কোথায় পাব তারে

শহীদুল জহির রচিত বাংলা গল্প

"কোথায় পাব তারে" বাংলাদেশি লেখক শহীদুল জহির রচিত ছোটগল্প। ১৯৯৯ সালে রচিত গল্পটি ২০০৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ডলু নদীর হাওয়া ও অন্যান্য গল্প শিরোনামে জহিরের তৃতীয় গল্পসংকলনে প্রকাশিত হয়। ২০১৭ সালের ২১ জুন গল্পটি দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয়েছিল।[১] গল্পের “কোথায় পাব তারে” নামটি এছাড়াও বাউল গগন হরকরার রচিত একটি গানের লাইনে পাওয়া যায়।

"কোথায় পাব তারে"
লেখকশহীদুল জহির
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
বর্গছোটগল্প
প্রকাশিত হয়ডলু নদীর হাওয়া ও অন্যান্য গল্প (২০০৪)
প্রকাশনার ধরনছোটগল্প সংকলন
প্রকাশকমাওলা ব্রাদার্স
মাধ্যমছাপা (শক্তমলাট)
প্রকাশনার তারিখ১ জানুয়ারি ২০০৪
পূর্ববর্তী রচনা"চতুর্থ মাত্রা (১৯৯৯)"
পরবর্তী রচনা"আমাদের বকুল (২০০৪)"

পটভূমিসম্পাদনা

এটি পুরান ঢাকার দক্ষিণ মৈশুন্দি এবং ৩৬ নম্বর ভূতের গলির পটভূমিতে রচিত।[২] শিরোনামে কাওকে খোঁজার হাহাকার থাকলেও গল্পে না পাওয়ার বেদনা অথবা ব্যর্থ প্রেমের বয়ান থাকলেও তার বর্ণনা সামান্য। আব্দুল করিম নামের এক যুবকের শেফালি নামক এক মেয়ের খোঁজে ময়মনসিং যাবার ঘটনাকে কেন্দ্র করে কাাহিনীর প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছে। একই আবদুল করিম চরিত্র পাওয়া যায় ১৯৯৮ সালে রচিত জহিরের "চতুর্থ মাত্রা" গল্পে। অন্যদিকে আব্দুল আজিজ ব্যাপারি চরিত্রটিও ১৯৯৫ সালে রচিত "কাঁটা" গল্পে রয়েছে।[৩] দুটি গল্পই ডুমুরখেকো মানুষ ও অন্যান্য গল্প (১৯৯৯) বইয়ে সংকলিত হয়েছে। "কোথায় পাব তারে" গল্পে আবদুল করিমের তরুণ বয়সের প্রসঙ্গ রয়েছে, যদিও পরিণত আবদুল করিমকে পাওয়া যায় "চতুর্থ মাত্রা" একাঙ্কিকায়। অন্যভাবে "কোথায় পাব তারে" গল্পটি "চতুর্থমাত্রা" গল্পের প্রাক-পর্ব হিসেবেও ভাবা যেতে পারে।[৪]

কাহীনিসংক্ষেপসম্পাদনা

মহল্লার লোকেদের কাছে আব্দুল করিম নিষ্কর্মা, বোকা ও আত্মকেন্দ্রীক হিসেবে পরিচিত। সে তার বাবা খোরশেদ আলমের নাটবল্টুর ব্যবসার হাল বা ধরে বরং নিজেই অন্য ব্যবসা করতে চায় বলে দিব্বি বেকার ঘুরে বেড়ায়। যদিও এ বিষয়ে তার বাবার সাথে তার মতের মিল হয় না। প্রায়ই আব্দুল আজীজ ব্যপারীর সাথে আব্দুল করিমের সাক্ষাত ঘটে এবং তিনি তাকে ডালপুরি খাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে থাকে, এবং আব্দুল করিম ডালপুরি খেয়ে আহাজারি করে, "ডাইলপুরির মইদ্দে ডাইল নাইকা, হুদা আলু!... এই হালারা আলু দিয়া কেমুন ডাইলপুরি বানায়!" সে জানায় যে, আব্দুল আজীজ ব্যপারী চাইলে সে ময়মনসিংহ থেকে ডাল সাপ্লাই দিতে পারে। এভাবে সে আব্দুল আজীজ ব্যপারীর নিকট তার ময়মনসিংহ যাবার কথা এবং ফুলবাড়িয়ায় তার বন্ধু শেফালির কাছে বেড়াতে যাবার কথা জানায়। এতে আব্দুল আজীজ ব্যপারী সহ মহল্লার লোকেরা উৎসুক হয়ে ওঠে এবং তারা তার আব্দুল করিমের এসব কথা বিশ্বাস করতে চায় না। তারা ভাবে যে আব্দুল করিম তাদের সাথে মশকরা অথবা রসিকতা করছে। তবে একদিন আব্দুল করিম ফুলবাড়িয়া যাবার প্রস্তুতি নিতে থাকলে মহল্লার লোকেরা নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।[৪]

চরিত্রসমূহসম্পাদনা

  • আবদুল করিম
  • আব্দুল আজিজ ব্যাপারি
  • বাবুল মিঞা
  • মোছাঃ শেপালি বেগম
  • দুলাল মিঞা - আব্দুল আজিজ ব্যাপারির বড় ছেলে

অভিযোজন‎সম্পাদনা

এই গল্প অবলম্বনে একই শিরোনামে দুইটি টেলিভিশন নাটক নির্মিত হয়েছে।[৫] মোস্তফা সরয়ার ফারুকী রচিত ও পরিচালিত নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে ছিলেন, রিফাত চৌধুরী, নাদের খান, ইশতিয়াক আহমেদ রুমেলে প্রমুখ। সারা যাকেরের চিত্রনাট্যে দীপংকর দীপন পরিচালিত নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে ছিলেন মামুন, আলী যাকের প্রমুখ। ২০২২ সালে মো. আশরাফুল ইসলামের নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় একই শিরোনামে একটি মঞ্চ নাটক পরিবেশিত হয়।[৬]

তথ্যসূত্রসম্পাদনা

  1. জহির, শহীদুল (২১ জুন ২০১৭)। "কোথায় পাব তারে"ইত্তেফাক। ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০২১ 
  2. পাশা, হারুন (১ এপ্রিল ২০১৬)। "শহীদুল জহির ও ডলু নদীর হাওয়া"ভোরের কাগজ। ৫ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২১ 
  3. প্রিন্স, মাওলা (১২ সেপ্টেম্বর ২০২২)। "সময়ের দুঃসাহসী কথাশিল্পী শহীদুল জহির"দ্য ডেইলি স্টার (বাংলাদেশ)। ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ 
  4. টিপু, মাহবুব। "শহীদুল জহির ও গভীরভাবে অচল মানুষের ভার"। রাইজিংবিডি.কম। ১১ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ জানুয়ারি ২০২১ 
  5. মজিদ, পিয়াস (২৮ জুলাই ২০১৪)। "একজন অন্যবিধরোদে পোড়াশহীদুল জহির"ঢাকা: ইত্তেফাক। ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০২১ 
  6. "ঢাবিতে ১২ দিনব্যাপী কেন্দ্রীয় নাট্যোৎসব"বণিক বার্তা। ২৩ মার্চ ২০২২। সংগ্রহের তারিখ ১৯ মার্চ ২০২৩ 

বহিঃসংযোগসম্পাদনা