ইডিয়াপ্পাম

ভারতীয় চালের নুডল ডিশ

ইডিয়াপ্পাম ( তামিল: இடியப்பம்/இடியாப்பம் , মালায়ালাম : ഇടിയപ്പം) বা স্ট্রিং হপার যা ইন্দিয়াপ্পা ( সিংহলা : ඉඳිආප්ප), নুল পুট্টু ( তামিল: நூல்புட்டு , মালায়ালাম : നൂൽപ്പുട്ട്), নুলাপ্পাম ( তামিল: நூலப்பம்/நூலாப்பம் , মালায়ালাম : നൂലപ്പം), বা ওটু শাভিগে ( কন্নড় : ಒತ್ತು ಶಾವಿಗೆ) ইত্যাদি বহুল নামে পরিচিত এটি ভারতের কেরালা ও তামিলনাড়ু রাজ্য থেকে উদ্ভূত একটি রান্নার পদ। এটি চালের আটা দিয়ে তৈরি নুডুলস -এর মতই হয়। এটি সাধারণত ভাপিয়ে রানা করা হয়। পদটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেও প্রচলিত। মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে একে পুত্তু মায়াম বলা হয় এবং ইন্দোনেশিয়াতে একে পুত্তু মায়াং বলা হয়।

ইডিয়াপ্পাম,
তরকারির সাথে ইডিয়াপ্পাম
অন্যান্য নামসেমাই, সান্থগাই, পুত্তু মায়ুম, পুত্তু মায়াং, "চোমাই", স্ত্রিং হপার
ধরনপ্রাতরাশ
অঞ্চল বা রাজ্যকেরালা, শ্রীলংকা, তামিলনাড়ু
প্রধান উপকরণচালের গুড়া

ইতিহাস সম্পাদনা

খাদ্য ইতিহাসবিদ কে টি আচায়ার মতে, সঙ্গম সাহিত্যে উল্লিখিত আছে যে, ইডিয়াপ্পম, আপ্পাম, ইডলি, ধোসা এবং ভাদাই খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দীতে তামিল দেশের প্রচলিত খাদ্যবস্ত ছিল। [১] কন্নড় ভাষায় রচিত লোকোপকার (১০২৫ খ্রীঃ) রান্নার বইতেও এই খাবার তৈরির পদ্ধতি এবং এর জন্য ব্যবহৃত বিশেষ ছাচ-প্রেসার যন্ত্রের উল্লেখ রয়েছে। [২]

প্রস্তুতি সম্পাদনা

 
কর্ণাটকের ঐতিহ্যবাহী কাঠের ইডিয়াপ্পম প্রেসে তৈরি হচ্ছে অট্টু শাভিগে/ইদিয়াপ্পাম

ইডিয়াপ্পম তৈরির মূল উপাদান হল্ চালের আটা, লবণ এবং জল। ইডিয়াপ্পম তৈরির বিভিন্ন পদ্ধতি আছে। তামিলনাড়ু এবং কেরালার বেশিরভাগ অংশে প্রথমে বিশেষ পদ্ধতিতে চালের আটার সেমাই বা নুদলস তৈরি করা হয়, তারপর সেই নুদলস ভাপিয়ে ইডিয়াপ্পাম তৈরি করা হয়। তামিলনাড়ুর কঙ্গু অঞ্চলে, চালের আটা দিয়ে তৈরি বলকে চাপ দেওয়া হয় ও ইডিয়াপ্পম তৈরি করা হয়। কর্ণাটকের অট্টু শাভিজ তৈরির প্রক্রিয়ার সাথে এর কিছু মিল দেখা যায়। [৩] সাধারণত প্রাতঃরাশ বা রাতের খাবারে একটি তরকারি (আলু, ডিম, মাছ বা মাংসের তরকারি বা রসম) এবং নারকেল চাটনির সাথে ইডিয়াপ্পম পরিবেশন করা হয়। এটি কেরালার মালাবার অঞ্চলে নারকেলের দুধ এবং চিনি দিয়ে পরিবেশন করা হয়। এটি সাধারণত দুপুরের খাবারে পরিবেশন করা হয় না। তামিলনাড়ু, কেরালা এবং শ্রীলঙ্কার অন্যান্য অংশে, এটি বেশিরভাগই মশলাদার তরকারি বা রসম দিয়ে খাওয়া হয়। এর প্রস্তুতিতে গমের আটা ব্যবহার করলে এটি একটি বাদামী আভা দেয়।

ইডিয়াপ্পম প্রস্তুত করতে প্রথমে গরম জলের সাথে চালের আটা মেশানো হয়। ঐচ্ছিকভাবে ঘি যোগ করা যায়। স্বাদ অনুসারে লবণ যোগ করতে হয়। এবার সেই চালের আটা মেখে প্রস্তুত মন্ডটিকে একটি মসৃণ আকার দিয়ে হয়। এরপর একটি বিশেষভাবে প্রস্তুত ইদিয়াপ্পাম প্রেস যন্ত্র বা একটি চালনির ভেতরে সেই চালের আটার মন্ড দিয়ে পূরণ করতে হয় এবং চাপ দিয়ে নুডুলস তৈরি করে কলা পাতায় বা সরাসরি একটি ইডলি স্টিমারে রাখতে হয়। ইচ্ছা হলে এতে সামান্য কোড়ানো নারকেল যোগ করা যায়। এরপর ৫-১০ মিনিটের জন্য নুদলস ভাপাতে হয়। এরপর প্রস্তুত ইডিয়াপ্পাম নারকেল ঝাঁঝরি ( পোল সাম্বোলা ) এবং নারকেলের দুধ ( কিরি হোডি ) দিয়ে পরিবেশন করা হয়। [৪] [৫] [৬]

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. K. T. Achaya (নভেম্বর ২০০৩)। The Story of Our Food। Universities Press। পৃষ্ঠা 80। আইএসবিএন 81-7371-293-X 
  2. "Lokopakara" Agri-History Bulletin No. 6 - (Trans) Ayangarya, Y. L. Nene, Nalini Sadhale, Valmiki Sreenivasa (Trans), 2004
  3. Ottu shavige http://vegrecipesofkarnataka.com/235-ottu-shavige-akki-shavige-idiyappam-semettu-nool-puttu.php
  4. Wickramasinghe and Rajah (২০০৫)। Food of India। Murdoch books। আইএসবিএন 978-1-74045-472-8 
  5. 50 of the Best: 30-minute Meals। Murdoch books। ১ জানুয়ারি ২০১২। আইএসবিএন 978-1-74336-265-5 
  6. Vairavan (২০১০)। Chettinad kitchen। Westland। পৃষ্ঠা 64। আইএসবিএন 9789380283883 [স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]