আর্থরাইজ
আর্থরাইজ হল ১৯৬৮ সালে অ্যাপোলো-৮ অভিযানের সময় মহাকাশচারী উইলিয়াম অ্যান্ডারস’র তোলা পৃথিবীর একটি আলোকচিত্রের নাম।[১] প্রকৃতি আলোকচিত্রী গ্যালেন রাওয়েল এই আলোকচিত্রটিকে “এখন পর্যন্ত তোলা সবচাইতে প্রভাবশালী পরিবেশ-সংক্রান্ত আলোকচিত্র” বলে ঘোষণা দেন। এর আগে ১৯৬৬ সালে লুনার অরবিটার ১ মহাকাশযানের রোবোটিক প্রোবের মাধ্যমে আর্থরাইজের সাদাকালো রাস্টার চিত্র গ্রহণ করা হয়।
বর্ণনা
সম্পাদনাচাঁদের আকাশে প্রথমবারের মতো মানুষসম্বলিত অভিযানের সময় উইলিয়াম অ্যান্ডারস আর্থরাইজ আলোকচিত্রটি গ্রহণ করেন, নাসা যেটিকে "এএস৮-১৪-২৩৮৩ চিত্র" নামে নথিবদ্ধ করেছে।[১][২]
অ্যান্ডারস আলোকচিত্রটি ধারণের জন্য উপযুক্ত ৭০ মিলিমিটার রঙিন ফিল্ম পাবার আগে, অভিযানের অধিনায়ক ফ্রাঙ্ক বোরম্যান দৃশ্যপটের সাদাকালো একটি চিত্র নেন যেটিতে পৃথিবীর প্রান্তরেখা চাঁদের দিগন্তরেখাকে স্পর্ষ করে ছিল।[৩] রঙিন আর্থরাইজ নামক আলোকচিত্রটির মতোই ঐ সাদাকালো চিত্রটিতেও ভূখন্ডের অবস্থান ও মেঘের ধরন একইরকম ছিল।[৪]
১৯৬৮ সালের ২৪ ডিসেম্বরে চাঁদের কক্ষপথ থেকে বৈদ্যুতিক ড্রাইভ সংবলিত ও অতিমাত্রায় পরিবর্তিত হ্যাসেলব্লাড ৫০০ ইএল ক্যামেরা দিয়ে আলোকচিত্রটি গৃহীত হয়েছিল। ঘটনাটির অডিও রেকর্ডিং[৫] ও প্রতিলিপি[৬] অনলাইনে সহজলভ্য।
জ্যামিতি
সম্পাদনাপ্রকাশিত আলোকচিত্রে পৃথিবীর যেসব বৈশিষ্ট্য প্রদর্শীত হয়েছে সেগুলো হলঃ
- মেরুর দিকঃ দক্ষিণ থেকে বামে, উত্তর থেকে ডানে
- বিষুবরেখাঃ কেন্দ্রটি উপরের ডানদিকের কোণ দিয়ে পশ্চিমদিকে চলছে
- দিবাবসানের রেখাটি আফ্রিকা মহাদেশকে অতিক্রম করছে (বামদিকের মৃদু আলোকিত অংশটি নামিবিয়ার নামিব মরুভূমি এবং ডানদিকের অংশটি পশ্চিম সাহারা/ পশ্চিম আফ্রিকা)
- প্রচলিত উত্তর-দক্ষিণ মেরুর পরিপ্রেক্ষিতে ঘড়ির কাঁটার দিকে ১৩৫ ডিগ্রী কোণে ঘুরছে
উত্তরাধিকার
সম্পাদনালাইফ নামক সাময়িক পত্রিকার সম্পাদকদের দ্বারা সম্পাদিত ১০০ ফটোগ্রাফস দ্যাট চেঞ্জড দ্য ওয়র্ল্ড বইতে প্রকৃতি আলোকচিত্রী গ্যালেন রাওয়েল এই আলোকচিত্রকে “এখন পর্যন্ত তোলা সবচাইতে প্রভাবশালী পরিবেশ-সংক্রান্ত আলোকচিত্র” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।[৭] আরেকজন লেখক আলোকচিত্রটির আবির্ভাবকে পরিবেশ আন্দোলনের সূত্রপাত বলে বিবৃত করেছেন।[৮]
ডাকটিকিট
সম্পাদনামার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাক বিভাগ, চাঁদের চারপাশে অ্যাপোলো ৮ এর অভিযানের স্মারক হিসেবে ১৯৬৯ সালে একটি ডাকটিকিটের (স্কট # ১৩৭১) অনুমোদন করে। ডাকটিকিটটিতে আর্থরাইজে নামক রঙিন আলোকচিত্রটি ছাড়াও “ইন দ্য বিগিনিং গড...” কথাটি মুদ্রিত ছিল যা অ্যাপোলো ৮ অভিযানকালে তিনজন মহাকাশচারীর বাইবেলের বুক অভ জেনেসিসস থেকে পাঠকে স্মরণ করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
তথ্যসূত্র
সম্পাদনা- ↑ ক খ দ্যাট ফটোগ্রাফ (১৯৯৯), অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন। সংগৃহীতঃ ২ জুন, ২০১৫
- ↑ এ্যাস্ট্রোনমি পিকচার অভ দ্য ডেঃ আর্থরাইজ। সংগৃহীতঃ ২ জুন, ২০১৫
- ↑ অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত চিত্র। সংগৃহীতঃ ২ জুন, ২০১৫
- ↑ Poole, Robert (২০০৮)। Earthrise: How Man First Saw the Earth। নিউ হ্যাভেন, কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র: ইয়েল ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 0-300-13766-4।
- ↑ নাসার মাধ্যমে প্রকাশিত অডিও টেপ। ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে সংগৃহীতঃ ২ জুন, ২০১৫
- ↑ নাসার দ্বারা প্রকাশিত কথোপকথনের প্রতিলিপি ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে। সংগৃহীতঃ ২ জুন, ২০১৫
- ↑ গ্যালেন রাওয়েলঃ ১০০ ফটোগ্রাফস দ্যাট চেঞ্জড দ্য ওয়র্ল্ড ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৮ মার্চ ২০১২ তারিখে। সংগৃহীতঃ ২ জুন, ২০০১৫
- ↑ Wilford, John Noble (১৪ জুলাই ২০০৯)। "On Hand for Space History, as Superpowers Spar"। নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২ জুন ২০১৫।