ইছাই ঘোষের দেউল

পশ্চিমবঙ্গের গৌরাঙ্গপুরে অবস্থিত দেউল

ইছাই ঘোষের দেউল হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পশ্চিম বর্ধমান জেলার গৌরাঙ্গপুরের কাছে অবস্থিত একটি রেখ-দেউল মন্দির। এই মন্দিরের স্থাপত্যে ওডিশার স্থাপত্যের চিহ্ন বিদ্যমান।[১][২]

ইছাই ঘোষের দেউল
ধর্ম
অন্তর্ভুক্তিহিন্দুধর্ম
অবস্থান
অবস্থানগৌরাঙ্গপুর
পশ্চিম বর্ধমান জেলা
রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
দেশভারত
ইছাই ঘোষের দেউল পশ্চিমবঙ্গ-এ অবস্থিত
ইছাই ঘোষের দেউল
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
ইছাই ঘোষের দেউল ভারত-এ অবস্থিত
ইছাই ঘোষের দেউল
পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান
স্থানাঙ্ক২৩°৩৬′৩৫″ উত্তর ৮৭°২৭′০৮″ পূর্ব / ২৩.৬০৯৭° উত্তর ৮৭.৪৫২৩° পূর্ব / 23.6097; 87.4523
স্থাপত্য
ধরনরেখ-দেউল
সম্পূর্ণ হয়খ্রিষ্টীয় ১৬শ-১৭শ শতাব্দী

অবস্থান সম্পাদনা

ইছাই ঘোষের দেউল পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলায় গৌরাঙ্গপুরের কাছে অজয় নদের তীরে অবস্থিত। এই মন্দিরটি সড়কপথে কলকাতার ১৭৮.৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এই দেউলটি মন্দিরের কাছে (অতীতে যা গ্রামে অবস্থিত ছিল) অবস্থিত ছিল কিনা, অথবা মন্দিরটি কোনও স্থানীয় তীর্থকেন্দ্র ছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়।[২]

ইতিহাস সম্পাদনা

মন্দিরটির নির্মাণকাল জানা যায় না। কোনও কোনও মতে, এটি খ্রিস্টীয় সপ্তম থেকে একাদশ শতাব্দীর মধ্যে নির্মিত হয়েছিল; আবার অপর মতে এটির নির্মাণকাল খ্রিস্টীয় ষোড়শ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়।[২]

বিনয় ঘোষের মতে, গৌরাঙ্গপুরের ইছাই ঘোষের দেউল বাংলায় অল্প কয়েকটি রেখ-দেউল শৈলীর মন্দিরের অন্যতম। গবেষকদের মতে, ষোড়শ-সপ্তদশ শতাব্দী নাগাদ ইছাই ঘোষের বংশধরেরা তাদের পূর্বপুরুষের স্মরণে এটি নির্মাণ করেছিল।[২]

ডেভিড জে. ম্যাককাশন বলেছেন যে, গৌরাঙ্গপুরের ইছাই ঘোষের দেউল হল একটি বৃহৎ বক্ররৈখিক রেখ-দেউল, যার ভিত্তিটি ২০ বর্গ ফুটের। এটি একটি সাদামাটা ইটের ইমারত, কিন্তু মন্দিরের শিখর অংশটি অলংকরণ ও চিত্র-সম্বলিত।[৩]

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ ইছাই ঘোষের দেউলকে পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সৌধসমূহের তালিকার অন্তর্ভুক্ত করেছে।[৪]

প্রতিষ্ঠা সম্পাদনা

এই মন্দিরের কোনও কাল্টের কথাও জানা যায় না, আবার কোনও অভিলেখ থেকেও এর সম্পর্কে কিছু জানা যায় না। তাই এই মন্দিরের প্রতিষ্ঠার পরিপ্রেক্ষিতটি অজানাই রয়ে গিয়েছে। স্থানীয় কিংবদন্তি অনুযায়ী, খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে ইছাই ঘোষ নামে এক সেনানায়ক সাময়িকভাবে এই অঞ্চলের কর্তৃত্ব অধিকার করেছিলেন।

স্থাপত্য সম্পাদনা

মন্দিরটিতে একটি ১৮ মিটার উঁচু শিখর ("রেখ-দেউল") ও তদুপরি একটি ছত্রী দেখা যায়। অভ্যন্তরে রয়েছে একটি জানালাবিহীন গর্ভগৃহ। বর্তমানে ইটের তৈরি মন্দিরটি দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৯.১০ x ৯.০০ মিটার বর্গাকার ভিত্তির উপর। গর্ভগৃহটির উচ্চতা প্রায় ৪.৫০ মিটার এবং আয়তন প্রায় ২.৫০ x ২.৫০ মিটার।[৫][২]

চিত্রকক্ষ: পশ্চিমবঙ্গের রেখ-দেউল মন্দির সম্পাদনা

তথ্যসূত্র সম্পাদনা

  1. মাহবুবুর রহমান (২০১২)। "স্থাপত্যশিল্প"ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটিআইএসবিএন 9843205901ওএল 30677644Mওসিএলসি 883871743 
  2. Ghosh, Binoy, Paschim Banger Sanskriti, (বাংলা ভাষায়), part I, 1976 edition, pages 123-129, Prakash Bhaban, Kolkata
  3. McCutchion, David J., Late Mediaeval Temples of Bengal, first published 1972, reprinted 2017, page 20, The Asiatic Society, Kolkata, আইএসবিএন  ৯৭৮-৯৩-৮১৫৭৪-৬৫-২
  4. "List of Ancient Monuments and Archaeological Sites and Remains of West Bengal - Archaeological Survey of India"Item no. 51। ASI। সংগ্রহের তারিখ ২৫ জানুয়ারি ২০২০ 
  5. McCutchion, David J., Late Mediaeval Temples of Bengal, first published 1972, reprinted 2017, page 25, The Asiatic Society, Kolkata, আইএসবিএন  ৯৭৮-৯৩-৮১৫৭৪-৬৫-২

বহিঃসংযোগ সম্পাদনা