খালিস্তান কমান্ডো বাহিনী

শিখ সন্ত্রাসী সংগঠন

খালিস্তান কমান্ডো বাহিনী সংক্ষেপে কেসিএফ ভারতীয় রাজ্য পাঞ্জাব ভিত্তিক একটি সশস্ত্র শিখ সংগঠন। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট,[৩] এবং পাঞ্জাব পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী মহাপরিদর্শক অনুযায়ী,[৪] এই সংগঠনটি অনেকগুলি গুপ্তহত্যার জন্য দায়ী, যেমন:- ১৯৯৫ সালের গুপ্তহত্যা; যাতে পাঞ্জাবের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বেয়ান্ত সিংহের হত্যা করা হয়েছিল।[৩]

খালিস্তান কমান্ডো বাহিনী
নেতামানবীর সিং চাহেরু (১৯৮৭)
লাভ সিং  (১৯৮৭–১৯৮৮)
কনওয়ারজিৎ সিং সুলতানউইন্ড (১৯৮৮–১৯৮৯)
পরমজিৎ সিং পঞ্জওয়ার[১]
অপারেশনের তারিখ১৯৮৭–১৯৯৩
উদ্দেশ্যপাঞ্জাব ও প্রতিবেশী রাজ্যের কয়েকটি জেলা নিয়ে খালিস্তান নামক একটি শিখ স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা।
সক্রিয়তার অঞ্চলভারত
মতাদর্শসিখ জাতীয়তাবাদ
অবস্থা ভারত Under the Unlawful Activities (Prevention) Act designated as terrorist organisation by the Government of India[২]

উপলব্ধি সম্পাদনা

খালিস্তান কমান্ডো বাহিনী একটি বিতর্কিত সংগঠন। ১৯৮৪ সালে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী স্বর্ণমন্দির দখল নেওয়ার সময়, সংগঠনটি প্রকাশ্যে বোমাবাজি করে; এবং এটিই ছিল সংগঠনটির প্রথম সশস্ত্র সামরিক উপলব্ধি। তাদের দ্বারা সংঘটিত বিভিন্ন গুপ্তহত্যা, হত্যা ও অন্যান্য হিংসাত্মক কাজের কারণে ভারত সরকার খালিস্তান কমান্ডো বাহিনীকে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে, তবে সংগঠনটি এখনও বৈশ্বিকভাবে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষিত নয়। বিশেষ উল্লেখ্য, যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেট কর্তৃক এই কেসিএফ সংগঠনটি এখনও "সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে মনোনীত নয়"।[৩][৫][৬]

খালিস্তান কমান্ডো বাহিনীর সদস্যরা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবী করে[৭] এবং প্রবাসী শিখদের অনেকাংশ এদের সমর্থন করে।[৮]

প্রতিষ্ঠা ও নেতৃত্ব সম্পাদনা

খালিস্তান কমান্ডো বাহিনী সংগঠনটি ১৯৮৬ সালে একজন শিখ জাতীয়তাবাদী নেতা মানবীর সিং চাহেরু কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়।[৯][১০][১১]

১৯৮৬ সালের ৮ অগাস্ট, পাঞ্জাব পুলিশ মানবীর সিং চাহেরুকে (হরি সিং) গেরেপ্তার করে, এবং শেষপর্যন্ত তাকে হত্যা করা হয়[১২][১৩] অথবা তিনি পুলিশ হেফাজত থেকে নিখোঁজ হন।[১৪] চাহেরু গেরেপ্তার হওয়ার পর, প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা সুখদেব সিং যিনি (সুখা সিপাহী নামেও পরিচিত) বাহিনীর কামান সামলান। সুখদেব সিং নিজের নাম পরিবর্তন করে লাভ সিং নাম রাখেন এবং তিনি "জেনারেল" উপাধী ধারণ করেন।

লাভ সিংহের মৃত্যুর পর কনওয়ারজিৎ সুলতানউইন্ড কেসিএফ-এর নেতৃত্ব দেন[১৫][১৬] ১৮ অক্টোবর ১৯৮৯ সালে, কনওয়ারজিৎ সুলতানউইন্ড,[১৭] এবং কেসিএফ-এর দুজন অন্য সদস্যদের পুলিশ জলন্ধরের নিকট গেরেপ্তার করে। যদিও এদের একজন পালাতে সফল হয়, অন্যজন যে কনওয়ারজিৎ সুলতানউইন্ডের তুলনায় ২৩ বছর বয়সী, তিনি এই সংগঠন সম্বন্ধিত তথ্য প্রদান এড়াতে সায়ানাইড ক্যাপসুল খেয়ে আত্মত্যাগ করেন।[১৭]

পতন সম্পাদনা

পুলিশ লাভ সিংকে ১২ জুলাই ১৯৮৮ সালে হত্যা করে।[১৮] তাকে হারিয়ে সংগঠনটি সম্পূর্ণরূপে ভেঙেপড়ে। তার মৃত্যুর পর, ওয়াসান সিং জফরওয়াল এবং পরমজিৎ সিং পঞ্জওয়ার ও গুরজন্ত সিং রাজস্থানী এদের নেতৃত্বে, খালিস্তান কমান্ডো বাহিনী, দুটি দলে বিভক্ত হয়েপড়ে।[১৯]

লাভ সিংহের মৃত্যুর ফলে খালিস্তান কমান্ডো বাহিনী - বব্বর খালসা জোট, যা লাভ সিং ও সুখদেব সিং বব্বর মিলে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন; সেই জোটও ভেঙে যায়।[২০]

পুলিশ ও অন্যান্য ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী সসংগঠনটি সদ্যসদের গেরেপ্তার করে অথবা তাদের হত্যা করে। এভাবে শেষপর্যন্ত খালিস্তান কমান্ডো বাহিনী চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়।[২১]

সক্রিয়তা সম্পাদনা

বর্তমান অবস্থা সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. Paramjit Singh Panjwar (Khalistan Commando Force) The Indian Express, 4 December 2008
  2. "Terrorism Act 2000"Ministry of Home Affairs (India)। ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ০২ অগাস্ট, ২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  3. "U.S. Court Convicts Khalid Awan for Supporting Khalistan Commando Force"। Embassy of the United States in New Delhi, India। ২০ ডিসেম্বর ২০০৬। ১১ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ মে ২০০৯ 
  4. "Law Enforcement Cases: International Narcotics Control Strategy Report: Bureau of International Narcotics and Law Enforcement Affairs"। US Department of State। March 2008। ১১ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ০২ অগাস্ট, ২০১৬  এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  5. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ৯ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ আগস্ট ২০১৬ 
  6. "Law Enforcement Cases: International Narcotics Control Strategy Report: Bureau of International Narcotics and Law Enforcement Affairs"। US Department of State। মার্চ ২০০৮। ১১ জুন ২০০৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুন ২০০৯ 
  7. Mahmood, Cynthia Keppley (১৯৯৭)। Fighting for Faith and Nation: Dialogues with Sikh Militants (illustrated সংস্করণ)। Many interviews, example on page 102: University of Pennsylvania Press। পৃষ্ঠা 314। আইএসবিএন 978-0-8122-1592-2 
  8. "U.S. Sikhs back militants' fight for homeland"। THE WASHINGTON TIMES। ১৮ নভেম্বর ১৯৯১। সংগ্রহের তারিখ ২০ জুন ২০০৯ 
  9. Encyclopedia of modern worldwide ... - Google Books। Books.google.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০০৯ 
  10. Fighting for faith and nation ... - Google Books। Books.google.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০০৯ 
  11. Violence as political discourse - Google Books। Books.google.com। ১৩ অক্টোবর ২০০৮। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০০৯ 
  12. The Journal of Commonwealth & comparative politics by Taylor & Francis। Books.google.com। ১২ জুন ২০০৮। ২৭ জুন ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০০৯ 
  13. "The Killings In Sangrur Jail"। Ihro। জুন ২০০৯। ৮ অক্টোবর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ 
  14. Mahmood, Cynthia Keppley (১৯৯৭)। Fighting for Faith and Nation: Dialogues with Sikh Militants (illustrated সংস্করণ)। University of Pennsylvania Press। পৃষ্ঠা 314। আইএসবিএন 978-0-8122-1592-2 
  15. "800 years of Sultanwind"। Punjab Heritage। ২৮ জুলাই ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০০৯ [অকার্যকর সংযোগ]
  16. Terror in the mind of God: the ... - Google Books। Books.google.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০০৯ 
  17. Juergensmeyer, Mark (২০০৩)। "The Sword of Sikhism"। Terror in the mind of God (3 সংস্করণ)। University of California Press। পৃষ্ঠা 95। আইএসবিএন 978-0-520-24011-7। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুন ২০০৯ 
  18. Terrorism in context - Page 399। Books.google.com। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০০৯ 
  19. Terrorism & It's Effects - various - Google Books। Books.google.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৪-০৭ [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
  20. Genesis of terrorism: an analytical study of Punjab terrorists। Patriot। ১৯৮৮। সংগ্রহের তারিখ ৯ আগস্ট ২০০৯...(KCF) which is headed by General Labh Singh alias Sukhdev Singh alias Sukha Sipahi. Perhaps he continued to maintain his links with the Babbar Khalsa also. 
  21. Terrorism in context - Martha Crenshaw - Google Books। Books.google.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০৪-০৭