কোরিয়া উপদ্বীপে ইসলাম
কোরীয় উপদ্বীপের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত দক্ষিণ কোরিয়ায় ইসলাম একটি সংখ্যালঘু ধর্ম। সেখানকার অধিকাংশ মুসলিম সিউলে বসবাস করে। তবে সারা দেশেই কয়েকটি মসজিদ রয়েছে। কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশনের মতে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ১০০,০০০ মুসলমান বাস করে এবং তাদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বিদেশী এবং মোট মুসলিম জনসংখ্যার ৪০% সিউলে বাস করে।[১] দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২০০৪ সাল থেকে প্রতি বছর রমজান মাসে ইফতারের আয়োজন করে আসছে। [২] কোরীয়দের মধ্যে মুসলমানরা মোট জনসংখ্যার মাত্র ০.৩%। তবে কোরিয়ায় মুসলিমদের ক্রমবর্ধমান অভিবাসনের ফলে কোরিয়ায় মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং কোরীয়দের মাঝেও দিন দিন ইসলাম জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।[৩]
মোট জনসংখ্যা | |
---|---|
১০০,০০০+ | |
উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার অঞ্চল | |
দক্ষিণ কোরিয়া | ১০০,০০০ |
উত্তর কোরিয়া | ৩০০০ বা ৪০০০ |
ধর্ম | |
সুন্নি ইসলাম | |
ভাষা | |
কোরীয় ভাষা,ইংরেজি,বাংলা,উর্দু,আরবি,ফার্সি,মালয় ভাষা |
উত্তর কোরিয়ায় ধর্মীয় কাজে ব্যাপক বিধিনিষেধ থাকার ফলে গোটা দেশে মাত্র একটি মসজিদ খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। উত্তর কোরিয়ায় কয়েক হাজার মুসলিম রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ২০১০ সালে সেখানে ইরান আর রহমান নামে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করে। এটিই উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মসজিদ। অন্যান্য মুসলিম দেশের দূতাবাসে নামাজের জায়গা থাকলেও পৃথক কোনো মসজিদ নেই।[৪][৫]
ইতিহাস
সম্পাদনাপ্রাথমিক ইতিহাস
সম্পাদনাঐতিহাসিক তথ্যমতে, ৭ম শতাব্দীর মাঝামাঝি থেকে শেষের দিকে মুসলিম ব্যবসায়ীরা খিলাফত অঞ্চল থেকে তাং রাজবংশ শাসিত চীনে পাড়ি জমায় এবং তৎকালীন কোরিয়ার তিনটি রাজ্যের একটি সিলার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করে। ৭৫২ সালে গোগুরিও বংশোদ্ভূত গাও জিয়ানঝি নামে একজন চীনা আর্মি অফিসার তাং রাজবংশের পক্ষে হয়ে আব্বাসীয় খিলাফতের বিরুদ্ধে তালাসের যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন কিন্তু সে যুদ্ধে চীনারা পরাজিত হয়।[৬]
কোরিয়ায় ইসলামের প্রথম যাচাইযোগ্য উপস্থিতি ৯ম শতাব্দীতে আরব নাবিক ও ব্যবসায়ীদের আগমনের মাধ্যমে হয়। ৯ম শতাব্দীর বিখ্যাত পারস্যিক মুসলিম অভিযাত্রী ও ভূগোলবিদ ইবনে খোরদাদবেহসহ অসংখ্য মুসলিম ভূগোলবিদের মতে, তাদের অনেকেই তখন মুসলিম গ্রাম প্রতিষ্ঠা করে কোরিয়ায় স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করে। কিছু রেকর্ড ইঙ্গিত করে যে, এই বসতি স্থাপনকারীদের মধ্যে অনেকেই ইরাক থেকে আসে। নথি থেকে আরো জানা যায় যে, ৯ম শতাব্দীতে হাসান রাজা নামে একজন মুসলিমের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক বিদেশী মুসলিম কোরিয়ায় বসতি স্থাপন করে। পরবর্তীতে অনেক মুসলিম কোরিয়দের সাথে আন্তঃবিবাহ করেন।[৬]
স্থানীয় কোরীয় বিবরণ অনুসারে, ১০২৪ সালে মুসলিমরা হাসান রাজার নেতৃত্বে কোরীয় উপদ্বীপের গোরিও রাজ্য আসে। তাদের কাফেলায় প্রায় ১০০ জন মুসলিম ছিল এবং কিছুদিন আরো ১০০ সদস্যের মুসলিম বণিকের একটি দল সেখানে আসে। ইসলামি বিশ্ব ও কোরীয় উপদ্বীপের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ১৫ শতক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ফলে নিকট প্রাচ্য ও মধ্য এশিয়া থেকে কিছুসংখ্যক মুসলিম ব্যবসায়ী কোরিয়ায় এসে বসতি স্থাপন করে এবং সেখানে বিয়ে করে পরিবার স্থাপন করে। চীন থেকে আসা কিছু হুই মুসলিমও গোরিও রাজ্যে বসবাস করতেন বলে জানা যায়।[৬]
এরপর চীনে মঙ্গোল সেনাবাহিনীর সাথে সেংমোকিন (সেমু) নামে একটি দল আসে। দলটি মধ্য এশিয়ার মুসলমানদের নিয়ে গঠিত হয়েছিল। মঙ্গোল সমাজ ব্যবস্থায় সেংমোকিনের বিশেষ প্রভাব ছিল এবং তারা ইউয়ান রাজবংশে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিল। ইউয়ান রাজবংশের সময় কোরীয় মহিলারা ভারতীয়, উইঘুর ও তুর্কি সেমুদের বিয়ে করে। তখন মঙ্গোল সাম্রাজ্যের মধ্য এশীয় মুসলিম সৈন্যদের মঙ্গোলরা কোরিয়ায় কর্মকর্তা হিসাবে নিযুক্ত করে। পরবর্তীতে চীন ও কোরীয় অঞ্চলে কিছু মুসলিম বিদ্বেষী রাজবংশ শাসন করে এবং ধীরে ধীরে তাদপর অস্তিত্ব মিটিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা করা হয়।[৬][৭]
পরবর্তী সময়কাল
সম্পাদনা১৫ শতকের মধ্যে কোরিয়া অঞ্চলে ইসলাম কার্যত অস্তিত্বহীন ছিল। তবে তখন কিছু মুসলিম অবশিষ্ট থাকলেও তাদের মাঝে অনেক ধর্মীয় অনুশীলন ও শিক্ষা টিকে ছিল না। যাহোক, ১৯ শতকে মাঞ্চুরিয়ায় মুসলিম বসতি স্থাপনকারীদের মাধ্যমে কোরিয়া আবারো ইসলামের সংস্পর্শে আসে।[৬][৮]
20 শতকে ইসলামের পুনঃপ্রবর্তন
সম্পাদনা১৯৫০ সালে কোরীয় যুদ্ধের সময় তুরস্ক তুর্কি ব্রিগেড নামে জাতিসংঘের অধীনে দক্ষিণ কোরিয়াকে সাহায্য করার জন্য প্রচুর সংখ্যক সৈন্য পাঠায়। যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের অবদানের পাশাপাশি তুর্কিরা সৈন্যরা মানবিক কাজেও সাহায্য করে। বিশেষ করে যুদ্ধকালীন অনাথ শিশুদের জন্য স্কুল পরিচালনা করতে সাহায্য করে। যুদ্ধের কিছুদিন পর যে সকল তুর্কি সৈনিক দক্ষিণ কোরিয়ায় জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে অবস্থান করেছিল তারা কোরিয়দের কাছে ইসলাম প্রচার শুরু করে। এভাবে ইসলামে ধর্মান্তরিতরা প্রাথমিকভাবে ১৯৫৫ সালে কোরিয়া মুসলিম সোসাইটি (한국이슬람협회) নামে একটি সংঘ প্রতিষ্ঠা করে। সেই সময়ে ইমুন-ডং-এ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম মসজিদ নির্মিত হয়ে। পরবর্তীতে কোরিয়া মুসলিম সোসাইটি যথেষ্ট বড় হয়ে ওঠে এবং ১৯৬৭ সালে এটি কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশন নাম ধারণ করে।[৬][৯]
বর্তমান
সম্পাদনাউত্তর কোরিয়ায় ইসলাম
সম্পাদনাপিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্যমতে, ২০১০ সালে উত্তর কোরিয়ায় ৩,০০০ জন মুসলিম ছিল, যা ১৯৯০ সালে সেখানে বসবাসকারী ১,০০০ মুসলিমের তিনগুণ।[১০] রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের ইরানী দূতাবাসের নিকট অবস্থিত আর-রহমান মসজিদ দেশটির একমাত্র মসজিদ এবং সেখানে নিয়মিত নামাজের আয়োজন করা হয়। [১১]
দক্ষিণ কোরিয়ায় ইসলাম
সম্পাদনা১৯৬২ সালে মালয়েশিয়া সরকার সিউলে একটি মসজিদ নির্মাণের জন্য ৩৩,০০০০ মার্কিন ডলার অনুদানের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মূল্যস্ফীতির কারণে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়।[১২] অবশেষে ১৯৭৬ সালে সিউল কেন্দ্রীয় মসজিদটি সিউলের ইতাওয়ান পাড়ায় নির্মিত হয়। বর্তমান বুসান, আনিয়াং, গেয়ংগি, গুয়াংজু, জিওঞ্জু, দায়েগু ও কায়েসোঙেও মসজিদ রয়েছে। কোরিয়া ইসলাম ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট লি হি-সুর মতে, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ১০,০০০ তালিকাভুক্ত মুসলিম রয়েছেন এবং তাদের অধিকাংশই বিদেশী।[১৩][১৪]
কোরীয় মুসলিম ফেডারেশন বলে যে, ২০০৯ সালে প্রিন্স সুলতান আব্দুল আজিজ নামে একটি ইসলামি প্রাথমিক বিদ্যালয় চালু করা হয়। এর উদ্দেশ হল, সরকারী পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসরত বিদেশী মুসলিম ছাত্রদের তাদের ধর্ম শিখতে সহায়তা করা। এছাড়াও একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরিকল্পনাও চলছে। সিউলে সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত আব্দুল্লাহ আল-আইফান সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে ফেডারেশনকে $৫০০,০০০ প্রদান করেন। [১৫]
কোরীয় মুসলিম ফেডারেশন সেখানকার রেস্তোরাঁ ও ব্যবসায়িকদের হালাল সার্টিফিকেট প্রদান করে। তাদের হালাল সার্টিফিকেট ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট মালয়েশিয়া (JAKIM) বিভাগ দ্বারা স্বীকৃত। ২০১৮ সালের জানুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ায় সর্বমোট ১৪টি হালাল অনুমোদিত রেস্তোরাঁ ছিল।[১৬] একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আগে প্রিন্স সুলতান বিন আব্দুল আজিজ মাদ্রাসা নামে একটি মাদ্রাসা ১৯৯০ সাল থেকে কাজ করে আসছিল। সেখানে বিদেশী মুসলিম শিশুদের আরবি, ইসলামী সংস্কৃতি ও ইংরেজি শেখার সুযোগ দেওয়া হত। কোরিয়ার অনেক মুসলমান বলেন যে, তাদের ভিন্ন জীবনধারা তাদের সমাজে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে। ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর তারা সেখানে বেশ কিছু বৈষম্য অনুভব করে।[১৭][১৮]
পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকরা কোরিয় উপদ্বীপের মুসলিম জনসংখ্যার একটি বড় অংশ। ২০১০ সালে পিউ রিসার্চ সেন্টার অনুমান করে যে, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৭৫,০০০ জন মুসলমান বাস করে, যারা দেশে প্রতি পাঁচশ জনের মধ্যে একজন। [১০] কোরিয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে দুটি স্বতন্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে: একটি ঐতিহ্যবাহী ও অভিবাসী মুসলিম।[১৯] ঐতিহ্যবাহী মুসলিম বলতে যারা কোরীয় বংশোদ্ভূত এবং তারা নিজেরা অথবা তাদের পূর্বপুরুষদের কেউ ইসলাম গ্রহণ করেছিল এবং অভিবাসী মুসলিমরা সাধারণত মধ্যপ্রাচ্য, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে আসে। [২০] [২১]
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ Won-sup, Yoon। "Muslim Community Gets New Recognition"। islamkorea.com। জুন ১৩, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ জুন ১৩, ২০১৭।
- ↑ "Foreign Minister to Host 14th Iftar Dinner"। জুন ২১, ২০১৭। জুন ২৭, ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা।
- ↑ "The Rise of Korean Islam: Migration and Da'wa"।
- ↑ "উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মসজিদের রমজান আয়োজন"। banglanews24.com। ২০১৭-০৬-২০। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৩।
- ↑ ডেস্ক, ইনকিলাব। "উত্তর কোরিয়ার একমাত্র মসজিদে রমজান আয়োজন"। DailyInqilabOnline (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-০৩।
- ↑ ক খ গ ঘ ঙ চ "Islam in Korea"। Wikipedia (ইংরেজি ভাষায়)। ২০২২-০৯-২১।
- ↑ "Harvard Asia Quarterly - Islam Struggles for a Toehold in Korea"। web.archive.org। ২০০৮-০৫-১৬। Archived from the original on ২০০৮-০৫-১৬। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২১।
- ↑ "SEOUL METROPOLITAN GOVERNMENT"। web.archive.org। ২০০৬-০২-০৮। ২০০৬-০২-০৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২১।
- ↑ "Harvard Asia Quarterly - Islam Struggles for a Toehold in Korea"। web.archive.org। ২০০৭-০৫-১৭। Archived from the original on ২০০৭-০৫-১৭। সংগ্রহের তারিখ ২০২২-১১-২১।
- ↑ ক খ "Table: Muslim Population by Country"। Pew Research Center। ২৭ জানুয়ারি ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ১৪ মার্চ ২০১৭।
- ↑ Chad O'Carroll (২২ জানুয়ারি ২০১৩)। "Iran Build's Pyongyang's First Mosque"। NKNews। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৫।
- ↑ Baker, Don (Winter ২০০৬)। "Islam Struggles for a Toehold in Korea"। ২০০৭-০৫-১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-২৩।
- ↑ The article (in Korean) at "Aris Online Korea"। ২০০২-০৯-২৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৫-০৭-১৯। quotes Lee Hee-Soo (Yi Hui-su), president of 한국 이슬람 학회 (Korea Islam Institute), with these figures.
- ↑ "Welcome to the Frontpage!"। www.kicea.net। ২০১৪-১১-১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৪-১১-০৪।
- ↑ First Muslim School to Open Next Year
- ↑ Halal Food for Pyeongchang Athletes
- ↑ "Archived copy"। ২০০৮-০৪-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৮-১২-১৯। Life is Very Hard for Korean Muslims
- ↑ 1802ibrahim (২৬ সেপ্টেম্বর ২০০৯)। "이슬람 한국 - Islam in Korea"। Archived from the original on ২১ নভেম্বর ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২২ – YouTube-এর মাধ্যমে।
- ↑ "Religious Literacy Project"। ৪ আগস্ট ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ নভেম্বর ২০২২।
- ↑ "The Rise of Korean Islam: Migration and Da'wa"।
- ↑ "International Migrants"।