খেতড়ির রাজা অজিত সিং

রাজা অজিত সিং বাহাদুর (১৬ অক্টোবর ১৮৬১ - ১৮ জানুয়ারী ১৯০১) ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের রাজপুতানা এস্টেটের ( অধুনা রাজস্থানের ঝুনঝুনু জেলার খেতরির শেখাওয়াত এস্টেটের (থিকানা) জনপ্রিয় শাসক। তিনি ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দ থেকে আমৃত্যু শাসকের পদে ছিলেন। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে তার পূর্ব সূরি ফতেহ সিং-এর মৃত্যুর পর, তিনি খেতরির অষ্টম রাজা হন। তিনি স্বামী বিবেকানন্দের একনিষ্ঠ অনুগামী ভক্ত ও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য এই যে, শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের দেহাবসানের পর নরেন্দ্রনাথ অন্য আটজন গুরুভাইদের সঙ্গে সন্ন্যাস নেন এবং তিনি সমগ্র ভারত পরিব্রাজনে বের হন। পরিব্রাজক অবস্থায় তীব্র বৈরাগ্যে তিনি স্বামী বিবিদিষানন্দ, স্বামী সচ্চিদানন্দ, স্বামী বিবেকানন্দ, এই তিনটি নাম ব্যবহার করছিলেন। স্বামীজির গভীর প্রজ্ঞা আর প্রতিভায় অভিভূত খেতরির রাজা অজিত সিং তাকে 'স্বামী বিবেকানন্দ' নামে আধ্যাত্মিক গুরু মেনে কেবল 'বিবেকানন্দ' নামে সবার মাঝে পরিচিত হওয়ার পরামর্শ ও অনুরোধ করেন। রাজা বুঝতে পেরেছিলেন, এই সন্ন্যাসীই একদিন জগত কাঁপিয়ে তুলবেন তাই তিনি পরিচিতির স্থায়ীত্বের জন্য কেবল বিবেকানন্দ নামটি রাখতে পরামর্শ দেন।

খেতরির রাজা অজিত সিং
রাজা অজিত সিং বাহাদুর
রাজ্যাভিষেক১৮৭০
পূর্বসূরিরাজা ফতে সিং
উত্তরসূরিরাজা জয় সিং বাহাদুর
জন্ম(১৮৬১-১০-১৬)১৬ অক্টোবর ১৮৬১
আলসিসার, পঞ্চপানা, শেখাওয়াত অঞ্চল, রাজপুতানা
মৃত্যু১৮ জানুয়ারি ১৯০১(1901-01-18) (বয়স ৩৯)
আগ্রা, উত্তর-পশ্চিম প্রদেশ
সমাধি
সঙ্গীরাণী চম্পাবতীজি সাহিবা
বংশধরসূর্য কুমারী (কন্যা)
চন্দ্রা কুমারী(কন্যা)
জয় সিং (পুত্র)
পূর্ণ নাম
রাজা অজিত সিং বাহাদুর
রাজবংশশেখাওয়াত
পিতাঠাকুর ছটু সিং
ধর্মহিন্দুধর্ম

জীবনী সম্পাদনা

প্রারম্ভিক জীবন এবং পটভূমি- সম্পাদনা

অজিত সিং ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ১৬ অক্টোবর উত্তর রাজস্থানের আলসিসার শেখাওয়াত এস্টেটে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন আলসিসারের বাসিন্দা ঠাকুর ছটু সিং। সিংহের মা ছিলেন যোধপুরের নিমাজের ঠাকুরের কন্যা ।

সিংহাসনে আরোহণ সম্পাদনা

১৮৯৭ সালে অজিত সিং রাণী ভিক্টোরিয়ার হীরক জয়ন্তী উদযাপনে যোগ দিতে ইংল্যান্ডে যান। অজিত সিং-এর এই ছবিটি ১৮৯৭ সালের ১৮ জুন দ্য লাফায়েট স্টুডিও, ১৭৯ নিউ বন্ড স্ট্রিট, লন্ডন, ডব্লিউ-তে তোলা হয়েছিল।[১][২]

সে সময় খেতরির রাজা ছিলেন ফতেহ সিং। তিনি অপুত্রক ছিলেন। সেকারণে অজিত সিংকে দত্তক নেন। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে ফতেহ সিং-এর মৃত্যুর পর, অজিত সিং সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন এবং খেতরির অষ্টম রাজা হন। খেতরি আয়তনে ছোট হলেও রাজ্যটি ছিল সেসময়ের রাজস্থানের অন্যতম উন্নত ও প্রগতিশীল রাজ্য। অজিত সিং শিল্প ও সঙ্গীতের একজন বড় ভক্ত ছিলেন। [৩] ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে তিনি রাণী ভিক্টোরিয়ার হীরক জয়ন্তীতে যোগ দিতে ইংল্যান্ডে যান । [৪]

বিবাহ এবং ব্যক্তিগত জীবন সম্পাদনা

১৮৭৬ খ্রিস্টাব্দে অজিত সিং আউয়ার ঠাকুর দেবী সিংয়ের কন্যা চম্পাবতীজি সাহিবাকে বিবাহ করেন। রাণী চম্পাবতীজি সাহিবা ১৯০৪ খ্রিস্টাব্দের ১৬ মে মারা যান। মহারাজ অজিত সিং এবং চম্পাবতীজি সাহিবার দুই কন্যা এবং এক পুত্র ছিল।

  • তাদের প্রথম কন্যা, সূর্য কুমারী, ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন, তার বিবাহ হয় ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে শাহপুরার রাজাধিরাজা সাহেব উমেদ সিংজি দ্বিতীয় বাহাদুরের সঙ্গে। সূর্যকুমারী ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের ৮ আগস্ট শাহপুরায় মারা যান।
  • তাদের দ্বিতীয় কন্যা, চন্দ্রকুমারী ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দের ১৭ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে তার বিবাহ হয় প্রতাপগড়ের মান সিংয়ের সঙ্গে।
  • তাদের একমাত্র পুত্র জয় সিং সাহেব ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি আগ্রায় জন্মগ্রহণ করেন। অজিত সিং-এর পুত্র সন্তান লাভ ঘটেছিল স্বামীজির আর্শীবাদে। তিনি আজমিরের মেয়ো কলেজে পড়াশোনা করেন। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে অজিত সিংয়ের মৃত্যুর পর, জয় খেতরির নবম রাজা হন। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি তার পিতার স্মৃতিতে অজিত সিং হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন। যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ১৯১০ খ্রিস্টাব্দের ৩০ মার্চ জয়পুরে মারা যান ।

জীবনাবসান সম্পাদনা

অজিত সিং নিজের খরচে আগ্রায় কিছু পুরানো স্থাপত্য নিদর্শন পুনরুদ্ধার করছিলেন এবং পরিদর্শনে আগ্রায় গিয়েছিলেন। তিনি ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জানুয়ারি আগ্রায় মুঘল সম্রাট আকবরের সমাধি কমপ্লেক্সে একটি টাওয়ার আচমকা ভেঙে পড়ার কারণে আঘাত পান এবং সেই আঘাতের কারণে মারা যান। মথুরায় তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৯ বছর ৩ মাস। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই যে, স্বামী বিবেকানন্দও ৩৯ বৎসর পাঁচ মাস চব্বিশ দিন বয়স দেহত্যাগ করেন।[৫]

মিসেস সেভিয়ারকে দেখতে মায়াবতীতে যাওয়ার পথে স্বামীজি খেতরির রাজার আকস্মিক মৃত্যুর খবর পান। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি তিনি মিসেস ওলে বুলকে এক চিঠিতে দুঃসংবাদটি জানান।

১৯০১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ মে মার্হি হেলকে লেখা এক পৃথক চিঠিতে বিবেকানন্দ জানান—

খেতরির রাজা কয়েক মাস আগে আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় মারা যান। তাই আপনি নিশ্চয় বুঝতে পাচ্ছেন যে, এখন আমার সমস্ত কিছুই অন্ধকার হয়ে গেছে এবং আমার নিজের স্বাস্থ্যও ভাল নেই। তবুও আমি শীঘ্রই সব কিছু কাটিয়ে উঠব নিশ্চিত এবং পরবর্তী কাজের জন্য অপেক্ষায় আছি।

১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুলাই নিবেদিতাকে স্বামীজি লেখেন- ‘আমার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কর্মী খেতড়ীর রাজা’। মহারাজের অকালমৃত্যুর পর লিখেছিলেন, ‘আমি কখনও তাঁর অনুগ্রহের ঋণ শোধ করতে পারব না’।[৬]

স্বামী বিবেকানন্দের সাথে সম্পর্ক সম্পাদনা

I have not the least shame in opening my mind to you, and that I consider you as my only friend in this life.

Swami Vivekananda in a letter
written on 22 November 1898.[৭]

১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের জুনে প্রথম সাক্ষাতের পর থেকে আমৃত্যু (১৯০১ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারি) অজিত সিং স্বামী বিবেকানন্দের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং শিষ্য ছিলেন। কপর্দকশূন্য বাঙালি সন্ন্যাসীর বিশ্বজয়ী সাইক্লোনিক হিন্দু সন্ন্যাসী হয়ে ওঠার পথে স্বীকৃতি, লোকবল, অর্থসাহায্য দিয়ে খেতরি রাজ অজিত সিং তার গুরুকে জগতে সম্মুখীন হওয়ার সুযোগ করে দেন।[৬]

১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দে ২২ নভেম্বরে লেখা চিঠিতে বিবেকানন্দ উল্লেখ করেন—

আপনার কাছে মন খুলে বলতে আমার এতটুকু লজ্জা নেই এবং আমি আপনাকে এই জীবনে আমার একমাত্র বন্ধু বলেই মনে করি।

[৮]

এছাড়াও, ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দ হতে আজীবন (অর্থাৎ ১৯১১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত) তার গর্ভধারিনীর ভরণপোষণের মাসোহারার ব্যবস্থা, রামকৃষ্ণ মিশনের অঙ্কুরোদ্গম সবেতেই স্বামীজি পাশে পেয়েছিলেন খেতরিনরেশকে।

স্বামী বিবেকানন্দের সাথে প্রথম সাক্ষাৎ (১৮৯১) সম্পাদনা

১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে শ্রীরামকৃষ্ণের দেহাবসানের পর ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে বিবেকানন্দ (তখন নরেন্দ্রনাথ দত্ত) এবং রামকৃষ্ণের অন্যান্য আটজন শিষ্য বরানগর মঠে আনুষ্ঠানিক সন্ন্যাস ব্রত গ্রহণ করেন। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে, বিবেকানন্দ বরানগরের মঠ ত্যাগ করে একজন পরিভ্রমণকারী সন্ন্যাসী হিসাবে তার জীবন শুরু করেন। পরিব্রাজক হিসাবে স্বামীজি রাজস্থানের আবু পাহাড়ে প্রথমে চম্পাগুম্ফায় তপস্যায় নিমগ্ন, তিনি সাক্ষাৎ পান একজন মুসলমান উকিলের। পরে সেই উকিলের বাংলোয় অবস্থানকালে সেখানে আসেন খেতরি রাজার দেওয়ান জগমোহনলালজী। তারই মাধ্যমে অজিত সিংয়ের সঙ্গে স্বামীজির প্রথম সাক্ষাৎ ঘটে আবু পাহাড়ে রাজার রাজপ্রাসাদে ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ৪ জুনের সন্ধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন যোধপুরের রাজা প্রতাপ সিং। প্রথম সাক্ষাতে স্বামীজির বাংলা, ইংরাজী এবং সংস্কৃত ভাষার দক্ষতায় মুগ্ধ হন। পরিচয়ের প্রথম পর্বে নানা বিষয়ে আলাপ-আলোচনার পর রাতের আহার সমাপনান্তে রাত এগারোটায় রাজ প্রাসাদ ত্যাগ করেন স্বামীজি। [৮]প্রথম পরিচয়েই স্বামীজি যেমন খেতরিনরেশের হৃদয় জয় করেন, তেমনই খেতরিনরেশও সন্ন্যাসীর হৃদয় স্পর্শ করেন। কেননা সেই সাক্ষাতের পর জুন মাসের ৬, ৮, ৯,১১,১৪,১৭,১৮ তারিখের বিভিন্ন সময়ে আবু পাহাড়েই রাজা অজিত সিংয়ের সাক্ষাৎ এবং নানা বিষয়ে তাদের আলোচনা হয়। [৯] পরে স্বামীজি ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুলাই অজিত সিংয়ের পীড়াপীতেই খেতড়ি অভিমুখে যাত্রা করেন। দুজনে ৭ আগস্ট খেতড়িতে পৌঁছানোর অল্প দিনের মধ্যেই রাজা অজিত সিং স্বামীজির কাছ থেকে মন্ত্র দীক্ষা গ্রহণ করে তার শিষ্য হন। রাজা স্বামীজিকে অত্যন্ত ভালবাসতেন এবং যথেষ্ট সম্মান ও শ্রদ্ধা করতেন। স্বামীজিও আশা রাখতেন, খেতড়িনরেশের দ্বারা ভারতের কল্যাণ সাধনে তিনি কিছু করতে পারবেন। তাই তিনি তার ধর্মজীবনের ভার শুধু গ্রহণ করেন নি, লৌকিক জ্ঞানার্জনে বিশেষ সাহায্য করেছিলেন। পরিব্রাজক জীবনে ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট হতে ২৭ অক্টোবর ছিল খেতড়িতে স্বামীজির দীর্ঘতম অবস্থান। [৮] ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ৯ আগস্ট খেতড়ির রাজার রাজসভায় রাজা অজিত সিংয়ের আমন্ত্রণে উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার শেষে রাজসভায় শেষ অনুষ্ঠানে বসছে মজলিস। এক বাঈজী গান গাইবেন। শুনে স্বামীজি সভা থেকে বেরুতে চাইলেন। খেতড়ীর রাজা তখন স্বামীজিকে অনুরোধ করলেন আরও কিছু ক্ষণ থেকে যাওয়ার জন্য। স্বামীজি রাজার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করছেন জেনে বাঈজী সেসময় শুরু করেন সুরদাসের ভজন—

'প্রভু মেরে অবগুণ চিত্ না ধর। সমদরশি হ্যায় নাম তুমহারও, চাহে তো প্যার করো...।’

যার অর্থ হল- হে প্রভু, হে ঈশ্বর, আমার মন্দগুণের (পাপটুকুর) দিকে তাকাইও না, সমদর্শী তুমি, তুমি তোমার নামের গৌরব অক্ষুন্ন রাখো।

বাঈজীর দরদি কণ্ঠের সেই বিখ্যাত গান শেষ হলে অভূতপূর্ব দৃশ্যে ধরা পড়ে স্বামীজির চোখে কেবল অশ্রুধারা। গান শুরুর পূর্ব মুহূর্তে স্বামীজির যে অকারণ দম্ভ ও বুদ্ধিবৃত্তির একধরনের অসহিষ্ণুতা ছিল, গণিকা বা পতিতা নারীদের প্রতি যে আভিজাত্যপূর্ণ ঘৃণা ছিল তা মুহূর্তে দূর হয়ে যায়। সহসা জ্ঞানচক্ষুর উন্মেষে তিনি বাঈজীকে মা সম্মোধন করেন। তিনি বুঝেছিলেন, ঈশ্বরের প্রকাশ ছাড়া এ ঘটনা কিছুতেই সম্ভব নয়। দক্ষিণেশ্বরে রামকৃষ্ণের সাক্ষাতের পর এই অভাবনীয় ঘটনা নিঃসন্দেহে স্বামীজির জীবনে চিত্তশুদ্ধির উচ্চস্তরের দিশা প্রদর্শনে সহায়ক হয়েছিল। [১০][১১]

রাজস্থানের প্রখর তাপ ও ঊষ্ণ বাতাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রাজা অজিত সিং স্বামীজিকে পাগড়ি পরার পরামর্শ দেন এবং রাজস্থানী শৈলীতে পরার কৌশল দেখান। বিবেকানন্দ খুব দ্রুতই কৌশলটি শিখে নেন এবং পরবর্তীতে তিনি নিজস্ব শৈলী উদ্ভাবন করেন যা তার জীবনে সাধারণ পোশাকের অন্যতম অংশ হয়ে ওঠে। [১২] খেতড়িতে অবস্থানকালে বিবেকানন্দ রাজপুতানার সংস্কৃতি ও জীবনধারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে তিনি বক্তৃতা ও চিঠিতে প্রশংসা করেন। [১২][১৩]

স্বামী বিবেকানন্দের সাথে দ্বিতীয় সাক্ষাৎ (১৮৯৩) সম্পাদনা

পুত্র জয় সিংএর সঙ্গে খেতরির রাজা অজিত সিং। ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে অজিত সিংয়ের মৃত্যুর পর, জয় সিং খেতরির নবম রাজা হন
১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে শিকাগো শহরে স্বামী বিবেকানন্দ

স্বামী বিবেকানন্দ তাঁর জীবদ্দশায় আরও দু'বার খেতরি পরিদর্শন করেন- ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে এবং ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে। ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে, বিবেকানন্দ ২১ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত তিন সপ্তাহ খেতরিতে ছিলেন।[৮]

বিশ্বের ধর্ম সংসদে যোগদানের জন্য সহায়তা ও উৎসাহ—

বিবেকানন্দ ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে শিকাগোতে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে বক্তা হিসাবে যোগদানের জন্য আমেরিকা যাওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। অজিত সিং যখন এই বিষয়ে জানতে পারেন, তখন তিনি বিবেকানন্দকে হিন্দুধর্ম ও ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে যোগ দিতে উৎসাহিত করেন। স্বামীজিকে আমেরিকা পাঠানোর যে ব্যয়বহুল সংকল্প খেতড়িনরেশ গ্রহণ করেন, তার মধ্যে স্বামীজির মাতা ও ভ্রাতার জন্য মাসিক একশত টাকা ব্যয়-বরাদ্দ অন্তর্ভুক্ত ছিল। কারণ রাজা স্বামীজিকে তার মাতা ও ভ্রাতা সম্পর্কিত দুশ্চিন্তা হতে মুক্তরেখেই বিদেশে পাঠানো তার নিজের কর্তব্য স্থির করেছিলেন। [৯]

অজিত সিং-এর অনুরোধ ও পরামর্শে স্বামীজি সচ্চিদানন্দ নামটির পরিবর্তে স্থায়ীভাবে সহজবোধ্য এবং সহজে উচ্চারণযোগ্য স্বামী বিবেকানন্দ নামটি গ্রহণ করেন। [৬]

খেতড়িনরেশের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের সময় অজিত সিং অপুত্রক ছিলেন। রাজার বিশ্বাস ছিল, স্বামীজির আশীর্বাদ প্রাপ্ত হলেই তার পুত্র সন্তান লাভ হবে। প্রথম সাক্ষাতের পর স্বামীজির আশীর্বাদে সত্যিই ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২৬ জানুয়ারি রাজার পুত্র লাভ হয়।

আমেরিকা গমনের সময় ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের ৯ মে বোম্বাই যাওয়ার একদিন আগে, বিবেকানন্দকে তিনি প্রাসাদের মহিলা কক্ষে যাওয়ার অনুরোধ করলে স্বামীজি রাজার নবজাতক পুত্র জয় সিংকে আশীর্বাদ করেন। [১২] ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে জুনাগড়ের দেওয়ান হরিদাস বিহারীদাস দেশাইকে এক চিঠিতে বিবেকানন্দ লেখেন-[১৪]

আপনার স্মরণে আছে যে, আগে থেকেই আমার শিকাগো যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। যখন আমি মাদ্রাজে ছিলাম, মহামহিমান্বিত মহীশূররাজ রামনাদ সহ সেখানকার মানুষজনের ইচ্ছায় তারা আমাকে পাঠানোর সমস্ত ব্যবস্থা করেছিলেন। আপনার আরও নিশ্চয় স্মরণে থাকতে পারে যে, মহামহিমান্বিত খেতড়িনরেশের সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ ভালোবাসার সম্পর্ক রয়েছে। আমি অবশ্য সেকারণে তাকে লিখেছিলাম যে আমি আমেরিকা যাচ্ছি। ভালবাসার সেই বন্ধনে খেতড়ির নরেশ ইচ্ছা প্রকাশ করেন যে, আমি যাওয়ার প্রাক্কালে যেন তাকে একবার দেখা করি এবং বিশেষ করে যেহেতু ঈশ্বর তার সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রদান করেছেন এবং তাদের সেই আনন্দঘন মুহূর্তের মাঝে আমার উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য তিনি তার দেওয়ানকে মাদ্রাজে পাঠান, যাতে অবশ্যই আমি আসতে বাধ্য হই।

১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের ১০ মে বিবেকানন্দ খেতড়ি হতে বোম্বাইয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলে রাজা অজিত সিং স্বামীজিকে জয়পুর পর্যন্ত সঙ্গে থাকেন এবং বোম্বাই পর্যন্ত তিনি তার মুন্সি জগমোহলালজীকে পাঠান। বোস্টনে পৌঁছানোর পর যখন অজিত সিং জানতে পারেন যে স্বামীজি বিদেশী অর্থ হারিয়ে ফেলেছেন, তিনি অবিলম্বে টেলিগ্রাফ পরিষেবার মাধ্যমে আরও ১৫০ মার্কিন ডলার পাঠান।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই যে, স্বামী বিবেকানন্দের সমুদ্রযাত্রার জন্য প্রথমে নিম্ন শ্রেণীর টিকিট ছিল, কিন্তু অজিত সিং এটির বিনিময়ে প্রথম শ্রেণীর টিকিটের ব্যবস্থা করেন। যাত্রাকালীন খরচ মেটানোর জন্য তিনি তাকে যথেষ্ট পরিমাণ বিদেশী অর্থও প্রদান করেছিলেন। [১২]

স্বামী বিবেকানন্দ পাশ্চাত্যে অবস্থানকালে অজিত সিংকে এবং পরে ভারত প্রত্যাগমনের পর বহু চিঠি লেখেন। অজিত সিং বিবেকানন্দকে তার সমাজসেবার জন্য যে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন, তা তিনি নানা অবস্থানে তার চিঠিপত্রে ও বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন। ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১১ অক্টোবর মুন্সি জগমোহনলালকে এক চিঠিতে লেখেন, "কিছু নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কিছু মানুষের জন্ম হয় নির্দিষ্ট ক্রিয়া সম্পাদনের জন্য। অজিত সিং এবং আমি এমন দুটি আত্মা- জন্মেছি যে মানবজাতির ভালো কাজের জন্য আমরা একে অপরকে সাহায্য করার জন্য। মানবজাতির ভালোর জন্য কাজ করুন।... আমরা একে অপরের পরিপূরক" [৯]

স্বামী বিবেকানন্দের সাথে তৃতীয় সাক্ষাৎ (১৮৯৭) সম্পাদনা

শিকাগোতে অনুষ্ঠিত বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলন শেষে পাশ্চাত্য থেকে (১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১৯ ফেব্রুয়ারি) কলকাতা ফিরে আসার পর কর্মক্লান্ত ও ভগ্ন স্বাস্থ্য স্বামীজি চিকিৎসকের পরামর্শে ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে মার্চ মাসের মাঝামাঝি বায়ু পরিবর্তনের জন্য দার্জিলিঙে যান। কিন্তু তার একনিষ্ঠ অনুগামী ভক্ত রাজা অজিত সিং কলকাতায় আসেন। রাজার আগ্রহে আর অনুরোধে স্বামীজি তার সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে ২১ মার্চ কলকাতা ফেরেন প্রায় সপ্তাহ খানেকের জন্য। বন্ধুত্বের গভীর সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন ভক্ত-শিষ্য দুজনেই। [১৫]

পরে যখন স্বামীজি দেরাদুনে অবস্থান করছিলেন ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দে অজিত সিং তাকে বেশ কয়েকটি চিঠিতে পুনরায় খেতড়ি আসার আমন্ত্রণ জানান। সেখান থেকে তিনি দিল্লি, আলওয়ারজয়পুর হয়ে খেতরিতে যান। বিবেকানন্দের আগমনের সংবাদ পাওয়া মাত্রই অজিত সিং তাকে স্বাগত জানাতে তার প্রাসাদ থেকে বারো মাইল (ঊনিশ কিলোমিটার) ভ্রমণপথে স্বাগত জানাতে সঙ্গী হন এবং এক শোভাযাত্রায় খেতড়িতে নিয়ে আসেন। প্রাসাদের সমস্ত কর্মচারী স্বামী বিবেকানন্দের চরণ স্পর্শ করে এবং প্রত্যেকে একটি করে দুই টাকার মুদ্রা দিয়ে সম্মান প্রদর্শন করে। অজিত সিং বিবেকানন্দকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে তিন হাজার মুদ্রা প্রদান করেন।[১৬]

১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর স্বামী বিবেকানন্দ এক প্রকাশ্য জনসভায় অজিত সিংয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন -

ভারতের উন্নতির জন্য সামান্য যা কিছু আমি করতে পেরেছি খেতড়ি রাজের সঙ্গে পরিচয় না হলে তা আমার পক্ষে সম্ভব হত না।

[৮]

১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ ডিসেম্বর, স্বামী বিবেকানন্দ খেতড়িতে কয়েকজন ইউরোপীয়ের উপস্থিতিতেও একটি বক্তৃতা দেন।

বিবেকানন্দের পরিবারকে সহায়তা সম্পাদনা

 
স্বামী বিবেকানন্দের মাতা ভুবনেশ্বরী দেবী (১৮৪১-১৯১১)

স্বামীজির গভীর প্রজ্ঞা ও পাণ্ডিত্যে খেতড়ির রাজা অজিত সিং তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। পুঙ্খানুপুঙ্খ পারিবারিক বিবরণ তিনি পরিচয়ের প্রথম পর্বেই জেনেছেন। রামকৃষ্ণ অনুশাসন তথা ভাবধারায় সন্ন্যাস গ্রহণ করেও, স্বামীজি মাতৃভক্তিকে সন্ন্যাসের বেদীমূলে বলি দেন নাই বরং মায়ের প্রতি, সংসারের প্রতি কর্তব্য নিষ্পাদনে সচেষ্ট ছিলেন। অজিত সিং ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দ হতেই কলকাতায় স্বামীজির পরিবারকে একশত টাকা মাসিক উপবৃত্তি পাঠাতে শুরু করেন। অন্যদিকে খেতড়ি রাজ যখন স্বামীজির বিশ্বধর্ম মহাসম্মেলনে যোগদানের আগ্রহের কথা জানতে পারেন তখনই তার ব্যয়বহুল যাত্রাপথের সংকল্প গ্রহণ করেন আর সেই সঙ্গে স্বামীজির মাতা ও ভ্রাতাদের জন্য মাসিক একশত টাকা ব্যয়-বরাদ্দ অন্তর্ভুক্ত করেন যাতে স্বামীজি তার পরিবার সম্পর্কিত দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকেন এবং সম্মেলনে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেন। [১৭] পারিবারিক সাহায্যের ব্যাপার টি এতই গোপনে রাখা হয়েছিল যে, প্রথম পর্বে রাজার মুন্সী জগমোহনলালজীও জানতেন না। পরে ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দের ৬ জুলাই স্বামীজির অনুজ  মহেন্দ্রনাথ দত্তকে লেখা এক চিঠিতে টাকা পাঠানোর পদ্ধতিতে জ্ঞাত হয়।

১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের ১ ডিসেম্বর বিবেকানন্দ বেলুর থেকে অজিত সিংকে চিঠি লিখে উপবৃত্তিটিকে স্থায়ী করার অনুরোধ জানান যাতে স্বামীজির মৃত্যুর পরেও তার মা নিয়মিত সেই আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন। [১৮] সেই চিঠিতে বিবেকানন্দ লিখেছেন—[১৯]

আমি আপনার কাছে আরও একটি অনুরোধ করব— যদি সম্ভব হয় আমার মায়ের জন্য আপনার উপবৃত্তির পরিমাণ একশত টাকা স্থায়ী করা হোক, যাতে আমার মৃত্যুর পরেও এটি তার কাছে নিয়মিত পৌঁছাতে পারে। অথবা এমনকি যদি আপনার কখনও আমার প্রতি আপনার ভালবাসা এবং দয়া বন্ধ করার কারণ পান, তবে আমার দরিদ্র বৃদ্ধ মাকে প্রদান করা যেতে পারে, আপনার একবার একজন দরিদ্র সন্ন্যাসীর প্রতি আপনার ভালবাসার কথা স্মরণে রেখে।

গুরুর প্রতি উদার মনের কোমল হৃদয়ের খেতড়িরাজ অজিত সিং তার মৃত্যুর (১৯০১ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জানুয়ারি) আগে পর্যন্ত মাসিক উপবৃত্তি পাঠাতে থাকেন। অজিত সিং এই সহায়তার প্রচার করতে চাননি এবং পুরোপুরি গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। [১৭]

খেতড়ি রাজের সংরক্ষণাগার রক্ষিত বিভিন্ন সময়ে লেখা নানা চিঠিগুলিতে পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ, কুশল বিনিময়ের সঙ্গে শরৎ মহারাজ, যোগেন মহারাজ এবং মিস্টার স্যান্ডেলের মাধ্যমে প্রতি মাসে অর্থ প্রদানের বিষয়, প্রাপ্তিস্বীকার উল্লেখ আছে। আর্থিক সাহায্যের পর্ব ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে শুরু হলেও খবরটি প্রকাশিত হয় আরো আটদশক পরে যখন দত্ত পরিবারের নায়িকাদের কেউই  ইহজগতে নেই। [৮]

খেতড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনের প্রতিষ্ঠা সম্পাদনা

১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে খেত্রির প্রাসাদে মহারাজ অজিত সিংয়ের পৌত্র বাহাদুর সর্দার সিং খেত্রিতে রামকৃষ্ণ মিশনের শাখার জন্য খেত্রির প্রাসাদ দান করেন। প্রাসাদটির নামকরণ করা হয় বিবেকানন্দ স্মৃতি মন্দির। মহারাজ অজিত সিং এবং স্বামী বিবেকানন্দের মার্বেল মূর্তি স্থাপন করা হয়েছে। প্রসাদের উপরের তলার যে ঘরে স্বামীজি অবস্থান করতেন এবং অজিত সিংয়ের সাথে আধ্যাত্মিক আলোচনার করতেন, সেটিকে উপাসনা ঘরে রূপান্তরিত করা হয়েছে। [২০]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. "Image of Ajit Singh Khetri in London"। Lafayette Negative Archive। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৩ 
  2. "Image of Ajit Singh Khetri in London"। Lafayette Negative Archive। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৩ 
  3. "RKMission Khetri History"। RKMission Khetri। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৩ 
  4. "Raja of Khetri 1897"। lafayette.org.uk। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৩ 
  5. S.V. Bharathi। Educational Philosophy of Swami Vivekananda। Discovery Publishing House। পৃষ্ঠা 30। আইএসবিএন 978-81-8356-023-8 
  6. "স্বামীজি-মহারাজা সংবাদ"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৩-২৮ 
  7. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Letter 22 November 1898 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  8. মুখোপাধ্যায়, মণিশঙ্কর (শঙ্কর) (২০০৩)। অচেনা অজানা বিবেকানন্দ। সাহিত্যম্ কলকাতা। পৃষ্ঠা ৬০,৬১,৬২। আইএসবিএন 81-7267-034-6 
  9. শর্মা, বেণীশঙ্কর (১৯৬৩)। স্বামী বিবেকানন্দ:এ ফরগটেন চ্যাপ্টার অফ হিজ লাইফ (ইংরাজীতে)। টুওয়ার্ডস ফ্রিডম (২০২১)। আইএসবিএন 978-81-8206-032-6 
  10. Gopal Shrinivas Banhatti (১৯৯৫)। Life And Philosophy of Swami Vivekananda। Atlantic Publishers & Dist। পৃষ্ঠা 24। আইএসবিএন 978-81-7156-291-6 
  11. Chetanananda (Swami.) (২০০১)। God Lived with Them। Advaita Ashrama। পৃষ্ঠা 42আইএসবিএন 978-81-7505-198-0 
  12. "Swami Vivekananda's Special Relationship with Raja Ajit Singh – II"। Ramakrishna Mission, Khetri। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৩ 
  13. "Letter 5 September1894"। Wikisource। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৩ 
  14. "Vivekananda's letter May 1893"। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৩ 
  15. প্রথম খণ্ড, স্বামী লোকেশ্বরানন্দ (২০১৯)। শতরূপে সারদা। কলকাতা: রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অফ কালচার। পৃষ্ঠা ১৯। আইএসবিএন 978-81-8584-311-7 
  16. Bhawan Singh Rana; Mīnā Agravāla (২০০৫)। The Immortal Philosopher of India Swami Vivekananda। Diamond Pocket Books (P) Ltd.। পৃষ্ঠা 95। আইএসবিএন 978-81-288-1001-5 
  17. Sankar (২০১১)। The Monk As Man: The Unknown Life of Swami Vivekananda। Penguin Books India। পৃষ্ঠা 54আইএসবিএন 978-0-14-310119-2 
  18. Devika Rangachari (২০১১)। Swami Vivekananda: A Man with a Vision। Penguin Books Limited। পৃষ্ঠা 137। আইএসবিএন 978-81-8475-563-3 
  19. "1 December 1898 letter"। Vivekananda.net। ২৫ জুলাই ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ মে ২০১৩ 
  20. "History"। Ramakrishna Mission, Khetri।