bosphorus Strait, Turkey | |
স্থানাঙ্ক: ৪১°০১′ উত্তর ২৮°৫৮′ পূর্ব / ৪১.০১৭° উত্তর ২৮.৯৬৭° পূর্ব | |
রাষ্ট্র | ![]() |
অঞ্চল | মারমারা অঞ্চল |
প্রদেশ | ইস্তাম্বুল |
প্রতিষ্ঠা | খ্রিস্টপূর্ব ৬৬৭ |
উসমানীয় সময় | ১৪৫৩ |
তুরস্ক প্রতিষ্ঠার পর | ১৯২৩ সালে কন্সটান্টিনোপলকে ইস্তাম্বুল নামে নামকরণ করা হয় |
জেলা | ২৭ |
সরকার | |
• নগরপ্রধান | একরেম ইমামো'লু (সিএইচপি) |
আয়তন | |
• মোট | ১,৮৩০.৯২ বর্গকিমি (৭০৬.৯২ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ১০০ মিটার (৩০০ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০০৯)[১][২] | |
• মোট | ১,২৭,৮২,৯৬০ |
• জনঘনত্ব | ৬,২১১/বর্গকিমি (১৬,০৯০/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | এফইটি (ইউটিসি+৩) |
পোস্ট কোড | ৩৪০১০ থেকে ৩৪৮৫০ এবং ৮০০০০ থেকে ৮১৮০০ |
এলাকা কোড | (+৯০) ২১২ (ইউরোপীয় অঞ্চলে) (+৯০) ২১৬ (এশীয় অঞ্চলে) |
ওয়েবসাইট | Istanbul Portal |
ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান | |
---|---|
মানদণ্ড | Cultural: I, II, III, IV |
সূত্র | 356 |
তালিকাভুক্তকরণ | 1985 (9th সভা) |
ইস্তাম্বুলের জলবায়ু মৃদু প্রকৃতির। এখানকার গ্রীষ্মগুলি উষ্ণ এবং শীতকালগুলি মৃদু, ফলে এটি একটি জনপ্রিয় অবকাশযাপন কেন্দ্রে। ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর কারণে শীতকালে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। শহরটি ভূমিকম্পপ্রবণ এবং কিছুসংখ্যক ভূমিকম্পের কারণে শহরটির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
ইস্তাম্বুল তুরস্কের শিল্প, বাণিজ্য, ব্যাংকিং খাত, পর্যটন ও অন্যান্য সেবাখাতের কেন্দ্র। এখানে কাপড়, পোশাকপরিচ্ছদ, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ময়দা, তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ, রাসায়নিক দ্রব্য, কাচ ও সিমেন্টের কারখানা আছে। এখানে বহুসংখ্যক তুর্কি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় অবস্থিত। ইস্তাম্বুল নগরীর অর্থনীতি গোটা তুরস্কের অর্থনীতির ৩০ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে।[৪][৫]পর্যটন খাত থেকে নগরীর আয় দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১০ সালে ইস্তাম্বুলকে একটি ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে প্রায় ১ কোটি ৩৪ লক্ষ পর্যটক শহরটি পরিদর্শন করতে আসে, ফলে এটি বিশ্বের পঞ্চম সর্বোচ্চ জনপ্রিয় পর্যটক গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়।[৬] ইস্তাম্বুলে অনেকগুলি ইউনেস্কো স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান আছে। ইস্তাম্বুলের বড় বাজারটি ১৫শ শতকের মধ্যভাগে যাত্রা শুরু করে। এখানে প্রায় চার হাজার দোকানে বহুবিভিন্ন ধরনের পণ্য, যেমন গালিচা, মাদুর, মণিরত্ন, সোনার গয়না, তামা, পিতল ও চীনামাটির তৈজসপত্র, পুরাতন পয়সা ও বস্ত্র কিনতে পাওয়া যায়। ইস্তাম্বুল তুরস্কের বৃহত্তম ও প্রধানতম সমুদ্রবন্দর এবং দেশটির পাইকারি বাণিজ্য ও পরিবহনের কেন্দ্র। সোনালী শৃঙ্গ এলাকায় অবস্থিত উৎকৃষ্ট প্রাকৃতিক পোতাশ্রয়টির কারণে এবং ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যবর্তী বাণিজ্যপথগুলির উপরে একটি কৌশলগত অবস্থানে অবস্থিত বলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ আন্তঃপরিবহন কেন্দ্র।
ইস্তাম্বুলের বহু ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান এর মধ্যযুগীয় প্রাচীরবেষ্টিত পুরাতন শহরটির মধ্যে অবস্থিত, এবং এটিকেই অতীতে ইস্তাম্বুল (ও পাশ্চাত্যের দেশগুলিতে স্তাম্বুল) নামে ডাকা হত। "স্তাম্বুল" পুরাতন ইস্তাম্বুল নগরীর হৃৎকেন্দ্রে একটি পাহাড়ি উপদ্বীপের উপরে অবস্থিত। এটির দক্ষিণে মার্মারা সাগর, পূর্বে বসফরাস প্রণালী এবং উত্তরে একটি গভীর খাঁড়ি যার নাম সোনালী শৃঙ্গ। স্তাম্বুলের পশ্চিম সীমানাটি ৫ম শতকে নির্মিত এবং মার্মারা সাগর থেকে সোনালী শৃঙ্গ পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি প্রাচীরের ধ্বংসাবশেষ দ্বারা চিহ্নিত। স্তাম্বুল উপদ্বীপের সর্বপূর্ব বিন্দুটিতে অবস্থিত ইস্তাম্বুলের তোপকাপি প্রাসাদ ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্যের শাসকদের বাসস্থান; বর্তমানে এটিকে একটি জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে। প্রাসাদের প্রাঙ্গনের উত্তর প্রান্তে সিরকেচি নামের এলাকাটিতে অনেক রেস্তোরাঁ ও বিনোদন কেন্দ্র আছে। গালাতা পন্টুন সেতুটি সোনালী শৃঙ্গকে গালাতা বাণিজ্যিক এলাকাকে সংযুক্ত করেছে; সেতুসংলগ্ন এলাকাতে বহু দোকান ও কফিঘর আছে। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে শহরটি কখনও ইসলামী ও কখনও খ্রিস্টান শাসকদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ৫৩৭ সালে এখানে হাগিয়া সোফিয়া (তুর্কি ভাষায় আয়াসোফিয়া) নামের একটি বিরাট বাইজেন্টীয় খ্রিস্টান গির্জার নির্মাণকাজ শেষ হয়। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থাপনাগুলির একটি হিসেবে গণ্য করা হয়। পরবর্তীতে এটিকে একটি মসজিদে এবং পরে মুস্তফা কামাল আতার্তুকের শাসনামলে এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করা হয়। সবশেষে ২০২০ খ্রিস্টাব্দে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রেজেপ তাইয়িপ এর্দোয়ানের আমলে এটিকে পুনরায় মসজিদে রুপান্তরিত করা হয় । উসমানীয় সুলতানদের শাসনামলে নগরীটিতে বহুসংখ্যক মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছিল। এদের মধ্যে ১৬শ শতকে (১৫৫০-১৫৫৭) স্থপতি সিনান দ্বারা নির্মিত সুলেইমানের মসজিদ ও ১৭শ শতকের শুরুতে (১৬০৯-১৬১৬) সুলতান ১ম আহমেদ দ্বারা নির্মিত নীল মসজিদ দুইটি উল্লেখ্য। ইস্তাম্বুলে অনেক জাদুঘর আছে, যাদের মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘর এবং তুর্কি ও ইসলামি শিল্পকলা জাদুঘর দুইটি সর্বাগ্রে উল্লেখ্য। ইস্তাম্বুলকে ঘিরে ৫ম শতকে নির্মিত রোমান প্রাচীরগুলির ধ্বংসাবশেষগুলি আজও পরিদর্শন করা যায়। ১৯৮৫ সালে জাতিসংঘের সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো ইস্তাম্বুলের পুরাতন শহরটিকে একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ইস্তাম্বুলে তুরস্কের সবচেয়ে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত, যেটিকে ১৪৫৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল।
ইস্তাম্বুল এখন যে এলাকাটিতে অবস্থিত, সেখানে আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১০ম শতকে লিগোস নামে একটি গ্রিক মৎস্যশিকারীদের গ্রাম ছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতকে মেগারা থেকে আগত গ্রিকরা এখানে প্রথমে একটি লোকালয় প্রতিষ্ঠা করে।[৭] তারা এই শহরটির নাম দেয় বিজান্তিওন (Βυζάντιον)। এরপর ৫১২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এটি হাখমেনীয় রাজবংশ শাসিত পারস্য সাম্রাজ্যের অংশে পরিণত হয়। এর ম্যাসিডোনিয়ার রাজা আলেকজান্ডার এটি বিজয় করেন। পরে রোমানরা শহরটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। খ্রিস্টীয় প্রথম শতকে রোমানদের অধীনে একটি একটি মুক্ত নগরীর মর্যাদা লাভ করেছিল। পরবর্তীতে ৩৩০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট ১ম কোনস্তানতিন শহরটিকে পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী বানান, এটিতে ব্যাপক পুনর্নির্মাণ সাধন করে এটিকে রোমের মতো চরিত্র প্রদান করেন এবং এটির নাম বদলে প্রথম নতুন রোম (নোভ রোমা) ও পরবর্তীতে কোনস্তান্তিনোপল রাখেন।[৮] রোমান সাম্রাজ্যের পূর্ব অংশটি পরবর্তীতে বাইজেন্টীয় সাম্রাজ্য (পুরাতন বাইজেন্টিয়াম নাম অনুসারে) নাম ধারণ করে। ৫ম শতকের শেষভাগে পশ্চিম রোমান সাম্রাজ্য তথা রোমের পতনের পরে কোনস্তান্তিনোপল (বর্তমান ইস্তাম্বুল) সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার বছর ধরে বাইজেন্টীয় রোমান সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল। কোনস্তান্তিন ও তার উত্তরসূরীরা এখানে প্রাচীর, জলবাহী নালি, চৌবাচ্চা ও ফোয়ারা নির্মাণ করেন। সময়ের সাথে সাথে এটি রেশম পথের উপরে অবস্থিত সারা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নগরীতে পরিণত হয়। ৬ষ্ঠ থেকে ১৩শ শতক পর্যন্ত প্রায়শই নগরীটি পারসিক, আরব, বুলগার ও রুশ বাহিনীর অবরোধের শিকার হয়। ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে ইউরোপের খ্রিস্টান ধর্মযোদ্ধারা তাদের চতুর্থ ধর্মযুদ্ধে শহরটি দখল করে এবং এটিকে লাতিন খ্রিস্টান শাসনের অধীনে ফেরত নিয়ে আসে। ১২৬১ সালে এটি আবার বাইজেন্টীয় শাসনে প্রত্যাবর্তন করে। রোমান ও বাইজেন্টীয় শাসনামলে শহরটি খ্রিস্টধর্মের বিস্তারে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। ১৪৫৩ সালে উসমানীয় তুর্কিরা কোনস্তান্তিনোপল বিজয় করে। তারা শহরটিকে বিশাল উসমানীয় সাম্রাজ্যের রাজধানীর মর্যাদা দেয়। উসমানীয় শাসনামলে শহরটি আনুষ্ঠানিকভাবে কোস্তান্তিনিয়ে (قسطنطينيه )নামে পরিচিত ছিল। সেসময় এটি ইসলামি বিশ্বের অন্যতম প্রধান নগরীতে পরিণত হয়।[৯] প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয় বরণের পরে ১৯১৮ সালে উসমানীয় সাম্রাজ্যের অবসান ঘটে এবং কোস্তানতিনিয়ে নবগঠিত দেশ তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের অংশে পরিণত হয়। তুরস্কের রাজধানীকে আংকারাতে সরিয়ে নেওয়া হয়। ১৯৩০ সালে তুরস্কের স্বাধীনতার ৭ বছর পরে সরকারিভাবে শহরটির নাম ইস্তাম্বুল স্থির করা হয়। ইস্তাম্বুল কথাটি "ইস তিম্বোলিন" (εις την Πόλιν) নামক একটি গ্রিক শব্দগুচ্ছ থেকে এসেছে, যার অর্থ "শহরে বা শহরের দিকে"। এর আগে একাশত শতাব্দী থেকেই পুরাতন প্রাচীরবেষ্টিত শহরটিকে স্থানীয় গ্রিক ও পরবর্তীতে তুর্কি অধিবাসীরা অনানুষ্ঠানিকভাবে শুধু "ইস্তাম্বুল" (অর্থাৎ শহর) নামে ডাকত।[১০] ২০শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে নগরীটি দ্রুত বৃদ্ধিলাভ করে। ১৯৯৯ সালে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প ইস্তাম্বুলে আঘাত হানে, যার ফলে বহু হাজার লোক নিহত হয় ও বহু ভবন বিধ্বস্ত হয়। ২১শ শতকের শুরুতে ইস্তাম্বুলের পুনর্নিমাণ কাজগুলি শুরু হয় এবং পর্যটন খাত আবার পুনরুজ্জীবিত হতে শুরু করে।
ইস্তাম্বুলে ১ কোটি ৫০ লক্ষেরও অধিক অধিবাসীর বাস, যা তুরস্কের মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশ।[১১] শহরের ঐতিহাসিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্রসহ দুই-তৃতীয়াংশ অধিবাসীর বাসস্থান ইউরোপীয় অংশে অবস্থিত। জনসংখ্যার বিচারে ইউরোপের অংশ হিসেবে ধরলে এটি ইউরোপের বৃহত্তম নগরী (নতুবা রুশ রাজধানী মস্কো বৃহত্তম), এবং বিশ্বের ১৫তম বৃহত্তম নগরী। গ্রামীণ অঞ্চল থেকে বহুসংখ্যক অভিবাসী এই শহরের প্রতি আকৃষ্ট হয়, এবং তাদের কিয়দংশ শহরের উপকণ্ঠে বস্তি এলাকায় বাস করে। ইস্তাম্বুলের বেশিরভাগ লোক তুর্কি জাতির লোক। কুর্দিরা শহরটির বৃহত্তম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। তুর্কি ও কুর্দিদের সিংহভাগই মুসলমান। শহরের খ্রিস্টান ও ইহুদি সম্প্রদায়গুলি সংখ্যালঘু এবং এদের সংখ্যা দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে।
ইস্তাম্বুলে ফুটবল ও বাস্কেটবল দুইটি জনপ্রিয় ক্রীড়া। ইউরোপীয় অংশের গালাতাসারাই ফুটবল ক্লাবটি দেশের সেরা ফুটবল ক্লাব এবং এটি ২০০০ সালে ইউয়েফা কাপ ও ইউয়েফা সুপার কাপ শিরোপা জয় করে ইউরোপের সেরা ক্লাবের মর্যাদা অর্জন করেছিল।
পরিবহনসম্পাদনা
আকাশপথসম্পাদনা
- ইস্তাম্বুল আতাতুর্ক বিমানবন্দর (ইউরোপীয় অংশে)। এটি ইউরোপের তৃতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
- সাবিহা গ্যোক্চেন বিমানবন্দর (এশীয় অংশে)
তথ্যসূত্রসম্পাদনা
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;instanbul2
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ "Province Population"। সংগ্রহের তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১০।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ Çelik 1993, পৃ. xv
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;hisdic
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ OECD Territorial Reviews: Istanbul, Turkey। Policy Briefs। The Organisation for Economic Co-operation and Development। মার্চ ২০০৮। আইএসবিএন 978-92-64-04383-1।
- ↑ "Top city destinations by overnight visitors"। Statista (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ১ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ "Istanbul"। britannica.com। Encyclopædia Britannica।
- ↑ Mango, Cyril (১৯৯১)। "Constantinople"। Kazhdan, Alexander। The Oxford Dictionary of Byzantium। Oxford and New York: Oxford University Press। পৃষ্ঠা 508–512। আইএসবিএন 0-19-504652-8।
- ↑ Masters ও Ágoston 2009, পৃ. 114–15
- ↑ "Istanbul"। Encyclopedia Britannica (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ৪ ডিসেম্বর ২০২০।
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Population of Turkey
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি