গোকুল মেধ
গোকুল মেধ বগুড়া সদর থানার অন্তর্গত গোকুল গ্রামে খননকৃত একটি প্রত্নস্থল। স্থানীয়ভাবে এটি বেহুলার বাসর ঘর নামেই অধিক পরিচিত। তবে আসলে এটি বেহুলার বাসর ঘর নয়, একটি প্রাচীন বৌদ্ধ মঠ। অনেকে একে লক্ষ্মীন্দরের মেধও বলে থাকে।[১] এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অন্তর্ভুক্ত অন্যতম প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান।
গোকুল মেধ বেহুলার বাসর ঘর | |
---|---|
বৌদ্ধ বিহার | |
স্থানাঙ্ক: ২৪°৫৬′০৯.৯″ উত্তর ৮৯°২০′১০.১″ পূর্ব / ২৪.৯৩৬০৮৩° উত্তর ৮৯.৩৩৬১৩৯° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থান | গোকুল, বগুড়া |
সময়কাল | খ্রিস্টীয় ৪র্থ থেকে ১১শ শতক |
অবস্থান
সম্পাদনামহাস্থানগড় বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রায় ২ কি.মি দক্ষিণ পশ্চিমে গোকুল নামক গ্রাম এবং গোকুল, রামশহর ও পলাশবাড়ি গ্রাম তিনটির সংযোগ স্থলে এটি অবস্থিত।
ইতিহাস
সম্পাদনাবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তররের মতে, আনুমানিক খৃস্টাব্দ ৭ম শতাব্দী থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে এটা নির্মিত হয়। বলা হয়ে থাকে এখানে বেহুলার বাসর হয়েছিল। যা সেন যুগের অনেক পূর্বেকার ঘটনা। তবে বর্তমান গবেষকদের মতে, এ কীর্তিস্তম্ভ ৮০৯ থেকে ৮৪৭ খৃস্টাব্দে দেবপাল নির্মিত একটি বৌদ্ধমঠ। এখানে বহু গর্তযুক্ত একটি ছোট প্রস্তর খণ্ডের সঙ্গে ষাঁড়ের প্রতিকৃতির একটি স্বর্ণ পত্র পাওয়া গিয়েছিল। এ থেকে ধারণা করা হয়, এটি একটি বর্গাকৃতির শিব মন্দির ছিলো।[২] বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা ও হিউয়েন সাং তাদের ভ্রমণ কাহিনীতে এটাকে বৌদ্ধ মঠ রূপে উল্লেখ করেছিলেন বলে জানা যায়। আবার কোনো কোনো ঐতিহাসিক গ্রন্থে এই মেধকে একটি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রূপে উল্লেখ করা হয়েছে, এটি নির্মাণ করা হয়েছিল পুণ্ড্রবর্ধনের রাজধানীকে বাইরের শত্রু থেকে রক্ষা করার জন্য।[৩]
অবকাঠামো
সম্পাদনাইষ্টক নির্মিত এ স্তূপটি পূর্ব পশ্চিমে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ। এখানে ত্রিকোণ বিশিষ্ট ১৭২ টি কক্ষ আছে। এ কক্ষগুলো দেখতে অনেক অস্বাভাবিক এবং এর এলোমেলো নির্মাণশৈলী এর বোধগম্যতাকে আরো দুর্বোধ্য করে তোলে। এই স্তূপটি বাসর ঘর নয়। এই স্তূপটির পশ্চিম অংশে আছে বাসর ঘরের প্রবাদ স্মৃতিচিহ্ন। পূর্ব অংশে রয়েছে ২৪ কোণ বিশিষ্ট চৌবাচ্চাসদৃশ একটি স্নানাগার। উক্ত স্নানাগারের মধ্যে ছিল ৮ ফুট গভীর একটি কূপ। কূপটিতে বেহুলা লক্ষ্মীন্দর মধুনিশি যাপনের পর কূপের জলে স্নান করে তাতে শুদ্ধতা লাভ করতে সক্ষম হতেন।[৪]
চিত্রশালা
সম্পাদনা-
একদম চূড়ায় প্রবেশপথ
আরও দেখুন
সম্পাদনাতথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়া; প্রশ্নোত্তরে বাঙলাদেশের প্রত্নকীর্তি (প্রথম খন্ড); ঝিনুক প্রকাশনী; তৃতীয় মুদ্রণঃ মার্চ ২০১৩; পৃষ্ঠা-১৬২-১৬৪, ISBN 984- 70112-0112-0
- ↑ "গোকুল মেধ"। বাংলাপিডিয়া।
- ↑ "দেখা হয় নাই গোকুল মেধ"।গোকুল মেধ
- ↑ "গোকুল মেধ (বেহুলার বাসরঘর)- - Sadar Upazilla - বগুড়া সদর উপজেলা"।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]