ইন্দুবালা

ইন্দুবালা ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। মাসুম আজিজের গ্রাম্য সামাজিক প্রেক্ষাপটভিত্তিক কাহিনিচিত্রের উপর চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য রচনা ও নির্মাণ করেছেন জয়নাল আবেদিন জয় সরকার। এটা জয় সরকারের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র পরিচালনা। এক নারীর জীবনে কাঙ্ক্ষিত ভালবাসার জন্য সংগ্রাম এবং সংগ্রামের পর সাফল্যগাথা এই চলচ্চিত্রের মূল উপজীব্য। ফজলুর রহমান বাবু'র জনপ্রিয় সঙ্গীত 'ইন্দুবালা'র নাম অনুসারে এই চলচ্চিত্রের নাম রাখা হয়। ইন্দুবালায় তিনটি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনিসুর রহমান মিলন, আশিক চৌধুরী ও কেয়া আক্তার পায়েল। ছোট পর্দায় পায়েলিয়া পায়েল নামে পরিচিত কেয়া আক্তার এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বড়পর্দায় অভিষিক্ত হন। ২০১৯ সালের ২৯ নভেম্বর চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়।

ইন্দুবালা
ইন্দুবালা চলচ্চিত্রের আনুষ্ঠানিক পোস্টার
পরিচালক	জয়নাল আবেদিন জয় সরকার
প্রযোজক	নাজ দুলু মিয়া
চিত্রনাট্যকার	জয়নাল আবেদিন জয় সরকার
কাহিনিকার	মাসুম আজিজ
শ্রেষ্ঠাংশে	শাহনূর সাদেক বাচ্চু আশিক চৌধুরী কেয়া আক্তার পায়েল ফজলুর রহমান বাবু লুৎফর রহমান জর্জ আনিসুর রহমান মিলন
সুরকার	মুশফিক লিটু অভি আকাশ প্লাবন কোরেশী আলী আকরাম শুভ
চিত্রগ্রাহক	এস এম আজহার
সম্পাদক	শহিদুল হক
প্রযোজনা কোম্পানি	নাজ মাল্টিমিডিয়া
পরিবেশক	নাজ মাল্টিমিডিয়া
মুক্তি	২৯ নভেম্বর ২০১৯ (2019-11-29)
স্থিতিকাল	১৪৩ মিনিট
দেশ	বাংলাদেশ
ভাষা	বাংলা

গল্পসূত্র

গ্রামের প্রভাবশালী জমিদার জিতেশ মজুমদার একই গ্রামের চালের আড়তদার বৈদ্যনাথের আঠারো বছর বয়সী মেয়ে ইন্দুবালাকে বিয়ে করতে চান। জিতেশ মজুমদারের ছেলে বাবলা ইন্দুবালাকে ভালোবাসে, ইন্দুবালাও বাবলাকে পছন্দ করে। তবে নরম স্বভাবের বাবলা তার বাবা জিতেশকে তাদের প্রেমের বিষয়টি জানানোর মত সাহসী নয়। বাবলা বুঝতে পারেনা কীভাবে তার বুড়ো বাবা আর ইন্দুর বিয়ে আটকাবে। একই সময়ে ইন্দুবালার সৎ মেসোমশাই তার বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ছেলের সাথে ইন্দুবালার বিয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে ইন্দুবালাদের বাড়িতে ওঠেন। মেসোমশাইয়ের ছেলের সাথে ইন্দুবালার বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত তিনি বাড়ি থেকে যাবেন না। এছাড়াও ইন্দুবালার বাবা বৈদ্যনাথের দোকানে ছোটবেলা হতে কাজ করা মন্টু সবার অগোচরে মনেপ্রাণে ইন্দুবালাকে ভালোবাসে, কিন্তু মন্টু বৈদ্যনাথকে এ কথা কখনো মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না। এরকম চতুর্মুখী সংকট হতে বৈদ্যনাথ তার মেয়েকে উদ্ধার করেন এবং শেষ পর্যন্ত ইন্দুবালার বিয়ে দেন।

কুশীলব

অভিনয় শিল্পী

মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন আশিক চৌধুরী, আনিসুর রহমান মিলন ও কেয়া আক্তার পায়েল। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পার্শ্ব চরিত্রে রূপদান করেছেন শাহনূর, ফজলুর রহমান বাবু, লুৎফর রহমান জর্জ, গুলশান আরা পপি, শামীমা নাজনীন, সাদেক বাচ্চু, অবেদ রেহান, মাসুম আজিজ ও প্লাবন কোরেশী প্রমুখ। অভিনয় শিল্পীদের রূপদানকারী উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ নিম্নরূপ-

• আনিসুর রহমান মিলন - মন্টু, ইন্দুবালাদের কাজের লোক।
• আশিক চৌধুরী - বাবলা, জিতেশ জমিদারের সন্তান।
• কেয়া আক্তার পায়েল - ইন্দুবালা।
• লুৎফর রহমান জর্জ - ইন্দুবালার মেসোমশাই।
• সাদেক বাচ্চু - জিতেশ মজুমদার, বাবলার বাবা।
• শাহনূর - বাবলার মাসিমা।
• শামীমা নাজনীন - ইন্দুবালার মা।
• মাসুম আজিজ - সাধক
• প্লাবন কোরেশী - একজন রিয়েলিটি শো’র বিচারক।
• ফজলুর রহমান বাবু - বৈদ্যনাথ, ইন্দুবালার বাবা।

অন্যান্য কলাকুশলী

নাজ দুলু মিয়ার প্রযোজনায় এই ছায়াচিত্রের চিত্রগ্রহণ করেছেন এস এম আজহার, সম্পাদনা করেছেন শহিদুল হক।

নির্মাণ

২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্রটির মহরত অনুষ্ঠিত হয়। নভেম্বরে এই চলচ্চিত্রের চিত্রগ্রহণ শুরু হয়। গাজীপুর, জয়পুরহাটের মঙ্গলবাড়ী ও সিলেটের নবীগঞ্জে অধিকাংশ চিত্রগ্রহণ করা হয়। ২০১৯ সালের মে-তে চলচ্চিত্রটি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড হতে বিনা কর্তনে প্রদর্শনের ছাড়পত্র পায়।

সঙ্গীত

ইন্দুবালা
ফকির শাহাবুদ্দিন, এফ এ সুমন, বিউটি, বেলাল খান, সানিয়া রমা ও সালমা আক্তার কর্তৃক চলচ্চিত্র সঙ্গীত
মুক্তির তারিখ	২০১৯
ঘরানা	চলচ্চিত্র সংগীত
ভাষা	বাংলা
সঙ্গীত প্রকাশনী	জি-সিরিজ
প্রযোজক	আলী আকরাম শুভ , মুশফিক লিটু, জাহিদ বাশার পংকজ, মহিদুল হাসান ও অভি আকাশ
সঙ্গীত ভিডিও
ইউটিউবে "আমি একটা জনম দুঃখী"
সঙ্গীত ভিডিও
ইউটিউবে "বুঝলো নারে কেউ"
সঙ্গীত ভিডিও
ইউটিউবে "তুমি হলে রাজকুমারী"
সঙ্গীত ভিডিও
ইউটিউবে "ডানে দুঃখ বামে দুঃখ"
সঙ্গীত ভিডিও
ইউটিউবে "কৃষ্ণ জানে রাঁধা জানে"

জনপ্রিয় সঙ্গীত 'ইন্দুবালা'র অনুপ্রেরণায় এই ছায়াচিত্রটি নির্মিত হলেও গানটি চলচ্চিত্রে রাখা হয়নি। এর বদলে ৭টি মৌলিক গান ব্যবহার করা হয়েছে। প্লাবন কোরেশী ৩টি গানের গীতি রচনা ও সুর করেছেন। প্লাবন কোরেশী ছাড়াও এই চলচ্চিত্রের জন্য দেলোয়ার আরজুদা শরফ ও সুদীপ কুমার দ্বীপ গীতি লিখেছেন এবং আলী আকরাম শুভ, মুশফিক লিটু, জাহিদ বাশার পংকজ, মহিদুল হাসান ও অভি আকাশ সঙ্গীতায়োজন করেছেন। গানগুলিতে কন্ঠ দিয়েছেন ফকির শাহাবুদ্দিন, এফ এ সুমন, বিউটি, বেলাল খান, সানিয়া রমা ও সালমা আক্তার।

অবমুক্তি

ইন্দুবালা চলচ্চিত্রের গানগুলি ধারাবাহিকভাবে জি-সিরিজের ইউটিউব চ্যানেল হতে অবমুক্ত করা হয়-

1. আমি একটা জনম দুঃখী গানটি ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মুক্তি দেয়া হয়। বিরহধর্মী এই গানের চিত্রায়ণে অভিনয় করেছেন পায়েল ও আশিক।
2. বুঝলো নারে কেউ গানটি ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর মুক্তি দেয়া হয়। বিরহধর্মী এই গানের চিত্রায়ণে ঠোঁট মিলিয়েছেন আনিসুর রহমান মিলন।
3. তুমি হলে রাজকুমারী গানটি ২০১৯ সালের ২৪ অক্টোবর মুক্তি দেয়া হয়। প্রণয়ধর্মী এই গানের চিত্রায়ণে অভিনয় করেছেন পায়েল ও আশিক।
4. ডানে দুঃখ বামে দুঃখ বিরহধর্মী গানটি ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মুক্তি দেয়া হয়। পায়েল এই গানের চিত্রায়ণে ঠোঁট মিলিয়েছেন।
5. কৃষ্ণ জানে রাঁধা জানে গানটি ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর মুক্তি দেয়া হয়। এই বাউল গানের চিত্রায়ণে পায়েল ও মাসুম আজিজ ঠোঁট মিলিয়েছেন।

অবমুক্ত গানের তালিকা
নং.	শিরোনাম	গীতিকার	সুরকার	শিল্পী	দৈর্ঘ্য
১.	"আমি একটা জনম দুখী" (দুঃখের ছায়া)	দেলোয়ার আরজুদা শরফ	অভি আকাশ ও মুশফিক লিটু	সালমা আক্তার	০৫:০১
২.	"বুঝলো নারে কেউ"	সুদীপ কুমার দীপ	অভি আকাশ ও মুশফিক লিটু	এফ এ সুমন	০৪:২২
৩.	"তুমি হলে রাজকুমারী"	প্লাবন কোরেশী	প্লাবন কোরেশী ও জাহিদ বাশার পঙ্কজ	বেলাল খান ও সানিয়া রমা	০৫:৩২
৪.	"ডানে দুঃখ বামে দুঃখ"	প্লাবন কোরেশী	প্লাবন কোরেশী ও রিয়েল আশিক	বিউটি	০৪:৪৮
৫.	"কৃষ্ণ জানে রাঁধা জানে"	প্লাবন কোরেশী	প্লাবন কোরেশী ও মহিদুল হাসান	ফকির শাহাবুদ্দিন ও সানিয়া রমা	০৪:৪১

প্রচারণা ও মুক্তি

চলচ্চিত্রটি মুক্তি পূর্বে খুব বেশি প্রচারণা চালায়নি। ২০১৯ সালের অগাস্টে চলচ্চিত্রটি 'টিজার' প্রকাশের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করে। মুক্তির প্রাক্কালে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর জি-সিরিজের ইউটিউব চ্যানেলে চলচ্চিত্রটির ট্রেইলার প্রকাশ করা হয়। ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশের ১২টি প্রেক্ষাগৃহে সীমিত পরিসরে মুক্তি দেয়া হয়।

অভ্যর্থনা

• ছাড়পত্র প্রদানের সময় সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা চলচ্চিত্রটির গল্প ও নির্মাণশৈলীর প্রশংসা করেছিলেন।

বহিঃসংযোগ

• বাংলা মুভি ডেটাবেজে ইন্দুবালা
• ইউটিউবে 'ইন্দুবালা'-এর আনুষ্ঠানিক ট্রেইলার
• ইউটিউবে 'ইন্দুবালা'-নিয়ে যমুনা টিভির প্রতিবেদন
• ইউটিউবে 'ইন্দুবালা'-নিয়ে মাছরাঙ্গা টিভিতে আশিক চৌধুরীর সাক্ষাৎকার